স্বল্প সময়ের জন্য চিংড়ির সজীবতা রক্ষার্থে শীতলীকরণ অত্যন্ত সুবিধাজনক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চিংড়ির তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি আনা হয়, তবে হিমাঙ্কের নিচে নয়। এ পদ্ধতি খুব দ্রুত ও দক্ষতার সাথে পরিচালনার মাধ্যমে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণে শীতলীকরণ পদ্ধতি অনুপযোগী। আহরণের পরপরই যদি চিংড়িকে অন্তর্বর্তীকালীন সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়, যেমন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ, অবতরণ কেন্দ্র থেকে বাজারে বা প্রক্রিয়াজাত কারখানায় প্রেরণের প্রয়োজন হয় তবে এ পদ্ধতি অবলম্বনে ভালো ফল পাওয়া যায়। শীতলীকরণের প্রধান লক্ষ্য হলো মাছের তাপমাত্রাকে ০ ডিগ্রি সে. এর কাছাকাছি নিয়ে আসা। শীতলীকরণের উপায়সমূহ হলো-
ক) বরফ ব্যবহার করেঃ নিম্ন তাপমাত্রায় মাছ সংরক্ষণের একটি স্বল্পকালীন পদ্ধতি। স্বাদু পানি থেকে উৎপাদিত টুকরো বা গুঁড়ো বরফ ব্যবহার করে চিংড়িকে আচ্ছাদিত করা হয়। ফলে মাছের পচন সাময়িকভাবে রাখে করা যায়। কারণ সঠিকভাবে চিংড়ির তাপমাত্রা (০° সে. ৪ ডিগ্রি সে.) কমিয়ে আনার ফলে এনজাইম, জারণ ও ব্যাকটেরিয়াজনিত পরিবর্তন কমিয়ে দেয় এবং বরফগলা পানি চিংড়ির উপর দিয়ে প্রবাহিত করে এবং ব্যাকটেরিয়া, রক্ত, শ্লেষ্মা ইত্যাদি ধৌত করে।
খ) সংরক্ষক ও বরফ ব্যবহার করেঃ অনেক সময় সংরক্ষিত মাছের গুণাগুণ ভালো রাখার জন্য ও বরফের গুণাগুণ উন্নয়নের জন্য বরফের সাথে কিছু ব্যাকটেরিয়ানাশক বা অন্য যে কোনো ধরনের সংরক্ষক ব্যবহার করা হয়। এ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যগুলারে নাম হলো- সোডিয়াম বেনজোয়েট, ফিউমারিক অ্যাসিড, কার্বন ডাই অক্সাইড, ডাই সোডিয়াম ফসফেট, বেনজোয়িক অ্যাসিড, সোডিয়াম নাইট্রাইট, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ইত্যাদি।
গ) শীতল সামুদ্রিক পানি ব্যবহার করেঃ বরফ ব্যবহারের বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ঠান্ডা সামুদ্রিক পানিতে চিংড়িকে ডুবিয়ে রেখে শীতলীকরণ করা যায়। সামুদ্রিক ট্রলারে এই পদ্ধতি কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়। ট্রেলারের মধ্যে কোনো সুবিধাজনক পাত্র বা ট্যাংকে সমুদ্রের পানি যান্ত্রিকভাবে কমপ্রেসর এবং কুলিং পাইপের সাহায্যে বা বরফ মিশ্রিত করে ২ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়। বৃহৎ ফ্রিজিং ট্রলারে আহরিত মাছকে হিমায়িতকরণের পূর্বে এভাবে শীতলীকরণ করা হয়।
আরও দেখুন...