মরুভূমিতে মরীচিকা খুবই পরিচিত দৃশ্য। তোমরা হয়তো শুনে অবাক হবে যে মরীচিকাও রংধনুর মতো পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের কারণে ঘটে থাকে।
কোনো কিছু পাওয়ার আশা করে শেষ পর্যন্ত না পেলে সেটাকেও মরীচিকা বলা হয় কিন্তু মূল শব্দটি এসেছে মরুভূমিতে উত্তাপের কারণে বাতাসের ঘনত্বের পরিবর্তন থেকে। যদিও আমরা জানি উত্তপ্ত বাতাস হালকা বলে উপরে চলে যায় কিন্তু মরুভূমির উত্তপ্ত বালুর কারণে তার কাছাকাছি বাতাস উপরের বাতাস থেকে উত্তপ্ত থাকতে পারে। কাজেই মরুভূমির বাতাসকে আমরা 9.09 চিত্রের মতো করে কল্পনা করে নিতে পারি।
চিত্র 9,09:মরুভুমিতে বাতাসের ঘনত্বের পার্থক্যের কারণে মরীচিকা দেখা যায়
সহজভাবে বোঝানোর জন্য এখানে মাত্র কয়েকটি স্তরে দেখানো হয়েছে। উপরের স্তরে বাতাসের ঘনত্ব বেশি তাই প্রতিসরণাঙ্ক বেশি। নিচের স্তরে বাতাস উত্তপ্ত তাই ঘনত্ব কম এবং প্রতিসরণাঙ্কও কম। গাছ থেকে আলো প্রতিটি স্তরে প্রতিসরিত হবার সময় প্রতিসরণ কোণ বেড়ে যাবে এবং একেবারে নিচের স্তরে এসে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন হয়ে যেতে পারে। বেশি প্রতিসরণাঙ্কের থেকে কম প্রতিসরণাঙ্কের মাধ্যমে যাবার সময় দূর থেকে দেখা হলে আপাতন কোণের মান বেশি হওয়ার কারণে ক্রান্তি কোণকে অতিক্রম করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই মরীচিকাকে দূর থেকে দেখা যায়, কাছে এলে দেখা যায় না। যেহেতু কোনো মানুষ দূরের একটি গাছের দিকে তাকালে সরাসরি গাছটি দেখতে পাবে এবং পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের কারণে পাছের একটি প্রতিবিম্ব গাছের নিচেও দেখতে পাবে। মনে হবে নিচে পানি থাকার কারণে সেখানে গাছের প্রতিবিম্ব দেখা যাচ্ছে। কাছে গেলে দেখা যাবে কোনো পানি নেই।পরমের দিনে উত্তপ্ত রাস্তার গাড়ি চালিয়ে যাবার সময় একই কারণে দূরে কালচে ভেজা রাস্তা দেখা যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর দেখা যার রাস্তাটি খটখটে শুকনো। এটাও এক ধরনের মরীচিকা।
আরও দেখুন...