কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে গতিশীল ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে সে শতির সৃষ্টি হয় তাকে বিদ্যুৎ বা Rlectricity বলা হয়। অর্থাৎ বিদ্যুৎ এক প্রকার অদৃশ্য শক্তি বা আলো, তাপ, শব্দ, গতি উৎপন্ন করে এবং অসংখ্য বা কাজ সমাধান করে। বিদ্যুৎ দুই প্রকার ।
স্থির বিদ্যুৎ (Static Electricity)
এই বিদ্যুৎ অনাস্থানেই অবস্থান করে, কোন প্রকার অবস্থান পরিবর্তন করে না বলেই এর নাম দেয়া হয়েছে স্থির বিদ্যুৎ । যেমন- স্বর্ণ বিদ্যুৎ (Frictional Electricity)
চল বিদ্যুৎ(Current Electricity)
এই শ্রেণীর বিদ্যুৎ একস্থান হতে অন্যস্থানে চলাচল করতে পারে বিধায় এর নাম দেয়া হয়েছে চল বিদ্যুৎ । তেল, গ্যাস, কয়লা পুড়িয়ে এবং পানির স্রোতকে কাজে লাগিয়ে জেনারেটরকে চালনা করে আমরা এই বিদ্যুৎপেয়ে থাকি।
বৈদ্যুতিক কারেন্ট ও এর প্রবাহের দিক (Electric Current and Direction of Current Flow) আমরা জানি, বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক ইলেকট্রন প্রবাহের বিপরীত দিকে বলে ধরা হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রন যেদিকে প্রবাহিত হবে বিদ্যুৎ তার বিপরীত দিকে প্রবাহিত হবে। পাশের চিত্র ব্যাটারীর Negative Positive প্রাপ্ত হতে তার নিরে যদি কোন লোডে সাপ্লাই দেয়া হয় তবে ইলেকট্রন ব্যাটারীর নেগেটিভ প্রাপ্ত হতে তারের মধ্য দিয়ে পজেটিভ প্রান্তের দিকে ধাবিত হবে । ফলে ব্যাটারীর পজেটিভ প্রান্ত হতে নেগেটিভ প্রান্তের দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে থাকবে।
কারেন্ট (Current)
কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের হারকে কারেন্ট বলে। এটি পরিমাপের একক অ্যাম্পিয়ার। কারেন্টকে ইংরেজী অক্ষর 'T' দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। কারেন্ট পরিমাপক যন্ত্রের নাম অ্যামিটার।
কারেন্টের প্রকারভেদ
প্রবাহ অনুসারে বৈদ্যুতিক কারেন্টকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় -
ডাইরেক্ট কারেন্ট (Direct Current)
যে কারেন্ট সবসময় একই দিকে প্রবাহিত হয় এবং যার মান নির্দিষ্ট থাকে তাকে ডাইরেক্ট কারেন্ট বা D C বলে। এই কারেন্ট সব সময় সরল রেখার মত প্রবাহিত হয়। এটির চিহ্ন (-)। যেমন- ব্যাটারীর কারেন্ট।
অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current)
যে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় নির্দিষ্ট নিয়মমত দিক পরিবর্তন করে এবং যার মান প্রতি মুহুর্তে পরিবর্তনশীল থাকে তাকে অল্টারনেটিং কারেন্ট বা AC বলে। এই কারেন্ট সব সমর ঢেউয়ের মত (Wave Shape) করে চলে। অল্টারনেটর হতে Alternating Current পাওয়া যায়। বড় বড় এ.সি জেনারেটরগুলোকে অল্টারনেটর বলা হয়। অল্টারনেটিং কারেন্টের চিহ্ন (~~)।
ইউনিট রূপান্তর (Unit Conversion)
১ মিলি অ্যাম্পিয়ার (mA) = ০.০০১ বা ১০-৩ অ্যাম্পিয়ার
১ মাইক্রো অ্যাম্পিয়ার (A) =০.০০০০০১ বা ১০-৬ অ্যাম্পিয়ার
১ কিলো অ্যাম্পিয়ার (KA) = ১০০০ বা ১০৩ অ্যাম্পিয়ার
১ মেগা অ্যাম্পিয়ার (MA) = ১০০০০০০ বা ১০৬ অ্যাম্পিয়ার
ভোল্টেজ (Voltage) বা বৈদ্যুতিক চাপ (Electric Pressure)
কোন পরিবাহীর পরমানুগুলোর ইলেকট্রনসমূহকে স্থানচ্যূত করতে যে বল বা চাপের প্রয়োজন হয় তাকে ভোল্টেজ (Voltage) বা বিদ্যুৎ চালক বল (IMF) বলে । অর্থাৎ বৈদ্যুতিক চাপকে ভোল্টেজ বলে। ভোল্টেজকে ইংরেজী অক্ষর 'V দিয়ে প্রকাশ করা হয়। ভোল্টেজ পরিমাপের একক হলো 'ভোট' এবং ভোল্টেজ পরিমাপের যন্ত্রটিকে বলা হয় ভোল্ট মিটার।
ভোল্টেজ ইউনিট (Voltage Unit)
১ (কিলো ভোল্ট) KV=১০০০V
১ (মিলি ভোল্ট) mV = ১ / ১০০০ V
১ (মাইক্রোভোল্ট) µ V=১/১০০০০০০ V
১ ভোল্ট = ১/১০০০ KV=১০০০mV
রেজিস্ট্যান (Resistance)
কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে বৈদ্যুতিক কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় ঐ পরিবাহী পদার্থের যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে কারেন্ট প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় তাকে রেজিষ্ট্যান্স বলে। রেজিস্ট্যালকে ইংরেজী অক্ষর 'R' দিৱে প্রকাশ করা হয়। এটির একক হল ওহম এবং রেজিস্ট্যাল পরিমাপের যন্ত্রটিকে বলে ওহম মিটার।
রেজিস্ট্যান্স দুই প্রকার -
Variable Resistance
যে রেজিস্ট্যান্সের মান পরিবর্তনশীল বা যে রেজিস্ট্যান্সের মান পরিবর্তন করা যায় তাকে Variable Resistance বলে। রেডিও, টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডার ইত্যাদির অনিয়ম কন্ট্রোলের জন্য এই ধরণের রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়।
Fixed Resistance
যে রেজিস্ট্যান্সের মান সব সময় স্থির থাকে তাকে ফিক্সড রেজিস্টর বলে। ইলেকট্রনিক্সের সকল প্রকার সার্কিটে নির্দিষ্ট মাত্রায় ভোল্টেজ ড্রপ করানোই এর কাজ ।
ক্যাপাসিট্যান্স (Capacitance)
ক্যাপাসিটরের চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাকে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স বলে। ক্যাপাসিট্যান্সের একক ফ্যারাড । একে ইংরেজি অক্ষর F দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।
আরও দেখুন...