পৃথিবীতে ১০৫টি মৌলিক পদার্থ এবং অগণিত যৌগিক পদার্থ রয়েছে। এর মধ্যে সকল ধাতব পদার্থ কম বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী। কোন কোন পদার্থে খুব বেশি এবং কোন কোন পদার্থে অতি সামান্য পরিমান বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। আবার এমন কিছু পদার্থ আছে যার মাধ্যমে আদৌ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে না।
পরিবাহী (Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে তাকে পরিবাহী বা Conductor বলে ।
পরিবাহী ধাতুর নিচে উল্লেখিত গুণাগুণ থাকা প্রয়োজন-
রেজিষ্ট্যান্স বা বাধার দিক থেকে পরিবাহী তিন প্রকার-
সুপরিবাহী (Good Conductor)
যে সব পরিবাহীর ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ সহজে চলাচল করতে পারে, কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হয় না তাকে সুপরিবাহী (Good Conductor) বলে। যেমন- সোনা, রূপা, তামা, দস্তা, পারদ ইত্যাদি।
অর্ধ-পরিবাহী (Semi - Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ সহজে চলাচল করতে পারে না, কিছুটা বাধার সম্মুখীন হয়, তাকে অর্ধ- পরিবাহী বা Semi-Conductor বলে। অর্থাৎ এটি পুরোপুরি পরিবাহীও নয় আবার পুরোপুরি অপরিবাহীও নয়। যেমন- কার্বন, সিলিকন, জার্মেনিয়াম ইত্যাদি (আপেক্ষিক রেজিষ্ট্যান্স-১০-৪ ওহম) ।
অপরিবাহী (Insulator or Non-Conductor)
যে সব পদার্থের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন একেবারেই চলাচল করতে পারে না তাকে অপরিবাহী বা Insulator বলে। যেমন- রাবার, প্লাষ্টিক, চীনামাটি, ফাইবার, এ্যাবোনাইট, কাঁচ ইত্যাদি (আপেক্ষিক রেজিষ্ট্যান্স-১০-৪ ওহম) ।
পরিবাহী পদার্থের প্রয়োজনীয়তা
বৈদ্যুতিক শক্তি বা এনার্জি বিতরণের ক্ষেত্রে পরিবাহীর ভূমিকা অপরিসীম। পরিবাহী পদার্থের তৈরি তার (Wire) ও ক্যাবল সাধারণত বিদ্যুৎ পরিবাহী মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরিবাহীর আয়তন এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল মূলত প্রবাহিত বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করতে হয়।
অপরিবাহী পদার্থের প্রয়োজনীয়তা
বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থায় দু'টি বিপরীত তড়িৎ চার্জ পরিবাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্ষরণ হতে পারে । আবার পরিবাহক ও মাটির মধ্যেও বিদ্যুৎ ক্ষরণ হতে পারে । এ বিদ্যুৎ ক্ষরণ বন্ধ করার জন্য অপরিবাহী পদার্থ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় । যেমন-ক্যাবলের উপর ইন্সুলেশন, বিদ্যুৎ লাইনে ব্যবহৃত কাঁচের বা চীনামাটির তৈরি পোরসেলিন ইত্যাদি। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামে উন্নতমানের ইন্সুলেশন ব্যবহার করা আইনগত বিধান ।
পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের মধ্যকার পার্থক্য
পরিবাহী | অপরিবাহী |
পরিবাহীর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হয়। | অপরিবাহীর মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা পায় বা বিদ্যুৎপ্রবাহিত হতে পারে না । |
পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স খুবই কম। | অপরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স খুবই বেশি। |
পরিবাহী মূলত বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। | অপরিবাহী মূলত বিদ্যুৎ প্রবাহের বাধা হিসেবে কাজ করে। |
বিদ্যুৎ পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নিচে তালিকা আকারে দেখান হল-
বিদ্যুৎ সুপরিবাহী পদার্থের তালিকা
১. সোনা | ৫. লোহা | ৯. ব্রোঞ্জ | ১৩. ক্যাডমিয়াম | ১৭. ফসফরাস |
২. রুপা | ৬. দস্তা | ১০. স্টিল | ১৪. ক্রোমিয়াম | ১৮. সিলভার কপার সংকর |
৩. তামা | ৭. নিকেল | ১১. রাং | ১৫. ম্যাঙ্গানিজ | ১৯. সিসা |
৪. অ্যালুমিনিয়াম | ৮. পিতল | ১২. টাংস্টেন | ১৬. প্লাটিনয়েড | ২০. পারদ প্রভৃতি |
বিদ্যুৎ অর্ধ-পরিবাহী পদার্থের তালিকা
বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থের তালিকা
পরিবাহী, অর্ধ-পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের ব্যবহার
আরও দেখুন...