আমি একা নই, অসংখ্য মানুষ পিঁপড়ের মতো ছুটছিল। মাথায় সুটকেস বগলে কাপড়ের গাঁটরি। হাতে হারিকেন। কোমরে বাচ্চা চোখে মুখে কী এক অস্থির আতঙ্ক! কথা নেই। মৌন সবাই। সহসা কে যেন বলল, ওদিকে যাবেন না। মিলিটারি। নৌকায় করে করে লোকজন সব ওপারে পালাচ্ছিল। মিলিটারি ওদের ওপরে গুলি করেছে। দু-তিনশ লোক মারা গেছে ওখানে। যাবেন না। মনে হলো পায়ের সঙ্গে যেন কয়েক মন পাথর বেঁধে দিয়েছে কেউ। সামনে এগিয়ে যাব ভরসা পাচ্ছি না। পর মুহূর্তে একটা হেলিকপ্টরের শব্দ শুনতে পেলাম। তারপর মনে হলো একসঙ্গে যেন অনেকগুলো বাজ পড়লো। মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। কিছু দেখতে পাচ্ছি না। শুধু অনেকগুলো শব্দের তাণ্ডব। মেশিনগানের শব্দ। বাচ্চাদের কান্না। কতগুলো মানুষের আর্তনাদ। কাতরোক্তি। কয়েকটা কুকুরের চিৎকার। মানুষের বিলাপ। একটি কিশোরের কণ্ঠস্বর। বাজান। বা'জান। তারপর শ্মশানের নীরবতা।
দৃশ্যকল্প-১ : রফিক সাহেব প্রতিবছর মেজবানের আয়োজন করেন। অভিজাত ব্যক্তিবর্গ, আত্মীয়-স্বজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিমন্ত্রণ করেন। কিন্তু গরিব অসহায়দের মেজবানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। দৃশ্যকল্প-২ : ১৮৫৩ সালে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে আহত সৈনিকদের মাঝে নেমে আসে অবর্ণনীয় দুঃখ দুর্দশা। তাদের যন্ত্রণা লাঘবের জন্য ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসেন। তিনি সেবায় এমনভাবে আত্মনিয়োগ করেন যে দিন-রাতে ২০ ঘণ্টা পরিশ্রম করতেন। তাঁর সেবা-শুশ্রূষা ও সান্ত্বনায় আহত পঙ্গু সৈনিকরা বেঁচে থাকার আশা ও জীবনের প্রতি মমত্ববোধ ফিরে পায়।
উদ্দীপক-১ :
বাদশা বাবর কাঁদিয়া ফিরিছে নিদ নাহি চোখে তার
পুত্র তাঁহার হুমায়ুন বুঝি বাঁচে না এবার আর।
চারিধারে তার ঘনায়ে আসিছে মরণ-অন্ধকার।
উদ্দীপক-২ :
আসমানিরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও
রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
দৃশ্যকল্প-১: রহিম মিয়া বর্গাচাষি। রাতদিন পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েও ন্যায্য অংশ পাননা। জমির মালিক জোর করে বেশি ফসল নিয়ে নেন। এতে রহিমের মন দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়।
দৃশ্যকল্প-২ : আবুল মিয়া একটি দোকানের কর্মচারী। নিয়মিত বেতন পান। থাকা- খাওয়াসহ কোনো সমস্যা হয় না। মালিক প্রতিবছর বেতন বৃদ্ধি করেন। সেও সততা ও পরিশ্রমের সাথে কাজ করে।
অমিত ছিল অত্যন্ত মেধাবী, নিরীহ ও শান্ত প্রকৃতির ছেলে। সে দাঙ্গা-হাঙ্গামাকে এড়িয়ে চলত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় তাদের বাড়িতে হানা দিয়ে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। গ্রামের পর গ্রামে তাদের তাণ্ডব চলে। প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে ওঠা অমিত হঠাৎ করে অত্যন্ত সাহসী হয়ে ওঠে। মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়া অমিত একের পর এক বীরত্বপূর্ণ অভিযানের কারণে পাকসেনা ও তাদের দোসরদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠে।