পরিপক্ক ব্রুড চিংড়ি ট্যাংকে ৭-৮ দিন রাখার পর সন্ধ্যায় পানি কমিয়ে স্ত্রী চিংড়ির ডিম্বকোষের উন্নতি লক্ষ্য করা হয় যা বাইরে থেকেই দেখা যায়। অন্যদিকে পরিপক্ক পুরুষ চিংড়ির পঞ্চম চলনপদের গোড়ায় পুংজনন ছিদ্রে শুক্রকীটের মোড়ক (spermatophores ) দেখা যায়। ডিম্বাশয়ের পূর্ণতা নির্ভর করে ডিম্বাশয়ের আকার, রং এবং ডিম্বানুর মাপের ওপর। পরিপক্ক স্ত্রী চিংড়ির ডিম্বাশয়কে ৫টি দশায় ভাগ করা যায়।
ক) অপরিণত/অপরিপক্ক পর্যায় ( immature stage): এই অবস্থায় ডিম্বানু খুব ছোট থাকে। ডিম্বাশয় পাতলা ও স্বচ্ছ থাকে। ডিমের গড় আকার ০.০২৮ মিমি হয়।
খ) উন্নয়নশীল পর্যায় (early developing stage): ডিম্বাশয় এর পরিপক্কতা শুরু হয়। ডিম্বাশয় স্বচ্ছ থেকে হালকা জলপাই রঙের লম্বা ফিতার মত ডিম্বানু দেখা যায়। যা খোলসের বাইরে থেকে পরিলক্ষিত হয়। এসময় ডিমের গড় আকার ০.০৭৮ মিমি হয়।
গ) প্রায় পরিপক্ক পর্যায় (nearly ripe stage): ডিম্বাশয় এর রং ঘণ হতে থাকে এবং হালকা লাল বর্ণ ধারণ করে। ডিম্বাশয়ের দুই পার্শ্ব বর্ধিত হয়ে কিছুটা ডায়মন্ড বা প্রজাপতির আকার ধারণ করে। ডিমের গড় আকার হয় ০.১৮৮ মিমি হয়।
ঘ) পরিপক্ক পর্যায় (ripe stage): এ সময় ডিম্বাশয় সম্পূর্ণরূপে পরিপক্কতা লাভ করে। উদর অঞ্চল প্রায় সম্পূর্ণ স্থান দখল করে ডিম্বাশয় বর্ধিত হয়। গাঢ় লাল বা খয়েরি রঙের পরিপূর্ণ আকার ধারণ করে। ডিমের গড় আকার হয় ০.২৫০ মিমি।
ঙ) পরিপক্ক পরবর্তী পর্যায় (spent ripe stage): এই পর্যায়ে ডিম ছেড়ে ডিম্বাশয় পুনরায় প্রথম দশার আকার ধারণ করে। একটি পরিপক্ক স্ত্রী চিংড়ির বছরে ডিম ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৩-৭.৭৫ লক্ষ।
গলদা চিংড়ির প্রজনন ক্রিয়া: সম্পূর্ণরূপে পরিপক্ক গলদা চিংড়ির প্রজনন গভীর সমুদ্রে রাত্রিকালে সম্পন্ন হয়। প্রথমে পুরুষ চিংড়ির ওপর স্ত্রী চিংড়ি সমান্তরালভাবে অবস্থান করে। এরপর একে অপরকে অঙ্কীয়দেশ বরাবর আকড়ে ধরে এবং পুরুষ চিংড়ি শ্রী চিংড়ির দেহের নিচে সমান্তরালভাবে অবস্থান করে। শেষ পর্যায়ে পুরুষ চিংড়ি তার উদরের অংশ বাকিয়ে “ট” আকৃতির বেষ্টনী তৈরি করে। এভাবে তাদের মিলন সংঘটিত হয় যা ৩-৪ মিনিট স্থায়ী হয়।
চিত্র-২.১ঃ স্ত্রী চিংড়ির ডিম্বাশয়ের পরিপক্কতার দুইটি পর্যায়
Read more