বিজয়ের আলোয় সুন্দর আগামী

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - শিল্প ও সংস্কৃতি - | NCTB BOOK

১৯৭১ সাল। হেমন্তের বিদায় বেলা। মুক্তিবাহিনী বিপুল বিক্রমে এগিয়ে চলেছে বিজয়ের পথে। এদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে বেছে নেয় ষড়যন্ত্রের নতুন ঘৃণ্য পথ। বাঙালি ও তাদের স্বপ্নের বাংলা যেন কখনোই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে তার জন্যই তারা বেছে নেয় এক বিষাংসী পথ। শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পীসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের তালিকা তৈরি করে তাঁদের নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৪ই ডিসেম্বর এক অপূরণীয় ক্ষতিসাধিত হয় বাংলাদেশের। সেই শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির সম্মানে ঢাকার রায়েরবাজারে নির্মিত হয়েছে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। ১৪ই ডিসেম্বর আমাদের দেশে পালিত হয় 'শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস'।

সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্মরণে আমরা যা করতে পারি-

  • বুদ্ধিজীবী দিবস সম্পর্কে অথবা যে কোনো শহীদ বুদ্ধিজীবীর কাজ সম্পর্কে জেনে তা উপস্থাপনের জন্য তৈরি করব।

জয় বাংলা বাংলার জয়  জয় বাংলা বাংলার জয় 

হবে হবে হবে নিশ্চয়

 কোটি প্রাণ একসাথে জেগেছে অন্ধরাতে

 নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময়

- গাজী মাজহারুল আনোয়ার 

 

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবী, শিশু কিশোর ও নারীর আত্মত্যাগ- আত্মদানের ভেতর দিয়ে অর্জিত হয় আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত বিজয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। এই দিনটিকে আমরা অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের সঙ্গে পালন করি আমাদের মহান বিজয় দিবস হিসেবে। প্রতিবছর এই দিনে আমরা শপথ করি এক সুন্দর নতুন আগামী গড়ার।

শিল্পী নিতুন কুন্ডু ও শিল্পী প্রাণেশ কুমার মন্ডলের আঁকা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন দুটি পোষ্টার।

দেখতে দেখতে আমরা বছরের একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। পুরো বছর জুড়ে আমরা বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এবার সময় হয়েছে এই সমস্ত অভিজ্ঞতার আলোকে করা আমাদের কাজগুলোকে একত্র করার। এ পর্যায়ে আসন্ন মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করব। আমরা এই প্রদর্শনীর নাম দেব 'আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে।

প্রদর্শনী আয়োজনের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম সারা বছরজুড়ে করা আমাদের কাজগুলোকে একত্র করব এবং দুটি ভাগে ভাগ করে নেব। একটি হলো দৃশ্যশিল্প বিষয়ক এবং অন্যটি হলো পরিবেশনাশিল্প বিষয়ক। এই দুটি বিষয়েরই যা যা কাজ আমরা এ পর্যন্ত করেছি, সেসব কাজ নিয়ে এবং প্রদর্শনীর বিভিন্ন দিক ও উপায় নিয়ে শিক্ষকের সহায়তায় একটি পরিকল্পনা তৈরি করব।

 

দৃশ্যশিল্পের যে যে বিষয় আমরা চাইলে প্রদর্শনীতে রাখতে পারি তার একটি সম্ভাব্য তালিকা হলো :

  • বন্ধুখাতা 
  • বন্ধুখাতার বাইরে করা বিভিন্ন অভিজ্ঞতাভিত্তিক কাজ, যেমন বড়ো কোনো কোনার চিত্র, মানচিত্র, পোষ্টার, খুঁজে পাওয়া জিনিস বা মাটি কিংবা প্রাকৃতিক কোনো উপাদান দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পতন
  •  সবুজের সপ্ন গামা'তে সহপাঠীর দেওয়া সহ বা চিঠিও সেই চারা গাছটি।
  •  নির্দিষ্ট পাঠের ভিত্তিতে সংগৃহীত যেকোনো ছবি বা বন্ধু 

 

অন্যদিকে উপস্থাপনশিল্পের যে যে বিষয় আমরা চাইলে প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করতে পারি তার একটি সম্ভাব্য তালিকা হল :

  • বছর জুড়ে যে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে গেছি, তার মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো গান, যেমন দেশের গান, প্রকৃতির গান, লোকসংগীত ইত্যাদি।
  •  পানভিত্তিক উল্লেখযোগ্য কোনো কবিতা আবৃত্তি
  •  পানভিত্তিক উল্লেখযোগ্য কোনো নাচ।
  •  পাপেট শো বা পুতুল নাচ পাঁচ আঙুলের লুবনা
  • শরৎ আসে মেঘের ভেলায় পাঠের পদ্যে রচিত ছোট নাটকটি।
  •  যেকোনো নির্দিষ্ট পাঠের ভিত্তিতে সংগৃহীত ভিডিও চিত্র বা চলচ্চিত্র।
  •  এছাড়াও পান সম্বন্ধীয় বিবিধ কিছু নুেশাসিত ও উপস্থাপনশির উভয়ক্ষেত্রে।

প্রদর্শনীটি আমরা শ্রেণিকক্ষের ভেতরে কিংবা বাইরেও আয়োজন করতে পারি। বন্ধুখাতাটিসহ অন্যান্য সব শিল্পকর্ম ও উপস্থাপনা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আমরা প্রথমে শিক্ষকের কাছে কাজগুলো জমা দেব ও উপস্থাপনের কথা জানাব এবং সেখান থেকে তিনি যেগুলো বাছাই করে দেবেন শুধু সেগুলো নিয়ে আমরা প্রদর্শনীর আয়োজন করব তাঁরই সহায়তা নিয়ে।

শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে অর্জিত সকল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চর্চা করব।

 

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Promotion