সূরা আল-হাশরের শেষ তিন আয়াত |
কুরআন মাজিদের প্রতিটি সূরা ও আয়াত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও মর্যাদাবান। তবে বিশেষ কিছু আয়াত ও সূরা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তার মধ্যে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত অন্যতম। সূরা আল-হাশর পবিত্র কুরআনের ৫৯তম সূরা। এটি মদিনায় নাজিল হয়। আমরা এখন সূরা আল-হাশরের শেষ তিন আয়াত অর্থাৎ ২২, ২৩ ও ২৪তম আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা, ফযিলত সম্পর্কে জানব।
ফযিলত
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের অনেক গুরুত্ব ও ফযিলত রয়েছে। এ আয়াতগুলোর মধ্যে মহান আল্লাহর কতিপয় মাহাত্ম্যপূর্ণ গুণবাচক নামের পরিচয় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এ তিন আয়াতের ফযিলত সম্পর্কে মহানবি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিন বার শিক্ষাবর্ষ ২০২৪
أَعُوذُ بِاللهِ السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ
(উচ্চারণ: আউযু বিল্লাহিস সামিইল আলিমি মিনাশ শাইতানির রাজিম।) পাঠ করার পর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা'আলা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেবেন। যারা সন্ধ্যা পর্যন্ত উক্ত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকবে। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহিদের মৃত্যু লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এভাবে পাঠ করবে, সে-ও এই ফযিলত লাভ করবে। (তিরমিযি)
অনুবাদ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
| দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। |
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ
| ১. তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। |
عَلِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ | ২. তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাত। |
هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
| ৩. তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। |
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ
| ৪. তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। |
الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلِّمُ | ৫. তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি। |
الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ | ৬. তিনিই নিরাপত্তাদানকারী, তিনিই রক্ষক। |
الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ
| ৭. তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত। |
سُبْحَنَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ .
| ৮. তারা যা কিছু শরিক স্থির করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, মহান। |
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ
| ৯. তিনিই আল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা। |
الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
| ১০. উদ্ভাবনকর্তা, আকৃতিদাতা |
لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى
| ১১. তাঁর রয়েছে উত্তম নামসমূহ। |
يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَوتِ وَالْأَرْضِ
| ১২. আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। |
وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
| ১৩. তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। |
ব্যাখ্যা
এ আয়াতসমূহে মহান আল্লাহর কিছু গুণবাচক নামের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত গুণবাচক নামে মহান আল্লাহর ক্ষমতা ও মাহাত্ম্যের বহিঃপ্রকাশ করা হয়েছে। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ বা মা'বুদ নেই। সৃষ্টির কাছে যা গোপন ও অজানা তিনি তা জানেন। আর যা তাদের কাছে প্রকাশ্য ও জানা, তিনি তা-ও জানেন। এই বিশ্ব- জাহানের কোনো বস্তুই তার জ্ঞানের বাইরে নয়। তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। তাঁর রহমত অসীম ও অফুরন্ত, সমগ্র বিশ্ব পরিব্যাপ্ত। বিশ্ব-জাহানের প্রতিটি জিনিসই তাঁর বদান্যতা ও অনুগ্রহ লাভ করে থাকে। তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। আসমান-জমিন থেকে শুরু করে সৃষ্টির সকল কিছু তার নিয়ন্ত্রণে। তিনি যেভাবে ইচ্ছা করেন, যা ইচ্ছা করেন, তা-ই হয়। ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য একমাত্র তিনিই। আসমান-জমিনের সবই তাঁরই তাসবিহ পড়ে ও পবিত্রতা ঘোষণা করে। সুতরাং আমাদের কর্তব্য একমাত্র তাঁরই ইবাদাত করা। তাঁর সকল আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
আরও দেখুন...