পৃথিবীর এই যে বিচিত্র জীবজগৎ, তা টিকে থাকার জন্য দরকার হয় শক্তির। এই শক্তি কোথা থেকে আসে জানো? পৃথিবীর সব শক্তি আসে সূর্য থেকে। যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সূর্যের আলোকরশ্মি পৃথিবীর অসংখ্য জীবকে টিকিয়ে রাখতে, তাদের শক্তি যোগাতে সাহায্য করে তার নাম সালোকসংশ্লেষণ বা Photosynthesis। পৃথিবীর জীবজগতের জন্য সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া অশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমেই সূর্যের আলোকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বড় বড় জৈব অণুর মধ্যে, বিশেষ করে কার্বোহাড্রেট বা শর্করা হিসেবে জীবের কোষের মধ্যে জমা হয়।
কিন্তু শক্তি তো শুধু জমা করলেই হবে না, জীবের নানান কাজে সেই শক্তিকে ব্যবহারও করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে শর্করা (Carbohydrate) ভেঙে কোষের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার উপযোগী শক্তিরূপে পরিণত করে আরেকটি প্রক্রিয়া। এর নাম শ্বসন (Respiration)।
প্রকৃতিগত দিক থেকে সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বসন প্রায় বিপরীতমুখী প্রক্রিয়া। কারণ, একটিতে শক্তি সঞ্চিত হয়, আরেকটিকে সঞ্চিত শক্তি ভেঙে কোষের ব্যবহার উপযোগী রূপে নেওয়া হয়। তবে মনে রাখতে হবে, সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন প্রক্রিয়ার বিক্রিয়াগুলো হুবহু বিপরীত কিছু নয়। সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বসন প্রক্রিয়া দুটি তুলনা করলে পৃথিবীতে সমস্ত জীব যে সংযুক্ত সেটা বোঝা যায়। সালোকসংশ্লেষণে অংশ নেওয়া উপকরণগুলো শ্বসনের কাঁচামাল, আর শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত উপাদান ব্যবহৃত হয় সালোকসংশ্লেষণে। উভয় প্রক্রিয়ায় সাধারণভাবে যে পদার্থগুলো অংশগ্রহণ করে থাকে, সেগুলো হলো কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন।
বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের গবেষণায় এই দুটো প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হয়েছে, এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত একাধিক বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মেলভিন কেলভিন, রবার্ট হুবার, হ্যান্স ক্রেবস, অটো ওয়ারবার্গ প্রমুখ বিজ্ঞানীর নাম উল্লেখযোগ্য।
আরও দেখুন...