Zoospore পাওয়া যায় কোন ছত্রাক এ?
ছত্রাকের গঠনঃ
ছত্রাক-এর দেহ থ্যালয়েড (thalloid)। থ্যালাস এককোষী বা বহুকোষী হতে পারে। অল্প কয়েকটি এককোষী সদস্য, যেমন- ঈস্ট এবং সরলতম সদস্য, যেমন- স্লাইম মোল্ড (slime mould) ব্যতীত অন্য সকল ছত্রাকের দেহ মাইসেলিয়াম (mycelium) সমন্বয়ে গঠিত। মাইসেলিয়াম সরু ও লম্বা সুতার মতো। মাইসেলিয়ামের প্রতিটি সুতার মতো অংশকে হাইফা (hypha; বহুবচনে hyphae) বলে প্রকৃত পক্ষে, হাইফি দিয়ে গঠিত ছত্রাকের জট লাগানো দেহই হচ্ছে মাইসেলিয়াম। এককোষীই হোক বা মাইসেলিয়াম-বিশিষ্টই হোক অধিকাংশ ছত্রাক আকারে অতি ক্ষুদ্র, খালি চোখে দেখা যায় না। তবে খালি চোখে দেখা যায় এমন ছত্রাকও আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্যাঙের ছাতা। অনেক ছত্রাক খালি চোখে সাদা তুলার মতো দৃষ্ট হলেও অনুবীক্ষণযন্ত্রে শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট জালের মতো দেখায়। বহু শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট জালের মতো এই দৈহিক গঠনের নামই। মাইসেলিয়াম যা অসংখ্য হাইফি সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি হাইহা লম্বা ও নলাকৃতি। নলটি স্বচ্ছ ও প্রোটোপ্লাস্টে পরিপূর্ণ থাকে। হাইফা প্রপ্রাচীরযুক্ত বা এই প্রাচীরবিহীন হতে পারে। (গ্রহপ্রাচীরবিহীন মাইসেলিয়ামকে সিনোসাইটিক মাইসেলিয়াম (synocytic mycelium) এবং গ্রন্থপ্রাচীরযুক্ত মাইসেলিয়ামকে সেপ্টেট মাইসিলিয়াম (septate mycelium) বলে। আদিম প্রকৃতির নিম্নশ্রেণির হুরাকে সিনোসাইটিক মাইসিলিয়াম এবং উন্নত ও উচ্চশ্রেণির ছত্রাকে সেপ্টেট মাইসেলিয়াম দেখা যায়। কোন কোন ছত্রাকের মাইসেলিয়াম থেকে সুতার মতো রাইজয়েড উদগত হয়। রাইজয়েও ছত্রাককে আবাসস্থলে টিকে থাকতে সাহায্য করে। রাইজয়েডযুক্ত মাইসেলিয়ামকে রাইজোমাইসেলিয়া (rhizomycelium) কোষের গঠন (Cell structure) কিছু নিম্নশ্রেণির ছত্রাক (স্লাইম মোল্ড) ছাড়া অধিকাংশ ছত্রাকের কোষ দুটি অংশে বিভক্ত-
ক.কোষপ্রাচীরঃ কোষপ্রাচীর বিভিন্ন শ্রেণির ছত্রাকের কোষপ্রাচীরে ভিন্নতা দেখা গেলেও অধিকাংশ ছত্রাককোষের কোষপ্রাচীরের উপাদান কাইটিন জাতীয় পদার্থ । এছাড়াও লিপিড, মেলানিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। প্রোটোপ্লাস্টকে সংরক্ষণ করাই এর মূল কাজ। এটি পানি ও অন্যান্য দ্রবণের জন্য ভেদ্য।
খ. প্রোটোপ্লাস্টঃ কোষপ্রাচীরের অভান্তরের সমুদয় জীবিত পদার্থকে সমবেতভাবে প্রোটোপ্লাস্ট বলে। কোষঝিল্লি, ইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস সহযোগে ছত্রাকের প্রোটোপ্লাস্ট গঠিত।
• কোষঝিল্লি : কোষপ্রাচীরের ভেতরের দিকে অবস্থিত এটি একটি পাতলা জীবিত পর্দা যা কোষপ্রাচীরের সাথে নিবিড়ভাবে সেঁটে থাকে। কোনো কোনো স্থানে কোষঝিল্লিটি ক্ষুদ্র পকেটের আকারে ভাঁজ হয়ে লোমাজোম গঠন করে।
• সাইটোপ্লাজম : কোষঝিল্লির ভেতরের দিকে জেলিসদৃশ পদার্থটির নাম সাইটোপ্লাজম । তরুণ মাইসেলিয়াম ও হাইফার শীর্ষদেশে সাইটোপ্লাজম ঘন দানাদার ও সমস্বত্ব। কিন্তু পরিণত মাইসেলিয়ামে সাইটোপ্লাজম অপেক্ষাকৃত পাতলা ও গহ্বরযুক্ত। সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকন্ড্রিয়া,দেহ গহ্বর ইত্যাদি পাওয়া যায় তবে প্লাস্টিড থাকেনা। কোনো কোনো ছত্রাকের সাইটোপ্লাজমে গলজি বস্তুর অস্তিত্বও প্রমাণিত হয়েছে। ছত্রাকের সাইটোপ্লাজমে সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে গ্লাইকোজেন, ডব্লিউটিন, জেল ও চর্বি ইত্যাদি বিদ্যমান।
• নিউক্লিয়াস: ছত্রাকের সাইটোপ্লাজমে এক বা একাধিক গোলাকার বা উপবৃত্তাকার নিউক্লিয়াস থাকে। প্রতিটি নিউক্লিয়াসের একটি নির্দিষ্ট ও সচ্ছিদ্র নিউক্লিয়ার মেমব্রেন আছে। নিউক্লিয়াসের কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত ঘন। কোনো কোনো ছত্রাকবিদ এই কেন্দ্রীয় অঞ্চলটিকে নিউক্লিওলাস হিসেবে গণ্য করেন।