প্রাথমিক তথ্য-সবজির জন্য পানি সেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে খরার সময় সেচ অপরিহার্য। তবে খারিফ সিজনে বিনা সেচে চাষ করা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের পানি বের করে দিতে হয়।
সবজি চাষে চারা গজানো হতে ফুল ধরা পর্যন্ত সবজির পানির চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়। বৃষ্টি না হলে সবজিতে ফুল না আসা পর্যন্ত ১০ দিন পর পর সেচ দিতে হয়। বেলে দোঁআশ মাটিতে ঘন ঘন সেচ দিতে হয়। মাটি শুকাতে থাকলে মাটির রং হালকা হয়, অন্যথায় গাঢ় থাকে। পানির অভাব হলে গাছের পাতা নেতিয়ে পড়ে। তাই মাটি হালকা রং ধারণ করলে এবং পাতা নেতিয়ে পড়লে সেচ দিতে হয়। গভীর মলী সবজিতে মাটির পানি ধারণ সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতা হয়, এতে গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গাছের নিচের পাতা লাল হয়ে ঝরে পড়ে। তাই সেচের বা বৃষ্টির জন্য জমিতে জমা অতিরিক্ত পানি নালা কেটে বের করার ব্যবস্থা রাখতে হয়।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১। সেচযন্ত্র, ২। কোদাল, ৩। টেপ, ৪। সুতলি, ৫। কাঠি, ৬। মাটি রাখার পাত্র, ৭। ক্যালকুলেটর, ৮। খাতা কলম।
কাজের ধাপ
১. সবজির ২ সারি বা ২ বেডের মাঝখান দিয়ে নালা করতে হবে। যেখান দিয়ে সেচের পানি প্রবাহিত করা হবে।। নালা একদিকে সামান্য ঢালু হবে।
২. পানি সরবরাহের প্রধান নালা জমি তল অপেক্ষা উচু হতে হবে।
৩. জমি হতে অতিরিক্ত পানি (সেচির বা বৃষ্টির) বের করার নিষ্কাশন নালা তৈরি করতে হবে। যাতে সবজি ক্ষেতে পানি জমে পানিবদ্ধতা হতে না পারে।
৪. সবজির জমির মাটি ভিজিয়ে নিয়ে নলাকার করে তা রিং বানানোর সময় যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে, বেলে দোঁআশ। আর যদি ফেটে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে দোঁআশ। আর যদি চল যাটা হয় বুঝতে হবে যে এঁটেল দোঁআশ । ভিজা দোঁআশ মাটির নলাকার তৈরি করলে কোনরুপ দাগ পড়বে না এবং এটেল মাটিতে কোন দাগ পড়ে না এবং চকচকে দেখায় ।
৫. বেলে দোঁআশ হতে দোঁআশ, দোঁআশ হতে এঁটেল দোঁআশ, এঁটেল দোঁআশ হতে এঁটেল মাটির ক্রমান্বয়ে পানি। ধারণ ক্ষমতা বেশি।
৬. মাটির ধরন দেখে পানি ধারণ ক্ষমতা দেখে সেচ দিতে হবে। মাটি এঁটেল হতে ক্রমান্বয়ে যত বেলে দোঁআশের দিকে যাবে তত ঘন ঘন সেচ দিতে হবে।
৭. নিচের এ সূত্র দ্বারা জমিতে বিদ্যমান রসের পরিমাণ জেনে, যদি ৭০%-এর কম হয় তাহলে সেচ দিতে হবে। তবে ৫০% এর কম হলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। নোটঃ মাঠ হতে নেওয়া মাটির ওজন = ১০০০ গ্রাম (ফসলের শেকড় গভীরতা হতে ধরা যাক শুকানোর পর প্রাপ্ত ওজন = ৬০০ গ্রাম
সূত্রঃ মাটিতে পানির পরিমাণ
মাটিতে রসের পরিমাণ ৬৬.৬৬%। এমতাবস্থায় সেচ দিতে হবে।
৮। মাটির রঙ হালকা বা সাদাটে দেখা গেলে সেচ দিতে হবে।
৯। মাটিতে দৃশ্যত পানি বন্ধ হলে বা গাছের গোড়ায় পানি জমা দেখলে পানি বের করে দিতে হবে।
১০ । সমস্ত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।