মানুষ ও অন্যান্য জীবের অনেক অসুখ বিসুখের কারণ হচ্ছে অণুজীব। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আমাদের অসুস্থ করে। ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দেহাভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করতে পারে। অপরিষ্কার হাত জীবাণুর জন্য একটি সুবিধাজনক বাহন। যার মাধ্যমে সহজেই এগুলো মুখগহ্বরে ঢুকে যেতে পারে। আমরা যে জামা কাপড় ব্যবহার করি তাতে লেগে ব্যাকটেরিয়ার স্পোর স্থানান্তরিত হতে পারে।
বাতাসে যে ধুলাবালি উড়ে বেড়ায় তার সঙ্গে অতি সহজেই ব্যাকটেরিয়া বা তার স্পোর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে। হাত মেলানোর মাধ্যমেও ব্যাকটেরিয়া একজন থেকে অন্যজনে অতি সহজে স্থানান্তরিত হতে পারে। পচা ও বাসি খাদ্যের মাধ্যমে জীবাণু সহজেই ছড়ায়।
আমাদের দেশে প্রতিবছরই প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয় কলেরা ও টাইফয়েড রোগে। এগুলো ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। ব্যাকটেরিয়ার বাইরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর রূপ আবির্ভূত হয় ভাইরাস। যেমন, এইডস নামক রোগ হয় এইচআইভি ভাইরাসের কারণে। আবার ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে কোভিড-১৯ অতিমারি ছড়িয়েছিল সার্স-কোভি-২ নামক ভাইরাসের মাধ্যমে। মাম্পস, হাম, বসন্ত ইত্যাদিও খুবই কষ্টকর ভাইরাসজনিত রোগ। ভাইরাসজনিত এসব রোগ হাঁচি, কফ, থুতু ও কাশির মাধ্যমে সর্দি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে প্রবাহিত হয়ে ছড়ায় এবং আমাদের শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে।
ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে অনেক সময় ২/৪ দিনে এমনি রোগ সেরে যায়। তবে কিছু মারাত্মক রোগ আছে যার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এইডস রোগ একবার হলে আর নিরাময় হয় না। অসুস্থ লোকের রক্ত গ্রহণ, মাদক গ্রহণ, এক সুই-এ বহু লোকের ইনজেকশন গ্রহণ ও অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক থেকে এ রোগ ছড়ায়। ডেঙ্গু জ্বর, কোভিড-১৯ ইত্যাদি রোগও অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ।
একটা সময় ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও এন্টামিবাজনিত রোগ খুবই ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে যেত। নিরাপদ পানির অভাবে এমন হতো । যত্রতত্র মল-মূত্র ত্যাগের কারণেও জনস্বাস্থ্যজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব মল-মূত্রে যে জীবাণু থাকে তা ভক্ষণকারী অন্য জীব এগুলোকে ছড়িয়ে দেয়। এছাড়া বৃষ্টি বা জোয়ারের পানিতে এগুলো দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবেশ পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে এবং সঠিক স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে আমরা এসব রোগব্যাধির অনেকগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারি। নিচে আমরা এ সম্বন্ধে আরো জানব।
আরও দেখুন...