বীণা তত বাদ্যযন্ত্র। ভত যন্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে বীণা অতি প্রাচীন। বীশা যন্ত্রটি প্রস্তুত করতে কয়েক খণ্ড কাঠ, দুইটি
লাউ, কিছু তার, সেলুলয়েড, সুতো আর হাড়ের প্রয়োজন। পূর্বে কাঠের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহৃত হতো। দুই বা
আড়াই ইঞ্চি চওড়া কাঠ বা বাঁশের মঞ্চের সঙ্গে দুইটি লাউ সংযুক্ত করা হয়। লাউ দুইটি গোল। বীণাতে খোল
থেকে বাইশটি সারিকা পটরীর বুকে মুগা সুতো দিয়ে বাঁধা থাকে। এই যন্ত্রে সাতটি তার ব্যবহৃত হয়।
চিত্ৰ: বীণা
সারিকার উপরিভাগে হাড়ের তৈরি ভারপহণের ওপর বাজাবার প্রধান চারটি তার সংযোজিত হয়। বাকী তিনটি
তার চিকারীর। বাঁধার নিচের অংশে কাঠের দতে এই ভারগুলো লাগাবার ব্যবস্থা করা হয়। সাতটি কাঠের তৈরি
বয়লাতে এই ভারগুলো লাগানো থাকে। সাতটি বয়লার মধ্যে পাঁচটি বীপার উপরের দিকে কাঠের দক্ষের
দুইপাশে আটকানো হয় এবং বাকী দুইটি বয়লা লাউরের মধ্যখানে একটা সমান দূরত্ব রেখে আটকানো হয়।
বাজাবার সময় বীণার একটি লাউ বা কাঁধের ওপর এবং আরেকটি লাউ উরুতে রাখতে হয়। বাঁ হাতের আঙ্গুল
দিয়ে তার চেপে ডান হাতের আঙুলে মিজৱাব লাগিয়ে তারে আঘাত করে বীণা বাজাবার নিয়ম।
তানপুরা
তানপুরা জাতীয় যন্ত্র। তানপুরার আদি নাম তামুরা। তারা একটি অতি প্রাচীন যন্ত্র। তানপুরা যন্ত্রটি
গঠন প্রকৃতি সহজ ও সাধারণ। একটি গোলাকার শুকনো পাউরের সঙ্গে খোদাই করা একটি কাঠের খণ্ড জোড়া
লাগানো হয়। এই লম্বা কাষ্ঠ খণ্ডকে বলা হয় দত। দক্ষের আকৃতি অর্ধগোলাকার। এই দলের ওপর আরেকটি
-
অর্থপোলাকার কাজপত যুক্ত করা হয়। পরের অর্থ গোলাকৃতি কাঠখণ্ডটিকে বলা হয় পটরী। লাউরের ওপর
একটি কাঠের তরুনীর আচ্ছাদন লাগানো হয়। তরুণীর আকৃতিও ঈষৎ গোলাকার। লাউরের নিম্নাংশে একটি
হাজেরা লেংকট লাগানো হয়। অবলীর ওপর একটি কাঠের যা হাড়ের তৈরি সোয়ারী স্থাপন করা হয়। তানপুরার
মাথার দিকে দুইটি তারগহন পটরীর সঙ্গে যুক্ত থাকে। দক্ষের দুইপাশে পটরীর মাথার দিকে দুইটি কাঠের গোল
বয়না লাগানো হয়। বরলাতে তার আবদ্ধ থাকে। তানপুরাতে সাধারণত চারটি তার ব্যবহৃত হয়। সুর
মেলানোর জন্য প্রতিটি ভারে মেনকা সংযোজন করা হয়।
এটি একটি প্রাচীন লোক বাদ্যযন্ত্র। শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং ভারতেই এই বস্তুটি প্রচলিত। এর আকৃতি
অনেকটা মৃদঙ্গ বা পাশওয়াজের মতো। তবে খোলটি কাঠের না মাটির তৈরি। তাই এর আওয়াজ আলাদা।
খোলের উত্তর দিকের মুখ দুটো পাখখরাজের চেরে কিছুটা খাটো। মোচাকৃতি লম্বা গোলের উত্তর মুখে চামড়ার
ছাউনি থাকে এবং ছাউনির মাঝখানে গানের ভাগ্নি লাগানো হয়। গোলের ডানমুখ ছোটো এবং বারাসুখ
অপেক্ষাকৃষ্ণ বড়ো। ফিতার সাহায্যে গলায় ঝুলিয়ে অথবা মাটিতে রেখে খালি হাতে বাজানো হয়। কীর্তন
মনিপুরী নৃত্যের সঙ্গে খোগ বাজানো হয়। এছাড়াও রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীতেও শ্রীখোল ব্যবহৃত হয়।
চিত্রা গ্রীখোল
বাংলা ঢোল
বাংলা ঢোল বাংলার নিজস্ব বাদ্য। নলাকৃতি দুইমুখো ভালবাদ্য কে বলা হয় ঢোল। এর উভয় পায়েই আছে
ছাউনী। বাদ্যটির বৈশিষ্ট্য হলো যে- এর চামড়ার ছাউনীতে কালো গাব নেই। সাধারণভাবে দড়ির সাহায্যে
বাদ্যটি পলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সভায়মান অবস্থায় এই ঢোল বাজানো হয়। এক হাতে ক্ষুদ্র কাঠির সাহায্যে
অন্য হাতের আঙ্গুল যারা ঢোলের ছাউনীতে আঘাত করা হয়। অনেক সময় তুলিয়া দুই হাতেই কাঠি নিয়ে।
চোলের একদিকে ছাউনীতে আঘাত করে। বাংলার বিভিন্ন উৎসবে এই লোকবাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হয়ে থাকে।
অনুশীলনী
রচনামূলক প্রশ্ন
১। সংক্ষেপে বাংলাগানের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা কর।
২। লোকসংগীতের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য লেখ।
৩। বীণা কী জাতীয় বাদ্যযন্ত্র? বীণার বর্ণনা দাও।
৪। চিত্রসহ তানপুরার বর্ণনা দাও।
৫। শ্রীখোল-এর বর্ণনা দাও।
৬। বাংলা ঢোলের সচিত্র পরিচিতি লেখ।
৭। লালন শাহের জীবন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ।
৮। লালনের জীবনে সিরাজ শাহের অবদান মূল্যায়ন কর।
৯। বাংলাগানে লালনগীতির গুরুত্ব কতখানি? ব্যাখ্যা কর।
১০। লালনের ছেউড়িয়া জীবনের বিশদ বিবরণ দাও।
১১। লালনের গানের মূল ভাবগুলো বুঝিয়ে লেখ।
১২। বাংলাগানে রবীন্দ্রনাথের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত লেখ।
১৩। রবীন্দ্রনাথ কীভাবে সংগীতের শিক্ষা লাভ করেছেন লেখ।
১৪। রবীন্দ্রসংগীতের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা কর।
১৫। রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সংস্কৃতি ধারা কীভাবে প্রবর্তন করেন লেখ।
১৬। হাছন রাজার জীবনী সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ।
১৭। বাংলাগানের ক্ষেত্রে হাছন রাজার অবদান আলোচনা কর।
১৮। উদাহরণসহ হাছন রাজার গানের ধারাগুলোর মূলভাব ব্যক্ত কর ।
১৯। ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ-র সংগীত জীবন আলোচনা কর।
২০। ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ-র গায়ন বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
২১। সংগীতের প্রচার ও প্রসারে ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ-র অবদান লেখ।
২২। আব্দুল করিম খাঁ বিভিন্ন সময়ে যেসব উপহার ও সম্মান পান সেসব সম্বন্ধে বর্ণনা কর।
২৩। নজরুলের শৈশব জীবন সম্পর্কে লেখ।
২৪। নজরুলের জীবনী বিস্তারিতভাবে আলোচনা কর।
২৫। নজরুলের সংগীত জীবন সম্পর্কে লেখ এবং বাংলাগানে তাঁর অবদান মূল্যায়ন কর।
২৬। বাংলা সাহিত্যে নজরুলের অবদান লেখ।
২৭। রামনিধি ও টপ্পা গান সম্পর্কে আলোচনা কর।
২৮। তানসেনের জীবনী আলোচনা কর।
২৯। কমল দাশগুপ্ত সম্পর্কে যা জানো লেখ।
সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্ন
১। লালন শাহ করে জন্মগ্রহণ করেন। তার বংশ পরিচয় দাও।
২। লালনের শৈশবকাল কীভাবে কাটে?
৩। লালন কখন গুটি বসন্তে আক্রান্ত হ
৪। বসন্ত রোগে আক্রান্ত লালন কীভাবে আরোগ্য লাভ করেন?
৫। মলম কারিগর কেন তার বসতবাড়ি ও জায়গাজমি লালনকে লিখে দিয়েছিলেন?
৬। চটকা গান কী?
৭। গম্ভীরা গান সম্পর্কে সংক্ষেপে যা জানো লেখ।
৮। আলকাপ গান সম্পর্কে সংক্ষেপে যা জানো লেখ।
৯। উদাহরণসহ বিয়ের গানের বর্ণনা দাও।
১০। ভাদু গান কী?
১১। লালন কীভাবে সংগীত রচনা করতেন এবং কীভাবে তা সংরক্ষিত হতো?
১২। রবীন্দ্রনাথ লালনের মূল্যায়ন করেছিলেন কীভাবে?
১৩। রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি গীতিনাট্য এবং নৃত্যনাট্যের নাম লেখ।
১৪। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট তালগুলোর নাম লেখ।
১৫। রবীন্দ্রনাথের সংগীত শিক্ষা গুরুদের নাম উল্লেখ কর।
১৬। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গানের কোনো যোগ আছে কী?
১৭। রবীন্দ্রনাথের গানে কত ধরনের সুর ব্যবহৃত হয়েছে?
১৮। হাছন রাজা কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
১৯। হাছন রাজা স্রষ্টাকে তাঁর গানে কী বলে অভিহিত করেছেন?
২০। হাছন রাজা রচিত গানের সংখ্যা কত? কোন গ্রন্থে গানগুলো প্রকাশিত হয়?
২১। হাছন রাজা কীভাবে গান রচনা করতেন?
২২। হাছন রাজার বংশধরদের মধ্যে কে কে গান লিখতেন?
২৩। 'হাছন রাজার সৌখিন বাহার' গ্রন্থটিতে কী কী বিষয় স্থান পেয়েছে?
২৪। ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ শৈশবে যেসব বাদ্যযন্ত্র বাদনে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন সেগুলোর নাম লেখ।
২৫। ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ-র শিষ্যদের নাম লেখ।
২৬। লেটো গান কী?
২৭। নজরুলের পাঁচটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।
২৮। নজরুল কী কী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন
২৯। নজরুলের কয়েকজন সংগীত গুরুর নাম লেখ।
৩০। নজরুল সৃষ্ট পাঁচটি রাগের নাম লেখ।
৩১। নজরুল সৃষ্ট পাঁচটি তালের নাম লেখ।
৩২। নজরুল কত সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং কত সালে তাঁর বিদ্রোহী' কবিতা প্রকাশিত হয়?
৩৩। কী অপরাধে এবং কত সালে নজরুলকে কারাগারে পাঠানো হয়?
৩৪। নজরুল কত সালে গ্রামোফোন কোম্পানি যোগ দেন এবং তাঁর গানের সংখ্যা কত?
৩৫। কবিগান কী?
৩৬। ব্রহ্মসংগীত সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
আরও দেখুন...