প্রাকৃতিক কোনো দূর্ঘটনা বা বিপর্যয় যখন কোনো জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তোলে, তখন তাকে আমরা বলি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হঠাৎ করে আসে। এর ওপর সাধারণত মানুষের কোনো হাত থাকে না। যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, সুনামি, ধরা, ভূমিকম্প ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশের অনেক ক্ষতি হয়। যেমন, জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে সমুদ্রের লোনা পানি ঢুকে যায়। ফলে গাছপালা, মৎস্যখামার ও শস্যক্ষেতের অনেক ক্ষতি হয়। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। কৃষিজমির ক্ষতি হয় । জমির উর্বরা শক্তি কমে যায়। কৃষি উৎপাদন কমে যায় ।
আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা ও সিডরের নাম শুনেছি। এ দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের অনেক প্রাণহানি হয়েছে। অনেক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খাওয়ার পানির খুব অভাব দেখা দিয়েছিল। সুন্দরবনের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ অংশ বন নষ্ট হয়েছে। নানা প্রকার মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা, খরা ও ভূমিকম্পের ফলে অনেক ঘরবাড়ি নষ্ট হয়। মানুষের বেঁচে থাকা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় আমরা সেবা-শুধুধার মতো কার্যক্রম চালাব।
এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াব। যেভাবে পারি তাদের সেবা, সহায়তা করব। এটাই হলো ইসলাম ও নৈতিকতার শিক্ষা। বাংলাদেশের লোকজন যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে।
আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য নিম্নোক্ত কৌশলগুলো অবলম্বন করব:
ক) যথাসম্ভব উঁচু জায়গায় বসতভিটা, গোয়ালঘর ও হাঁসমুরগির ঘর তৈরি করব।
খ) ঘরের ভেতরে উঁচু মাচা তৈরি করে তার উপর খাদ্যশস্য, বীজ ইত্যাদি সংরক্ষণ করব।
গ) পুকুরের পাড় উঁচু করব। টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন যথাসম্ভব উঁচু স্থানে বসাব ।
ঘ) শুকনো খাবার যেমন চিঁড়া, মুড়ি, গুড় এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ঘরে মজুদ রাখব।
ঙ) পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে সাতারকাটা শেখাব ।
চ) বন্যার সময়ে যাতায়াতের জন্য নৌকা না থাকলে কলাগাছের ভেলা তৈরি করে নেব।
তাহলে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচব। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিজে বাঁচা এবং অপরকে বাঁচানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
পরিকল্পিত কাজ :
ক) শিক্ষার্থীরা পরিবেশ সংরক্ষণের উপায়গুলো খাতায় লিখবে।
খ) শিক্ষার্থীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার কৌশলগুলো খাতায় লিখবে।
আরও দেখুন...