হযরত দাউদ (আ) বনি ইসরাইল বংশে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি মেষ চরাতেন । তিনি ছিলেন অসীম সাহসী এবং অসাধারণ বীরত্বের অধিকারী। তিনি বাদশাহ তালুতের সেনাপতি ছিলেন। তাঁর যুদ্ধ কৌশল ছিল অসাধারণ। তিনি সেনাপতি থাকাকালে আল্লাহদ্রোহী ও অত্যাচারী শাসক জালুতকে যুদ্ধে পরাজিত ও হত্যা করেছিলেন। বাদশাহ তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে স্বীয় কন্যাকে তাঁর সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বাদশাহর মৃত্যুর পর তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন।
তিনি অধিকাংশ সময় আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন। তিনি রাতে খুব কম ঘুমাতেন । প্রায় সারা রাত আল্লাহর ইবাদত করতেন। সালাত আদায় করতেন। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতেন। তিনি একদিন পর একদিন আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাওম পালন করতেন।
তিনি একজন নবি ও রাসুল ছিলেন। তাঁর ওপর প্রসিদ্ধ আসমানি কিতাব ‘যাবুর' নাজিল হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন : “দাউদ (আ)-কে আমি যাবুর দান করেছি।”
তিনি আল্লাহর নির্দেশে দীনের দাওয়াত দিতে থাকেন। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর। তিনি যাবুর কিতাব তিলাওয়াত করতেন। তাঁর সুমধুর তিলাওয়াত বনের পশু-পাখিরাও শুনত। এমনকি নদী ও সাগরের মাছগুলোও তাঁর তিলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হতো। তিনি এবং তাঁর পুত্র সুলায়মান (আ) পুশপাখিদের ভাষা বুঝতেন। তাদের সাথে কথাবার্তাও বলতে পারতেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। তিনি ছিলেন সুশাসক ও সুবিচারক। জনগণ সব সময় তাঁর কাছ থেকে ন্যায় ও সুবিচার পেত। তাঁর বিচারব্যবস্থা ছিল নিখুঁত ও নিরপেক্ষ। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদী। জনগণের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য তিনি ছদ্মবেশে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। অলিতে গলিতে ও বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে দেখতেন। তিনি রাজকোষ থেকে কোনো অর্থসম্পদ গ্রহণ করতেন না। তিনি আল্লাহর কুদরতে স্বহস্তে ইস্পাতের বর্ম বানাতেন। আর তা বিক্রি করে যা উপার্জন হতো তা দিয়ে নিজের সংসার চালাতেন। তিনি সত্তর বছর বয়সে ইন্তিকাল করেন।
আমরা হযরত দাউদ (আ)-এর মত আল্লাহর ইবাদত করব এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করব। সুশাসক হব, জনগণের দুঃখ দুর্দশা মোচন করব। কারো কোনো ক্ষতি করব না। শুদ্ধ উচ্চারণে কুরআন তিলাওয়াত করব। সালাত আদায় করব। সাওম পালন করব। আল্লাহকে খুশি রাখব।
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা হযরত দাউদ (আ)-এর ন্যায়বিচার ও সুশাসনের বর্ণনা খাতায় সুন্দর করে লিখবে।
আরও দেখুন...