বিদ্যুৎ দৈনন্দিন জীবনে এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ, যা ছাড়া বৰ্তমান যান্ত্রিক জীবন ব্যবস্থায় সবকিছু অচল। আমাদের চারিপাশ, বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, কল-কারখানা, যানবাহন ইত্যাদিতে এর ব্যবহার অনস্বীকার্য। এই বিদ্যুৎ নিরাপদে প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন উপকরণ এর প্রয়োজন হয়; আর এই বিদ্যুৎ পরিমাণের জন্য বিভিন্ন পরিমাপক যন্ত্র ও উপকরণ সংযোজন করার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রয়োজন । এ অধ্যায়ে আমরা এই সকল যন্ত্রপাতির ব্যবহার, পরিমাণ ও বিভিন্ন পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে পারব।
বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি, যা খালি চোখে দেখা যায় না কিছু অনুভব করা যায়। পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে যে শক্তি সৃষ্টি হয়। এ অদৃশ্য শক্তি যা আলো, শব্দ, গতি রূপান্তরিত শক্তি 'ইত্যাদি উৎপন্ন করে বিভিন্ন কাজ সমাধা করে। পরিবাহী এমন এক ধরনের পদার্থ (তামা, রূপা, কার্বন, সিলিকন, রাবার, মার্বেল ইত্যাদি) যার মধ্য দিয়ে এক স্থান হতে অন্য স্থানে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়। যদি এই প্রবাহ সহজেই হয় তবে ঐ পদার্থকে সু-পরিবাহী, আংশিক হলে অর্ধ-পরিবাহী এবং পরিপূর্ণ বাধা-গ্রন্থ হলে কু-পরিবাহী বলে।
বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য হল নির্ধারিত পরিবাহীর মধ্য দিয়ে এক পরমাণু হতে অন্য পরমাণু বৈদ্যুতিক প্রবাহ পরিচালনা করার ক্ষমতা যেমন প্রতিরোধ ক্ষমতা, বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা, প্রতিরোধের তাপমাত্রা সহ, জম্ভরক (Dielectric) শক্তি এবং তাপবিদ্যুৎ। বৈদ্যুতিক ধর্ম হচ্ছে একটি উপাদানের প্রতিক্রিয়া যা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। উপাদান বলতে রেজিষ্টর, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর, ভারত ইত্যাদি যা বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ব্যবহার করা হয়। আর এই উপাদানের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হলে ভিন্ন ধরনের আচরণ পরিলক্ষিত হয়। বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা মূল বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি।
বিদ্যুৎ প্রবাহ ও ভোল্টেজ বিদ্যুৎ বিজ্ঞানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাশি। কারেন্ট শব্দের অর্থ প্রবাহ। বৈদ্যুতিক প্রবাহ এর অর্থ হলো বিদ্যুৎ আধান বা ইলেকট্রিক চার্জের প্রবাহ। পরিবাহী পদার্থের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ সহজে প্রবাহিত হয়। তবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে সাধারনভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় না। বিদ্যুৎ প্রবাহ পেতে হলে পরিবাহীর দুই প্রান্তে ভোল্টেজের পার্থক্য সৃষ্টি করতে হয়। ভোন্টেজ পার্থক্যের কারণে পরিবাহীর বাইরের তলের ইলেকট্রন নামক কণা কম বিভব থেকে বেশি বিভবের দিকে অগ্রসর হয়। ইলেকট্রন প্রবাহিত হলে এর সাথে চার্জও প্রবাহিত হয়। চার্জের এককের নাম কুলম্ব। কোনো পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদ দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ চার্জ প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বা কারেন্ট বা বৈদ্যুতিক কারেন্ট বলে।
অর্থাৎ কারেন্ট = চার্জ /সময় । গাণিতিকভাবে
কারেন্টের এককের নাম অ্যাম্পিয়ার। কোনো পরিবাহীর একক ক্ষেত্রফলের ভিতর দিয়ে প্রতি সেকেন্ড সময়ে এক কুলম্ব চার্জ প্রবাহিত হলে সৃষ্ট ইলেকট্রিক কারেন্টের মান হবে এক অ্যাম্পিয়ার।
পরিবাহী তারের মধ্যে ইলেকট্রন প্রবাহিত করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয় তাকে ভোল্টেজ বা বৈদ্যুতিক চাপ বলে। ব্যাটারী, জেনারেটর, ট্রান্সফর্মার প্রভৃতির সাহায্যে বিভব পার্থক্য বা ভোল্টেজ সৃষ্টি করা যায়। কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য ঘটলে পরিবাহীর চার্জের উপর একটি ইলেকট্রিক বল প্রযুক্ত হয়। পরিবাহীর মধ্যে ইলকট্রনসমূহ অনেকটা মুক্ত অবস্থার থাকে। ফলে প্রযুক্ত ইলেকট্রিক বলের কারণে ইলেকট্রনগুলো পরিবাহীর নিম্ন ভোল্টেজ প্রান্ত থেকে উচ্চ ভোল্টেজ প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়।
বৈদ্যুতিক কারেন্ট দুই প্রকার। যথা-
(ক) ডাইরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি কারেন্ট: ডিসি কারেন্ট হলো ডাইরেক্ট কারেন্ট বা অপরিবর্তনশীল কারেন্ট। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে এই কারেন্টের দিক পরিবর্তিত হবে না। ডিসি কারেন্টের দুটি দিক থাকে যার একটি হচ্ছে পজেটিভ ও অন্যটি হচ্ছে নেগেটিভ। তাহলে বলা যায়, “কারেন্ট যা শুধুমাত্র একটি দিকে প্রবাহিত হয় ভাই ডিসি কারেন্ট'।
(খ) অল্টারনেটিং কারেন্ট বা এসি কারেন্ট: এসি পূর্ণ নাম হলো অল্টারনেটিং কারেন্ট যার বাংলা অর্থ পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ। এর মানে এটি সবসময় পর্যায়ক্রমে পরিবর্তনশীল হবে। প্রত্যেক পর্যায়ে এটি এর বিপরীত ধর্মে রূপান্তরিত হবে। অর্থাৎ এই কারেন্টের একটি দিক (ধনাত্মক) পজেটিভ ও এর কিছু সময় পরে নেগেটিভ হবে। তাহলে বলা হবে প্রথমে যেটি পজেটিভ ছিলো এরপরেই সেটি (নেগেটিভ) ঋণাত্মক হয়। অন্যাথায় “যে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় দিক পরিবর্তন করে তাকে অল্টারনেটিং বা এসি কারেন্ট বলে।”
বৈদ্যুতিক কারেন্ট-এর একক ও প্রতীক: ইলেকট্রিক কারেন্ট-কে সাধারণত ইংরেজি আই (I) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কারেন্ট পরিমাপের চারটি একক প্রচলিত আছে। যথা-
(ক) সিজিএস বিদ্যুৎ একক (CGS esu): ১ স্থির বিদ্যুৎ একক ( 1 esu) = 3.33×1010 অ্যাম্পিয়ার।
(খ) সিজিএস বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক (CGS emū): ১ বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক (I emu) = 10 অ্যাম্পিয়ার।
(গ) ব্যবহারিক একক: অ্যাম্পিয়ার। ১ অ্যাম্পিয়ার = কুলম্ব/সেকেন্ড = 6.242×108 টি ইলেকট্রন/সেকেন্ড
(ঘ) আন্তর্জাতিক একক: কারেন্ট পরিমাপের আন্তর্জাতিক এককের নাম অ্যাম্পিয়ার।
ভোল্টেজ-এর একক ও প্রতীক: ভোল্টেজ-এর প্রতীক ভি (V) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ একটি পরিমাণমূলক রাশি। বৈদ্যুতিক ভোল্টেজের তিনটি একক আছে। যথা-
(ক) স্থির বিদ্যুৎ একক (esu): ১esu = 300 ভোল্ট
(খ) বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক (emu): ১ emu = 10-12 ভোল্ট
(গ) ব্যবহারিক একক: ভোল্ট। অসীম দূরত্ব হতে ১ কুলম্ব ধনাত্মক চার্জকে ইলেকটিক ফিল্ড এর নির্দিষ্ট বিন্দুতে প্রবাহিত করতে যদি ১ জুল কাজ সম্পন্ন হয় তবে ঐ বিন্দুর বিভবকে ১ ভোল্ট বলে। একে ভোল্টেজের আন্তর্জাতিক একক বা এসআই একক বলে।
১ কিলোভোল্ট = ১০° ভোল্ট এবং ১ মেগাভোল্ট – ১০৬ ভোল্ট। সুতারাং ১ আন্তর্জাতিক ভোল্ট = ১,০০০৩৩ ভোল্ট ধরা হয়।
এসি কারেন্ট | ডিসি কারেন্ট |
---|---|
এসি সার্কিটে জেনারেটর উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। | ডিসি সার্কিটে উৎস হিসেবে ব্যাটারি বা ডিসি জেনারেটর ব্যবহৃত হয়। |
এসি সার্কিটে উপাদান হিসেবে রেজিস্ট্যান্স, ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স ব্যবহার হয় | ডিসি সার্কিটে উপাদান হিসেবে শুধুমাত্র রেজিস্ট্যান্স ব্যবহার হয় |
এসি সার্কিটে ফ্রিকুয়েন্সির প্রভাবে ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স এর মান কমে ও বাড়ে। | ডিসি সার্কিটে ফ্রিকুয়েন্সির কোন প্রভাব নেই। |
এসি সার্কিটে ভোল্টেজ ও কারেন্টের মধ্যে ৯০ ডিগ্রী ফেজ অ্যাঙ্গেল বা ফেজ | পার্থক্য থাকে যার ফলে ভোল্টেজ ও কারেন্টকে গাণিতিকভাবে যোগ-বিয়োগ করতে বিয়োগ পরিবর্তে ভেক্টর যোগ করতে হয়। | ডিসি সার্কিটে ভোল্টেজ ও কারেন্টকে গাণিতিকভাবে যোগ-বিয়োগ করা যায়। |
রেকটিফায়ারের সাহায্যে এসি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে রূপান্তর করা যায়। ডিসি কারেন্টকে সহজে এসি কারেন্টে রূপান্তরিত করা যায় না আর করা গেলেও অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। | ডিসি কারেন্টকে সহজে এসি কারেন্টে রূপান্তরিত করা যায় না আর করা গেলেও অনেক কষ্টসাধ্য ব্যয়বহুল হয়ে থাকে । |
এসি কারেন্টকে ট্রান্সফরমারের সাহায্যে সরবরাহ ভোল্টেজ কমানো বা বাড়ানো যায়। | ডিসি কারেন্টের সরবরাহ ভোল্টেজকে কমানো বা বাড়ানো যায় না। |
এসি কারেন্টে রেগুলেশন-এ ভোল্টেজ ড্রপ অনেক বেশি। | ডিসি কারেন্টে রেগুলেশন-এ ভোল্টেজ ড্রপ কম। |
রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে পরিবাহীর একটি বিশেষ ধর্ম। পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ বিঘ্নিত হয় বা বাঁধাপ্রাপ্ত হয়, তাকে রেজিস্ট্যান্স বা রোধ বলে। প্রত্যেক পদার্থেই কম বেশী রেজিস্ট্যান্স বা রোধ আছে। এটাকে আর (R) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
রেজিস্ট্যান্স এর ব্যবহারিক একক ওহম (2)। কোনো একটি স্থির পরিবাহীর দুই প্রান্তে ১ ভোল্ট বিভব পার্থক্য থাকলে যদি এর মধ্য দিয়ে ১ অ্যাম্পিয়ার মাত্রার কারেন্ট চলে, তবে উক্ত পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স-কে ওহম বলে। অথবা ১ ভোল্ট বৈদ্যুতিক চাপে যে পরিমাণ রেজিস্ট্যান্স-এর ভিতর দিয়ে এক অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে, ঐ পরিমাণ রেজিস্ট্যান্স-কে ১ ওহম রেজিস্ট্যান্স বলে। ১ আন্তর্জাতিক ওহম = 1.000৪৯৫ ওহম।
রেজিস্ট্যান্স-কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(ক) নির্দিষ্ট মানের রেজিস্ট্যান্স: যে রেজিস্ট্যান্স-এর মান পরিবর্তন করা যায় না, তাকে নির্দিষ্ট মানের রেজিস্ট্যান্স বলে। এটা আবার চার প্রকার যেমন;
(১) কার্বন রেজিস্টর- ইহা আকারে ছোট এবং ১ হতে ২ মেগা ওহম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(২) মেটাল রেজিস্টর- এ রেজিস্টর কার্বন রেজিস্টর হতে বড় এবং সাধারণত ০.১ হতে ১০ ওয়াট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(৩) ওয়্যার উন্ড রেজিস্টর- যে সমস্ত রেজিস্টর তারের কুন্ডলী পাকিয়ে রেজিস্ট্যান্স তৈরি করা হয়। সাধারণত চিনামাটি, নাইক্রোম, জার্মান সিলভার ইত্যাদির উপর তারের কুন্ডলী পাকিয়ে কম ওহম বিশিস্ট রেজিস্ট্যান্স তৈরি করা হয়। ইহা ৫ হতে ২০০ ওয়াট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(ক) ব্যালাস্ট রেজিস্টর যে সমস্ত রেজিস্টরের তার বিশেষ আবরণের মধ্যে থাকে, যাতে ঐ তারের উপর বাইরের কোনো বস্তু স্পর্শ করতে না পারে, তাদেরকে ব্যালাস্ট রেজিস্টর বলে। এটা বিভিন্ন মানের হয়ে থাকে।
(খ) পরিবর্তনীয় মানের রেজিস্ট্যান্স: যে রেজিস্ট্যান্স-এর মান প্রয়োজন মতো পরিবর্তন করা যায়, তাকে পরিবর্তনীয় মানের রেজিস্টর বলে। এ রেজিস্টর ভলিউম কন্ট্রোল-এর ভিতর ব্যবহার করা হয়।
একটি সার্কিটের মধ্যে দিয়ে যে হারে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়ে কাজ সম্পন্ন করে তাকে ইলেকট্রিক পাওয়ার বলে। একে সাধারণত P দ্বারা প্রকাশ করা হয়। P = Work / Time অর্থাৎ জুল/ সেকেন্ড, SI একক ওয়াট (Watt)। ইলেকট্রিক পাওয়ার পরিমাপ করা হয় ওয়াটে।
সুতরাং পাওয়ার, P = V×I
এখানে Q = ইলেকট্রিক চার্জ কুলম্বে, t = সময় সেকেন্ডে, I = কারেন্টের এম্পিয়ারে, V = পটেনশিয়াল ভোল্টেজ ভোল্টে
যেকোনো যন্ত্রের চলার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো লোড নির্দিষ্ট সময়ে যতটুকু শক্তি খরচ করে কোনো কাজ সম্পন্ন করে সেই হিসাবকেই ওয়াট বলে। অন্যভাবে, যে ক্ষমতায় প্রতি সেকেন্ডে এক জুল পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ওয়াট বলে।
ওয়াট পরিমাপ করার জন্য সাধারণত ওয়াট মিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে নিচের সূত্রের সাহায্যেও পাওয়ার নির্ণয় করা যায়। যেমন- P = V× I2 × Cos, P = 12 x R x Cos,, P = (V2 x Cost )/ R
P Power এর একক ওয়াট, I হলো current এর একক হলো এম্পিয়ার, V Voltage এর একক = = = হলো ভোল্ট, R = Resistance যার একক ওহম, Cose = Power factor যা ফেজ এঙ্গেলের মান। এনার্জি বা শক্তি (Energy):
বৈদ্যুতিক ক্ষমতা বা পাওয়ার একটি সার্কিটে যতক্ষন কাজ করে, পাওয়ারের সাথে উক্ত সময়ের গুনফলকে বৈদ্যুতিক শক্তি বা এনার্জি বলে। অর্থাৎ এনার্জি, W = P x T, যেখানে P = Power, T = Time এনার্জি একক সাধারণত Watt-hour বা Kilowatt-hour, এনার্জি মিটারের সাহায্যে সাধারণত এনার্জি পরিমাপ করা যায়।
কয়েলের যে ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যের কারণে পরিবাহীতে কারেন্ট প্রবাহ অপরিবর্তিত থাকে অথবা উৎপন্ন চুম্বক বলরেখার হ্রাস বা বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে তাকে ইন্ডাকট্যান্স বলে।
1.2.10 ইম্পিডেন্স (Impedance): সাধারণত এসি সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। কোনো বৈদ্যুতিক বর্তনীতে রেজিস্ট্যান্স (R) ও ইন্ডাক্টর (L) অর্থাৎ RL সার্কিট অথবা রেজিস্ট্যান্স ও ক্যাপাসিটর (C) অর্থাৎ RC সার্কিট অথবা রেজিস্ট্যান্স, ইন্ডাক্টর ও ক্যাপাসিটর অর্থাৎ RLC সার্কিট মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহে যে বাধা সৃষ্টি হয় তাকে যথাক্রমে ইন্ডাক্টিভ রিয়্যাকটেন্স (X), ক্যাপাসিটিভ রিয়্যাকটেন্স (Xc) এবং ইম্পিডেন্স বলে। ইম্পিডেলকে Z দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার একক ওহম (O)। নিচে RLC সার্কিটের ইম্পিডেন্স নির্ণয়ের সুত্র দেওয়া হলো। এ সার্কিটে সিঙ্গেল ফেজ এসি ভোল্ট সরবরাহ করা হয়েছে, যা রেজিষ্টর, ইন্ডাক্টর ও ক্যাপাসিটর এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বর্তনী সম্পন্ন করেছে। একটি RLC সার্কিটে ইম্পিডেন্স, Z = √(x2 + (XL-XC)
বৈদ্যুতিক সার্কিটের উপকরণসমূহকে সংক্ষেপে ও সহজে বোঝানোর জন্য নানা ধরণের প্রতীক ব্যবহার করা হয়। নকসা বা ড্রয়িং-এ ইলেকট্রিক্যাল ফিটিংস- ফিক্সচার ও সরঞ্জামাদির অবস্থান দেখানোর জন্য যে সমস্ত বিশেষ ধরনের সংকেত ব্যবহার করা হয় তাদেরকে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন বা মেরামতের কাজে যারা নিয়োজিত থাকেন তাদেরকে অবশ্যই এসব প্রতীক সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। তবে কিছু প্রতীকের বিষয়ে প্রত্যেক মানুষের ধারণা থাকা দরকার।
ক) তোমার প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রিক ওয়ার্কশপে রক্ষিত বাসায় ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের তালিকা প্রভুত কর এবং বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ব্যবহৃত প্রতীকসমূহ অঙ্কন কর।
ড্রয়িং হলো প্রকৌশলীর ভাষা। ভাই নকসা বা ড্রয়িং দেখে বৈদ্যুতিক স্থাপনার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয়। নকসা বা ড্রয়িং-এ ইলেকট্রিক্যাল ফিটিংস-ফিক্সচার ও সরঞ্জাম বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত প্রতীকসমূহের সুস্পষ্ট চিত্র থাকা বাঞ্চনীয়। এগুলো দেখে প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানগণ যাবতীয় স্থাপনার কাজ সম্পাদন করে থাকেন। ভাষাগত ভিন্নতা থাকলেও এ ধরনের প্রতীকের সাহায্যে সার্কিটের বিষয়গুলো বোঝানো যায়।
বৈদ্যুতিক সার্কিটে অসংখ্য প্রতীক ব্যবহৃত হয়। সার্কিট ড্রয়িং-এ প্রতীকসমূহের ব্যবহার বিষয়ে যত্নবান থাকা উচিৎ। কোনো কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের পোলারিটি থাকে অর্থাৎ নেগেটিভের জায়গায় পজিটিভ বসালে যন্ত্রটির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নীচে সার্কিট ড্রয়িং-এ কয়েকটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের প্রতীক দেখানো হয়েছে।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি বৈদ্যুতিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয় ফলে বৈদ্যুতিক তারের ইনস্টলেশন সঠিকভাবে এবং দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে পারি। বৈদ্যুতিক কাজ করার জন্য অবশ্যই সঠিক সরঞ্জাম নির্বাচন করতে সক্ষম হতে হবে তবেই কাজের মান উন্নত হবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক কাজগুলি সহজে ও দ্রুত করতে পারি।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি বৈদ্যুতিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয় ফলে বৈদ্যুতিক তারের ইনস্টলেশন সঠিকভাবে এবং দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে পারি। বৈদ্যুতিক কাজ করার জন্য অবশ্যই সঠিক সরঞ্জাম নির্বাচন করতে সক্ষম হতে হবে তবেই কাজের মান উন্নত হবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক কাজগুলি সহজে ও দ্রুত করতে পারি।
প্লায়ারগুলি তারের ইনসুলেশন কর্তন, তার কাটা, মোচড়ানো, বাঁকানো, ধরে রাখা এবং আঁকড়ে ধরার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের প্রায়ার আছে যেমন সাইড কাটিং প্লায়ার বৈদ্যুতিক তার এবং তারের ইনসুলেশন কাটার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। লংনোজ প্রায়ারগুলি সুক্ষ্ম তারগুলি কাটা এবং ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এগুলি আঁটসাঁট জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে, এই ধরনের প্রায়ারগুলি সাধারণত তামার তারে টার্মিনাল লুপ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। ডায়াগনাল প্লায়ারগুলি মাঝারি বা সূক্ষ্ম তারগুলি কাটার জন্য ব্যবহার করা হয় এগুলি নরম ধাতুর ছোট মুখগুলিকে বাঁকানোর জন্যও ব্যবহৃত হয়।
ওয়্যার স্লিপারগুলি ভারের নিরোধক অপসারণ করতে ব্যবহৃত হয়, বেশিরভাগ মাঝারি আকারের তারগুলি গেজ ১০ থেকে ১৬ গেজ পর্যন্ত। ওয়্যার স্লিপারগুলি গেজ ২৬ থেকে গেজ ১০ পর্যন্ত রাবার আচ্ছাদিত তারের নিরোধক অপসারণ করতেও ব্যবহৃত হয় ।
স্ক্রু ড্রাইভারগুলি স্লটেড হেড সহ স্কুগুলি আলগা বা আটকাতে ব্যবহার করা যেতে পারে, স্ক্রু ড্রাইভারগুলি বিভিন্ন আকারের হয়। স্ক্রু ড্রাইভারগুলি ইস্পাত দিয়ে তৈরি এবং টিপ (Tip) টেম্পারত করা থাকে। ক্ষু এর আকার ও আকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের স্ক্রু ড্রাইভার ব্যবহার করা হয়।
হাতুড়ি হল এমন সংগ্রাম যা আঘাত, ধাক্কাধারি এবং টানার জন্য ব্যবহৃত হয়। ধাতব, প্লাস্টিক, কাঠের তৈরি হাতুড়ি বিভিন্ন ওজনের এবং আকৃতির পাওয়া যায়। হ্যামার, বল পিন হ্যামার এবং ম্যালেটের মতো বিভিন্ন ধরণের হাতুড়ি রয়েছে। যাদের কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এই ডিভাইসগুলি খাত্তৰ শীট এবং কংক্রিটের দেয়ালে গর্ভ বা ড্রিল করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি বৈদ্যুতিক বোর্ড, সুইচ, সার্কিট ব্রেকার, তারের চ্যানেল ইত্যাদি লাগানের জন্য বিল্ডিং কাঠামোতে গর্ত তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। নীচে ছবিতে অবস্থান ও ছিল পদ্ধতি দেখানো হলো।
হ্যাক'স ধাতব নালী এবং সাঁজোয়া ভারের চ্যানেল কাঠতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ছোট এবং মাঝারি জাকারের ধাতু কাটাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। ছবিতে হ্যাকস কাটিং অবস্থান ও পদ্ধতি দেখানো হয়েছে। হ্যাকস ব্রেড এর দাঁত সামনের দিকে অর্থাৎ সামনে ঠেলার দিকে যে অবস্থায় চাপ দিয়ে কাটতে হয়।
একজন ইলেক্ট্রিশিয়ানের জন্য নিয়ন টেস্টার প্রধান হাতিয়ার বলা যেতে পারে। এটি দিয়ে ভোল্টেজ ও বিদ্যুতের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। নিয়ন টেস্টার এর সাহায্যে উচ্চস্তরের ভোল্টেজের উপস্থিতি পরীক্ষা করতে ব্যবহার করা হয় না। সাধারণত ২৫০ ভোল্টের বেশি ভোল্টেজ পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয় না।
একটি মাল্টিমিটার এর সাহায্যে ভোল্টেজ, কারেন্ট, রেজিস্ট্যান্স, ক্যাপাসিট্যান্স, কন্ডাক্টেল, ফ্রিকোয়েন্সি পরিমাপ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে ষাড়ে। এই যন্ত্রটি একজন ইলেকট্রিশিয়ানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত বৈদ্যুতিক উপাদান পরিমাণ করতে পারে। এই মিটার সঠিক রিডিংও দেখাতে পারে। বাজারে ডিজিটাল এবং অ্যানালগ মাল্টিমিটার পাওয়া যায়।
রেঞ্চগুলি হল এমন যন্ত্র যা ক্ষু, নাট এবং বোল্টগুলিকে খুলতে বা আটকাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাডজাস্টেবল রেঞ্চ, পাইপ রেঞ্চ, ডাইস গ্রিপ ব্রেঞ্চের মতো বিভিন্ন ধরণের রেঞ্চ রয়েছে। কাজের ধরণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের রেঞ্চ ব্যবহার করা হয়। নিচের ছবিতে দেখানো হলো।
অসিলোস্কোপ পরীক্ষা ওয়েডফর্ম হিসাবে ভোল্টেজ সংকেত প্রদর্শন করে এবং সময়ের সাথে ভোল্টেজের তারতম্যের ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা দেখায়। সংকেত পরিবর্তনের একটি গ্রাফ প্লট তৈরি করে। ছবিতে দেখানো হলো।
ফ্রিকোয়েন্সি মিটার এমন একটি যন্ত্র যা পর্যায়ক্রমিক বৈদ্যুতিক সংকেতের ফ্রিকোয়েন্সি প্রদর্শন করে। প্রতি সেকেন্ডে একটি ৰাতি কতবার জ্বলে এবং নিচে অর্থাৎ কতটি ওয়েভ সাইকেল তৈরি করে। সাধারণত আমাদের দেশে বৈদ্যুতিক ফ্রিকোয়েন্সি ৫০ হার্স (Hz) অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে ৫০টি ওয়েভ সাইকেল তৈরি করে।
এটা এমন একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যা পুনরাবৃত্তি এবং অপুনরাবৃত্তি এনালগ বা ডিজিটাল সংকেত প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন কাজে যেমন সংকেত পথনুসরণ, সংকেত্ত পরিবর্ধক করা, সংকেত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধান ইত্যাদি বিষয়ে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন উদ্দেশ্যের জন্য বিভিন্ন ধরণের সংকেত এবং ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করে। যখন শব্দ সংকেত হতে নিয়ন্ত্রিত ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয় তখন ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রিত অসিলেটরের মাধ্যমে সামঞ্জস্য তরঙ্গ তৈরি করে থাকে। এই তরঙ্গ বিভিন্ন ধরনের ওয়েড প্যাটার্ন যেমন স্কয়ার, ট্রাই-অ্যাঙ্গুলার ওয়েড হয়ে থাকে যা শব্দ সংকেত এর উপর নির্ভর করে।
সুইচ হল একটি ডিভাইস যা সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহকে বন্ধ করা বা চালু করা। প্রতিটি বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যাপ্লিকেশন ডিভাইসটির চালু এবং বন্ধ করার জন্য কমপক্ষে একটি সুইচ ব্যবহার করে । মুলত সুইচ দুই ধরণের হতে পারে।
ক) যান্ত্রিক সুইচ
খ) বৈদ্যুতিক সুইচ
যান্ত্রিক সুইচগুলি হল স্পর্শক সুইচ যা এগুলিকে অবশ্যই স্পর্শ করে, ঘুড়ায়ে, টিপে বা পুশ করার মাধ্যমে সক্রিয় করতে হয়। অন্যদিকে, বৈদ্যুতিক সুইচগুলি সার্কিট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরাসরি স্পর্শ করার প্রয়োজন হয় না। এগুলি অর্ধপরিবাহী ক্রিয়া দ্বারা সক্রিয় হয়।
প্লাগ একটি বৈদ্যুতিক ডিভাইস যা পাওয়ার সংযোগ করতে ব্যবহৃত হয়। পাশে বিভিন্ন টাইপের প্রাণ এর সাথে বিভিন্ন আকারের সকেট দেখানো হয়েছে। সাধারণত টু পিন এবং থ্রি পিন প্রাণ দেখা যায় তবে এদের সহায়ন ও আকার ভিন্ন হয়ে থাকে। সেই অনুযায়ী সকেট তৈরি করে থাকে। নীচের ছবিতে দেখানো হলো।
কন্ট্রোল সার্কিট এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক উপাদানগুলির সুরক্ষা ও সুইচিংয়ের জন্য রিলে অপরিহার্য উপাদান। সকল রিলের লক্ষ্য ভোল্টেজ বা কারেন্টের সাথে প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সার্কিটগুলি খুলতে বা বন্ধ করতে সাহায্য করে। এখানে রিলে ৫টি টার্মিনাল পোস্ট নিয়ে গঠিত হয়েছে কয়েলে দু প্রান্তে দুটি পোস্ট, মাঝে কমন এবং অপর পাশে ক্লোজ ও ওপেন পোস্ট থাকে।
সুইচ মোড পাওয়ার সাপ্লাই হল ইলেকট্রনিক পাওয়ার সাপ্লাই যা বৈদ্যুতিক শক্তিকে দক্ষতার সাথে সুইচিং নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। অন্যান্য পাওয়ার সাপ্লাইয়ের মতো SMPS ডিসি বা এসি সোর্স থেকে ডিসি লোডে পাওয়ার স্থানান্তর করে যেমন ডেস্কটপ কম্পিউটার।
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার হল বৈদ্যুতিক ভিভাইস যা ইনপুট বা ইনকামিং সাপ্লাই ভোল্টেজের পরিবর্তন নির্বিশেষে তার আউটপুট টার্মিনালগুলিতে একটি লোডের জন্য একটি ধ্রুবক ভোল্টেজ সরবরাহ করে। এটি ওভার ভোল্টেজ, আন্ডার ডোস্টেজ এবং অন্যান্য ডোল্টেজ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি রক্ষা করে।
ডাইরেক্ট কারেন্ট মোটর এক ধরনের বৈদ্যুতিক মেশিন যা বৈদ্যুতিক শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর (ডিসি) করে। ডিসি মোটর সরাসরি প্রবাহের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তি গ্রহণ করে এবং এই শক্তিকে যান্ত্রিক ঘূর্ণনে রূপান্তর করে।
এসি মোটর হলো বৈদ্যুতিক মোটর যা অল্টারনেটিং কারেন্ট দ্বারা চালিত হয়। এসি মোটর সাধারণত দুটি মৌলিক অংশ নিয়ে গঠিত। একটি বাইরের স্টেটরে ঘূর্ণায়মান চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরির জন্য কয়েলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এবং আউটপুট শ্যান্টের সাথে সংযুক্ত ভিতরের রোটর দ্বিতীয় ঘূর্ণায়মান চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। ফলে ড্রাইভ শ্যাফট ঘূর্ণন গতি লাভ করে। ইনপুটে টার্মিনাল বক্সে অন্তর্ভুক্ত টার্মিনাল পোস্টে বৈদ্যুতিক কারেন্ট সরবরাহ করা হয়।
এটা একটি ডিজেল বা পেট্রোল ইঞ্জিন বা অন্যান্য শক্তি চালিত মেশিন । ইঞ্জিনের উৎপাদিত শক্তির সাহায্যে মোটর ড্রাইভেন শ্যাফটকে পরিচালিত করে। ভারপর মোটরের নীতি অনুসারে এসি মোটর ন্যায় এসি উৎপন্ন করে। বৈদ্যুতিক জেনারেটর যাকে ডায়নামোও বলা হয় যা গৃহস্থালী, বাণিজ্যিক এবং শিল্প গ্রাহকদের কাছে পাওয়ার লাইনের মাধ্যমে সঞ্চালন এবং বিতরণের জন্য যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তর করে। জেনারেটরগুলি অটোমোবাইল, বিমান, জাহাজ ও ট্রেনের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক শক্তিও উৎপাদন করে। জেনারেটর দুই ধরনের যথা- ক) এসি জেনারেটর খ) ডিসি জেনারেটর।
আউটপুট রিডিং পদ্ধতির উপর নির্ভর করে বৈদ্যুতিক পরিমাপক যন্ত্রের শ্রেণিবিভাগ। যেমন-
সরাসরি পরিমাপক : এই ধরনের ডিভাইসের আউটপুট সরাসরি প্রাপ্ত হয় এবং তাদের মান জানার জন্য কোন গাণিতিক গণনার প্রয়োজন হয় না।
ডিজিটাল ইনট্রুমেন্ট: ডিজিটাল বাটি সংখ্যাসূচক আকারে আউটপুট দেয়। যন্ত্রটি এনালগ যন্ত্রের তুলনায় তারও নির্ভুল কারণ পারে কোনও মানুষ কর্তৃক ত্রুটি ঘটে না।
এনালগ যন্ত্র: যে যজ্ঞের আউটপুট ক্রমাগত পরিবর্তিত হয় তাকে এনালগ যন্ত্র বলে। এনালগ ঘরটিতে পয়েন্টার রয়েছে যা পরিমাপযোগ্য পরিমাণের মাত্রা দেখায়।
শূন্য বিচ্যুতি য: এই যন্ত্রটি শূন্য বা শূন্য বিচ্যুতি পরিমাণিত পরিমাণের মাত্রা নির্দেশ করে। যন্ত্রটির উচ্চ নির্ভুলতা এবং সংবেদনশীলতা রয়েছে। একটি জানা এবং একটি অজানা মান ব্যবহার করা হয়। যখন জানা অজানা পরিমাপের পরিমাণের মান সমান হয়, তখন পয়েন্টারটি শূন্য বা শূন্য বিচ্যুতি দেখায়। এ যন্ত্রটি পটেনশিওমিটার এবং গ্যালভানোমিটারে শূন্য পয়েন্ট সাপার জন্য ব্যবহৃত হয়।
পরেটার বিচ্যূতি যন্ত্র: যে যন্ত্রে পয়েন্টারের বিচ্যুতির মাধ্যমে পরিমাপের মান নির্ধারণ করা হয় তাকে পরেন্টার বিচ্যুতি যন্ত্র বলে। কোনো সিস্টেমে চলমান যন্ত্রের পরিমাণের জন্য পরিমাপক যন্ত্রের পয়েন্টারকে বিচ্যুত করে যা ক্রমাঙ্কিত স্থির স্কেলের মাধ্যমে পরিমাণের মাত্রা জানা যায়।
নির্দেশক যন্ত্র: যে যন্ত্রটি পরিমাপকৃত পরিমাণের মাত্রা নির্দেশ করে তাকে নির্দেশক যন্ত্র বলে। নির্দেশক যন্ত্রটিতে একটি ডায়াল রয়েছে যা দাগকাটা ডায়ালের উপর চলে। ভোল্টমিটার, অ্যামিটার, পাওয়ার ফ্যাক্টর মিটার হল নির্দেশক যন্ত্রের উদাহরণ।
ইন্টিগ্রেটিং ইন্ট্রুমেন্ট: যে যন্ত্রটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সরবরাহকৃত মোট শক্তি পরিমাপ করে তাকে ইন্টিগ্রেটিং যন্ত্র বলে। যন্ত্র দ্বারা পরিমাপ করা মোট শক্তি সময়ের গুণফল এবং বৈদ্যুতিক পরিমাণ পরিমাপ করে। এনার্জি মিটার, ওয়াট আওয়ার মিটার হল ইন্টিগ্রেটিং যন্ত্রের উদাহর
রেকর্ডিং : যে যন্ত্রটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সার্কিটের অবস্থা রেকর্ড করে যা রেকর্ডিং যন্ত্র হিসাবে পরিচিত। এই রেকর্ডিং যা একটি কলস বহন করে যা কাগজের শীটে হালকাভাবে স্পর্শ করে কাগজে আঁকা বক্ররেখার বৈদ্যুতিক মান পরিমাণের তারতম্য দেখায়।
পরিমাপ ব্যবস্থার প্রধান কাজগুলি হল বৈদ্যুতিক ইউনিটগুলি নির্দেশ করা, রেকর্ড করা, শনাক্ত করা, নিয়ন্ত্রণ করা এবং পরীক্ষা করা। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার দেওয়া হলো।
• এটি বৈদ্যুতিক সিস্টেমের অপারেশন নিয়ন্ত্রণ এবং নিরীক্ষণ করতে সাহায্য করে ।
• আদর্শ মানের সাহায্যে পরিমাপ ইউনিটের ত্রুটি খুঁজে পেতে পারে।
• পাওয়ার স্টেশন তৈরিতে, যন্ত্রগুলি ডেটা রেকর্ডিং, মান পরিমাপ, ত্রুটি শনাক্তকরণ এবং আরও অনেক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
• এটি বিপদজনক অবস্থার অবস্থান শনাক্ত এবং রক্ষা করতে সাহায্য করে।
• বৈদ্যুতিক সিস্টেমের পরীক্ষামূলক ডেটা বিশ্লেষণের জন্য পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। সঠিক সংখ্যাসূচক মান প্রদর্শনের জন্য এটি অপরিহার্য। ডিজিটাল মাল্টিমিটার তার মধ্যে একটি।
• বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এটি ল্যাব, শিল্প পরিবেশ, বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল অধ্যয়ন, একটি বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক্স প্রকল্প নির্মাণ ইত্যাদিতে পরীক্ষায় ব্যবহার করে।
কাজের সরঞ্জামগুলির সুরক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যার জন্য ঘন ঘন মনোযোগের প্রয়োজন হতে পারে। যেকোন রক্ষণাবেক্ষণ প্রোগ্রামের মধ্যে প্রতিফলিত হতে পারে যেমন শুধুমাত্র ত্রুটি বা ব্যর্থতার পরেই ব্রেকডাউন রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যেখানে কাজের সরঞ্জামের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি হবে সেখানে ক্রমাগত ব্যবহার সঠিক হবে না। নিচে গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হল :
১.রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপারেশন টিমের সাথে সম্পর্কিত কাজগুলি পরিচালনা করা।
২।.প্রতিরোধমূলক রক্ষণাবেক্ষণ প্রোগ্রামগুলি বিকাশ এবং কার্যকর করা।
৩. বৈদ্যুতিক, বায়ুসংক্রান্ত, ইলেকট্রনিক পাশাপাশি প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোল (PLC) সিস্টেমের জন্য ইন্সট্রুমেন্টেশন মূল্যায়ন এবং সমস্যা সমাধান পরিচালনা করা।
৪. মেরামত এবং প্রতিস্থাপনের সাথে কার্যকরী অনুসরণ করে কমিশন ইনস্ট্রুমেন্টেশন নিশ্চিত করা।
৫. প্রয়োজন অনুসারে ইন্সট্রুমেন্টেশনে কার্যকরী কর্মক্ষমতা সম্পর্কিত পরীক্ষা পরিচালনা করা।
৬. প্রয়োজনীয় যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রতিস্থাপন কার্যক্রম সম্পাদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ এবং সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাগুলির সাথে সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করা।
৭. যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ এবং নির্মাণ পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনে পরিবর্তনের সচেতনতা বজায় রাখা এবং আপডেট করা।
৮. কাজের আদেশ সম্পূর্ণ করার জন্য শ্রেণীবিভাগ এবং অগ্রাধিকার ব্যবস্থা মেনে চলা।
৯. পরিকল্পনা এবং প্রতিক্রিয়াশীল কাজের ক্রিয়াকলাপ সম্পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সংস্থান শনাক্ত করতে পরিকল্পনা ও অপারেশন কর্মীদের সহায়তা করা।
১০. প্রতিটি অনুমোদিত অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি মেনে চলা।
১১. সময়সূচী কাজের লোড হিসাবে রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনাকারীদের সাথে সঞ্চালন করা।
১২. পরিমাপক যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার করা।
১৩. কাজ সমাপ্তির জন্য সমস্ত নির্দেশাবলী মেনে চলা।
ইলেকট্রো-স্ট্যাটিক ডিসচার্জ হল দুটি বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত বস্তুর মধ্যে হঠাৎ এবং ক্ষণস্থায়ী বৈদ্যুতিক প্রবাহ যা একটি বৈদ্যুতিক শর্ট ডাই-ইলেকট্রিক ব্রেকডাউনের কারণে ঘটে। ট্রাইবোচার্জিং বা ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক ইন্ডাকশন দ্বারা স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি তৈরি হতে পারে। ESD ঘটে যখন ভিন্নভাবে চার্জযুক্ত বস্তুগুলিকে একত্রে কাছাকাছি আনা হয় বা যখন তাদের মধ্যকার অন্তরক ভেঙ্গে যায়, প্রায়শই একটি দৃশ্যমান স্পার্ক তৈরি করে।
স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি হল ইলেকট্রনের ঘাটতি বা অতিরিক্ত ভারসাম্যহীনতা। ঘাটতি বা অতিরিক্ত ইলেকট্রনের মোট সংখ্যা সেই পৃষ্ঠের চার্জ নির্ধারণ করে। একটি অতিরিক্ত ইলেকট্রন পৃষ্ঠকে নেতিবাচক চার্জ এবং একটি ইলেকট্রন ঘাটতি পৃষ্ঠকে ধনাত্মক চার্জ ধরা হয়। এই চার্জ পরিমাপ করতে একটি ভোল্টমিটার ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিরাপদ পণ্য ব্যবহার এবং সাধারণ সতর্কতা অনুসরণ করে ইএসডি প্রতিরোধ ও নির্মূল করা যেতে পারে:
• PCB (Printed Board Circuit) এর ইউনিট উৎপাদনের জন্য একটি ESD নিরাপদ ক্লিনরুম পরিবেশে অ্যাসেম্বলি করা উচিত।
• PCB বা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম মেরামত করার সময়, কর্মীকে প্রাউন্ড করার জন্য সর্বদা একটি গ্রাউন্ডেড অ্যান্টি-স্ট্যাটিক কব্জির চাবুক পরিধান করা প্রয়োজন।
• ESD-নিরাপদ মাদুর টেবিল বা কাজের বেঞ্চে এবং মাটিতে রাখ।
• অ্যান্টি-স্ট্যাটিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা।
• যেখানে গ্রাউন্ডিং সম্ভব নয় সেখানে চার্জ নিরপেক্ষ করার জন্য আয়নাইজেশন (চার্জ প্রশমন) করার জন্য ionizers (স্ট্যাটিক এলিমিনেটর) ব্যবহার করা ।
• PCB প্যাকেজ করার সময় অ্যান্টিস্ট্যাটিক ব্যাগ ব্যবহার করা।
পরিবাহী পদার্থগুলি বৈদ্যুতিক প্রবাহের প্রবাহ বা উত্তরণ চার্জ বাহক হিসাবে ইলেকট্রন অথবা আয়ন-কে অনুমতি দেয় । এইভাবে দুই ধরনের পরিবাহী পদার্থ বিদ্যমান যেমন, ইলেকট্রনিক পরিবাহী ও আধুনিক পরিবাহী।
নিরোধক পদার্থ ইলেকট্রনের প্রবাহকে বাধা দেয় বা সীমিত করে, বৈদ্যুতিক চার্জের সর্বোচ্চ প্রতিরোধ দেখায়। অর্থাৎ যে পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ যেতে দেয় না, সেই পদার্থকে নিরোধক পদার্থ বলে।
পরিবাহী এবং নিষ্ক্রিয় ধারক মধ্যে পার্থক্য:
যদি রোধের মান কম হয় তবে স্ট্যাটিক চার্জ মাটিতে প্রবাহ মুক্ত হয়। আর রোধের মান বাড়তে থাকলে স্ট্যাটিক চার্জ মাটিতে প্রবাহ ধীর গতি হয়। অর্থাৎ উপরে চিত্রে প্রতি একক ক্ষেত্রফল রোধের মান ১০৫ হতে ১০৯ হলে নিষ্ক্রিয় ধারক এবং এর কম মান হলে পরিবাহী ধারক হিসাবে বিবেচিত হবে। আবার রোধের মান ১০৯ হতে ১০১৪ হলে ষ্ট্যাটিক চার্জ যুক্ত পদাৰ্থ বোঝাবে।
ডিজিটাল মাল্টিমিটার দিরে ক্যাপাসিট্যান্স বা "F" পরিমাপ করা যেতে পারে। এটির মাধ্যমে মোটামুটি রিডিং প্রদান করতে পারে যা খুব সুনির্দিষ্ট নয়। সঠিক পরিমাপের জন্য, LCR (ইন্ডাকট্যান্স, ক্যাপাসিটেল এবং রেজিস্ট্যান্স) মিটার ব্যবহার করা হয় যা খুব ব্যয়বহুল এবং এমনকি সমমান সিরিজ রেজিস্ট্যান্স ব্যবহার করে ক্যাপাসিট্যান্স পরিমাপ করা যায়।
ডিজিটাল বা এনালগ মাল্টিমিটার ব্যবহার করে আমরা একাধিক বৈদ্যুতিক পরিমাণ যেমন ভোল্টেজ, কারেন্ট, রেজিস্ট্যান্স, ক্যাপাসিট্যান্স, ফ্রিকোয়েন্সি তাপমাত্রা এবং ধারাবাহিকতা বা কন্টিনিউটি ইত্যাদি পরিমাপ করতে পারি। বৈদ্যুতিক ইলেকট্রনিক উপাদান যেমন প্রতিরোধক, ক্যাপাসিটর, ডায়ড, ট্রানজিস্টর এবং ভারের পরীক্ষা করতে পারি। নিম্নলিখিত ডিজিটাল মাল্টিমিটার ব্যবহার করে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্সের সঠিক মান পরিমাপ করা যায়।
১. ক্যাপাসিটরটি পরিপূর্ণ চার্জমুক্ত নিশ্চিত করতে হবে অর্থাৎ ক্যাপাসিটরের দু'টি টার্মিনাল শর্ট করলে কোনো স্পার্ক না হয় তবে বুঝতে হবে এটি চাৰ্জ মুক্ত।
২. মিটারের নাট 1K (১ কিলো ওহম) এ সেট করতে হবে।
৩. মাল্টিমিটার এবটি পজেটিভ অংশ ক্যাপাসিটরের পজেটিভ টারমিনালে এবং নেগেটিভ অংশ নেগেটিভ টারমিনালে সংযোগ করতে হবে।
৪. তারপর মিটারটি OL (Open Lime) অথবা ০ (অসীম) লেখা দেখাৰে অৰ্থাৎ ক্যাপাসিটরটি ভাল আছে বোঝাবে।
৫. যদি কোনো পরিবর্তন না হয় তবে ক্যাপাসিটরটি অকেজো বা খারাপ ধরে নিতে হবে।
১.৯.৩ ডিজিটাল মাল্টিমিটারের সাহায্যে কাপাসিটর টেস্ট (ক্যাপিসিটেন্স রোড):
১. ক্যাপাসিটরটি পরিপূর্ণ চার্জযুক্ত নিশ্চিত করতে হবে অর্থাৎ ক্যাপাসিটরের দু'টি টারমিনাল শর্ট করলে কোনো স্পার্ক না হয় তবে বুঝতে হবে এটি চার্জ মুক্ত।
২. সার্কিট বোর্ড হতে ক্যাপাসিটরটি খুলতে হবে।
৩. মিটারের নবটি C মোডে এ সেট করতে হবে।
৪. মাল্টিমিটার পোর্ট এর পজেটিভ অংশ ক্যাপাসিটরের পজেটিভ টার্মিনালে এবং নেগেটিভ অংশ নেগেটিভ টার্মিনালে সংযোগ করতে হবে।
৫. যদি মিটারটি ক্যাপাসিটরের প্রকৃত মানের কাছাকাছি দেখায় তবে ক্যাপাসিটরটি ভাল আছে।
ডিজিটাল মাল্টিমিটারের সাহায্যে ক্যাপাসিটর টেস্ট (কন্টিনিউটি মোড):
১. ক্যাপাসিটরটি পরিপূর্ণ চার্জযুক্ত নিশ্চিত করতে হবে অর্থাৎ ক্যাপাসিটরের দু'টি টারমিনাল শর্ট করলে কোনো স্পার্ক না হয় তবে বুঝতে হবে এটি চার্জ মুক্ত।
২. সার্কিট বোর্ড হতে ক্যাপাসিটরটি খুলতে হবে। ৩. মিটারের নবটি কন্টিনিউটি মোডে এ সেট করতে হবে।
৪. মাল্টিমিটার প্রবটি পজেটিভ অংশ ক্যাপাসিটরের পজেটিভ টারমিনালে এবং নেগেটিভ অংশ নেগেটিভ টারমিনালে সংযোগ করতে হবে।
৫. যদি মিটারটি OL (Open Line) অথবা শব্দ করে থেমে যায় তবে ক্যাপাসিটরটি ভাল আছে।
৬. যদি মিটারটি OL অথবা শব্দ না করে তবে ক্যাপাসিটরটি খারাপ আছে।
৭. যদি মিটারটি লাইট অন অথবা অনবরত শব্দ হতে থাকে তবে ক্যাপাসিটরটি শর্ট আছে।
ডায়মন্ড হল একটি সাধারণ পিএন জাংশন এবং দুটি টার্মিনাল ডিভাইস যা এক দিকে ফেরোয়ার্ড বায়াস) কারেন্ট প্রবাহিত করতে দেয়। এটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিজাইন এবং সিস্টেমে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত উপাদান যেমন রেকটিফায়ার, এলইডি লাইট সম্পর্কিত সার্কিট, ভোল্টেজ মাল্টিপ্লারিং সার্কিট, সোলার প্যানেল, লজিক গেট ইত্যাদি।
ফরোয়ার্ড বায়াসের ক্ষেত্রে ডায়মণ্ডের ভোল্টজ ড্রপ পরিমাপের মাধ্যমে ডায়ড টেস্ট করা হয়। ফরয়োর্ড ৰায়াসে ডায়োড বন্ধ সুইচ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ কারেন্ট প্রবাহিত হবে এবং কন্ডাক্টর এর মতো ব্যবহার করবে। রিভার্স বায়াসে খোলা সুইচ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ কারেন্ট প্রবাহিত হয় না এবং রেজিস্টর এর মতো ব্যবহার হবে।
১. সার্কিট হতে ডায়োড খুলতে হবে।
২. মিটারের নবটি ভায়ড টেস্ট মোডে এ সেট করতে হবে।
৩. মাল্টিমিটার প্রবটি পজেটিভ অংশ ডায়ডের পজেটিভ লিড (অ্যানোড) এবং নেগেটিভ অংশ নেগেটিভ লিড (ক্যাথোড) সংযোগ করতে হবে। (ফরোয়ার্ড বায়াস)
৪. যদি মিটারটি ০.৫-০.৮ ভোস্ট (সাধারন সিলিকন ডায়োড) ০.২-০.৩ ডোন্ট (জারমেনিয়াম ভারোড) দেখায় তবে ডায়ডটি ভাল আছে। ফেরোয়ার্ড বায়াস)
৫. মাল্টিমিটার প্রবটি পজেটিভ অংশ ভারতের পজেটিভ লিভ (ক্যাথোড) এবং নেগেটিভ অংশ নেগেটিভ লিড (অ্যানোড) সংযোগ করতে হবে। (রিভার্স বায়াস)
৬. যদি মিটারটি OL (Open Line) দেখায় তবে ডায়ডটি ভাল আছে। (রিভার্স বায়াস)
৭. যদি মিটারটি উভয় কানেকশনে OL (Open Line) দেখায় তবে ভায়োতটি ধারাপ আছে।
৮. যদি মিটারটি উভয় কানেকশনে ০.৪ ভোল্ট দেখায় তবে ভায়োডটি শর্ট আছে।
কোনো পরিবাহীর দুই প্রানের মধ্যে ভোল্টেজ পার্থক্য থাকলে তার মধ্য দিে কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে। এই কারেন্ট প্রবাহের পরিমাণ নির্ভর করে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, পরিবাহীর আকৃতি ও উপাদান এবং পরিবাহীর তাপমাত্রার উপর। একটি পরিবাহীর তাপমাত্রার স্থির থাকলে, তার মধ্য দিয়ে যে কারেন্ট প্রবাহিত হয় তা এর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এবং রেজিস্ট্যান্স-এর উপর নির্ভর করে।
এই সম্পর্কে জর্জ সাইমন ওহম ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে একটি সূত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা তার নামানুসারে ওহমের সুত্র নামে পরিচিত। সার্কিটের ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স-এর মান নির্ণয় করার জন্য ওহমের সুত্র ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহীর ভিতর দিয়ে যে কারেন্ট প্রবাহিত হয়, তা ঐ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক এবং রেজিস্ট্যান্স-এর ব্যস্তানুপাতিক বা উল্টানুগাতিক।
মনে করি, AB পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব যথাক্রমে VA Vg । পরিবাহীর রেজিস্ট্যান্স R এবং এর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য = VA∼VB=V ওহমের সূত্রানুসারে
I ∝ V…… (i)
... (ii)
কোন পরিবাহকের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য ১ ভোট হলে যদি তার মধ্য দিয়ে ১ অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহ প্রবাহিত হয় তবে ঐ পরিবাহীর রোধকে ১ ওহম বলে। রোধের বিপরীত রাশি হলো পরিবাহিতা।
নির্দিষ্ট উষ্ণতায় যেকোনো পরিবাহীর রোধ এর দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক এবং গ্রন্থচ্ছেদের ব্যস্তানুপাতিক। অভিপরিবাহী (সুপার কন্ডাক্টর) ছাড়া সব পরিবাহীরই কিছু না কিছু রোধ আছে, তা যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন। কোনো একটি বস্তুর রোধ দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। একটি উপাদান অন্যটি আকার।
যখন কোনো বর্তনীতে সবগুলো রোধের প্রথম প্রান্ত একটি মাত্র সাধারণ বিন্দুতে এবং অপরপ্রান্ত অপর একটি মাত্র সাধারণ বিন্দুতে যুক্ত থাকে তখন সে বর্তনীকে বলা হয় সমান্তরাল বর্তনী। সমান্তরাল বর্তনীতে ভার প্রত্যেক উপাদানের বিষৰ পার্থক্য একই থাকে।
১. ইএসডি সতর্কতা বিধি অনুসরণ করতে পারব;
২. সার্কিটে ব্যবহৃত উপাদানসমূহ পরীক্ষার জন্য পরিমাপক যন্ত্র নির্বাচন করতে পারব;
৩. পরিমাপক যন্ত্রের কার্যক্ষমতা চেক করতে পারব;
৪. ইলেকট্রিক্যাল পরিমাপ তথ্যসমূহ নির্দিষ্ট ছকে লিপিবদ্ধ করতে পারব;
৫. ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রাংশসমূহ যথাস্থানে ব্যবহার ও সংরক্ষণ করতে পারব;
৬. কাজের শেষে সকল মালামালসমূহ নির্দিস্ট স্থানে সংরক্ষণ এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে পারব।
নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
সেফটি সু | সাইজ অনুযায়ী | ১ জোড়া |
গগলস | সাইজ অনুযায়ী | ১টি |
হ্যান্ড গ্লাভস | সাইজ অনুযায়ী | ১ সেট |
অ্যাপ্রন | সাইজ অনুযায়ী | ১টি |
মাস্ক | সাইজ অনুযায়ী | ১টি |
যন্ত্রপাতির নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
ওয়েল্ডিং মেশিন | ডিজিটাল | ১টি |
ওয়্যার ব্রাশ | মানসম্মত | ১টি |
ইলেকট্রোড হোল্ডার | মানসম্মত | ১টি |
চিপিং হ্যামার | মানসম্মত | ১টি |
ট্যাং | মানসম্মত | ১টি |
ইকুইপমেন্ট এর নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
ওয়েল্ডিং মেশিন | মানসম্মত | ১টি |
ইলেকট্রোড হোল্ডার | মানসম্মত | ১টি |
মালামালের নাম | সংক্ষিপ্ত বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
ওয়েন্ডিং টেবিল | আদর্শ মানের | ১ সেট |
কাঠের পাটাতন | আদর্শ মানের | ১টি |
ওয়েন্ডিং অব | সরবরাহকৃত | ১টি |
ছবি দেখে ক্লিপ-অন মিটারের সাহাযে নিজে নিজে পরিমাপ কর।
১. কারেন্টের সংজ্ঞা ?
২. ভোল্টেজ বলতে কী বোঝায়?
৩. বৈদ্যুতিক পাওয়ার বলতে কী বোঝায়?
৪. জেনারেটর কাকে বলে?
৫. রোধ কাকে বলে?
৬. রেজিস্ট্যান্স এর ব্যবহারিক একক কী?
১. Ohm's Law গুহলের সুত্র ?
২. Power Factor কাকে বলে?
৩. চোক কয়েল কি?
৪. পরিমাপক এর শ্রেণীবিন্যাস কর।
৫. সিঁরিজ প্যারালাল সার্কিটের বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ।
১. নিচের চিত্রের প্রতিটি লোডের কারেন্ট ও ভোল্টেজ এবং সমভুক্ত রোধের মান নির্ণয় কর।
২. এসি ও ডিসি কারেন্টের মধ্যে পার্থক্য ককি?
৩. তিনটি রোধ বিশিষ্ট বর্তনী অঞ্চল করে উহার সমতুল্য রোধ নির্ণয় কর।
৪. একটি ৩০ ওয়ার্ড বাপ্তির রেজিস্ট্যান্স ৬৫০ ওহম। নাভিটিকে ২২০ ভোস্ট সরবরাহ করলে উহার মধ্য দিয়ে কী পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত করৰে?
৫. ওহমের সূত্রটি বর্ণনা কর ।
আরও দেখুন...