১। পরীক্ষার নাম বিমের সুতা ঝাঁপের মধ্যে 'ব' গাঁথা।
ভূমিকা
বয়নের সময় ঝাঁপগুলি উপরে নিচে উঠানামা করে। প্রতিটি ঝাঁপে সকল 'ব' এর মাঝখানে একটি করে ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রসমূহকে 'ব' চক্ষু বলে। প্রতিটি 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে একটি করে সুতা প্রবেশ করানো হয়। 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে টানা সুতা প্রবেশ করার পদ্ধতিকে ড্রাফটিং বলে। ড্রাফটের মাধ্যমে ঝাঁপের সংখ্যা এবং টানা সুতাকে কোন ঝাঁপের মধ্যে ড্রাফটিং করা হবে তা নির্দিষ্ট করার উপর উৎপাদিত কাপড়ের ডিজাইন নির্ভর করে ।
সংজ্ঞা
'ব' গাথা বিম করা শেষ হলে টানা সুতার মাথাগুলো টেনে বের করে ডিজাইন অনুযায়ী একটি একটি করে বিমের সুতা ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ড্রইং হুকের সাহায্যে টানতে হয়। 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ওয়ার্প সুতাকে টানার পদ্ধতিকে 'ব' গাঁথা বা ড্রাফটিং বলে ।
'ব' গাঁথার পদ্ধতি
প্লেইন উইভের ক্ষেত্রে সাধারণত দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় । টুইল উইভ এর ক্ষুদ্রতম ডিজাইন ৩x৩ অর্থাৎ ন্যূনতম ৩টি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয়। নিমে ৩ ঝাঁপের টুইল ডিজাইন তৈরির জন্য পদ্ধতিসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো ।
৩x৩ টুইল ডিজাইনের জন্য ৩টি ঝাঁপের প্রয়োজন। প্রতিটি ঝাঁপের জন্য আলাদা আলাদা ট্রেডেল-এর প্রয়োজন । ৩টি ঝাঁপ বা ৩টি পিকের জন্য ৩টি ট্রেডেলের প্রয়োজন ।
প্রতি পিকে ২টি করে টানা সুতা উপরে ও ১টি করে টানা সুতা নিচে রাখতে হলে ঝাঁপ অর্থাৎ হিল্ড মাউন্টিং করার জন্য প্রথম ঝাঁপটি প্রথম ট্রেডেলের সাথে বাঁধতে হবে এবং ডিজাইনের প্রথম সুতাটি প্রথম ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর সাথে গাঁথতে হবে । অনুরূপভাবে দ্বিতীয় ঝাঁপটি দ্বিতীয় ট্রেডেলের সাথে ও দ্বিতীয় সুতাটি দ্বিতীয় ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর সাথে ড্রাফটিং করতে হবে । অনুরূপভাবে তৃতীয় ঝাঁপটি তৃতীয় ট্রেডেলের সাথে বাঁধতে হবে। আর বুননের সময় ২য় ঝাঁপটি প্রথম পিকে তৃতীয় ঝাঁপটি দ্বিতীয় পিকে এবং প্রথম ঝাঁপটি প্রথম পিকে পা দিয়ে চেপে ধরতে হবে ।
সতর্কতা
০ ডিজাইনকে সঠিক রাখার জন্য সঠিকভাবে ড্রাফটিং করতে হবে ।
০ ট্রেডেলকে চেপে ধরার সময় ভুল হলে ডিজাইন পরিবর্তন হয়ে যাবে।
০ হস্তচালিত গতি বাড়ানোর জন্য তাঁতির কাজে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ।
২। পরীক্ষার নাম : শানার মধ্যে সুতা গাথা অর্থাৎ শানা গাঁথা ।
ভূমিকা
টানার সেডের মধ্যে পড়েন সুতা প্রবেশের পর উক্ত সুতাকে কাপড়ের পৃষ্ঠে লাগিয়ে দেওয়ার জন্য যে বস্তুর সাহায্য নেওয়া হয় তাই শানা বা রিড। শানার ডেন্ট স্পিলিট এর ঘনত্বের উপরই কাপরের ইঞ্চি প্রতি টানা সুতার সংখ্যা নির্ভর করে। সাধারণত প্রতি জোড়া ডেন্ট এর ফাঁক দিয়ে দুইটি করে সুভা টানা হয়। বুননের সময় পড়েন সুতাকে উৎপন্ন কাপড়ের ফেল অফ দি ক্লথের পৃষ্ঠে মিশিয়ে দেওয়ার জন্যই এই পদ্ধতির প্রয়োজন । কাপড়ের গঠন সঠিক রাখার লক্ষ্যে সুতাকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য ডেন্টিং ভূমিকা পালন করে থাকে। অসম ডেন্টিং কাপড়ের ডিজাইনকে প্রভাবিত করে ।
সংজ্ঞা
ডেন্টিং যে পদ্ধতিতে শানার প্রতিটি ডেন্ট এর মধ্য দিয়ে টানা সুতাকে ডিজাইন অনুযায়ী ড্রইং হুকের সাহায্যে টেনে নেওয়া হয় তাকে ডেন্টিং বা শালা গাঁথা বলে ।
শানা গাঁথা পদ্ধতি-
ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ওয়ার্থ সুতা প্রবেশ করার পর শানা বা রিডের ডেন্ট / স্পিলিট এর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে টেনে নিতে হয় । কটন উইভিং এর ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতি ডেন্টের মধ্য দিয়ে দুইটি করে সুতা টানা হয়। শানার দুই পার্শ্বে দুইজন শ্রমিক বসে একপাশ থেকে একজন দুইটি সুতা সনাক্ত করে অপর পার্শ্বের শ্রমিকের ডেন্টের মধ্যে প্রবেশ করানো ড্রইং হুকের সাথে লাগিয়ে দেয় এবং দ্বিতীয় শ্রমিক ডেন্টের ফাঁকের মধ্য দিয়ে সুতা টেনে বের করে আনেন। এভাবে পুরো টানা সুতাকে ডেন্টিং করা হয় ।
সতর্কতা
০ ডেন্টিং করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে প্রতিটি টানা সুতা সমান্তরালভাবে থাকে ।
০ কখনও অসম ডেন্টিং করা উচিত নয় ।
উপসংহার / মন্তব্য
৩। পরীক্ষার নাম : তাঁতের মধ্যে উইভারস্ বিম স্থাপন ।
ভূমিকা
প্রস্তুতকৃত উইভারস্ বিম 'ব' গাঁথা ও শানা পাঁথা সমাপ্ত হওয়ার পর তাঁতের মধ্যে স্থাপন করতে হয়। তাঁতে বিম, শানা ও ঝাঁপ স্থাপন করাকে মাউন্টিংও বলা হয়। তাঁতের পেছনে বিম স্ট্যান্ডে বিম স্থাপন, ঝাঁপ ও শানা মাউন্টিং করার পর তাঁত কাপড় তৈরির জন্য প্রস্তুত হয়।
সংজ্ঞা
তাঁতে স্থাপনের পূর্বে টানা সুতা ওয়াইল্ডিং, ওয়ার্সিং, বিমিং, সাইজিং ইত্যাদি সম্পন্ন হওয়ার পর কাপড় তৈরির জন্য সমান্তরালভাবে জড়ানো বিমকেই উইভারস্ বিম বলা হয় ।
তাঁতের মধ্যে উইভারস্ বিন স্থাপন পদ্ধতি
হস্তচালিত তাঁতে বিম স্থাপন করার পদ্ধতির বর্ণনা নিম্নে দেওয়া হলো-
প্রস্তুতকৃত বিম শানা ও ব গাঁথা অবস্থায় তুলে এনে তাঁতের পিছনে বিম স্ট্যান্ডে রাখা হয়। অতপর শানাকে দক্ষি এর সাথে শানার টুপি বা রিড ক্যাপ দ্বারা শক্ত করে আটকানো হয়। ঝাঁপগুলিও টপ রোলারের সাথে নির্দিষ্ট নিয়মে সঠিকভাবে বাঁধা হয় । রিড এর সাথে বাঁধা টানা সুতা খুলে খানিকটা আচড়িয়ে আরও কিছু সুতা বিম থেকে টেনে নিয়ে হাতের সাহায্যে টানা সুতাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যা ক্লথ বিমে প্রস্থ বরাবর শক্ত করে পেছিয়ে বাঁধা হয়। এরপর সুতা দ্বারা অর্থাৎ লেট অফ ও কাপড় গুটানো গতি অর্থাৎ টেক আপ এর সমন্বয় করা হয়। এ অবস্থায় তাঁত কাপড় তৈরির জন্য প্রস্তুত হয় ।
সতর্কতা
০ লক্ষ রাখতে হবে টানা সুতা যেন পরস্পর সমান্তরালে থাকে । কখনও ক্রস বা কোনাকুনি না হয়ে যায় ।
০ টপ রোলারের সহিত ঝাঁপসমূহ ডিজাইন, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং স্থানের সাথে সমন্বয় করে বাঁধতে হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
৪। পরীক্ষার নাম : তাঁতে ঝাঁপ ও শানা বাঁধা
ভূমিকা
প্লেইন উইডের জন্য মাত্র দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় যা বাঁধা অত্যন্ত সহজ। কিন্তু টুইল বা অন্যান্য উইভের জন্য ঝাঁপ বাঁধা তুলনামূলক কঠিন। কারণ- ক্ষুদ্রতম টুইল ডিজাইনের জন্য ৩টি ঝাঁপের প্রয়োজন। রিড বা শানা স্নে অর্থাৎ দক্তির উপর রিড ক্যাপ দ্বারা আটকিয়ে বসানো হয়।
তাঁতে ঝাঁপ ও শানা বাঁধা পদ্ধতি
প্লেইন উইভের ক্ষেত্রে যেহেতু দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় কাজেই ঝাঁপ দুইটি টপ রোলারের দুই প্রান্তে চামড়ার স্ট্র্যাপ দ্বারা বাঁধা হয়। টপ রোলার এমনভাবে সামনে পিছনে ঘুরতে থাকে যাতে একটি ঝাঁপ উপরে এবং অপরটি ঝাঁপ নিচে নামবে। শানা বা রিড স্লে এর উপর স্থাপন করে রিড ক্যাপের মাধ্যমে নাট বোল্ট দ্বারা শক্তভাবে সে বা দক্তির সাথে আটকিয়ে রাখা হয়। পিকিং এর সময় স্লে সহ রিড বিটআপ দেয়।
সতর্কতা
০ রিড ক্যাপের সাথে আটকানোর সময় সতর্কতার সাথে আটকাতে হবে যাতে উৎপাদিত কাপড়ে রিড মার্ক সৃষ্টি না হয় ।
০ টপ রোলার বাঁধার সময় ট্রেডেলের সাথে সমন্বয় করে বাঁধতে হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
৫ । পরীক্ষার নাম : তাঁতের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে স্থাপন ।
ভূমিকা
হস্তচালিত অথবা শক্তিচালিত উভয় তাঁতই চালনা করার পূর্বে তাঁতের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং প্রতিটি অংশ সঠিকভাবে স্থাপন করতে হবে। যেমন- শাটেল বক্সে আছে কিনা, শাটেল এর মধ্যে সুতাপূর্ণ পার্ন ঠিক আছে কিনা, পিকার, পিকিং, স্ট্যাপ, ঝাঁপের পজিশন ইত্যাদি যথাযথ থাকার পরই তাঁত চালনা করা উচিত।
তাঁতের বিভিন্ন অংশ
o শাটেল
০ পিকার
০ চেক স্ট্র্যাপ এসেম্বলি
০ বাফার
০ সাটেল বক্স
o বক্স সুয়েল
0 ঝাঁপ
০ রিড
০ টেম্পল
০ দক্তি
০ লেট অফ
O টেক আপ
০ ট্যাপেট / ওয়াইপার ইত্যাদি
তাঁতের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে স্থাপন
ত্রুটিমুক্ত সঠিক উৎপাদন পেতে হলে এজন অভিজ্ঞ তাঁতি তাঁত চালনার পূর্বে তাঁতের উপরোক্ত সমস্ত অংশ যথাযথভাবে পরীক্ষা করে সঠিকভাবে স্থাপন করা আছে কিনা তা দেখে নেন। যদি কোন অংশ সঠিক না থাকে তা তাৎক্ষণাৎ ঠিক করে তবে তাঁত চালু করতে হবে। এখন তাঁত কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হলো।
সতর্কতা -
০ তাঁতের প্রতিটি অংশ সঠিক না হলে তাঁত চালনা করা উচিত নয় ।
০ তাঁত চালনার পূর্বে অবশ্যই সব অংশ পরীক্ষা করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য -
৬। পরীক্ষার নাম : তাঁতের বিভিন্ন অংশ অংকন ।
ভূমিকা
একটি তাঁতের বিভিন্ন অংশ অংকনের মাধ্যমে উক্ত তাঁতের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে সহজেই পরিচিতি লাভ করা সম্ভব ।
তাঁতের বিভিন্ন অংশ -
o শাটেল
০ শাটেল বক্স
o পিকার
০ ওয়ার্স বিম
o পা
০ ঝাঁপ বা হিল্ড শ্যাফট্
০ রিড বা শানা
০ টেম্পল
০ স্লে বা দক্তি ইত্যাদি
সতর্কতা ০ বারবার অংকনে ছবি নিখুঁত হয় । ০ অংকন করার জন্য কলমের বদলে পেন্সিল ও রাবার ব্যবহার করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য
৭। পরীক্ষার নাম হস্তচালিত তাঁতে কাপড় বুনন
ভূমিকা
হস্তচালিত কাপড় বুননে একজন তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। তাঁতির দক্ষতার উপরই ত্রুটিমুক্ত কাপড় উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
হস্তচালিত তাঁতে কাপড় বুনন পদ্ধতি-
কায়িক পরিশ্রমের দ্বারা একজন তাঁতি তাঁতের গতি নিয়ন্ত্রণ ও তাঁত পরিচালনা করে কাপড় উৎপাদন করে থাকেন । তাঁত চালু অথবা থেমে থাকা উভয় সময়ই তাঁতি স্লে ক্যাপ অর্থাৎ দক্তির টুপির উপর হাত রেখে থাকেন। দক্তি সামনে টেনে আনা এবং পিছনে ঠেলে সরানোর মাধ্যমে বিট আপ কার্য সম্পাদন করে থাকেন। পা দ্বারা ট্রেডেল চেপে রেখে টানা সুতার মাঝে সেড গঠন করেন এবং অন্য হাত অর্থাৎ ডান হাত দ্বারা হাতল টেনে টেনে পিকিং কার্য সম্পাদন করেন। হাতলের সাথে রশিসহ মেড়া অর্থাৎ পিকার বাঁধা থাকে যা দ্বারা সাটেল এক বক্স থেকে অন্য বক্সে আসা যাওয়া করে।
সর্বোপরি পা দ্বারা সেডিং, ডান হাত দ্বারা পিকিং ও বা হাত দ্বারা বিটিং কার্য সম্পাদন করে একজন তাঁতি কাপড় উৎপাদন করে থাকেন ।
সতর্কতা
০ হস্তচালিত তাঁতে ত্রুটিযুক্ত কাপড় বোনার জন্য একজন তাঁতির মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন ।
০ ত্রুটিমুক্ত ভালো কাপড়ের জন্য তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে ।
উপসংহার / মন্তব্য
৮ । পরীক্ষার নাম : আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতে কাপড় বুনন
ভূমিকা
যে সকল তাঁত কায়িক পরিশ্রম অর্থাৎ মানব শক্তি দ্বারা চালিত হয় তাই হস্তচালিত তাঁত । হস্তচালিত তাঁত বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। তাঁর মধ্যে আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত সবচেয়ে সহজ ও উন্নত প্রণালির । এই তাঁতের কাপড় জড়ানো এবং টানা সুতা লেট অফ করার কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয় ।
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতের বর্ণনা-
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতে দক্তির পেছনে একটি লোহার রড এর দুই প্রান্তে দুইটি হুইল থাকে যাকে ফ্লাই হুইল বলে । ফ্লাই হুইল দুইটি তাঁতের দুই প্রান্তে যুক্ত থাকার কারণে তাঁতের গতি খুব সহজ হয়ে যায় অর্থাৎ তাঁতির তাঁত চালনায় খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না ।
তাঁতি কাপড় বুননের জন্য ঝাঁপ উঠান, মাকু চালনা ও দক্তি টেনে শানা দ্বারা পিকিং আপ করে সুতা ফেল অব দ্যা ক্লথের পৃষ্ঠে বসানোর সময় পরিমাণমতো উৎপন্ন কাপড় জড়ানো ও টানা বিমের সুতা জড়ানো স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে বলে এই তাঁতকে আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত বলে।
চিত্তরঞ্জন তাঁত একটি আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত।
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতে কাপড় বুনন-
এই তাঁত লৌহ ও কাষ্ঠ নির্মিত । সাধারণ তাঁত অপেক্ষা এই তাঁতে ডবল কাজ হয়ে থাকে। এই তাঁতকে সেমি অটোমেটিক তাঁত বলা হয়। কারণ এতে টানা ছাড়া (Let off) এবং পড়েন জড়ানো (Take up) এই দুইটি কাজ মাত্র আপনা হতে এক সংগে হতে থাকে । অন্যান্য প্রক্রিয়া সাধারণ তাঁতের ন্যায়। সাধারণ তাঁতে কাপড়ের জমিন সর্বত্র সমান হয় না, কিন্তু এই তাঁতে সর্বত্র সমান হয়ে থাকে। যে কোন রকমের মোটা ও মিহি কাপড় বুনতে এটা খুবই উপযুক্ত । বর্তমানে প্রায় সর্বত্রই এই তাঁতের খুব বেশি প্রচলন । এই তাঁতই জাপানি তাঁত বলে পরিচিত ।
চিত্তরঞ্জন তাঁতে বুননকালীন দক্তি ঠেলার সংগে সংগে একসেট পিনিয়ন হুইল ইমারি রোলারের সাহায্যে কাপড় ক্লথ বিয়ে জড়ানো হয় এবং Warp beam হতে টানা প্রয়োজন মতো খুলে আসে।
উপসংহার / মন্তব্য
৯। পরীক্ষার নাম : গ্রাফ পেপার সম্পর্কে অবগত হওয়া ।
ভূমিকা
বিভিন্ন ডিজাইন কাপড়ে তোলার পূর্বে ডিজাইনটিকে সরল ও সহজবোধ্য করে বুঝানোর উদ্দেশ্যে এক প্রকার বর্গাকৃতি ঘর বিশিষ্ট কাগজে বিভিন্ন রং এর সংমিশ্রণে আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমই হলো গ্রাফ পেপার ।
গ্রাফ পেপার বিভিন্ন নামের হয়ে থাকে।
যথা-
০ ডিজাইন পেপার
০ পয়েন্ট পেপার
০ স্কোয়ার পেপার ।
সংজ্ঞা
গ্রাফ পেপার পরস্পর সমান্তরাল কতগুলো আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি দুই সেট সরলরেখা সম দূরত্বে ও সমকোণে ভেদ করে কতগুলো ছোট ছোট চৌকো ঘর সৃষ্টি করে, যে কাগজের উপর উপরোক্ত বর্গাকৃতি ঘরগুলো অংকিত হয় তাকে ছক কাগজ বা গ্রাফ পেপার (Graph paper) বলে ।
ডিজাইন তৈরির জন্য গ্রাফ পেপারের ব্যবহার
ডিজাইন করার সময় সাধারণত আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি উভয় দিকেই ইঞ্চি প্রতি ৮, ১০ অথবা ১৬ ঘরে অর্থাৎ ৮x৮, ১০×১০ বা ১৬×১৬ এর বার লাইন অথবা মোটা রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়ে থাকে, যাতে ব্যবহারের পূর্বেই ঘরগুলো সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হয় ।
পড়েন সুতাকে আড়াআড়ি ও টানা সুতাকে লম্বালম্বি এর দিকে ধরা হয় ডিজাইনারের মতানুসারে ছোট চৌকো ঘরগুলো ভরাট করে পড়েন সুতার উপরে টানা সুতা ভাসা বুঝাবে এবং চৌকো ঘরে কোন দাগাঙ্কিত না থাকলে তা টানার উপরে অর্থাৎ পড়েন ভাসা বুঝাবে । টানা ভাসা পড়েন ভাসা নিমের চিত্রের সাহায্যে বুঝানো হলো ।
০ ডিজাইন করার পূর্বে অবশ্যই রিপিটের টানা ও পড়েন সুতার সংখ্যা সনাক্ত করে নিতে হবে।
০ গ্রাফ পেপারের বার লাইন কত কত ঘরে আছে তা সনাক্ত করে ডিজাইন অংকন করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য
১০। পরীক্ষার নাম গ্রাফ পেপারের বৈশিষ্ট্য ।
ভূমিকা-
ডিজাইন পেপারর কিছুই নয় শুধু কতগুলো স্কোয়ার ঘরের কাগজ। স্কোয়ার বা চৌকো ঘরগুলো দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে একই দূরত্বে থাকে এবং লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি রেখাসমূহ পরস্পর সমকোণে ভেদ করে চলে যায়। প্রতিটি গ্রাফ পেপারেরই একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর বার লাইন দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয় যাতে সহজেই অংকিত ডিজাইনের ঘরসংখ্যা চিহ্নিত করা সহজ হয় ।
গ্রাফ পেপারের বৈশিষ্ট্য -
গ্রাফ পেপারের বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেওয়া হলো-
০ কাগজে অংকিত কতগুলো সমান্তরাল আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি সরলরেখা ।
০ প্রতিটি সমান্তরাল আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি সরলরেখা পরস্পর সম দূরত্বে ও সমকোণে ভেদ করে চৌকো ঘরের সৃষ্টি করে ।
০ প্রতিটি চৌকো ছোট ছোট ঘর বর্গাকার।
০ সনাক্তকরণের সুবিধার্থে চৌকো ঘরগুলো ৮, ১০ অথবা ১৬ ঘর এর পর পর বার অথবা মোটা রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়ে থাকে।
০ গ্রাফ পেপার বিভিন্ন নামের হয়ে থাকে । যথা-ডিজাইন পেপার, পয়েন্ট পেপার, স্কোয়ার পেপার ।
সর্তকতা
ডিজাইন পেপারের স্কোয়ার ঘর কখনও কোণাকুণি হয় না অর্থাৎ প্রতি ঘরের ছেদ বিন্দু ৯০° কোণ করে থাকে ।
উপসংহার / মন্তব্য
১১। পরীক্ষার নাম : গ্রাফ পেপারের ব্যবহার
ভূমিকা
ওভেন কাপড় প্রস্তুতের জন্য টেক্সটাইল ডিজাইনের ব্যবহার বহুবিধ। ছোট ছোট ডিজাইন থেকে মধ্যম ও খুব বড় ডিজাইনও তাঁতের সাহায্যে প্রস্তুত করা সম্ভব। ডিজাইনারগণ ডিজাইন তাঁতে উঠানোর পূর্বে গ্রাফ পেপারে ডিজাইন অংকন করে থাকেন যাতে পূর্বেই কোন ভুল ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা সম্ভব হয় ।
গ্রাফ পেপারের ব্যবহার
ডিজাইন করার সময় পড়েন সুতাকে আড়াআড়ি এর দিকে এবং টানা সুতা লম্বালম্বি এর দিকে ধরা হয়। টানা ও পড়েনের সংখ্যা হিসেব করার সুবিধার্থে প্রতি ইঞ্চিতে ৮x৮, ১০×১০ বা ১৬×১৬ যে কোন সংখ্যক চৌকো ঘরগুলোকে মোটা অথবা রঙিন লাইন দ্বারা সীমাবদ্ধ করে রাখার জন্য সহজেই ঘরগুলো সনাক্ত করা সম্ভব।
ডিজাইন অনুসারে ছোট চৌকো ঘরগুলো ভরাট করে পড়েন সুতার উপরে টানা সুতা ভাসা বুঝাবে এবং চৌকো ঘরে কোন দাগাঙ্কিত না থাকলে তা টানার উপরে অর্থাৎ পড়েন ভাসা বুঝাবে। টানা ভাসা পড়েন ভাসা নিমের চিত্রের সাহায্যে বুঝানো হলো ।
সতর্কতা
০ ডিজাইন তৈরির পর রিপিটের চিহ্ন ও ডিজাইন শুরুর স্থানের চিহ্ন প্রদান করা উচিত
০ গ্রাফ পেপারে তৈরি ডিজাইনের ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লানও অংকন করলে পরবর্তীতে তাঁতে কাপড় বুননের জন্য প্রস্তুত করতে সহজ হয় ।
উপসংহার / মন্তব্য
১২। পরীক্ষার নাম : কাপড়ের গঠন অনুযায়ী ছক কাগজে ডিজাইন অংকন ।
ভূমিকা
ওভেন ডিজাইনকে গ্রাফ পেপারে ব্যাখ্যা করতে হলে তিনটি মূল উপকরণ যেমন- উইভ প্লান, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান অংকন করতে হবে । এটি বিভিন্ন ভাবে সজ্জিত বা দেখানো যায়। তবে বহুল প্রচলিত নিয়ম হলো মূল ডিজাইন অর্থাৎ উইভ প্লানকে মূল ধরে তার ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান ও ডান পার্শ্বে লিফটিং প্লান এমনভাবে অংকন করা হয় যাতে টানা সুতাগুলোর সোজাসুজি ঠিক উপরে ড্রাফটিং এর জন্য ঝাঁপগুলো নির্দিষ্ট করা অংশে কোন টানা সুতা কোন ঝাপে যাবে তা উল্লেখ করা সহজ হয়। এভাবে লিফটিং পানও ডানে থাকার কারণে পড়েন সুতা প্রবেশের সময় কোন ঝাঁপটা উপরে থাকবে তা নির্দিষ্ট করে বুঝানো সম্ভব হয় ।
কাপড়ের গঠন অনুযায়ী ডিজাইন অংকন
নমুনা কাপড় থেকে ডিজাইন অংকনের জন্য নিম্নলিখিত উপকরণগুলির প্রয়োজন-
ক) কাউন্টিং গ্লাস
খ) নিডেল
গ) গ্রাফ পেপার ইত্যাদি ।
o প্রথমে নমুনা কাপড়টি টেবিলের উপর বিছাই ।
০ অতপর কাউন্টিং গ্লাস কাপড়টির উপর রাখি।
০ কাউন্টিং গ্লাসের উপর চোখ রাখলে নমুনা কাপড়টি খুব স্পষ্ট দেখাবে কোন সুতা কোনটির উপর থাকবে তা স্পষ্ট দেখা যাবে।
o নমুনা কাপড়ের টানার দিক ও পড়েনের দিক প্রথমে সনাক্ত করি ।
০ গ্রাফ পেপারের চৌকো ঘরে যে সুতা পড়েন সুতার উপরে আছে সে সুতাকে আপ ধরে গ্রাফ পেপারে দাগাংকিত করি এবং যে অংশে পড়েন সুতা উপরে আছে তা খালি রাখি।
০ এভাবে গ্রাফ পেপারে ডিজাইনটি অংকন করি।
০ অতপর ডিজাইন থেকে ডিজাইনের রিপিটটি বের করি।
০ রিপিট থেকে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরি করি ।
সতর্কতা
o খুব সূক্ষভাবে নমুনা কাপড়ের ডিজাইন লক্ষ্য রেখে গ্রাফ পেপারে ডিজাইন অংকন করতে হবে। পাশাপাশি কোন সুতা বাদ পড়লে সঠিক ডিজাইন অংকন করা সম্ভব হবে না।
উপসংহার / মন্তব্য
১৩। পরীক্ষার নাম : ছক কাগজ থেকে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অংকন ।
ভূমিকা-
মূল ডিজাইন বা উইভ প্লানকে মূল ধরে তার ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান ও ডান পার্শ্বে লিফটিং প্লান এমনভাবে অংকন করা হয় যাতে টানা সুতাগুলোর সোজাসুজি ঠিক উপরে ড্রাফটিং এর জন্য ঝাঁপগুলো নির্দিষ্ট করা অংশে কোন টানা সুতা কোন ঝাঁপে যাবে তা উল্লেখ করা সহজ হয়। আবার পড়েন সুতাগুলোর সোজাসুজি ডানে লিফটিং প্লান থাকার কারণে পড়ে প্রবেশের সময় কোন কোন ঝাঁপ উপরে উঠবে তা নির্দিষ্ট করে বুঝানো সম্ভব। মূল ডিজাইনে উলম্বভাবে টানা সুতাগুলো নির্দিষ্ট করা থাকে এবং আড়াআড়ি সুতাগুলো পড়েন সুতা হিসেবে নির্দিষ্ট করা থাকে। উইভ প্লানের মধ্যে যে বর্গাকার বা চৌকো ঘরগুলো ভরাট করা বা ক্রস চিহ্ন দ্বারা দাগাঙ্কিত থাকে উক্ত টানা সুতা অর্থাৎ যে ঘরে দাগাঙ্কিত থাকে তা টানা ভাসা প্রকাশ করে এবং শুন্য ঘরগুলো পড়েন ভাসা প্রকাশ করে ।
হুক কাগজ থেকে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অংকন-
ছক কাগজে অংকিত উইভ প্লান থেকে প্রথমে ড্রাফটিং ও পরে লিফটিং প্লান করা হয়। ড্রাফটিং প্রানের মধ্যে আড়াআড়ি ঘর অথবা রেখাগুলোকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয় এবং গ্রাফ পেপারের উলম্ব ঘরগুলো টানা সুতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূল উইভ বা ডিজাইন থেকে যখন ড্রাফটিং প্লান তৈরি করা হয় তখন টানা সুতা বরাবর উপরে যে ঝাঁপগুলোতে বাইন্ডিং থাকে অর্থাৎ টানা ভাসা থাকে সেই ঝাঁপগুলোর মেইল আইতে টানা সুতাগুলো পাথা হয়।
মনে করা যাক, ১ম ঝাঁপের ১ম রিপিটের ১ নং সুতাটি গাঁথা হলো এবং পরবর্তী টানা সুতাগুলো মূল ডিজাইনের টানা ও পড়েনের একই রকম বন্ধনী প্রকাশ করে এমন সংখ্যার টানাগুলো একই ঝাপের মধ্যে গাঁথা হবে এবং অমিল টানাগুলো পৃথক ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা হবে । যদি কোন টানা সুতার সাথে কোন টানা সুতার মিল না থাকে তবে রিপিটের টানা সুতার সংখ্যার সমান ঝাঁপ নিতে হবে এবং একেকটি সুতা একেক ঝাঁপের মধ্যে যাবে। অর্থাৎ ৫x৫ ঘরের মূল ডিজাইনের জন্য ড্রাফটিং প্লান হবে ১, ২, ৩, ৪, ৫।
লিফটিং প্লান করার জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উপস্থ ঘর এবং পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান করতে হবে। উইভ পান ও ড্রাফটিং প্লান থেকে লিফটিং প্লান করার জন্য প্রথমে চিত্র অনুযায়ী ড্রাফটিং প্লান থেকে ঝাঁপগুলো তীর রেখা টেনে নিয়ে খাড়াভাবে অবস্থান করানো হয় ।
লিফটিং প্লানে ঝাঁপ উপরে উঠানোর জন্য উইভ প্রানের প্রথম পড়েন সুতার যে কয়টি টানা সুতা ভাসা আছে, উক্ত টানা সুতাগুলো যে ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা আছে সে ঝাঁপগুলো উপরে উঠাতে হবে । অর্থাৎ উক্ত বর্গাকার ঘরগুলো ভরাট করতে হবে । এভাবে দ্বিতীয় পড়েনের ক্ষেত্রে ভাসা টানা সমূহ দাগাঙ্কিত করে ভরাট করতে হবে। একইভাবে পর পর রিপিটের সাইজ অনুযায়ী পড়েন সুতা অর্থাৎ পিক বরাবর লিফটিং প্লান সম্পূর্ণ করতে হবে।
সতর্কতা
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান করার জন্য অতিমাত্রায় মনোযোগী থাকা দরকার । নতুবা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । ভুল ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লানে উৎপাদিত কাপড়ে ডিজাইনও ভুল হবে ।
উপসংহার / মন্তব্য
১৪ । পরীক্ষার নাম : ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অনুযায়ী ড্রাফটিং করতে হবে ।
ভূমিকা
কাপড় বুননের সময় ঝাঁপগুলি উপরে নিচে উঠানামা করে। প্রতিটি ঝাঁপে অনেকগুলো ব থাকে যার মাঝখানে একটি করে ছিদ্রযুক্ত চক্ষু বা আই তাকে মেইল আই ব চক্ষু বলে। প্রতিটি ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে একটি করে সুতা প্রবেশ করানো হয়। ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে সুতা প্রবেশ করাকে ড্রাফটিং বলে। ড্রাফটের মাধ্যমে ঝাঁপের সংখ্যা ও তার মধ্য দিয়ে টানা সুতাকে পথ দেখানো হয় ।
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অনুযায়ী ড্রাফটিং করার পদ্ধতি-
ড্রাফটিং করার জন্য প্রথমে একটি স্ট্যান্ড বা ফ্রেমের উপর উইভারস্ বিশ্বকে স্থাপন করা হয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঝাঁপ ও রিড উক্ত স্ট্যান্ডে স্থাপন করা হয়। স্ট্যান্ডের দুই পার্শ্বে দুই জন অভিজ্ঞ শ্রমিক থাকে যারা ড্রাফটিং প্লান দেখে সহজেই টানা সুতাকে ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টেনে নিতে পারে। ডিজাইন অনুযায়ী এক পার্শ্বের শ্রমিক সুতা সনাক্ত করে এবং অপর পার্শ্বের শ্রমিক ড্রইং হুকের সাহায্যে উক্ত সুতা ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টেনে নেয়। এভাবে ঝাঁপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা সুতা টেনে নিয়ে ড্রাফটিং কার্য সমাধা করা হয় ।
সতর্কতা
ডিজাইন অনুযায়ী সুতা সনাক্তকরণ ও নির্দিষ্ট ঝীপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা সুতা টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় অতিমাত্রায় মনোযোগী হতে হবে। নতুবা স্থূল ড্রাফটিং এর কারণে তাঁতে উৎপাদিত কাপড়ের ডিজাইনও ভুল হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
১৫। পরীক্ষার নাম : প্লেইন উইভ ডিজাইন অংকন করে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরিকরণ ।
ভূমিকা-
সবচেয়ে সহজ ও সরলতম উইড বা ডিজাইন হলো প্লেইন ডিজাইন। যে কোন সংখ্যক টানা সুতা পর্যায়ক্রমে জোড় ও বেজোড় সংখ্যক সুভাকে উপরে উঠিয়ে ও নিচে নামিয়ে প্লেইন উইভ তৈরি করা সম্ভব। এই উইভের মধ্যে সুতাগুলো একটি বাদে একটি বন্ধনীতে অংশ গ্রহণ করে ।
সংজ্ঞা
(ক) প্লেইন উইভ টানা ও পড়েন সুতার পর্যায়ক্রমিক ইন্টারলেসমেন্ট এর মাধ্যমে যে উইভ গঠন করা হয় । তাকে প্লেইন উইভ বলে । প্লেইন উইভে টানা ও পড়েন দুইটি সুতার বন্ধনীর মাধ্যমে সর্বাধিক দৃঢ়তা প্রমাণ করে ।
(খ) ড্রাফটিং প্লান যে পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট নিয়মে টানা সুতা ঝাঁপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে ড্রইং হুকের মাধ্যমে টানা বা গাঁথা হয় তাকে ড্রাফটিং বলে এবং যে নিয়ম বা প্লানের মাধ্যমে এই কার্য সম্পাদন করা হয় তাকে ড্রাফটিং প্রান বলে।
(গ) লিফটিং প্লান ঝাঁপ উপরে উঠানো ও নিচে নামানোর ফলে শাটেল চলাচলের রাস্তা তৈরি হয়। যে পরিকল্পনার মাধ্যমে এই কার্য সম্পাদন করা হয় তাকে লিফটিং প্লান বলে ।
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরি করার পদ্ধতি
যেহেতু মাত্র ২x২ রিপিটে প্লেইন ডিজাইন করা হয় কাজেই এই ডিজাইনের ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান করা অত্যন্ত সহজ।
মূল উইডে ২ ঘর টানা ও ২ ঘর পড়েন সুতা দ্বারা প্লেইন ডিজাইনের রিপিট তৈরি করা হয়েছে। কাজেই ড্রাফটিং প্লানের জন্য আড়াআড়ি ঘর বা রেখাকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয়। যেহেতু প্লেইন উইভের রিপিটে ২টি মাত্র টানা সুতা রয়েছে। কাজেই এখানে মাত্র ২টি ঝাঁপ ব্যবহার করলেই চলে অর্থাৎ ঝাঁপের জন্য ২টি টানা সুতা ২টি ঝাপের মেইল আই এর মধ্যে টেনে নিলেই ড্রাফটিং সম্পন্ন হবে ।
অনুরুপভাবে লিফটিং প্লানের জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উলম্ব ঘর ও পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান করতে হবে ২টি পড়েন সুতা ও ২টি টানা সুতা দ্বারা রিপিটের জন্য লিফটিং পানও ২x২ ঘরে করলেই চলবে যা ডিজাইনের অনুরূপ হবে ।
সতর্কতা-
যে কোন ডিজাইন, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান তৈরি করার সময় মনোযোগী হওয়া উচিত নতুবা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
উপসংহার / মন্তব্য
১৬। পরীক্ষার নাম : টুইল উইড কাপড়ের ডিজাইন অংকন করে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরিকরণ ।
ভূমিকা-
টুইল উইভের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো কাপড়ের উপর কোনাকুনি শিররেখা দেখা যায়। টুইল উইভের টানা সুতাগুলো এমনভাবে বন্ধনীতে অংশ গ্রহণ করে যে প্রতিটি টানা সুতার বন্ধনী বিন্দু পূর্ববর্তী টানা সুতার বন্ধনী বিন্দু সাপেক্ষে এক ঘর উপরে বা এক ঘর নিচে স্থানান্তরিত হয়ে এ টুইল রেখার সৃষ্টি হয়। এ টুইল লাইন কাপড়ের উভয় পার্শ্বে দৃষ্টি গোচর হয়। এটি সাধারণত ডান থেকে বামে অথবা বাম থেকে ডানে এইভাবে অগ্রসর হয়।
সংজ্ঞা-
যে উইন্ডের কাপড়ের উপরিভাগে টানা অথবা পড়েন ভাসা অথবা টানা পড়েন সম বা অসম কতগুলো কোনাকুনি শিররেখা ও ডায়াগোনাল রেখা দৃষ্ট হয় তা-ই টুইল উইভ।
ডিজাইন সহ ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরিকরণ-
ক) ডিজাইন- টুইল উইভের ক্ষুদ্রতম ডিজাইন ৩×৩ অর্থাৎ ৩ ঘর টানা সুতা ও ৩ ঘর পড়েন সুতা। কাজেই ৩×৩ টুইল ডিজাইন অংকন করার জন্য অর্থাৎ ২ সুতা আপ ও ১ সুতা ডাউন ধরে ডিজাইনটি অংকন করি । ১ম টানা সুতায় ১ম দুইটি পিক আপ অর্থাৎ চৌকো ঘরসমূহ ভরাট করি ও ৩য় পিক ডাউন অর্থাৎ চৌকো ঘর খালি রাখি। এভাবে ২য় টানা সুতায় এক পিক উপরে অর্থাৎ ২য় ও ৩য় পিক এর জন্য চৌকো ঘর ভরাট করি ও ১ম পিক এর জন্য চৌকো ঘর খালি রাখি। অনুরূপভাবে ৩য় টানা সুতায় ৩য় ও ১ম পিকের জন্য চৌকো ঘর ভরাট করি এবং ২য় পিকের জন্য চৌকো ঘর খালি রাখি । এভাবে পুরো ৩×৩ ঘরের টুইল ডিজাইন তৈরি করি ।
ড্রাফটিং প্লান-
মূল ডিজাইন অর্থাৎ উইভ প্লানকে মূল ধরে এর ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান করা হয়। ড্রাফটিং প্লানের মধ্যে আড়াআড়ি ঘর অথবা রেখাগুলোকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয় এবং ঝাঁপ সমূহের উল্লম্ব ঘরগুলোকে টানা সুতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তখন টানা সুতা বরাবর ঝাঁপগুলোতে বাইন্ডিং থাকে অর্থাৎ টানা ভাসা থাকে সেই ঝাঁপগুলোর মেইল আইতে টানা সুতা গাঁথা হয়। যেহেতু ৩x৩ ঘরের মূল ডিজাইনের জন্য ড্রাফটিং প্লান করতে হবে এবং ৩টি টানা সুতার বাইন্ডিং একটার সাথে অন্যটার কোন মিল নেই, কাজেই মোট ৩টি ঝাপ অর্থাৎ ড্রাফটিং প্লানের জন্যও মোট ৩×৩ ঘরের প্রয়োজন হবে। আমরা মূল ডিজাইনের ঠিক উপরে ৩x৩ ঘর ড্রাফটিং প্লানের জন্য নিয়ে নেই । অতপর ১ম টানা সুতার জন্য ১ম ঝাঁপ, ২য় টানা সুতার জন্য ২য় ঝাঁপ, ৩য় টানা সুতার জন্য ৩য় ঝাঁপ অর্থাৎ ৩টি ঘরের ১ম ঘরের ১ম ঝাঁপ, ২য় ঘরের ২য় ঝাঁপ ৩য় ঘরের ৩য় ঝাঁপ এভাবে ১, ২, ৩ চৌকো ঘরগুলো পূরণ করি এবং ড্রাফটিং প্লান সমাপ্ত করি ।
গ) লিফটিং প্লান-
যেহেতু ৩×৩ ঘরে মূল ডিজাইন ও ড্রাফটিং প্লানে ৩টি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয়েছে। কাজেই লিফটিং প্লানেও গ্রাফ পেপারে ৩×৩ ঘর নিতে হবে । লিফটিং প্লানের জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উল্লম্ব ঘর এবং পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান থেকে ঝাঁপগুলো তীর রেখা টেনে নিয়ে খাড়াভাবে অবস্থান করানো হয় ।
লিফটিং প্লানের ঝাঁপ উপরে উঠানোর জন্য উইভ প্লানের প্রথম পড়েন সুতার যে কয়টি টানা ভাসা আছে উক্ত টানা সুতাগুলো যে ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা আছে সে ঝাপগুলো উপরে উঠাতে হবে। অর্থাৎ উক্ত চৌকো ঘরগুলো ভরাট করতে হবে । আমাদের নির্ধারিত ডিজাইনের জন্য ১ম পিকে ১ ও ৩ নং ঘর, ২য় পিকে ১ ও ২ নং ঘর, ৩য় পিকে ২ ও ৩ নং ঘর ভরাট করা হলো। এভাবে লিফটিং প্লান সমাপ্ত করা হলো ।
উপসংহার / মন্তব্য
১৭। পরীক্ষার নাম স্কাওয়ারিং ও ব্লিচিং এ ব্যবহার বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের নাম ও সনাক্তকরণ।
ভূমিকা-
কাপড় থেকে অপদ্রব্য যেমন তৈল, চর্বি, মোম ও সাইজিং এর সময় ব্যবহার স্টার্চ বাদে অন্যান্য উপাদানসহ রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা ক্রিয়া করিয়ে দূর করাই স্কাওয়ারিং এর কাজ। আবার কাপড় হতে স্টার্চ জাতীয় পদার্থ, চর্বি, মোম ও অন্যান্য অপদ্রব্য ডিসাইজিং ও স্কাওয়ারিং পদ্ধতিতে সম্পূর্ণভাবে দূর হয় না। কাজেই উপরোক্ত অপদ্রব্য দূরীকরণ ও কাপড়ের পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং টেক্সটাইল দ্রব্যের নিজস্ব রং অর্থাৎ প্রাকৃতিক রং দূর করার জন্য ব্লিচিং করার প্রয়োজন রয়েছে।
সংজ্ঞা
ক) স্কাওয়ারিং যে প্রক্রিয়ায় অ্যালকালি অথবা ডিটারজেন্ট যোগে টেক্সটাইল দ্রব্যাদি থেকে তৈল, চর্বি, মোম ও অন্যান্য অপদ্রব্য দূর করা এবং টেক্সটাইল দ্রবাদিকে পরিষ্কার ও পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয় তাকে স্কাওয়ারিং বলে ।
খ) ব্লিচিং যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেক্সটাইল সামগ্রী হতে প্রাকৃতিক রং জাতীয় পদার্থ দূর করে ধবধবে সাদা করা হয় তাকে ব্লিচিং বলে।
গ) সাওয়ারিং স্কাওয়ারিং পদ্ধতির থেকে যাওয়া অ্যালকালি দূর করার জন্য বা কাপড়কে প্রশমিত করার জন্য পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড বা পাতলা সালফিউরিক এসিড যে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তাকে সাওয়ারিং বলে ।
স্কাওয়ারিং পদ্ধতিতে ব্যবহার রাসায়নিক পদার্থের নাম
ডিটারজেন্ট, অ্যালকালি, অক্সিডাইজিং ও রিডিউসিং এজেন্ট এর নাম নিম্নে দেওয়া হলো ।
ক) ডিটারজেন্ট
০ টার্কি রেড ওয়েল
০ নিকাল এ
০ নিকাল বি. এক্স
০ আইজিপন এ
০ লিছাপল এল এস
০ নিছাপল ডি
০ লিছাপল এন
খ) অক্সিডাইজিং এজেন্ট
• অক্সিজেন
• ওজোন
• হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
• ম্যাংগানিজ ডাই অক্সাইড
• পটাশিয়াম নাইট্রেট ইত্যাদি।
গ) রিডিউসিং এজেন্ট
• হাইড্রোজেন
• কার্বন
• কার্বন মনোক্সাইড
• হাইড্রোজেন সালফাইড
• জিংক অক্সাইড ইত্যাদি।
ঘ) ব্লিচিং এজেন্ট
অক্সিডাইজিং ও রিডিউসিং ব্লিচিং এজেন্ট এর তালিকা
ক) অক্সিডাইজিং ব্লিচিং এজেন্ট-
অক্সিডাইজিং এজেন্ট এর মাধ্যমে যে ব্লিচিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাকে অক্সিডাইজিং ব্লিচিং এজেন্ট বলে। যেমন-
• ক্লোরিন গ্যাস
• ওজোন
• হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
• সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড ব্লিচিং পাউডার
• সোডিয়াম পার অক্সাইড ইত্যাদি
খ) রিডিউসিং ব্লিচিং
এজেন্ট এর মাধ্যমে যে ব্লিচিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় তাকে রিডিউসিং ব্লিচিং এজেন্ট বলে। যেমন-
• হাইড্রোজেন সালফাইড
• সালফার ডাই অক্সাইড
• সোডিয়াম সালফেট ফেরাস সালফেট
• কার্বন মনোক্সাইড
• স্টেনাস ক্লোরাইড
সতর্কতা-
স্কাওয়ারিং ও ব্লিচিং এজেন্ট নির্বাচনের পূর্বে আঁশের ধরণ এজেন্টের মূল্য ইত্যাদি বিবেচনা করতে হবে ।
উপসংহার / মন্তব্য
১৮ । পরীক্ষার নাম : ডাইরেক্ট ডাই বা রং দ্বারা কটন কাপড় রং করার পদ্ধতি ।
ভূমিকা-
প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উভয় প্রকার সেলুলোজ আঁশের প্রতি ডাই-এর তীব্র আসক্তি ও রঞ্জন ক্ষমতা আছে। বিভিন্ন ধরনের ফাইবার যেমন- ভিসকোস, কিউপ্রোমেনিয়াম ইত্যাদি রং করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয় । কিন্তু সেলুলোজিক ফাইবারের প্রতি ডাইরেক্ট ডাই-এর আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। কাজেই, কখনো কখনো সাবস্ট্যানটিভ ডাই বা ডাইরেক্ট কটন কালারও বলা হয় ।
সংজ্ঞা
ডাইরেক্ট ডাই যে সকল ডাই-এর ফাইবারের প্রতি সরাসরি আকর্ষণ আছে, সরাসরি প্রয়োগ করার জন্য কোন সাহায্যকারীর প্রয়োজন নেই তাকে ডাইরেক্ট ডাই বলে ।
গ) পদ্ধতি
যে কাপড়কে রং করতে হবে তার ওজনের ১-৫% রং নিয়ে অল্প পরিমাণ ঠান্ডা পানি যোগ করে প্রথমে পেস্ট তৈরি করতে হবে । পেস্ট এ ওয়েটিং এজেন্ট যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে ২০ গুণ পরিমাণ পানি নিয়ে ডাই-এর দ্রবণ প্রস্তুত করতে হবে । আলাদা ২টি পাতে ২-৩% সোড অ্যাশ ২০% লবণের দ্রবণ তৈরি করে নিতে হবে।
অতপর ডাই বাথে কাপড়ের ওজনের ২০ গুণ পানি নিয়ে তার মধ্যে সোডা অ্যাশ দ্রবণ যোগ করে ৭০° সে. তাপমাত্রায় ১০ মিনিট উত্তপ্ত করা হয়। ফলে পানির ক্ষরতা দূর হয়। বাথ এর তাপমাত্রা ৮০ সে. এ উঠানোর পর কাপড় ও রং এর দ্রবণ দেওয়া হয় ও ৩০ মিনিট যাবৎ ক্রিয়া করানো হয়। বাথের তাপমাত্রা ৯০°-১০০° সে. পর্যন্ত উঠানোর পর NaCl দ্রবণ আস্তে আস্তে যোগ করা হয় ও ৩০ মিনিট নড়াচড়া করে স্কুইজ করে অতিরিক্ত রঙ ফেলে দিয়ে প্রথমে গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি সহযোগে কাপড় ধোয়া হয় ।
সতর্কতা-
০ ডাইরেক্ট ডাই-এর ফাইবারের প্রতি আসক্তি প্রবল কিন্তু পরিশেষ ক্রিয়া দ্বারা রং পাকা দ্বারা রং পাকা হয় না।
০ ডাইং করার সময় NaCl পরিমাণ মতো মিশাতে হবে নতুবা ডাই পেনিট্রেশন যথাযথ হবে না
উপসংহার / মন্তব্য
১৯। পরীক্ষার নাম রি-অ্যাকটিভ ডাই দ্বারা কাপড় রং করার পদ্ধতি ।
ভূমিকা-
রি-অ্যাকটিভ ডাই পানিতে দ্রবণীয়, এটি এক ধরনের রাসায়নিক রঞ্জক যৌগ বিশেষ। এখানে রং এর অনু আঁশের পলিমারের সংগে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে। এজন্য এ শ্রেণির রংগুলোকে রি-অ্যাকটিভ ডাই বলে । কটনের উপর রি-অ্যাকটিভ ডাই সবচেয়ে উজ্জ্বল সেড তৈরি করে। এ ডাই ডাইং প্রিন্টিং সব কিছুর জন্যই উপযোগী। এর ওয়েট ফাস্টনেস বেশ ভালো ।
সংজ্ঞা-
রি-অ্যাকটিভ ডাই : ডাই-এর অনুতে রি-অ্যাকটিভ গ্রুপ বিদ্যমান এবং রং এর অনু আঁশের পলিমারের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে টেক্সটাইল দ্রব্যকে রঙিন করে বলে এ ডাইকে রি-অ্যাকটিভ ডাই বলে ।
রি-অ্যাকটিভ ডাই দ্বারা কাপড় রং করার পদ্ধতি -
বর্ণনা
যে কাপড়কে রং করতে হবে তার ওজনের ১-৫% রং নিয়ে অল্প পরিমাণ ঠান্ডা পানি যোগ করে প্রথমে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্ট এ ওয়েটিং এজেন্ট যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে ২০গুণ পরিমাণ পানি দিয়ে ডাই-এর দ্রবণ প্রস্তুত করতে হবে । আলাদা দুইটি পাত্রে ২-৩% সোডা এ্যাশ ও ২০% লবণের দ্রবণ তৈরি করে নিতে হবে।
অতপর ডাই বাঘে কাপড়ের ওজনের ২০ গুণ পানি নিয়ে তার মধ্যে সোডা অ্যাস দ্রবণ যোগ করে ৭০° সে. তাপমাত্রায় ১০ মিনিট উত্তপ্ত করা হয় । ফলে পানির খরতা দূর হয় । বাথ এর তাপমাত্রা ৮০° সে. এ উঠানোর পর রং এর দ্রবণ ও কাপড় দেওয়া হয় এবং ৩০ মিনিট যাবৎ ক্রিয়া করানো হয়। বাথের তাপমাত্রা ৯০-১০০° সে. পর্যন্ত উঠানোর পর NaCl দ্রবণ আস্তে আস্তে যোগ করা হয় এবং ৩০ মিনিট নাড়াচাড়া করে স্কুইজ করে অতিরিক্ত রং কে ফেলে দেওয়া হয় । অতপর প্রথমে গরম পানি ও পড়ে ঠান্ডা পানি সহযোগে কাপড় ধৌত করা হয়।
ভূমিকা
বয়নের সময় ঝাঁপগুলি উপরে নিচে উঠানামা করে। প্রতিটি ঝাঁপে সকল 'ব' এর মাঝখানে একটি করে ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রসমূহকে 'ব' চক্ষু বলে। প্রতিটি 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে একটি করে সুতা প্রবেশ করানো হয়। 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে টানা সুতা প্রবেশ করার পদ্ধতিকে ড্রাফটিং বলে। ড্রাফটের মাধ্যমে ঝাঁপের সংখ্যা এবং টানা সুতাকে কোন ঝাঁপের মধ্যে ড্রাফটিং করা হবে তা নির্দিষ্ট করার উপর উৎপাদিত কাপড়ের ডিজাইন নির্ভর করে ।
সংজ্ঞা
'ব' গাথা বিম করা শেষ হলে টানা সুতার মাথাগুলো টেনে বের করে ডিজাইন অনুযায়ী একটি একটি করে বিমের সুতা ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ড্রইং হুকের সাহায্যে টানতে হয়। 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ওয়ার্প সুতাকে টানার পদ্ধতিকে 'ব' গাঁথা বা ড্রাফটিং বলে ।
'ব' গাঁথার পদ্ধতি
প্লেইন উইভের ক্ষেত্রে সাধারণত দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় । টুইল উইভ এর ক্ষুদ্রতম ডিজাইন ৩x৩ অর্থাৎ ন্যূনতম ৩টি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয়। নিমে ৩ ঝাঁপের টুইল ডিজাইন তৈরির জন্য পদ্ধতিসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো ।
৩x৩ টুইল ডিজাইনের জন্য ৩টি ঝাঁপের প্রয়োজন। প্রতিটি ঝাঁপের জন্য আলাদা আলাদা ট্রেডেল-এর প্রয়োজন । ৩টি ঝাঁপ বা ৩টি পিকের জন্য ৩টি ট্রেডেলের প্রয়োজন ।
প্রতি পিকে ২টি করে টানা সুতা উপরে ও ১টি করে টানা সুতা নিচে রাখতে হলে ঝাঁপ অর্থাৎ হিল্ড মাউন্টিং করার জন্য প্রথম ঝাঁপটি প্রথম ট্রেডেলের সাথে বাঁধতে হবে এবং ডিজাইনের প্রথম সুতাটি প্রথম ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর সাথে গাঁথতে হবে । অনুরূপভাবে দ্বিতীয় ঝাঁপটি দ্বিতীয় ট্রেডেলের সাথে ও দ্বিতীয় সুতাটি দ্বিতীয় ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর সাথে ড্রাফটিং করতে হবে । অনুরূপভাবে তৃতীয় ঝাঁপটি তৃতীয় ট্রেডেলের সাথে বাঁধতে হবে। আর বুননের সময় ২য় ঝাঁপটি প্রথম পিকে তৃতীয় ঝাঁপটি দ্বিতীয় পিকে এবং প্রথম ঝাঁপটি প্রথম পিকে পা দিয়ে চেপে ধরতে হবে ।
সতর্কতা
০ ডিজাইনকে সঠিক রাখার জন্য সঠিকভাবে ড্রাফটিং করতে হবে ।
০ ট্রেডেলকে চেপে ধরার সময় ভুল হলে ডিজাইন পরিবর্তন হয়ে যাবে।
০ হস্তচালিত গতি বাড়ানোর জন্য তাঁতির কাজে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ।
ভূমিকা
টানার সেডের মধ্যে পড়েন সুতা প্রবেশের পর উক্ত সুতাকে কাপড়ের পৃষ্ঠে লাগিয়ে দেওয়ার জন্য যে বস্তুর সাহায্য নেওয়া হয় তাই শানা বা রিড। শানার ডেন্ট স্পিলিট এর ঘনত্বের উপরই কাপরের ইঞ্চি প্রতি টানা সুতার সংখ্যা নির্ভর করে। সাধারণত প্রতি জোড়া ডেন্ট এর ফাঁক দিয়ে দুইটি করে সুভা টানা হয়। বুননের সময় পড়েন সুতাকে উৎপন্ন কাপড়ের ফেল অফ দি ক্লথের পৃষ্ঠে মিশিয়ে দেওয়ার জন্যই এই পদ্ধতির প্রয়োজন । কাপড়ের গঠন সঠিক রাখার লক্ষ্যে সুতাকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য ডেন্টিং ভূমিকা পালন করে থাকে। অসম ডেন্টিং কাপড়ের ডিজাইনকে প্রভাবিত করে ।
সংজ্ঞা
ডেন্টিং যে পদ্ধতিতে শানার প্রতিটি ডেন্ট এর মধ্য দিয়ে টানা সুতাকে ডিজাইন অনুযায়ী ড্রইং হুকের সাহায্যে টেনে নেওয়া হয় তাকে ডেন্টিং বা শালা গাঁথা বলে ।
শানা গাঁথা পদ্ধতি-
ঝাঁপের 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ওয়ার্থ সুতা প্রবেশ করার পর শানা বা রিডের ডেন্ট / স্পিলিট এর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে টেনে নিতে হয় । কটন উইভিং এর ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতি ডেন্টের মধ্য দিয়ে দুইটি করে সুতা টানা হয়। শানার দুই পার্শ্বে দুইজন শ্রমিক বসে একপাশ থেকে একজন দুইটি সুতা সনাক্ত করে অপর পার্শ্বের শ্রমিকের ডেন্টের মধ্যে প্রবেশ করানো ড্রইং হুকের সাথে লাগিয়ে দেয় এবং দ্বিতীয় শ্রমিক ডেন্টের ফাঁকের মধ্য দিয়ে সুতা টেনে বের করে আনেন। এভাবে পুরো টানা সুতাকে ডেন্টিং করা হয় ।
সতর্কতা
০ ডেন্টিং করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে প্রতিটি টানা সুতা সমান্তরালভাবে থাকে ।
০ কখনও অসম ডেন্টিং করা উচিত নয় ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
প্রস্তুতকৃত উইভারস্ বিম 'ব' গাঁথা ও শানা পাঁথা সমাপ্ত হওয়ার পর তাঁতের মধ্যে স্থাপন করতে হয়। তাঁতে বিম, শানা ও ঝাঁপ স্থাপন করাকে মাউন্টিংও বলা হয়। তাঁতের পেছনে বিম স্ট্যান্ডে বিম স্থাপন, ঝাঁপ ও শানা মাউন্টিং করার পর তাঁত কাপড় তৈরির জন্য প্রস্তুত হয়।
সংজ্ঞা
তাঁতে স্থাপনের পূর্বে টানা সুতা ওয়াইল্ডিং, ওয়ার্সিং, বিমিং, সাইজিং ইত্যাদি সম্পন্ন হওয়ার পর কাপড় তৈরির জন্য সমান্তরালভাবে জড়ানো বিমকেই উইভারস্ বিম বলা হয় ।
তাঁতের মধ্যে উইভারস্ বিন স্থাপন পদ্ধতি
হস্তচালিত তাঁতে বিম স্থাপন করার পদ্ধতির বর্ণনা নিম্নে দেওয়া হলো-
প্রস্তুতকৃত বিম শানা ও ব গাঁথা অবস্থায় তুলে এনে তাঁতের পিছনে বিম স্ট্যান্ডে রাখা হয়। অতপর শানাকে দক্ষি এর সাথে শানার টুপি বা রিড ক্যাপ দ্বারা শক্ত করে আটকানো হয়। ঝাঁপগুলিও টপ রোলারের সাথে নির্দিষ্ট নিয়মে সঠিকভাবে বাঁধা হয় । রিড এর সাথে বাঁধা টানা সুতা খুলে খানিকটা আচড়িয়ে আরও কিছু সুতা বিম থেকে টেনে নিয়ে হাতের সাহায্যে টানা সুতাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যা ক্লথ বিমে প্রস্থ বরাবর শক্ত করে পেছিয়ে বাঁধা হয়। এরপর সুতা দ্বারা অর্থাৎ লেট অফ ও কাপড় গুটানো গতি অর্থাৎ টেক আপ এর সমন্বয় করা হয়। এ অবস্থায় তাঁত কাপড় তৈরির জন্য প্রস্তুত হয় ।
সতর্কতা
০ লক্ষ রাখতে হবে টানা সুতা যেন পরস্পর সমান্তরালে থাকে । কখনও ক্রস বা কোনাকুনি না হয়ে যায় ।
০ টপ রোলারের সহিত ঝাঁপসমূহ ডিজাইন, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং স্থানের সাথে সমন্বয় করে বাঁধতে হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
কাপড় থেকে অপদ্রব্য যেমন তৈল, চর্বি, মোম ও সাইজিং এর সময় ব্যবহার স্টার্চ বাদে অন্যান্য উপাদানসহ রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা ক্রিয়া করিয়ে দূর করাই স্কাওয়ারিং এর কাজ। আবার কাপড় হতে স্টার্চ জাতীয় পদার্থ, চর্বি, মোম ও অন্যান্য অপদ্রব্য ডিসাইজিং ও স্কাওয়ারিং পদ্ধতিতে সম্পূর্ণভাবে দূর হয় না। কাজেই উপরোক্ত অপদ্রব্য দূরীকরণ ও কাপড়ের পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং টেক্সটাইল দ্রব্যের নিজস্ব রং অর্থাৎ প্রাকৃতিক রং দূর করার জন্য ব্লিচিং করার প্রয়োজন রয়েছে।
সংজ্ঞা
ক) স্কাওয়ারিং যে প্রক্রিয়ায় অ্যালকালি অথবা ডিটারজেন্ট যোগে টেক্সটাইল দ্রব্যাদি থেকে তৈল, চর্বি, মোম ও অন্যান্য অপদ্রব্য দূর করা এবং টেক্সটাইল দ্রবাদিকে পরিষ্কার ও পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয় তাকে স্কাওয়ারিং বলে ।
খ) ব্লিচিং যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেক্সটাইল সামগ্রী হতে প্রাকৃতিক রং জাতীয় পদার্থ দূর করে ধবধবে সাদা করা হয় তাকে ব্লিচিং বলে।
গ) সাওয়ারিং স্কাওয়ারিং পদ্ধতির থেকে যাওয়া অ্যালকালি দূর করার জন্য বা কাপড়কে প্রশমিত করার জন্য পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড বা পাতলা সালফিউরিক এসিড যে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তাকে সাওয়ারিং বলে ।
স্কাওয়ারিং পদ্ধতিতে ব্যবহার রাসায়নিক পদার্থের নাম
ডিটারজেন্ট, অ্যালকালি, অক্সিডাইজিং ও রিডিউসিং এজেন্ট এর নাম নিম্নে দেওয়া হলো ।
ক) ডিটারজেন্ট
০ টার্কি রেড ওয়েল
০ নিকাল এ
০ নিকাল বি. এক্স
০ আইজিপন এ
০ লিছাপল এল এস
০ নিছাপল ডি
০ লিছাপল এন
খ) অক্সিডাইজিং এজেন্ট
• অক্সিজেন
• ওজোন
• হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
• ম্যাংগানিজ ডাই অক্সাইড
• পটাশিয়াম নাইট্রেট ইত্যাদি।
গ) রিডিউসিং এজেন্ট
• হাইড্রোজেন
• কার্বন
• কার্বন মনোক্সাইড
• হাইড্রোজেন সালফাইড
• জিংক অক্সাইড ইত্যাদি।
ঘ) ব্লিচিং এজেন্ট
অক্সিডাইজিং ও রিডিউসিং ব্লিচিং এজেন্ট এর তালিকা
ক) অক্সিডাইজিং ব্লিচিং এজেন্ট-
অক্সিডাইজিং এজেন্ট এর মাধ্যমে যে ব্লিচিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাকে অক্সিডাইজিং ব্লিচিং এজেন্ট বলে। যেমন-
• ক্লোরিন গ্যাস
• ওজোন
• হাইড্রোজেন পার অক্সাইড
• সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড ব্লিচিং পাউডার
• সোডিয়াম পার অক্সাইড ইত্যাদি
খ) রিডিউসিং ব্লিচিং
এজেন্ট এর মাধ্যমে যে ব্লিচিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় তাকে রিডিউসিং ব্লিচিং এজেন্ট বলে। যেমন-
• হাইড্রোজেন সালফাইড
• সালফার ডাই অক্সাইড
• সোডিয়াম সালফেট ফেরাস সালফেট
• কার্বন মনোক্সাইড
• স্টেনাস ক্লোরাইড
সতর্কতা-
স্কাওয়ারিং ও ব্লিচিং এজেন্ট নির্বাচনের পূর্বে আঁশের ধরণ এজেন্টের মূল্য ইত্যাদি বিবেচনা করতে হবে ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
প্লেইন উইডের জন্য মাত্র দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় যা বাঁধা অত্যন্ত সহজ। কিন্তু টুইল বা অন্যান্য উইভের জন্য ঝাঁপ বাঁধা তুলনামূলক কঠিন। কারণ- ক্ষুদ্রতম টুইল ডিজাইনের জন্য ৩টি ঝাঁপের প্রয়োজন। রিড বা শানা স্নে অর্থাৎ দক্তির উপর রিড ক্যাপ দ্বারা আটকিয়ে বসানো হয়।
তাঁতে ঝাঁপ ও শানা বাঁধা পদ্ধতি
প্লেইন উইভের ক্ষেত্রে যেহেতু দুইটি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় কাজেই ঝাঁপ দুইটি টপ রোলারের দুই প্রান্তে চামড়ার স্ট্র্যাপ দ্বারা বাঁধা হয়। টপ রোলার এমনভাবে সামনে পিছনে ঘুরতে থাকে যাতে একটি ঝাঁপ উপরে এবং অপরটি ঝাঁপ নিচে নামবে। শানা বা রিড স্লে এর উপর স্থাপন করে রিড ক্যাপের মাধ্যমে নাট বোল্ট দ্বারা শক্তভাবে সে বা দক্তির সাথে আটকিয়ে রাখা হয়। পিকিং এর সময় স্লে সহ রিড বিটআপ দেয়।
সতর্কতা
০ রিড ক্যাপের সাথে আটকানোর সময় সতর্কতার সাথে আটকাতে হবে যাতে উৎপাদিত কাপড়ে রিড মার্ক সৃষ্টি না হয় ।
০ টপ রোলার বাঁধার সময় ট্রেডেলের সাথে সমন্বয় করে বাঁধতে হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
হস্তচালিত অথবা শক্তিচালিত উভয় তাঁতই চালনা করার পূর্বে তাঁতের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং প্রতিটি অংশ সঠিকভাবে স্থাপন করতে হবে। যেমন- শাটেল বক্সে আছে কিনা, শাটেল এর মধ্যে সুতাপূর্ণ পার্ন ঠিক আছে কিনা, পিকার, পিকিং, স্ট্যাপ, ঝাঁপের পজিশন ইত্যাদি যথাযথ থাকার পরই তাঁত চালনা করা উচিত।
তাঁতের বিভিন্ন অংশ
o শাটেল
০ পিকার
০ চেক স্ট্র্যাপ এসেম্বলি
০ বাফার
০ সাটেল বক্স
o বক্স সুয়েল
0 ঝাঁপ
০ রিড
০ টেম্পল
০ দক্তি
০ লেট অফ
O টেক আপ
০ ট্যাপেট / ওয়াইপার ইত্যাদি
তাঁতের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে স্থাপন
ত্রুটিমুক্ত সঠিক উৎপাদন পেতে হলে এজন অভিজ্ঞ তাঁতি তাঁত চালনার পূর্বে তাঁতের উপরোক্ত সমস্ত অংশ যথাযথভাবে পরীক্ষা করে সঠিকভাবে স্থাপন করা আছে কিনা তা দেখে নেন। যদি কোন অংশ সঠিক না থাকে তা তাৎক্ষণাৎ ঠিক করে তবে তাঁত চালু করতে হবে। এখন তাঁত কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হলো।
সতর্কতা -
০ তাঁতের প্রতিটি অংশ সঠিক না হলে তাঁত চালনা করা উচিত নয় ।
০ তাঁত চালনার পূর্বে অবশ্যই সব অংশ পরীক্ষা করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য -
ভূমিকা
একটি তাঁতের বিভিন্ন অংশ অংকনের মাধ্যমে উক্ত তাঁতের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে সহজেই পরিচিতি লাভ করা সম্ভব ।
তাঁতের বিভিন্ন অংশ -
o শাটেল
০ শাটেল বক্স
o পিকার
০ ওয়ার্স বিম
o পা
০ ঝাঁপ বা হিল্ড শ্যাফট্
০ রিড বা শানা
০ টেম্পল
০ স্লে বা দক্তি ইত্যাদি
সতর্কতা
০ বারবার অংকনে ছবি নিখুঁত হয় ।
০ অংকন করার জন্য কলমের বদলে পেন্সিল ও রাবার ব্যবহার করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
যে সকল তাঁত কায়িক পরিশ্রম অর্থাৎ মানব শক্তি দ্বারা চালিত হয় তাই হস্তচালিত তাঁত । হস্তচালিত তাঁত বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। তাঁর মধ্যে আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত সবচেয়ে সহজ ও উন্নত প্রণালির । এই তাঁতের কাপড় জড়ানো এবং টানা সুতা লেট অফ করার কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয় ।
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতের বর্ণনা-
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতে দক্তির পেছনে একটি লোহার রড এর দুই প্রান্তে দুইটি হুইল থাকে যাকে ফ্লাই হুইল বলে । ফ্লাই হুইল দুইটি তাঁতের দুই প্রান্তে যুক্ত থাকার কারণে তাঁতের গতি খুব সহজ হয়ে যায় অর্থাৎ তাঁতির তাঁত চালনায় খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না ।
তাঁতি কাপড় বুননের জন্য ঝাঁপ উঠান, মাকু চালনা ও দক্তি টেনে শানা দ্বারা পিকিং আপ করে সুতা ফেল অব দ্যা ক্লথের পৃষ্ঠে বসানোর সময় পরিমাণমতো উৎপন্ন কাপড় জড়ানো ও টানা বিমের সুতা জড়ানো স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে বলে এই তাঁতকে আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত বলে।
চিত্তরঞ্জন তাঁত একটি আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁত।
আধা স্বয়ংক্রিয় তাঁতে কাপড় বুনন-
এই তাঁত লৌহ ও কাষ্ঠ নির্মিত । সাধারণ তাঁত অপেক্ষা এই তাঁতে ডবল কাজ হয়ে থাকে। এই তাঁতকে সেমি অটোমেটিক তাঁত বলা হয়। কারণ এতে টানা ছাড়া (Let off) এবং পড়েন জড়ানো (Take up) এই দুইটি কাজ মাত্র আপনা হতে এক সংগে হতে থাকে । অন্যান্য প্রক্রিয়া সাধারণ তাঁতের ন্যায়। সাধারণ তাঁতে কাপড়ের জমিন সর্বত্র সমান হয় না, কিন্তু এই তাঁতে সর্বত্র সমান হয়ে থাকে। যে কোন রকমের মোটা ও মিহি কাপড় বুনতে এটা খুবই উপযুক্ত । বর্তমানে প্রায় সর্বত্রই এই তাঁতের খুব বেশি প্রচলন । এই তাঁতই জাপানি তাঁত বলে পরিচিত ।
চিত্তরঞ্জন তাঁতে বুননকালীন দক্তি ঠেলার সংগে সংগে একসেট পিনিয়ন হুইল ইমারি রোলারের সাহায্যে কাপড় ক্লথ বিয়ে জড়ানো হয় এবং Warp beam হতে টানা প্রয়োজন মতো খুলে আসে।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
হস্তচালিত কাপড় বুননে একজন তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। তাঁতির দক্ষতার উপরই ত্রুটিমুক্ত কাপড় উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
হস্তচালিত তাঁতে কাপড় বুনন পদ্ধতি-
কায়িক পরিশ্রমের দ্বারা একজন তাঁতি তাঁতের গতি নিয়ন্ত্রণ ও তাঁত পরিচালনা করে কাপড় উৎপাদন করে থাকেন । তাঁত চালু অথবা থেমে থাকা উভয় সময়ই তাঁতি স্লে ক্যাপ অর্থাৎ দক্তির টুপির উপর হাত রেখে থাকেন। দক্তি সামনে টেনে আনা এবং পিছনে ঠেলে সরানোর মাধ্যমে বিট আপ কার্য সম্পাদন করে থাকেন। পা দ্বারা ট্রেডেল চেপে রেখে টানা সুতার মাঝে সেড গঠন করেন এবং অন্য হাত অর্থাৎ ডান হাত দ্বারা হাতল টেনে টেনে পিকিং কার্য সম্পাদন করেন। হাতলের সাথে রশিসহ মেড়া অর্থাৎ পিকার বাঁধা থাকে যা দ্বারা সাটেল এক বক্স থেকে অন্য বক্সে আসা যাওয়া করে।
সর্বোপরি পা দ্বারা সেডিং, ডান হাত দ্বারা পিকিং ও বা হাত দ্বারা বিটিং কার্য সম্পাদন করে একজন তাঁতি কাপড় উৎপাদন করে থাকেন ।
সতর্কতা
০ হস্তচালিত তাঁতে ত্রুটিযুক্ত কাপড় বোনার জন্য একজন তাঁতির মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন ।
০ ত্রুটিমুক্ত ভালো কাপড়ের জন্য তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
বিভিন্ন ডিজাইন কাপড়ে তোলার পূর্বে ডিজাইনটিকে সরল ও সহজবোধ্য করে বুঝানোর উদ্দেশ্যে এক প্রকার বর্গাকৃতি ঘর বিশিষ্ট কাগজে বিভিন্ন রং এর সংমিশ্রণে আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমই হলো গ্রাফ পেপার ।
গ্রাফ পেপার বিভিন্ন নামের হয়ে থাকে।
যথা-
০ ডিজাইন পেপার
০ পয়েন্ট পেপার
০ স্কোয়ার পেপার ।
সংজ্ঞা
গ্রাফ পেপার পরস্পর সমান্তরাল কতগুলো আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি দুই সেট সরলরেখা সম দূরত্বে ও সমকোণে ভেদ করে কতগুলো ছোট ছোট চৌকো ঘর সৃষ্টি করে, যে কাগজের উপর উপরোক্ত বর্গাকৃতি ঘরগুলো অংকিত হয় তাকে ছক কাগজ বা গ্রাফ পেপার (Graph paper) বলে ।
ডিজাইন তৈরির জন্য গ্রাফ পেপারের ব্যবহার
ডিজাইন করার সময় সাধারণত আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি উভয় দিকেই ইঞ্চি প্রতি ৮, ১০ অথবা ১৬ ঘরে অর্থাৎ ৮x৮, ১০×১০ বা ১৬×১৬ এর বার লাইন অথবা মোটা রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়ে থাকে, যাতে ব্যবহারের পূর্বেই ঘরগুলো সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হয় ।
পড়েন সুতাকে আড়াআড়ি ও টানা সুতাকে লম্বালম্বি এর দিকে ধরা হয় ডিজাইনারের মতানুসারে ছোট চৌকো ঘরগুলো ভরাট করে পড়েন সুতার উপরে টানা সুতা ভাসা বুঝাবে এবং চৌকো ঘরে কোন দাগাঙ্কিত না থাকলে তা টানার উপরে অর্থাৎ পড়েন ভাসা বুঝাবে । টানা ভাসা পড়েন ভাসা নিমের চিত্রের সাহায্যে বুঝানো হলো ।
০ ডিজাইন করার পূর্বে অবশ্যই রিপিটের টানা ও পড়েন সুতার সংখ্যা সনাক্ত করে নিতে হবে।
০ গ্রাফ পেপারের বার লাইন কত কত ঘরে আছে তা সনাক্ত করে ডিজাইন অংকন করা উচিত।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
ডিজাইন পেপারর কিছুই নয় শুধু কতগুলো স্কোয়ার ঘরের কাগজ। স্কোয়ার বা চৌকো ঘরগুলো দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে একই দূরত্বে থাকে এবং লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি রেখাসমূহ পরস্পর সমকোণে ভেদ করে চলে যায়। প্রতিটি গ্রাফ পেপারেরই একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর বার লাইন দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয় যাতে সহজেই অংকিত ডিজাইনের ঘরসংখ্যা চিহ্নিত করা সহজ হয় ।
গ্রাফ পেপারের বৈশিষ্ট্য -
গ্রাফ পেপারের বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেওয়া হলো-
০ কাগজে অংকিত কতগুলো সমান্তরাল আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি সরলরেখা ।
০ প্রতিটি সমান্তরাল আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি সরলরেখা পরস্পর সম দূরত্বে ও সমকোণে ভেদ করে চৌকো ঘরের সৃষ্টি করে ।
০ প্রতিটি চৌকো ছোট ছোট ঘর বর্গাকার।
০ সনাক্তকরণের সুবিধার্থে চৌকো ঘরগুলো ৮, ১০ অথবা ১৬ ঘর এর পর পর বার অথবা মোটা রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়ে থাকে।
০ গ্রাফ পেপার বিভিন্ন নামের হয়ে থাকে । যথা-ডিজাইন পেপার, পয়েন্ট পেপার, স্কোয়ার পেপার ।
সর্তকতা
ডিজাইন পেপারের স্কোয়ার ঘর কখনও কোণাকুণি হয় না অর্থাৎ প্রতি ঘরের ছেদ বিন্দু ৯০° কোণ করে থাকে ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
ওভেন কাপড় প্রস্তুতের জন্য টেক্সটাইল ডিজাইনের ব্যবহার বহুবিধ। ছোট ছোট ডিজাইন থেকে মধ্যম ও খুব বড় ডিজাইনও তাঁতের সাহায্যে প্রস্তুত করা সম্ভব। ডিজাইনারগণ ডিজাইন তাঁতে উঠানোর পূর্বে গ্রাফ পেপারে ডিজাইন অংকন করে থাকেন যাতে পূর্বেই কোন ভুল ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা সম্ভব হয় ।
গ্রাফ পেপারের ব্যবহার
ডিজাইন করার সময় পড়েন সুতাকে আড়াআড়ি এর দিকে এবং টানা সুতা লম্বালম্বি এর দিকে ধরা হয়। টানা ও পড়েনের সংখ্যা হিসেব করার সুবিধার্থে প্রতি ইঞ্চিতে ৮x৮, ১০×১০ বা ১৬×১৬ যে কোন সংখ্যক চৌকো ঘরগুলোকে মোটা অথবা রঙিন লাইন দ্বারা সীমাবদ্ধ করে রাখার জন্য সহজেই ঘরগুলো সনাক্ত করা সম্ভব।
ডিজাইন অনুসারে ছোট চৌকো ঘরগুলো ভরাট করে পড়েন সুতার উপরে টানা সুতা ভাসা বুঝাবে এবং চৌকো ঘরে কোন দাগাঙ্কিত না থাকলে তা টানার উপরে অর্থাৎ পড়েন ভাসা বুঝাবে। টানা ভাসা পড়েন ভাসা নিমের চিত্রের সাহায্যে বুঝানো হলো ।
সতর্কতা
০ ডিজাইন তৈরির পর রিপিটের চিহ্ন ও ডিজাইন শুরুর স্থানের চিহ্ন প্রদান করা উচিত
০ গ্রাফ পেপারে তৈরি ডিজাইনের ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লানও অংকন করলে পরবর্তীতে তাঁতে কাপড় বুননের জন্য প্রস্তুত করতে সহজ হয় ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
ওভেন ডিজাইনকে গ্রাফ পেপারে ব্যাখ্যা করতে হলে তিনটি মূল উপকরণ যেমন- উইভ প্লান, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান অংকন করতে হবে । এটি বিভিন্ন ভাবে সজ্জিত বা দেখানো যায়। তবে বহুল প্রচলিত নিয়ম হলো মূল ডিজাইন অর্থাৎ উইভ প্লানকে মূল ধরে তার ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান ও ডান পার্শ্বে লিফটিং প্লান এমনভাবে অংকন করা হয় যাতে টানা সুতাগুলোর সোজাসুজি ঠিক উপরে ড্রাফটিং এর জন্য ঝাঁপগুলো নির্দিষ্ট করা অংশে কোন টানা সুতা কোন ঝাপে যাবে তা উল্লেখ করা সহজ হয়। এভাবে লিফটিং পানও ডানে থাকার কারণে পড়েন সুতা প্রবেশের সময় কোন ঝাঁপটা উপরে থাকবে তা নির্দিষ্ট করে বুঝানো সম্ভব হয় ।
কাপড়ের গঠন অনুযায়ী ডিজাইন অংকন
নমুনা কাপড় থেকে ডিজাইন অংকনের জন্য নিম্নলিখিত উপকরণগুলির প্রয়োজন-
ক) কাউন্টিং গ্লাস
খ) নিডেল
গ) গ্রাফ পেপার ইত্যাদি ।
o প্রথমে নমুনা কাপড়টি টেবিলের উপর বিছাই ।
০ অতপর কাউন্টিং গ্লাস কাপড়টির উপর রাখি।
০ কাউন্টিং গ্লাসের উপর চোখ রাখলে নমুনা কাপড়টি খুব স্পষ্ট দেখাবে কোন সুতা কোনটির উপর থাকবে তা স্পষ্ট দেখা যাবে।
o নমুনা কাপড়ের টানার দিক ও পড়েনের দিক প্রথমে সনাক্ত করি ।
০ গ্রাফ পেপারের চৌকো ঘরে যে সুতা পড়েন সুতার উপরে আছে সে সুতাকে আপ ধরে গ্রাফ পেপারে দাগাংকিত করি এবং যে অংশে পড়েন সুতা উপরে আছে তা খালি রাখি।
০ এভাবে গ্রাফ পেপারে ডিজাইনটি অংকন করি।
০ অতপর ডিজাইন থেকে ডিজাইনের রিপিটটি বের করি।
০ রিপিট থেকে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরি করি ।
সতর্কতা
o খুব সূক্ষভাবে নমুনা কাপড়ের ডিজাইন লক্ষ্য রেখে গ্রাফ পেপারে ডিজাইন অংকন করতে হবে। পাশাপাশি কোন সুতা বাদ পড়লে সঠিক ডিজাইন অংকন করা সম্ভব হবে না।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
মূল ডিজাইন বা উইভ প্লানকে মূল ধরে তার ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান ও ডান পার্শ্বে লিফটিং প্লান এমনভাবে অংকন করা হয় যাতে টানা সুতাগুলোর সোজাসুজি ঠিক উপরে ড্রাফটিং এর জন্য ঝাঁপগুলো নির্দিষ্ট করা অংশে কোন টানা সুতা কোন ঝাঁপে যাবে তা উল্লেখ করা সহজ হয়। আবার পড়েন সুতাগুলোর সোজাসুজি ডানে লিফটিং প্লান থাকার কারণে পড়ে প্রবেশের সময় কোন কোন ঝাঁপ উপরে উঠবে তা নির্দিষ্ট করে বুঝানো সম্ভব। মূল ডিজাইনে উলম্বভাবে টানা সুতাগুলো নির্দিষ্ট করা থাকে এবং আড়াআড়ি সুতাগুলো পড়েন সুতা হিসেবে নির্দিষ্ট করা থাকে। উইভ প্লানের মধ্যে যে বর্গাকার বা চৌকো ঘরগুলো ভরাট করা বা ক্রস চিহ্ন দ্বারা দাগাঙ্কিত থাকে উক্ত টানা সুতা অর্থাৎ যে ঘরে দাগাঙ্কিত থাকে তা টানা ভাসা প্রকাশ করে এবং শুন্য ঘরগুলো পড়েন ভাসা প্রকাশ করে ।
হুক কাগজ থেকে ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অংকন-
ছক কাগজে অংকিত উইভ প্লান থেকে প্রথমে ড্রাফটিং ও পরে লিফটিং প্লান করা হয়। ড্রাফটিং প্রানের মধ্যে আড়াআড়ি ঘর অথবা রেখাগুলোকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয় এবং গ্রাফ পেপারের উলম্ব ঘরগুলো টানা সুতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূল উইভ বা ডিজাইন থেকে যখন ড্রাফটিং প্লান তৈরি করা হয় তখন টানা সুতা বরাবর উপরে যে ঝাঁপগুলোতে বাইন্ডিং থাকে অর্থাৎ টানা ভাসা থাকে সেই ঝাঁপগুলোর মেইল আইতে টানা সুতাগুলো পাথা হয়।
মনে করা যাক, ১ম ঝাঁপের ১ম রিপিটের ১ নং সুতাটি গাঁথা হলো এবং পরবর্তী টানা সুতাগুলো মূল ডিজাইনের টানা ও পড়েনের একই রকম বন্ধনী প্রকাশ করে এমন সংখ্যার টানাগুলো একই ঝাপের মধ্যে গাঁথা হবে এবং অমিল টানাগুলো পৃথক ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা হবে । যদি কোন টানা সুতার সাথে কোন টানা সুতার মিল না থাকে তবে রিপিটের টানা সুতার সংখ্যার সমান ঝাঁপ নিতে হবে এবং একেকটি সুতা একেক ঝাঁপের মধ্যে যাবে। অর্থাৎ ৫x৫ ঘরের মূল ডিজাইনের জন্য ড্রাফটিং প্লান হবে ১, ২, ৩, ৪, ৫।
লিফটিং প্লান করার জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উপস্থ ঘর এবং পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান করতে হবে। উইভ পান ও ড্রাফটিং প্লান থেকে লিফটিং প্লান করার জন্য প্রথমে চিত্র অনুযায়ী ড্রাফটিং প্লান থেকে ঝাঁপগুলো তীর রেখা টেনে নিয়ে খাড়াভাবে অবস্থান করানো হয় ।
লিফটিং প্লানে ঝাঁপ উপরে উঠানোর জন্য উইভ প্রানের প্রথম পড়েন সুতার যে কয়টি টানা সুতা ভাসা আছে, উক্ত টানা সুতাগুলো যে ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা আছে সে ঝাঁপগুলো উপরে উঠাতে হবে । অর্থাৎ উক্ত বর্গাকার ঘরগুলো ভরাট করতে হবে । এভাবে দ্বিতীয় পড়েনের ক্ষেত্রে ভাসা টানা সমূহ দাগাঙ্কিত করে ভরাট করতে হবে। একইভাবে পর পর রিপিটের সাইজ অনুযায়ী পড়েন সুতা অর্থাৎ পিক বরাবর লিফটিং প্লান সম্পূর্ণ করতে হবে।
সতর্কতা
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান করার জন্য অতিমাত্রায় মনোযোগী থাকা দরকার । নতুবা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । ভুল ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লানে উৎপাদিত কাপড়ে ডিজাইনও ভুল হবে ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা
কাপড় বুননের সময় ঝাঁপগুলি উপরে নিচে উঠানামা করে। প্রতিটি ঝাঁপে অনেকগুলো ব থাকে যার মাঝখানে একটি করে ছিদ্রযুক্ত চক্ষু বা আই তাকে মেইল আই ব চক্ষু বলে। প্রতিটি ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে একটি করে সুতা প্রবেশ করানো হয়। ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে সুতা প্রবেশ করাকে ড্রাফটিং বলে। ড্রাফটের মাধ্যমে ঝাঁপের সংখ্যা ও তার মধ্য দিয়ে টানা সুতাকে পথ দেখানো হয় ।
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান অনুযায়ী ড্রাফটিং করার পদ্ধতি-
ড্রাফটিং করার জন্য প্রথমে একটি স্ট্যান্ড বা ফ্রেমের উপর উইভারস্ বিশ্বকে স্থাপন করা হয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঝাঁপ ও রিড উক্ত স্ট্যান্ডে স্থাপন করা হয়। স্ট্যান্ডের দুই পার্শ্বে দুই জন অভিজ্ঞ শ্রমিক থাকে যারা ড্রাফটিং প্লান দেখে সহজেই টানা সুতাকে ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টেনে নিতে পারে। ডিজাইন অনুযায়ী এক পার্শ্বের শ্রমিক সুতা সনাক্ত করে এবং অপর পার্শ্বের শ্রমিক ড্রইং হুকের সাহায্যে উক্ত সুতা ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টেনে নেয়। এভাবে ঝাঁপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা সুতা টেনে নিয়ে ড্রাফটিং কার্য সমাধা করা হয় ।
সতর্কতা
ডিজাইন অনুযায়ী সুতা সনাক্তকরণ ও নির্দিষ্ট ঝীপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা সুতা টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় অতিমাত্রায় মনোযোগী হতে হবে। নতুবা স্থূল ড্রাফটিং এর কারণে তাঁতে উৎপাদিত কাপড়ের ডিজাইনও ভুল হবে।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
সবচেয়ে সহজ ও সরলতম উইড বা ডিজাইন হলো প্লেইন ডিজাইন। যে কোন সংখ্যক টানা সুতা পর্যায়ক্রমে জোড় ও বেজোড় সংখ্যক সুভাকে উপরে উঠিয়ে ও নিচে নামিয়ে প্লেইন উইভ তৈরি করা সম্ভব। এই উইভের মধ্যে সুতাগুলো একটি বাদে একটি বন্ধনীতে অংশ গ্রহণ করে ।
সংজ্ঞা
(ক) প্লেইন উইভ টানা ও পড়েন সুতার পর্যায়ক্রমিক ইন্টারলেসমেন্ট এর মাধ্যমে যে উইভ গঠন করা হয় । তাকে প্লেইন উইভ বলে । প্লেইন উইভে টানা ও পড়েন দুইটি সুতার বন্ধনীর মাধ্যমে সর্বাধিক দৃঢ়তা প্রমাণ করে ।
(খ) ড্রাফটিং প্লান যে পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট নিয়মে টানা সুতা ঝাঁপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে ড্রইং হুকের মাধ্যমে টানা বা গাঁথা হয় তাকে ড্রাফটিং বলে এবং যে নিয়ম বা প্লানের মাধ্যমে এই কার্য সম্পাদন করা হয় তাকে ড্রাফটিং প্রান বলে।
(গ) লিফটিং প্লান ঝাঁপ উপরে উঠানো ও নিচে নামানোর ফলে শাটেল চলাচলের রাস্তা তৈরি হয়। যে পরিকল্পনার মাধ্যমে এই কার্য সম্পাদন করা হয় তাকে লিফটিং প্লান বলে ।
ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরি করার পদ্ধতি
যেহেতু মাত্র ২x২ রিপিটে প্লেইন ডিজাইন করা হয় কাজেই এই ডিজাইনের ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান করা অত্যন্ত সহজ।
মূল উইডে ২ ঘর টানা ও ২ ঘর পড়েন সুতা দ্বারা প্লেইন ডিজাইনের রিপিট তৈরি করা হয়েছে। কাজেই ড্রাফটিং প্লানের জন্য আড়াআড়ি ঘর বা রেখাকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয়। যেহেতু প্লেইন উইভের রিপিটে ২টি মাত্র টানা সুতা রয়েছে। কাজেই এখানে মাত্র ২টি ঝাঁপ ব্যবহার করলেই চলে অর্থাৎ ঝাঁপের জন্য ২টি টানা সুতা ২টি ঝাপের মেইল আই এর মধ্যে টেনে নিলেই ড্রাফটিং সম্পন্ন হবে ।
অনুরুপভাবে লিফটিং প্লানের জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উলম্ব ঘর ও পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান করতে হবে ২টি পড়েন সুতা ও ২টি টানা সুতা দ্বারা রিপিটের জন্য লিফটিং পানও ২x২ ঘরে করলেই চলবে যা ডিজাইনের অনুরূপ হবে ।
সতর্কতা-
যে কোন ডিজাইন, ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান তৈরি করার সময় মনোযোগী হওয়া উচিত নতুবা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
টুইল উইভের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো কাপড়ের উপর কোনাকুনি শিররেখা দেখা যায়। টুইল উইভের টানা সুতাগুলো এমনভাবে বন্ধনীতে অংশ গ্রহণ করে যে প্রতিটি টানা সুতার বন্ধনী বিন্দু পূর্ববর্তী টানা সুতার বন্ধনী বিন্দু সাপেক্ষে এক ঘর উপরে বা এক ঘর নিচে স্থানান্তরিত হয়ে এ টুইল রেখার সৃষ্টি হয়। এ টুইল লাইন কাপড়ের উভয় পার্শ্বে দৃষ্টি গোচর হয়। এটি সাধারণত ডান থেকে বামে অথবা বাম থেকে ডানে এইভাবে অগ্রসর হয়।
সংজ্ঞা-
যে উইন্ডের কাপড়ের উপরিভাগে টানা অথবা পড়েন ভাসা অথবা টানা পড়েন সম বা অসম কতগুলো কোনাকুনি শিররেখা ও ডায়াগোনাল রেখা দৃষ্ট হয় তা-ই টুইল উইভ।
ডিজাইন সহ ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান তৈরিকরণ-
ক) ডিজাইন- টুইল উইভের ক্ষুদ্রতম ডিজাইন ৩×৩ অর্থাৎ ৩ ঘর টানা সুতা ও ৩ ঘর পড়েন সুতা। কাজেই ৩×৩ টুইল ডিজাইন অংকন করার জন্য অর্থাৎ ২ সুতা আপ ও ১ সুতা ডাউন ধরে ডিজাইনটি অংকন করি । ১ম টানা সুতায় ১ম দুইটি পিক আপ অর্থাৎ চৌকো ঘরসমূহ ভরাট করি ও ৩য় পিক ডাউন অর্থাৎ চৌকো ঘর খালি রাখি। এভাবে ২য় টানা সুতায় এক পিক উপরে অর্থাৎ ২য় ও ৩য় পিক এর জন্য চৌকো ঘর ভরাট করি ও ১ম পিক এর জন্য চৌকো ঘর খালি রাখি। অনুরূপভাবে ৩য় টানা সুতায় ৩য় ও ১ম পিকের জন্য চৌকো ঘর ভরাট করি এবং ২য় পিকের জন্য চৌকো ঘর খালি রাখি । এভাবে পুরো ৩×৩ ঘরের টুইল ডিজাইন তৈরি করি ।
ড্রাফটিং প্লান-
মূল ডিজাইন অর্থাৎ উইভ প্লানকে মূল ধরে এর ঠিক উপরে ড্রাফটিং প্লান করা হয়। ড্রাফটিং প্লানের মধ্যে আড়াআড়ি ঘর অথবা রেখাগুলোকে ঝাঁপ হিসেবে নির্দেশ করা হয় এবং ঝাঁপ সমূহের উল্লম্ব ঘরগুলোকে টানা সুতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তখন টানা সুতা বরাবর ঝাঁপগুলোতে বাইন্ডিং থাকে অর্থাৎ টানা ভাসা থাকে সেই ঝাঁপগুলোর মেইল আইতে টানা সুতা গাঁথা হয়। যেহেতু ৩x৩ ঘরের মূল ডিজাইনের জন্য ড্রাফটিং প্লান করতে হবে এবং ৩টি টানা সুতার বাইন্ডিং একটার সাথে অন্যটার কোন মিল নেই, কাজেই মোট ৩টি ঝাপ অর্থাৎ ড্রাফটিং প্লানের জন্যও মোট ৩×৩ ঘরের প্রয়োজন হবে। আমরা মূল ডিজাইনের ঠিক উপরে ৩x৩ ঘর ড্রাফটিং প্লানের জন্য নিয়ে নেই । অতপর ১ম টানা সুতার জন্য ১ম ঝাঁপ, ২য় টানা সুতার জন্য ২য় ঝাঁপ, ৩য় টানা সুতার জন্য ৩য় ঝাঁপ অর্থাৎ ৩টি ঘরের ১ম ঘরের ১ম ঝাঁপ, ২য় ঘরের ২য় ঝাঁপ ৩য় ঘরের ৩য় ঝাঁপ এভাবে ১, ২, ৩ চৌকো ঘরগুলো পূরণ করি এবং ড্রাফটিং প্লান সমাপ্ত করি ।
গ) লিফটিং প্লান-
যেহেতু ৩×৩ ঘরে মূল ডিজাইন ও ড্রাফটিং প্লানে ৩টি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয়েছে। কাজেই লিফটিং প্লানেও গ্রাফ পেপারে ৩×৩ ঘর নিতে হবে । লিফটিং প্লানের জন্য প্রথমেই ঝাঁপের সংখ্যার সমান উল্লম্ব ঘর এবং পড়েন সুতার সংখ্যার সমান আড়াআড়ি ঘর নিয়ে লিফটিং প্লান থেকে ঝাঁপগুলো তীর রেখা টেনে নিয়ে খাড়াভাবে অবস্থান করানো হয় ।
লিফটিং প্লানের ঝাঁপ উপরে উঠানোর জন্য উইভ প্লানের প্রথম পড়েন সুতার যে কয়টি টানা ভাসা আছে উক্ত টানা সুতাগুলো যে ঝাঁপের মধ্যে গাঁথা আছে সে ঝাপগুলো উপরে উঠাতে হবে। অর্থাৎ উক্ত চৌকো ঘরগুলো ভরাট করতে হবে । আমাদের নির্ধারিত ডিজাইনের জন্য ১ম পিকে ১ ও ৩ নং ঘর, ২য় পিকে ১ ও ২ নং ঘর, ৩য় পিকে ২ ও ৩ নং ঘর ভরাট করা হলো। এভাবে লিফটিং প্লান সমাপ্ত করা হলো ।
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উভয় প্রকার সেলুলোজ আঁশের প্রতি ডাই-এর তীব্র আসক্তি ও রঞ্জন ক্ষমতা আছে। বিভিন্ন ধরনের ফাইবার যেমন- ভিসকোস, কিউপ্রোমেনিয়াম ইত্যাদি রং করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয় । কিন্তু সেলুলোজিক ফাইবারের প্রতি ডাইরেক্ট ডাই-এর আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। কাজেই, কখনো কখনো সাবস্ট্যানটিভ ডাই বা ডাইরেক্ট কটন কালারও বলা হয় ।
সংজ্ঞা
ডাইরেক্ট ডাই যে সকল ডাই-এর ফাইবারের প্রতি সরাসরি আকর্ষণ আছে, সরাসরি প্রয়োগ করার জন্য কোন সাহায্যকারীর প্রয়োজন নেই তাকে ডাইরেক্ট ডাই বলে ।
গ) পদ্ধতি
যে কাপড়কে রং করতে হবে তার ওজনের ১-৫% রং নিয়ে অল্প পরিমাণ ঠান্ডা পানি যোগ করে প্রথমে পেস্ট তৈরি করতে হবে । পেস্ট এ ওয়েটিং এজেন্ট যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে ২০ গুণ পরিমাণ পানি নিয়ে ডাই-এর দ্রবণ প্রস্তুত করতে হবে । আলাদা ২টি পাতে ২-৩% সোড অ্যাশ ২০% লবণের দ্রবণ তৈরি করে নিতে হবে।
অতপর ডাই বাথে কাপড়ের ওজনের ২০ গুণ পানি নিয়ে তার মধ্যে সোডা অ্যাশ দ্রবণ যোগ করে ৭০° সে. তাপমাত্রায় ১০ মিনিট উত্তপ্ত করা হয়। ফলে পানির ক্ষরতা দূর হয়। বাথ এর তাপমাত্রা ৮০ সে. এ উঠানোর পর কাপড় ও রং এর দ্রবণ দেওয়া হয় ও ৩০ মিনিট যাবৎ ক্রিয়া করানো হয়। বাথের তাপমাত্রা ৯০°-১০০° সে. পর্যন্ত উঠানোর পর NaCl দ্রবণ আস্তে আস্তে যোগ করা হয় ও ৩০ মিনিট নড়াচড়া করে স্কুইজ করে অতিরিক্ত রঙ ফেলে দিয়ে প্রথমে গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি সহযোগে কাপড় ধোয়া হয় ।
সতর্কতা-
০ ডাইরেক্ট ডাই-এর ফাইবারের প্রতি আসক্তি প্রবল কিন্তু পরিশেষ ক্রিয়া দ্বারা রং পাকা দ্বারা রং পাকা হয় না।
০ ডাইং করার সময় NaCl পরিমাণ মতো মিশাতে হবে নতুবা ডাই পেনিট্রেশন যথাযথ হবে না
উপসংহার / মন্তব্য
ভূমিকা-
রি-অ্যাকটিভ ডাই পানিতে দ্রবণীয়, এটি এক ধরনের রাসায়নিক রঞ্জক যৌগ বিশেষ। এখানে রং এর অনু আঁশের পলিমারের সংগে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে। এজন্য এ শ্রেণির রংগুলোকে রি-অ্যাকটিভ ডাই বলে । কটনের উপর রি-অ্যাকটিভ ডাই সবচেয়ে উজ্জ্বল সেড তৈরি করে। এ ডাই ডাইং প্রিন্টিং সব কিছুর জন্যই উপযোগী। এর ওয়েট ফাস্টনেস বেশ ভালো ।
সংজ্ঞা-
রি-অ্যাকটিভ ডাই : ডাই-এর অনুতে রি-অ্যাকটিভ গ্রুপ বিদ্যমান এবং রং এর অনু আঁশের পলিমারের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে টেক্সটাইল দ্রব্যকে রঙিন করে বলে এ ডাইকে রি-অ্যাকটিভ ডাই বলে ।
রি-অ্যাকটিভ ডাই দ্বারা কাপড় রং করার পদ্ধতি -
বর্ণনা
যে কাপড়কে রং করতে হবে তার ওজনের ১-৫% রং নিয়ে অল্প পরিমাণ ঠান্ডা পানি যোগ করে প্রথমে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্ট এ ওয়েটিং এজেন্ট যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে ২০গুণ পরিমাণ পানি দিয়ে ডাই-এর দ্রবণ প্রস্তুত করতে হবে । আলাদা দুইটি পাত্রে ২-৩% সোডা এ্যাশ ও ২০% লবণের দ্রবণ তৈরি করে নিতে হবে।
অতপর ডাই বাঘে কাপড়ের ওজনের ২০ গুণ পানি নিয়ে তার মধ্যে সোডা অ্যাস দ্রবণ যোগ করে ৭০° সে. তাপমাত্রায় ১০ মিনিট উত্তপ্ত করা হয় । ফলে পানির খরতা দূর হয় । বাথ এর তাপমাত্রা ৮০° সে. এ উঠানোর পর রং এর দ্রবণ ও কাপড় দেওয়া হয় এবং ৩০ মিনিট যাবৎ ক্রিয়া করানো হয়। বাথের তাপমাত্রা ৯০-১০০° সে. পর্যন্ত উঠানোর পর NaCl দ্রবণ আস্তে আস্তে যোগ করা হয় এবং ৩০ মিনিট নাড়াচাড়া করে স্কুইজ করে অতিরিক্ত রং কে ফেলে দেওয়া হয় । অতপর প্রথমে গরম পানি ও পড়ে ঠান্ডা পানি সহযোগে কাপড় ধৌত করা হয়।
আরও দেখুন...