শিক্ষক তোমাদের গ্রেটা খুনবার্গ (Greta Thunberg)-এর ছবি দেখাবেন। গ্রেটা খুনবার্গ প্রকৃতির সুরক্ষা বিষয়ে যা বলেছেন তা আলোচনা করবেন। মজার বিষয় হলো কী জানো, গ্রেটা খুনবার্গ তোমাদের চেয়ে বয়সে খুব বেশি বড়ো নয়, কিন্তু তিনি প্রকৃতির সুরক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তাহলে এসো, গ্রেটা খুনবার্গ সম্পর্কে জেনে নেই।
গ্রেটা খুনবার্গ (Greta Thunberg) একজন সুইডিশ কিশোরী। পরিবেশ আন্দোলনের পরিচিত মুখ। স্কুল পালিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রুখতে আন্তর্জাতিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিশ্বব্যাপী তার পরিচয় আছে। গ্রেটার বাবার কাছ থেকে জানা গেছে যে, গ্রেটা আট বছর বয়সে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জানতে পারে।
২০১৮ খ্রীষ্টাব্দের মে মাসে ১৫ বছর বয়সে গ্রেটা স্থানীয় এক পত্রিকায় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তিন মাস পর আগস্টে সুইডেনের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিক্ষোভ করা শুরু করেন। ২০১৫ খ্রীষ্টাব্দে প্যারিস সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্বন নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে সুইডেন সরকার যেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। ২০১৮ খ্রীষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী গ্রেটার প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজ নিজ দেশে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গ্রেটার অর্জন
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য দিতে তিনি নিউ ইয়র্কে যান। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার জন্য তিনি বিমানে উঠতে অস্বীকৃতি জানান, কারণ বিমানের জ্বালানি পোড়ালে পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রভাব পড়ে। গ্রেটা নিউ ইয়র্কে একটি রেসিং ইয়টে করে যান, সেই যাত্রায় তার সময় লাগে দুই সপ্তাহ। জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে গ্রেটা রাজনীতিবিদদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তারা জলবায়ু পরিবর্তনে প্রশ্নের উত্তরের জন্য তরুণদের ওপর নির্ভর করছেন। গ্রেটা বলেন, 'আপনাদের কত দুঃসাহস! আমার এখানে থাকা উচিত না, আমার স্কুলে থাকার কথা। তবুও আপনারা আমাদের মতো তরুণদের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন কীভাবে!' তাকে ঐ বছর টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলন ছাড়াও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি।
গ্রেটার চাওয়া
১. বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর সরকার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কার্বন নিঃসরণ সীমিত রাখার জন্য দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
২. তরুণদের পরিবেশগত ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে না ফেলার জন্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
৩. বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা নিজ নিজ দেশে একই ধরনের দাবি তুলে প্রতিবাদ শুরু করে।
৪. পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিশ্বের নানা দেশের সরকারের কাছে বিভিন্ন ধরনের দাবি তুলে ধরেন।
প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তোমাদের বাড়ির চারপাশে, বিদ্যালয়ে, পাড়া ও মহল্লায় সকল ক্ষেত্রে তোমাদের প্রকৃতির যত্ন নিতে হবে যেন সকলে মিলে সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারো। প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা শুধু কোনো একশ্রেণির লোকের দায়িত্ব নয়, এই দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেকের।
গ্রেটা থুনবার্গ কর্তৃক পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষার ঘটনা বিবরণী শিক্ষক তোমাদের পড়ে শোনাবেন। তিনি তোমাদের দিয়েও পড়াতে পারেন। শিক্ষক খুব সহজ করে উপরের বিষয়টি আলোচনা করবেন। আলোচনার সময় তোমাকে মনোযোগী হতে হবে। তোমার যদি কোনো অস্পষ্টতা থাকে তাহলে আলোচনার সময় শিক্ষককে প্রশ্ন করে জেনে নিও। আশা করি আলোচনার মধ্য দিয়ে জানতে তোমার খুব মজা লাগবে। শিক্ষক তোমাদের নিচের প্রশ্নগুলো করবেন। তার নির্দেশনায় উত্তরগুলো নিচে লিখতে চেষ্টা করো।
গ্রেটা থুনবার্গের পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ে তথ্যাবলি
গ্রেটা খুনবার্গ ও পরিবেশ সুরক্ষার তথ্যাবলি | উত্তরমালা |
গ্রেটা খুনবার্গ কে? |
|
গ্রেটা থুনবার্গ কত বছর বয়সে পরিবেশ নিয়ে কাজ শুরু করেন? |
|
গ্রেটা খুনবার্গ কী কী বিষয় নিয়ে ক্যাম্পেইন করেছিলেন? |
|
গ্রেটা খুনবার্গ কী কী অর্জন করেছিলেন? |
|
গ্রেটা পুনবার্গ বিভিন্ন দেশ ও নেতাদের কাছে কী কী দাবি করেন? |
|
প্রকৃতির সুরক্ষায় তুমি কী করতে পারো? |
|
গ্রেটা খুনবার্গ পরিবেশ সুরক্ষায় যেভাবে ভূমিকা রেখেছেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ সেভাবে পরিবেশের যত্ন রেখেছেন। তার মধ্যে পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস "লাউদাত্তো সি” (প্রভুর প্রশংসা) নামক বইয়ে প্রকৃতি পরিবেশের সাথে মানবকুলের সুসম্পর্ক স্থাপন ও প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষায় মানুষের অংশগ্রহণমূলক দায়িত্ব সম্পর্কে চেতনা প্রদান করেন।
চলো গাছ লাগাই
তোমাকে একটি মজার কাজ করতে হবে। তুমি প্রকৃতির সুরক্ষায় তোমার নিজ বাড়ি, পাড়া, মহল্লা ও বিদ্যালয়ে ছোটো ছোটো অনেক কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারো। তার মধ্যে বৃক্ষরোপণ করাও একটি ভালো কাজ হতে পারে। বৃক্ষরোপণ করা একটি সহজ কাজ কিন্তু প্রকৃতির সুরক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমাকে এই সেশনে ২টি কাজ করতে হবে। প্রথমত: তোমার নিজ বাড়ি, পাড়া, মহল্লা বা বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করে তার একটি ভিডিও চিত্র শিক্ষককে প্রদান করতে হবে। দ্বিতীয়ত: তুমি যে বৃক্ষরোপণ করবে তার একটি তথ্য সিট তৈরি করে শিক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে।
নিচে তোমার জন্য বৃক্ষরোপণের একটি তথ্য সিটের নমুনা দেয়া হলো-
বৃক্ষরোপণের তথ্য সিট
শিরোনাম তুমি যে কাজটি করেছ সেই কাজের শিরোনাম লেখো যেমন 'বৃক্ষরোপণ'। |
বৃক্ষের নাম তুমি যে বৃক্ষ রোপণ করেছ সেই বৃক্ষের নামগুলো লেখো যেমন 'আম, জাম, পেয়ারা'। |
বৃক্ষরোপণের স্থান তুমি কোথায় বৃক্ষ রোপণ করেছ সেই স্থানের নাম লেখো যেমন 'বাড়ির আঙ্গিনায়'। |
বৃক্ষরোপণের বর্ণনা তোমাকে কয়েকটি লাইনে বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে লিখতে হবে, যেমন- কাজটি কত তারিখ করেছ, কখন কাজটি করেছ, কাজটি করতে তোমাকে কে কে সাহায্য করেছে ইত্যাদি। |
তোমার অনুভূতি বৃক্ষরোপণ কাজটি করতে তোমার কেমন লেগেছে তা একটি অনুচ্ছেদে লেখো। |
শিক্ষার প্রতিফলন বৃক্ষরোপণ করার মাধ্যমে যীশুর শিক্ষার প্রতিফলন কীভাবে ঘটেছে তা একটি অনুচ্ছেদে লেখো। |
আরও দেখুন...