সরলরৈখিক কর্মকর্তা ও পদস্থ কর্মী সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন কাঠামোকেই সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠন বলে । সরলরৈখিক সংগঠনের ত্রুটিসমূহ দূরপূর্বক অতিরিক্ত সুবিধা অর্জনের জন্যই মূলত এরূপ সংগঠনের উদ্ভব ঘটে । আমাদের দেশে বৃহদায়তন সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান; যেমন- ব্যাংক, বিমা, সরকারি প্রশাসন ইত্যাদি সর্বত্রই আমরা এ ধরনের সংগঠন কাঠামোর ব্যবহার দেখাতে পায় । যে সকল সুবিধার কারণে সর্বত্র এর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষণীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. নির্বাহীর কর্মভার লাঘব (Relieving burden of executives) : এরূপ সংগঠনে সরলরৈখিক নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপদেষ্টা বা সহযোগী কর্মী নিয়োগ করায় নির্বাহীর কর্মভার অনেকাংশে লাঘব হয় । ফলে সে দক্ষতার সাথে কার্য সম্পাদন করতে পারে । এতে নির্বাহীর কর্মদক্ষতার উন্নয়ন ঘটে ।
২. স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ হ্রাস (Reducing the chance of whims) : এ ধরনের সংগঠনে স্বাভাবিকভাবেই একজন নির্বাহী তার দায়-দায়িত্বের অংশ বিশেষ সহযোগী বা উপদেষ্টা কর্মীর ওপর অর্পণ করে । এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞ কর্মীর উপস্থিতি থাকায় প্রয়োজনীয় বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ এক্ষেত্রে সরলরৈখিক নির্বাহীর নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় । ফলে তার স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায় ।
৩. সমস্যার দ্রুত সমাধান (Prompt solution of problems) : সরলরৈখিক সংগঠনে নির্বাহী নানান কাজে ব্যস্ত থাকায় অনেক সময় তার পক্ষে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে যথাযথ ভূমিকা পালন সম্ভব হয় না । কিন্তু এক্ষেত্রে উপদেষ্টা কর্মীর উপস্থিতি থাকায় তারা সমস্যা সমাধানে নির্বাহীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে। ফলে সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হয়।
৪. শ্রম বিভাগের সুফল অর্জন (Achieving the merits of division of labour) : এ ধরনের সংগঠনে একজন নির্বাহী তার কাজের অংশবিশেষ সহযোগীর ওপর অর্পণ করতে পারে । ইচ্ছে করলে একজন নির্বাহী তার কাজ সহযোগীর সাথে ভাগ করে যে যে কাজের যোগ্য সে সেই কাজ সম্পাদন করে। এতে প্রত্যেকের পক্ষে একই ধরনের কাজ করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞতা অর্জন সম্ভব হয় । ফলে কার্যক্ষেত্রে দক্ষতার উন্নয়ন ঘটে ।
৫. নমনীয়তা অর্জন (Achieving flexibility) : সরলরৈখিক সংগঠনে নির্বাহীগণ অনেক সময় কার্যক্ষেত্রে এত ব্যস্ত থাকে যাতে প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন চিন্তা-ভাবনা ও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না । কিন্তু পদস্থ কর্মী কর্মরত থাকায় নির্বাহী যেমনি নতুন চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পায় তেমনি প্রয়োজনে একাধিক সহযোগী নিয়োগ করে কর্মক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করতে পারে ।
৬. সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণে সুবিধা (Advantages of co-ordination & control) : এরূপ সংগঠনে পদস্থ কর্মীগণ অন্য বিভাগের খোঁজখবর গ্রহণ, তথ্য সংগ্রহ, তথ্য প্রদান ইত্যাদি কাজ করতে পারায় অন্য বিভাগের সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন সহজ হয়। এ ছাড়া অধস্তনের কাজের খোঁজখবর গ্রহণ, কার্যফল মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপও অনেক সহজ হয়ে থাকে ।
আরও দেখুন...