মি. 'ক' মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ইসলামের কতিপয় মৌলিক বিষয় অবিশ্বাস করে। অপরদিকে 'খ' তার এক বন্ধুকে তিনমাসের মধ্যে ফেরত দেয়ার শর্তে পাঁচ হাজার টাকা ঋণ দেয়। কিন্তু তার বন্ধু সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে টাকা ফেরত দেয়নি। এই নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব বলেন, এ ধরনের আচরণ পরিত্যাগ না করলে তাকে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
জনাব সাহেদ সন্তানের সুস্থতার আশায় তার পীরের নামে একটি গরু জবাই করেন। অপরদিকে তার বন্ধু আনোয়ার সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখেন। সেখানে আলিফ নামক এক ব্যক্তি দাবি করে যে, নবি-রাসুলের আগমণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি কিয়ামত পর্যন্ত চলমান থাকবে। মুহাম্মদ (সঃ) এর পর আহমদ নামে পৃথিবীতে আরো একজন নবি এসেছিলেন।
জনাব 'ম' ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। তিনি পরকালে পুরস্কার পাওয়ার আশায় গরীব, ইয়াতিম ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদয় আচরণ করেন। তাছাড়া আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের ক্ষেত্রে তিনি লৌকিকতা পছন্দ করেন না। পক্ষান্তরে জনাব 'ন' মাদক ব্যবসা করে অনেক অর্থ উপার্জন করেন এবং বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। তার উপার্জন সম্পর্কে জানতে পেরে ইমাম সাহেব বলেন, "এ ধরনের উপার্জনের পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাতে অত্যন্ত ভয়াবহ।"
বন্যার পানিতে জনাব আমিনের মৎস্যখামার ভেসে যায়। এতে তিনি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু তিনি হতাশ হয়ে পড়েননি, বরং আল্লাহ তা'য়ালার উপর ভরসা করে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন। অন্যদিকে তার বন্ধু জনাব হেলাল একজন বড় ব্যবসায়ী। তিনি সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পণ্যে ভেজাল মেশান না। তিনি ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করেন। তার সম্পর্কে জানতে পেরে একজন ইসলামিক স্কলার বলেন, "এ ধরনের ব্যবসায়ীগণ কিয়ামতের দিন মহা পুরস্কারলাভ করবেন।"
নাফিস একজন ধনী ব্যক্তি। তিনি নিয়মিত সালাত আদায় করেন। তিনি গত বছর হজও করেছেন। কিন্তু তিনি বছরান্তে তার সম্পদ থেকে আল্লাহর নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে দান করেন না। অপরদিকে তার বন্ধু রফিক আযান শুনলে সকল কাজ রেখে একটি বিশেষ ইবাদতের প্রস্তুতি নেন এবং তা সম্পূর্ণ করেন। উক্ত ইবাদত প্রসংগে তার পিতা বলেন এটি মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে।
আমিনা ও লামিয়া দুই বান্ধবী। একদিন আমিনা একটি স্বর্ণের চেইন লামিয়ার নিকট জমা রাখেন। কিছুদিন পর আমিনা চেইনটি ফেরত চাইলে লামিয়া তা ফেরত দেয়। পক্ষান্তরে শিক্ষিকা শাহানা একদিন এক বৃদ্ধা ও গরীব মহিলার বাস ভাড়া দিয়ে দেন। এর পর তিনি তাকে একটি নতুন পোশাকও কিনে দেন। এতে বৃদ্ধা খুশী হয়ে বলেন, আপনার ভালো কাজের প্রতিদান আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই দিবেন।
জনাব জহির একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কিছুদিন পর তার কাছে ভালো না লাগায় তা ছেড়ে দেন। এখন এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে অলস সময় কাটান। পক্ষান্তরে জহিরের বন্ধু আবদুর রহিম কারো ভালো দেখলে খুব কষ্ট পায়। সব সময় অন্যের ক্ষতি আশা করে। বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রী সামিয়া তাকে বলল "অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীর গুনাহ মাফ হয় না।"
সোহেল সাহেব একজন শিক্ষক। উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি বিদেশে গমণ করেন। বিদেশে অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশে ফিরে এসে পুনরায় শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। অপরদিকে তার বন্ধু রেজাউল সাহেব একজন শিল্পপতি। তিনি আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় মন্দকাজ থেকে বিরত থাকেন এবং সব সময় ভালো কাজ করেন। তার এ আচরণ লক্ষ্য করে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ জনাব আব্দুল হামিদ বলেন-"এরূপ চরিত্রের অধিকারীগণ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।"
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব নাহিদ জনগণের উদ্দেশ্যে এক বক্তৃতায় মানবাধিকার, নারীর অধিকার ও ধর্মীয় অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। অপরদিকে তার বন্ধু আশরাফ সাহেব একজন সৎ লোক, তিনি এলাকার মানুষদের মধ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য একটি সংঘ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। উদ্যোগের কথা আশরাফের পিতা জানতে পেরে তাকে বললেন, 'এরূপ কর্মকাণ্ড সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার সহায়ক'।
দৃশ্যকল্প-১: জনাব জামাল ইসলাম শিক্ষা ক্লাসে একজন মুসলিম মনীষীর জীবনী আলোচনা করেন, যার সংকলিত গ্রন্থকে আল-কুরআনের পর সবচেয়ে বিশুদ্ধ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা, করা হয়।
দৃশ্যকল্প-২: জনাব আনিস একজন মুসলিম শাসকের জীবনী অধ্যয়ন করেন। যিনি ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের মূর্ত প্রতীক। অন্যায়-অপরাধের শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি তার আপনজনকেও ছাড় দেননি।