ধাতুখণ্ডকে নির্দিষ্ট মাপ এবং আকারে পরিণত করার জন্য এর কোনো স্থানকে কতটুকু ক্ষয় করতে হবে, ছিন্ন বা নালী করতে হলে তা কোন স্থানে কত গভীর এবং কি আকারের করতে হবে, ছিদ্রের মধ্যে ক্ষু-গ্রেড করতে হবে কিনা ইত্যাদি বিষয় কাজ আরম্ভ করার পূর্বেই স্থির করে নেয়া প্রয়োজন হয়। এটা না করে প্রথমেই যদি কাজে অগ্রসর হওয়া যায়, তাহলে, ধাতুখণ্ড অর্থাৎ বস্তুটি কখনও যথাযথ আকার বা মাপের হতে পারে না। এজন্য, কাজ আরম্ভ করার আগে প্রত্যেক বস্তুর বা ধাতুখণ্ডের উপরিভাগে নক্সা অনুসারে কতকগুলো রেখা টেনে এবং চিহ্ন দেওয়ার প্রণালীকে মার্কিং-অফ বা লেয়িং-আউট বলে। একে সংক্ষেপে কেবল মার্কিং বা লে-আউট করা বলা হয়ে থাকে।
কাজ আরম্ভ করার পূর্বে অথবা কাজের সময় ড্রয়িং অনুযায়ী ধাতুপক্ষের উপরিভাগে যেসকল টুলস দ্বারা মার্কিং করা হয় বা দাগ কেটে চিহ্ন দেওয়া হয় বা চিহ্নিত করার কাজে সাহায্য করে, সেসব টুলসকে মার্কিং বা লে-আউট টুলস বলা হয়। প্রদত্ত ডুয়িং অনুসারে কার্যবস্তুর উপরিতলে ড্রয়িং বা নকশা অংকন করাকে 'মার্কিং অথবা লে-আউট বলা হয়। কাগজের উপর পেন্সিল ব্যবহার করে যে নিয়মে মেকানিক্যাল ড্রয়িং করা হয় অনুরূপ নিয়মে মার্কিং অথবা লে-আউট টুলস ব্যবহার করে কার্যবস্তু তৈরি করার জন্য ওয়ার্কশিসের উপর মার্কিং অথবা লে-আউট করা হয়। বেঞ্চ ওয়ার্ক, শিট মেটাল ওয়ার্ক, ফিলিং এর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য লে-আউট ওয়ার্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্ন প্রকার মার্কিং অথবা লে-আউট টুলগুলো হলো-
নিম্নে বিভিন্ন প্রকার মার্কিং ও লে-আউট টুলসের ব্যবহার আলোচনা করা হলো-
যে ওয়ার্কপিসে মার্কিং করা হবে পূর্বে ওয়ার্কপিসটি নরম Bristle Brush ব্যবহার করে তার পৃষ্ঠটি পরিষ্কার করতে হবে।ওয়ার্কপিস যদি খাতৰ হয় তাহলে ছোট পেইন্ট ব্রাশ ব্যবহার করে পৃষ্ঠকে একটি পাতলা চিহ্নিত কালির স্তর দিয়ে প্রলেপ দিতে হবে এবং এটি শুকানোর জন্য কয়েক মিনিট রেখে দিতে হবে। ওয়ার্কপিস এখন মার্কিং করার জন্য প্রস্তুত ।
যেভাবে কলম ধরা হয় ফাইবারকে সেই ভাবে ধরে রেখে, ফাইবারকে একটি স্টিবুলার বা ট্রাই ফোয়ার বা টেমপ্লেটের প্রান্তের বিপরীতে রাখতে হবে। ওয়ার্কপিসে ৪৫ ডিগ্রি কোণে ফাইবারকে ধরে রাখতে হবে।
ফাইবারের টিপটি স্টিলপারের প্রান্তের বিপরীতে রেখে ইঞ্জিনিয়ারিং করার বা টেমপ্লেট, এবং একই কোণে ফাইবারকে ওয়ার্কপিসের সাথে ফাইবার মাথাটি যে দিকে কাত হয়েছে সেদিকে টানতে হবে। একজন টেকনিশিয়ান ফাইবার ব্যবহার করে, ওয়ার্কপিসে একটি লাইন ফাইৰ করে সরাতে হবে যেদিকে ফাইবার হেড কাত হয়েছে সেদিকে যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করতে হবে যাতে ওয়ার্কপিস পৃষ্ঠের সাথে টিপটি জবিচ্ছিন্ন যোগাযোগে থাকে। ওয়ার্কপিসের পাঢ় কালিযুক্ত পৃষ্ঠে একটি হালকা লাইন তৈরি করবে যা উজ্জ্বল হবে। ওয়ার্কপিসে মার্ক আউট এবং অন্যান্য কাজ শেষ করার পরে, একটি দ্বাবক ক্লিনার বা সিখাইলেড স্পিরিট ব্যবহার করে কালিযুক্ত পৃষ্ঠের কালি পরিষ্কার করতে হবে।
১. ফাইবার দিয়ে পাঞ্চ করার জন্য উপাদানটিকে চিহ্নিত করতে হবে।
২. চিহ্নের উপর পাক্ষ ধরে রাখতে হবে। এটিকে কাত করে ধরতে হবে যাতে পয়েন্টের কেন্দ্রের সাথে টিপটি সারিবদ্ধ করতে পারে।
৩.পাক্ষটিকে সোজা করে রাখতে হবে।
৪.একটি হাতুড়ি দিয়ে পাঞ্চের ভোঁতা প্রান্তে আঘাত করতে হবে।
৫.পাঞ্চটি অপসারণ করতে হবে এবং পাঞ্চিং চিহ্ন চেক করতে হবে। যদি এটি মার্কিং এর কেন্দ্রে না থাকে বা যথেষ্ট গভীর না হয় তবে আবার পদ্ধতিটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
একটি ধাতুর ওয়ার্কপিসে প্রান্তের সমান্তরাল রেখা টানতে হলে চিত্রের ন্যায় ব্যবহার করতে হবে এছাড়াও বলেগ ক্যালিপার দ্বারা একটি বৃত্তাকার বারের কেন্দ্র খুঁজে পেতে ব্যবহার করা হয়।
একটি ধাতব ওয়ার্কপিসে বৃত্ত বা আর্কস চিহ্নিল্ড করতে ডিভাইডার ব্যবহার করা হয়। প্রথমে আর্ক বা সার্কেল মার্কিং করতে হলে বৃত্ত বা আর্ক এর সেন্টার মার্কিং করতে হবে তারপর ডিভাইডারের একটি লেগ পয়েন্ট সেন্টারে চাপ দিয়ে রেখে অন্য লেগটি দিয়ে আর্ক বা সার্কেল আকতে হবে।
একটি ধাতব ওয়ার্কপিসের উপর ৯০° কোণে একটি লাইন চিহ্নিত করতে ট্রাই স্কয়ার ব্যবহার পদ্ধতি।
বৃত্তাকার অংশের উপাদানের একটি অংশের কেন্দ্র খুঁজে বের করার জন্য একটি সারফেজ লেজ খুব দরকারী। এটি সাধারণত্ত সমান্তরাল রেখা 'মার্কিং করতে ব্যবহৃত হয়।
এর বেসটি ভারী থাকে যাতে এটি ব্যবহার করার সময় স্থিতিশীল। সারফেস গেজের স্টান্ড চৌম্বকীয় সিস্টেমের থাকে অর্থৎ এর অর্থ হল মাতব পৃষ্ঠের উপর লক করা যেতে পারে যাতে এটি ব্যবহার করা সহজ হয়।
উপরের চিত্রটি একটি ভি ব্লকে রাখা বেলনাকৃতি ইস্পাত। সারফেস গেজ দ্বারা বেলনাকৃতি ইস্পাত ফেইজে মার্কিং করা হবে। প্রথমে ডি-ব্লকে বন্ধুটিকে রাখতে হবে এবং সারফেস গেজ টি চিত্রের ন্যায় বসাতে হবে। বৃত্তাকার পৃষ্ঠ জুড়ে সারফেস পেজটি সরাতে হবে এবং একটি লাইন ফাইবিং হবে।
তারপর ইস্পাতটি ১০ ডিগ্রি ঘোরানো হবে এবং আরেকটি লাইন মার্কিং করতে হবে। কেন্দ্রে একটি বর্গক্ষেত্র তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে (উপরের চিত্রগুলি দেখুন)। তারপর বৃত্তের সঠিক কেন্দ্রটি শনাক্ত করতে বর্গক্ষেত্রের প্রতিটি কোণ থেকে তির্যক রেখাগুলি আঁকতে হবে। ৩.২.৬ কম্বিনেশন ক্ষরার সেট ও এর ব্যবহার
▪️প্রোডাক্টর হেড ব্যবহার পদ্ধতি
প্রোস্টাক্টর হেডটি নির্দিষ্ট কোণ নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা হয়, কারণ একটি বর্গক্ষেত্রের বিপরীতে প্রোট্যাক্টরটি কোণ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
যখন স্টিল রুলটি খুলে ফেলা হয়তখন তির্যক প্রান্ত দ্বারা কোন পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয়।
▪️সেন্টার হেড ব্যবহার পদ্ধতি
কম্বিনেশন স্কয়ার সেট টি বৃত্তাকার বস্তুর উপর কেন্দ্রের মাথা সংযুক্ত করতে হবে।
■ বস্তুর ব্যাস চিহ্নিত করার পদ্ধতি
কম্বিনেশন ক্ষরার সেটটি ৯০° ঘুরাতে হবে এবং আরেকটি ব্যাস লাইন মার্কিং করতে হবে। যেখানে লাইনগুলি একে অপরকে ক্রস করে বস্তুর কেন্দ্র চিহ্নিত করবে।
কখনও কখনও বস্তুটি একটি সঠিক বৃত্ত নাও হতে পারে। তখন দুটি ব্যাসের বেশি লাইন চিহ্নিত করা দরকার পরে এবং রেখাগুল একই বিন্দু থেকে যাবে না। তারপর কেন্দ্রটি আসলে কোথায় তা রেখা গুলোর হেনবিন্দু নির্দেশ করবে।
প্রধান স্কেলের আকার অনুযায়ী ভার্নিয়ার স্কেলের আকার রৈখিক বা গোলাকার হয়ে থাকে। সকল ভার্নিয়ার স্কেল একই নীতিতে তৈরি হয় না। তৈরির নীতি অনুযায়ী ভার্নিয়ার স্কেলের ধ্রুবক নির্ধারিত হয়ে থাকে। প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম এক ঘরের মান এবং ভার্নিয়ার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যার ভাগফলকে ভার্নিয়ার ধ্রুবক বলে।
ভার্নিয়ার কনস্ট্যান্ট = প্রধান স্কেলের এক ভাপের মান + ভার্নিয়ার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যা।
ধরা যাক,
একটি ভার্নিয়ার ক্ষেলের মোট ভাগ সংখ্যা ২০ এবং ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের মেইন স্কেলের ক্ষুদ্রতম ঘরের মান ১ মিমি।
সুতরাং ভার্নিয়ার ধ্রুবক হবে = ১ ÷ ভার্নিয়ার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যা
ভার্নিয়ার ধ্রুবক =
ভার্নিয়ার ধ্রুবক = ০.০৫ মিমি
উদাহরণ- ১ একটি ভার্নিয়ার ক্যালিপারের ভার্নিয়ার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যা ১০ যাহা প্রধান স্কেলের ভাগের দূরত্বের সমান। প্রধান স্কেলের ১ ভাগের মান ১ সিসি। ভার্নিয়ার ধ্রুবক বাহির কর।
সমাধান: আমরা জানি,
ভার্নিয়ার কনস্ট্যান্ট = প্রধান স্কেলের এক ভাগের মান + ভার্নিয়ার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যা
=১ মিমি ÷ ১০
= ০.১ মিমি
উত্তর: ভার্নিয়ার কনস্ট্যান্ট হবে ০.১ মিমি।
বস্তুর প্রকৃত পরিমাপ সবসময় পূর্ণ সংখ্যায় হয় না। ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ যদি প্রধান স্কেলের যে কোন দাগের সাথে মিলে যায় তাহলে পরিমাণ তত মিসি হয়। কিন্তু ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ যদি প্রধান স্কেলের দু'টি দাগের মধ্যবর্তী কোন স্থানে অবস্থান করে তাহলে ভার্নিয়ার ক্ষেল থেকে মাণ পড়ার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ভার্নিয়ার ক্ষেলের শূন্য চিহ্নিত দাগটি প্রধান স্কেলের যে দাগ অতিক্রম করে সে দাগ পর্যন্ত দূরত্বকে বছর পূর্ণ পরিমাপ ধরা হয়। আবার ভার্নিয়ার স্কেলে যত সংখ্যক দাগটি প্রধান স্কেলের একটি মাত্র দাগের সাথে একই সরলরেখায় চলে আসে বা সবচেয়ে কাছাকাছি হয় তার সাথে ভার্নিয়ার ধ্রুবক গুণ করে যা পাওয়া যায়, তাকে ইতিপূর্বে প্রাপ্ত পূর্ণমাপের সাথে যোগ করে বস্তুর প্রকৃষ্ণ পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়।
এই ভার্নিয়ার স্কেলের ধ্রুবক ০.০২ মিমি
★ ভার্নিয়ার স্কেলে শূন্য রেখার ঠিক আগে প্রধান স্কেল রিডিং নোট কর।
★ এখানে, ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য অবিলম্বে ২৯ মিমি পূর্বে।
★ এটি (২৯ মিসি) ভার্নিয়ার ক্ষেলে দশমিক রিডিংয়ের সাথে যোগ করতে হবে।
★ ভার্নিয়ার স্কেলের লাইনটি লক্ষ্য কর, যা মূল স্কেলে একটি লাইনের সাথে মিলিত আছে।
★ ভার্নিয়ার স্কেলের ৩১নং ভাগের সাথে লাইন প্রধান স্কেলের একটি লাইনের সাথে মিলে গেছে।
সুতরাং, , রিডিং হল ২৯ মিমি গ্রাস ০.০২ মিমি মোট ৩১ ডিভিশন
২৯ সিমি + ৩১x০.০২ = ২৯.৬২ মিমি
আরও দেখুন...