তুমি একটু ভেবে দেখো তো পবিত্র বাইবেল হাজার হাজার বছর আগে লেখা হয়েছে কিন্তু সেখানেও মানুষ ও প্রকৃতির সুরক্ষা বিষয়ে লেখা আছে। বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষক তোমাদের পবিত্র বাইবেলের আলোকে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। তাহলে এসো, প্রথমে পবিত্র বাইবেলে মানুষ ও প্রকৃতির সুরক্ষা বিষয়ে কী লেখা আছে তা একটু জেনে নেই। নিচে তোমার জন্য পবিত্র বাইবেল থেকে কয়েকটি পদ উল্লেখ করা হলো-
আদিপুস্তক ২:১৫, যাত্রাপুস্তক ২৩:১০-১১, দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১৯, দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৬-৭, যিশাইয় ৩২:২০, হিতোপদেশ ১২:১০।
"সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে নিয়ে এদন বাগানে রাখলেন যাতে তিনি তাতে চাষ করতে পারেন ও তার দেখাশোনা করতে পারেন।" (আদিপুস্তক ২:১৫)
"পর পর ছয় বছর তোমরা ক্ষেতে চাষ করবে এবং ফসল কাটবে, কিন্তু সপ্তম বছরে জমি চাষও করবে না এবং কোন কিছু বুনবেও না। তাতে এমনি যা জন্মাবে তোমাদের মধ্যেকার গরীব লোকেরা তা থেকে খাবার পাবে আর যা পড়ে থাকবে তা বুনো পশুরা খেতে পারবে। তোমাদের আংগুর ও জলপাই বাগানের ব্যাপারেও ঐ একই নিয়ম পালন করবে।" - (যাত্রাপুস্তক ২৩:১০-১১)
"তোমরা অনেক দিন ধরে যখন কোন গ্রাম বা শহর ঘেরাও করে রেখে তা দখল করবার জন্য যুদ্ধ করতে থাকবে তখন কুড়াল দিয়ে সেখানকার কোন গাছ নষ্ট করবে না, কারণ সেগুলোর ফল তোমরা খেতে পারবে। সেগুলো তোমরা কেটে ফেলবে না।" (দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১৯)
"তোমরা চলতে চলতে পথের পাশে কোন গাছে কিম্বা মাটির উপরে যদি এমন কোন পাখীর বাসা দেখতে পাও যেখানে পাখীর মা বাচ্চাদের উপর বসে আছে কিম্বা ডিমের উপর তা দিচ্ছে, তবে বাচ্চা সুদ্ধ মাকে তোমরা ধরে নিয়ে যাবে না। তোমরা বাচ্চাগুলো নিতে পার কিন্তু মাকে অবশ্যই তোমাদের ছেড়ে দিতে হবে। এতে তোমাদের মংগল হবে আর তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকবে।" (দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৬-৭)
যিশাইয় ৩২:২০ পদে লেখা আছে, "কিন্তু প্রত্যেকটা স্রোতের ধারে বীজ লাগিয়ে আর তোমাদের গরু ও গাধাগুলো নিরাপদে চরতে দিয়ে তোমরা সুখী হবে।" হিতোপদেশ ১২:১০ পদে লেখা আছে, "ঈশ্বরভক্ত লোক তার পশুদের যত্ন করে, কিন্তু দুষ্টদের মমতাও নিষ্ঠুরতায় পূর্ণ।"
ঈশ্বর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পর আদম-হবাকে প্রকৃতির সুরক্ষার দায়িত্ব দিলেন। ঈশ্বর তাঁর সৃষ্ট গাছপালা, পশুপাখি, জমি-ভূমি, নদ-নদী, বন, পাহাড়-পর্বত এবং সকল মানুষের যত্ন নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। ঈশ্বর আদম-হবাকে আশীর্বাদ করলেন। আদম-হবাকে বংশবৃদ্ধি করতে ও পৃথিবীকে ভরে তুলতে বললেন। ঈশ্বর সমস্ত কিছু উত্তম করে সৃষ্টি করেছিলেন। আমাদের দায়িত্ব হলো ঈশ্বরের উত্তম সৃষ্টির প্রতি যত্ন নেয়া ও সুরক্ষা করা। সৃষ্টির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করা আমাদের প্রত্যেকেরই নৈতিক দায়িত্ব। আমরা প্রকৃতির সুরক্ষার এ মহান দায়িত্ব অবহেলা করব না। মানুষ মানুষের প্রতি এবং সৃষ্টির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করবো, এটি ঈশ্বরের প্রত্যাশা। আমরা অবশ্যই ঈশ্বরের সৃষ্টিকে ভালোবাসব ও যত্ন করব।
পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষা বিষয়ে পবিত্র বাইবেলের পদগুলো শিক্ষক নিজে পড়তে পারেন। তিনি তোমাদের দিয়েও পদগুলো পড়াতে পারেন। পদগুলো তুমি আগে পড়ে নাও যাতে সুন্দর করে উচ্চারণ করতে পারো। এই পদগুলো নিয়ে শিক্ষক তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বাইবেলের এই পদগুলো তোমার বুঝতে কঠিন হলে আলোচনার সময়ে শিক্ষককে বলো। শিক্ষক তোমাকে সহজ করে বুঝিয়ে বলবেন। আলোচনা শেষে শিক্ষক তোমাদের নিচের প্রশ্নগুলো করবেন। তোমাদের উত্তর দিতে হবে। তুমি প্রস্তুত থেকো এবং প্রশ্নোত্তরে অংশগ্রহণ করো।
এসো প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানি
১. পবিত্র বাইবেলে জলাশয়, নদী, পাহাড়, ভূমি ও গাছপালা সুরক্ষা বিষয়ে কী লেখা আছে?
২. পবিত্র বাইবেলে পশু, পাখি, মাছ ও বীজের সুরক্ষা বিষয়ে কী লেখা আছে?
৩. বাইবেলে গ্রাম, শহর, ফসল ও ফলের গাছের যত্ন সম্পর্কে কী লেখা আছে?
৪. বাইবেলে গরিব, অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের যত্ন সম্পর্কে কী লেখা আছে?
আরও দেখুন...