রুনা ম্যাডাম নবম শ্রেণির ইতিহাস ক্লাসে বলেন, গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সময় যে সমস্ত লোক তার সাথে এদেশে এসেছিলেন তারা অনেকেই ভারত সম্বন্ধে নিজ নিজ বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে মেগাস্থিনিস নামক সেলিউকসের দূত ভারতবর্ষ ও মৌর্য শাসন সম্বন্ধে ঐতিহাসিক বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস হলো সেই বিজ্ঞান যার দ্বারা বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় মানুষ কীভাবে জীবনধারণ করেছে তাদের শ্রম কীভাবে পৃথিবীর রূপ বদলে দিয়ে আজকের এই রূপ লাভ করেছে।
দৃশ্যপট-১ : প্রাচীনকালের চৈনিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল হোয়াংহো নদীর তীরে । বর্ষার সময় নদীটি প্রায় শত শত কি. মি. পর্যন্ত এলাকা জুড়ে প্লাবিত হতো । গ্রামের পর গ্রাম ও জনপদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেত। চীনারী তাই একে ডাকত নানা নামে। কখনো ডাকত 'ভ্ৰাম্যমাণ নদী' বলে, কখনো বা 'চীনের দুঃখ' আবার কখনো 'সর্বনাশী' বলে।
দৃশ্যপট-২ : মেসোপটেমিয়া সভ্যতার রাজধানী ছিল ব্যাবিলন। বাণিজ্য নগরী হওয়ায় এর কেন্দ্রস্থলে থাকত চারদিকে ঘেরা বাজার । তার মধ্যে মালপত্র মজুদ করার আড়ত থাকত। বাজারের চারপাশে থাকত কারিগর, মাঝিমাল্লা ও মুটেদের কুঁড়েঘর- এগুলো তৈরি করা হতো মাটি ও খড়-বিচালি দিয়ে। কখনো বা ছোট ছোট হালকা পাথর দিয়ে।
দৃশ্যপট-১ : ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামের জনগণ ফরাসি উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভের জন্য যুদ্ধ করেছিল এবং বিজয় অর্জন করেছিল। তাই এ যুদ্ধের শেষে ভিয়েতনাম ফরাসি শাসন থেকে মুক্ত হয় ।
দৃশ্যপট-২ : যুগ যুগ ধরে চলে আসা মুক্তির সংগ্রামে ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির প্রতীক হয়ে আছেন ইয়াসির আরাফাত। তিনি ও তার দল ফাতাহের উদ্দেশ্যই ছিল বিপ্লব কিংবা সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা ।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকেই চলে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন। শেষ পর্যন্ত বাঙালি রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার স্বীকৃতি আদায় করে নেয় । অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। যিনি কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছিলেন। দাবি জানিয়েছিলেন সকল বর্ণের মানুষই ভোটের অধিকার এবং রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ করার সমান অধিকার ভোগ করবে। এ কারণে বহুবার তাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল। তথাপি জনগণের দাবির মুখে তাকে বারবার মুক্ত করতে বাধ্য হয় শাসকগোষ্ঠী ।
অনুচ্ছেদ-১ : ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে লি কুয়ানের নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীন হওয়া দেশের ক্ষমতায় গিয়ে লি কুয়ান প্রথমে বাছাই করেন কিছু মেধাবী মানুষ এবং প্রণয়ন করেন দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি পরিকল্পনা। পরবর্তীতে তাঁর নেতৃত্বেই সিঙ্গাপুর উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
অনুচ্ছেদ-২ : আব্রাহাম লিংকন ছিলেন আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৬৩ সালে দাসপ্রথার অবসান ঘটান এবং মুক্তি ঘোষণার মাধ্যমে দাসদের মুক্ত করে দেন। এভাবেই আমেরিকার গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। অথচ ১৮৬৫ সালে জন বুথ নামে এক ব্যক্তি প্রেসিডেন্টকে গুলি করে হত্যা করে ।
আলেকজান্ডার খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৬ অব্দের মে মাসে ঝিলাম নদীর তীরে শিবির ফেললেন। বর্ষা আরম্ভ হলে সিন্ধু নদী পানিতে পরিপূর্ণ হলে সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে অরণ্য সমকীর্ণ একটি দ্বীপের উপর দিয়ে নদী অতিক্রম করে হঠাৎ পুরুর শিবির আক্রমণ করেন। ৬৫০ খ্রি. পর্যন্ত রাজত্ব করেন। শিক্ষায় উৎসাহ প্রদান করেন। খাল খনন ও যুদ্ধবন্দীদের পুনর্বাসন করে দেশে ব্যবসায় বাণিজ্যে উৎসাহ প্রদান করেন এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেন। যা তখনকার সময়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়।
দৃশ্যপট-১ : 'ক' রাষ্ট্রে এক বিদেশি শাসকগোষ্ঠী শাসন করে। বিনা বিচারে তারা মানুষকে হত্যা করার ক্ষমতা সংবলিত আইন প্রচলন করে এবং হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ ধরনের জনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে ঐ রাষ্ট্রের জনগণ আন্দোলন গড়ে তোলে ।
দৃশ্যপট-২ : এভাবে বিদেশি শাসকগোষ্ঠীকে নানাভাবে আন্দোলনের সম্মুখীন হতে হয় এবং এক পর্যায়ে ঐ রাষ্ট্রের জনগণের দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্রকে দুই ভাগে ভাগ করে স্বাধীন দুটি রাষ্ট্রের জন্মের মাধ্যমে বিদেশি শাসকগোষ্ঠী নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয় ।
লতা একটি শ্রমিক এলাকায় এনজিওতে চাকরি করে। তার কাজ ছিল ঐ এলাকার সুবিধা বঞ্চিত, নির্যাতিত, স্বামী পরিত্যক্ত, যৌতুকের স্বীকার নারীদের পাশে থেকে আইনের সহায়তা প্রদান করা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা। ঐ এলাকার ছেলে নাহিদ সৌদি আরব থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে নিজের এলাকায় ফিরে আসে। ইসলাম ধর্মে নারীকে যে উচ্চ আসনে বসানো হয়েছে তা বোঝানোর চেষ্টা করে। মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া কুসংস্কার দূরীকরণে ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়ে সঠিক পথ দেখান ।
রহমত আলী তার ছেলেকে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চান। কিন্তু তার স্ত্রী রিপা বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়ে পড়াতে আগ্রহী। কারণ তিনি মনে করেন মাতৃভাষাতেই লেখাপড়া করা উচিত। তাছাড়া বাংলা ভাষাকে নিয়ে তিনি গর্ববোধ করেন। রিপার বড় ভাই মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ধরে রাখতে উৎসাহিত করেছেন। তার মা গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার রান্না করে পাঠাতেন । আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করতেন।
º আমজাদ সাহেবের গার্মেন্টস-এ যে পোশাক তৈরি হয় সেগুলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেন। কারণ বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সুখ্যাতি আছে বিদেশে। তার ভাই সাজ্জাদ গ্রামে বাস করেন তাই বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করেন । এলাকার ধনী ব্যক্তি হিসেবে তারা দুই ভাই একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। যার নির্মাণশৈলী এমন কারুকার্যমণ্ডিত করা হয়েছিল যে বহুদূর থেকেও লোকে মসজিদটি দেখতে আসে এবং এলাকার গৌরব বহন করে ।
আসাদ সাহেব তার ধানের জমি প্রতিবছর নগদ অর্থের বিনিময়ে লিজ দেন। এতে দেখা যায় কৃষকরা অধিক ফসলের জন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করে ফুলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। তাই তিনি দীর্ঘদিনের জন্য স্থায়িভাবে জমি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । অন্যদিকে, তার ব্যবসা দেখাশুনার ভার ছেলের হাতে অর্পণ করেন। কিন্তু আর্থিক লেনদেন নিজ হাতে পরিচালনা করেন। ফলে ছেলের দায়িত্ব ষোল আনা থাকলেও প্রকৃত ক্ষমতা থেকে যায় আসাদ সাহেবের হাতে ।