সূচনা (Introduction)
ড্রইং পেপার, ট্রেসিং পেপার বা ঐ জাতীয় কোন তলে বস্তুর যে কোন ধরনের উপস্থাপন তা অংকনের মাধ্যমেই হোক বা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে হোক, আসলে এটি বস্তুর প্রজেকশনের ফল। বন্ধু থেকে আগত রক্ষিগুলো একটি তলের উপর আপতিত হয়ে বস্তুর প্রতিকৃতি তৈরি করে। ওয়ার্কিং ড্রইং এর জন্য মাল্টি স্কিউ ড্রইং এর প্রয়োজন হয়। মাল্টি ভিউ ড্রইং অর্থগ্রাফিক প্রজেকশনের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব।
সুতরাং,প্রজেকশন ড্রইংকে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং এর একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এ অধ্যায়ে প্রজেকশন ড্রইং, প্রজেকশন ড্রইং এর প্রকারভেদ, আইসোমেট্রিক প্রজেকশন, অবশিক প্রজেকশন, অর্থগ্রাফিক প্রজেকশন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
১. (OSH) অনুসরণ করতে পারবো।
২. অর্থোগ্রাফিক প্রোজেকশন ড্রইং করতে পারবো।
৩. আইসোমেট্রিক প্রোজেকশন ড্রইং করতে পারবো।
৪. অবলিক প্রোজেকশন ড্রইং করতে পারবো।
৫. টুলস ও সরঞ্জামাদি পরিষ্কার এবং যথাস্থানে সংরক্ষণ করতে পারবো।
উপর্যুক্ত শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা পাঁচটি জব সম্পন্ন করবো। এ জবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ড্রাফটিং কাজেওরঐ নীতি অনুসরণ পূর্বক অর্থোগ্রাফিক প্রোজেকশন, আইসোমেট্রিক প্রোজেকশন,অবলিক প্রোজেকশন এবং টুলস ও সরঞ্জামাদি পরিষ্কার এবং মহাস্থানে সংরক্ষণে দক্ষতা অর্জন করবো। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমেই প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয় সমূহ জানবো ।
তল ও কোয়াড্রেন (Surface & Quardren)
তল: সাধারণ অর্থে তল হলো দৃশ্যমান বস্তুর সবচেয়ে উপরিস্তর বা বহিঃস্তর। এটি বস্তুর সেই স্তর বা এলাকা যা একজন পর্যবেক্ষক তার দৃষ্টিশক্তি এবং স্পর্শ অনুভূতি দ্বারা সর্বপ্রথম উপলব্ধি করতে পারে। অন্যভাবে বলা যায়, ফল হলো কোনো বস্তুর সেই অংশ বা স্তর যা অন্য কোনো বস্তুর সাথে প্রথম স্পর্শ হয়। যে জিনিসের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে কিছু বেধ বা উচ্চতা নেই তাকে ভল বলে। সাধারণত কোনো বস্তুর উপরিভাগকে ভল বলা হয়। ঘনবস্তুর জল দ্বি-মাত্রিক হয়। যেকোনো ঘনবস্তুর এক কিংবা একাধিক উপরিভাগ বা পৃষ্ঠ রয়েছে। প্রতিটি ঘনবস্তুর উপরিভাগকেই ঘনবস্তুর ভল বলে।
বক্রতল
যে তল কোথায়ও উঁচু আবার কোথায়ও নিচু তাকে বক্রতল বলে।
প্রোজেকশন (Projection)
কোন বস্তু থেকে আগত রশ্নি বা কল্পিত রেখাগুলো একটি তলের উপর পতিত হয়ে প্রতিকৃতি বা ইমেজ তৈরির প্রক্রিয়াকে প্রজেকশন বলে। অর্থাৎ আলোর সাহায্যে একটি নর্দিষ্টি অবলোকন বন্দুি (View Point) থেকে বস্তুর অবয়বকে একটি দ্বমিত্রকি তলরে উপর নক্ষিপে করা হল প্রোজেকশন বা অভিক্ষেপ।
ভিউ (View): তলের উপর বস্তুর প্রতিকৃতিকে ভিউ বলে। সকল প্রজেকশন পদ্ধতিতে বস্তুকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখার প্রয়োজন হয়।
ভিউ কোন দিক থেকে দেখা হবে তার উপর ভিত্তি করে ভিউ এর বিভিন্ন নামকরন করা হয়েছে। যেমন-ভিউ উপর থেকে দেখলে তাকে টপ ভিউ (Top View ) বলে, সামনে থেকে দেখা ভিউকে ফ্রন্ট ভিউ (Front View) বা এলিভেশন (Elevation ) এবং পাশ থেকে দেখা ভিউকে সাইড ভিউ (Side View ) বলে। প্রজেকশনের প্রকারভেদ (Types of Projection) তলের উপর আপতিত রশ্নির ধরন ও তলের অবস্থান ভেদে প্রজেকশনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
১)পিকটোরিয়াল প্রজেকশন এবং
২) অর্থগ্রাফিক প্রজেকশন।
পিকটোরিয়াল প্রজেকশনে একটি মাত্র ভিউ দ্বারা বস্তুকে উপস্থাপন করা হয়। পিকটোরিয়াল প্রজেকশন আবার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা-
১)পার্সপেক্টিভ প্রজেকশন ।
২) আক্সোনোমেট্রিক
আক্সোনোমেট্রিক তিন ভাগে বিভক্ত। যথা- ১. আইসোমেট্রিক, ২. ডাইমেট্রিক এবং ৩ ট্রাইমেট্রিক ৩) অবলিক প্রজেকশন ।
আইসোমেট্রিক ও অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশন (Isometric & Orthographic Projection)
আইসোমেট্রিক প্রজেকশন : আইসোমেট্রিক প্রজেকশনে একটি বস্তুর সকল ভাটিক্যাল লাইনগুলো খাড়া অবস্থায় থাকে অন্যদিকে হরাইজোনটাল লাইনগুলো অনুভুমিক রেখার সাথে ৩০° ডিগ্রী কোণে টানা হয়। আইসোমেট্রিক প্রজেকশনে অংকিত বস্তুর আকার আসল বস্তুর আকারের থেকে প্রায় ১৯% ছোটো হয়। এর তিনটি অক্ষ পরস্পর ১২০° ডিগ্রী কোণে অবস্থান করে। আইসোমেট্রিক প্রজেকশনের সুবিধা হলো এই যে, পরিমাপগুলো সঠিকভাবে স্থাপন করা যায় কারন এর অক্ষগুলো সুষমভাবে স্থাপিত হয়।
অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশন : কোন বন্ধু থেকে আগত রশ্নি বা কল্পিত সোজা রেখাগুলো ৯০° কোণে একটি তলের উপর গতিত হয়ে দৃশ্য তৈরী হয় তাকে অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশন বলে। অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশনকে বাংলায় সোজা অভিক্ষেপন বলে.
এভাবে সরলরেখা টেনে যে তলের উপর নক্সা অংকন করা হয় সেই ভলকে প্রজেকশন म Plane of Projector) এবং এসব রেখাগুলোকে প্রজেক্টর( projector) বলে।
তল বস্তু ও চোখ বা দেখার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে অর্থগ্রাফিক প্রজেকশন দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
(১) ফার্স্ট অ্যাঙ্গেল প্রজেকশন এবং (২) থার্ড অ্যাম্পেল প্রজেকশন ।
আইসোমেট্রিক প্রজেকশন Isometric Projection)
আইসোমেট্রিক প্রজেকশনে একটি বস্তুর সকল ভার্টিক্যাল লাইনগুলো খাঁড়া অবস্থান থাকে। অন্যদিকে হরাইজোনটান লাইনগুলো অনুভূমিক রেখার সাথে ৩০° ডিগ্রী কোণে টানা হয়। আইসোমেট্রিক প্রজেকশনে অংকিত বস্তুর আকার আসল বস্তুর আকারের থেকে প্রায় ১৯% ছোট হয়। এর তিনটি অঙ্ক পরস্পর ১২০ ডিগ্রী কোণে অবস্থান করে। আইসোমেট্রিক প্রজেকশনের সুবিধা হলো এই যে, পরিমাপগুলো সঠিকভাবে স্থাপন করা যায় কারণ এর অক্ষগুলো সুষমভাবে স্থাপিত।
অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশন (Orthographic Projection)
কোনো বস্তু থেকে আগত রশ্মি বা কল্পিত সোজা রেখাগুলো ৯০° কোণে একটি তলের উপর পতিত হয়ে যে দৃশ্য তৈরি হয় তাকে অর্থোগ্রাফিক প্রজেকশন বলে ।
অপরদিকে, অর্থোপ্রাফিক প্রজেকশনে কেবলমাত্র একটি তল দেখা যায়। এ ধরনের প্রজেকশন দুইটি অক্ষ X, Y নিয়ে দ্বিমাত্রিকভাবে গঠিত।
অবলিক প্রজেকশন (Oblique Projection)
অবলিক প্রজেকশনের বস্তুর একটি মুখ বা ফেস প্রজেকশনে ভলের সাথে সমান্তরাল কিন্তু এর সন্নিহিত ফেসগুলো ডানে বা বামে ৪৫° কোণে অবস্থান করে। চিত্রে বস্তু ও তলের অবস্থান এবং তলের উপর রশি কিভাবে আপতিত হয় তা দেখানো হলো।
বস্তু থেকে আগত রশ্মিগুলো একটি তলের উপর পতিত হয়ে বস্তুর প্রতিকৃতি বা ইমেজ তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়াকে অভিক্ষেপন ৰা ইংরেজিতে প্রজেকশন বলে। যে তলের উপর রশ্মিগুলো পতিত হয় তাকে অভিক্ষেপ তল বলে।
নিচে হরাইজন্টাল এবং ভার্টিক্যাল তল দুটি পরস্পর ৯০° ছেদ করার ফলে যে ৪টি কোয়াড্রন্টে উৎপন্ন হয়েছে তার অবস্থান দেখানো হলো ।
অনুসন্ধানমূলক কাজ
তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যে কোনো একটি ড্রাফটিং ওয়ার্কশপ বা মেরামত কারখানা পরিদর্শন কর। এর ড্রইং ও পরিমাপক টুলসের সাহায্যে আইসোমট্রেকি দৃশ অংকন কৌশল বিষয়ে নিম্নোক্ত ছকে তোমার মতামত দাও।
প্রথম কোণীয় অভিক্ষেপ (First Angle Projection)
প্রথম কোণীয় পদ্ধতিতে বস্তুকে দর্শকের চোখ এবং তলের মাঝে রেখে কল্পনা করা হয়। নিচে চিত্রে ফার্স্ট অ্যাঙ্গেল প্রজেকশন পদ্ধতিতে দর্শকের চোখ, বস্তু ও তলের অবস্থান এবং প্লান, এলিভেশন ও সাইড ভিউ-এর বিন্যাস দেখানো হলো
মার্ড অ্যাঙ্গেল প্রজেকশন
থার্ড অ্যাঙ্গেল প্রজেকশন পদ্ধতিতে তলকে বস্তু ও দর্শকের চোখের মাঝে রেখে কল্পনা করা হয়। নিচে চিত্রে থার্ড অ্যান্সেল প্রজেকশন পদ্ধতিতে দর্শকের চোখ, বন্ধু ও প্রজেকশন তল এবং প্লান, এলিভেশন ও সাইড ভিউ- এর অবস্থান দেখানো হলো।
যখন X এবং Y অনবঘুরে দ্বিতীয় এবং চতুর্থ অভিক্ষেপ ভঙ্গে স্থাপন করা হয়, তখন দ্বিতীয় অভিক্ষেপ ভঙ্গে উল্লব ভলটি বন্ধু X এবং অবজারভার মধ্যে অবস্থান করে। ফলে বহু X এর সম্মুখ দুশ উল্লম্ব তলে পতিত হয়। অন্য দিকে টপ ভিউ হরাইজন্টাল তলের উপর পতিত হয়। প্রজেকশন নীতি অনুযায়ি যখন হরাইজন্টাল তলটি ৯০° কোণে রুকওয়াইজ ঘুরে, টপ এবং সম্মুখ ভিউ ওভারলেপ এ পতিত হয়। ওভারলেপিং অভিক্ষেপ পরিষ্কার ধারণা দেয় না।
অতএব টপ ভিউ এবং হরাইজন্টাল ভিউ এর ভেতর ওভারলেপিং কারণে দ্বিতীয় এবং চতুর্থ কোন অভিক্ষেপ ব্যবহার করা হয় না।
পারদর্শিতার মানদন্ড
ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
কাজের সর্তকতা :
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদির সাহায্যে অর্থগ্রাফিক প্রোজেকশন অংক করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
পারদর্শিতার মানদন্ড
ক) ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল ( Raw Materials)
খ) কাজের ধারা
কাজের সর্তকতা :
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদির সাহায্যে ১ম কোপে অর্থগ্রাফিক প্রোজেকশন অংকন করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials)
(ঘ) কাজের ধারা
কাজের সর্তকতা :
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদির সাহায্যে ৩য় কোপে অর্থগ্রাফিক প্রোজেকশন অংকন করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials )
কাজের সর্তকতা :
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদির সাহায্যে আইসোমেট্রিক প্রোজেকশন অংকন করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
পারদর্শিতার মানদন্ড
ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials)
(ঘ) কাজের ধারা
কাজের সর্তকতা :
আত্নপ্রতিফলন:
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদির সাহায্যে অবলিক প্রোজেকশন অংকনকরার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
আরও দেখুন...