ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - খ্রিস্ট্রধর্ম শিক্ষা - অঞ্জলি ৩ | NCTB BOOK

তা দেখে বাড়ীর দাসেরা এসে মনিবকে বলল, "আপনি কি জমিতে ভাল বীজ: বোনেন নি? তবে শ্যামাদাস কোথা থেকে আসল?' “তিনি তাদের বললেন, 'কোন শত্রু এটা করেছে।” “দাসেরা তাঁকে বলল, “তবে আমরা গিয়ে সেগুলো তুলে ফেলব কি?? “তিনি বললেন, “না, শ্যামাঘাস তুলতে গিয়ে তোমরা হয়তো ঘাসের সঙ্গে গমও তুলে ফেলবে। ফসল কাটবার সময় পর্যন্ত ওগুলো একসংগে বাছতে দাও। যারা ফসল কাটে, আমি তখন তাদের বলব যেন তারা প্রথমে শ্যামাঘাসগুলো জড়ো করে পোড়াবার জন্য আঁটি আঁটি করে বাঁধে, আর তার পরে গম আমার গোলায় জমা করে।

 

তারপর সে কিছু বীজ উর্বর মাটিতে লাগিয়ে দিল। প্রচুর জলের ধারে উইলো গাছের মত করে সে তা লাগিয়ে দিল। সেটা হল। সেটা গজিয়ে উঠে মাটিতে ছড়িয়ে পড়া একটা লতা হল। সেই লতার ডগাগুলো ঐ ঈগলের দিকে ফিরল, আর তার শিকড়গুলো রইল মাটির গভীরে। এইভাবে সেই লতা বড় হল এবং তাতে পাতা সুদ্ধ অনেক ভগা বের হল । কিন্তু সেখানে পালখে ঢাকা ডানাযুক্ত আর একটা বড় ঈগল ছিলো। সেই লতা জল পাবার জন্য তার শিকক্ষ ও ডগাগুলো সেখান থেকে সেই ঈগলের দিকে বাড়িয়ে দিল। প্রচুর জলের পাশে ভাল মাটিতে তাকে লাগানো হয়েছিলো যাতে সে অনেক ভগা বের করতে পারে, ফল ধরাতে পারে ও সুন্দর লতা হয়ে উঠতে পারে।

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি 

ঈশ্বর জগৎ ও জীবনের সৃষ্টিকর্তা। তিনি সুন্দর ও পবিত্র। তিনি শূন্য থেকে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সকল সৃষ্টির মাঝে রয়েছে একটি পারস্পরিক যোগাযোগ ও নির্ভরশীলতা। তিনি সবকিছু নিপুনভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। ঈশ্বর অতি ক্ষুদ্র বীজ থেকে বৃহৎ বৃক্ষের রূপান্তর ঘটাতে পারেন, শুয়োপোকা থেকে প্রজাপতি

বানাতে পারেন, একপা-দুইপা হাঁটা শিশু থেকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ বানাতে পারেন। অগণিত সৃষ্টির বৈচিত্র্যপূর্ণ সৌন্দর্যের মধ্য দিয়ে স্রষ্টা নিজেকে প্রকাশ করেছেন। ঈশ্বরের সব সৃষ্টিই উত্তম। আপাত দৃষ্টিতে কোনো কোনো সৃষ্টির ভূমিকা মন্দ প্রতীয়মান হলেও তারা প্রকৃতিতে কোনো না কোনো ভূমিকা রাখছে এবং সেই ভূমিকা ঈশ্বরই নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

ঈশ্বরের সৃষ্টিসমূহ তাঁর দেখানো পথে না চলে ভুল পথে চললে ঈশ্বর মনঃক্ষুণ্ণ হন। পবিত্র বাইবেল এ ভালো বীজ বলতে বোঝানো হয়েছে যে, যারা ঈশ্বরের দেখানো পথে জীবনযাপন করে। আর শ্যামাঘাস / মন্দ বীজ বলতে বোঝানো হয়েছে যে, যারা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী জীবন যাপন করে না। স্রষ্টা তার সৃষ্টির মাধ্যমেই যেমন ভালো মানুষের সাহচর্যে ভুল পথে চলা মানুষকে সঠিক পথে ফিরে আসার সুযোগ দেন। ঈশ্বরের প্রত্যাশা মানুষের ভালো কাজ যেনো আরও বৃদ্ধি পায়। এটা হয় যখন আমরা স্রষ্টার সৃষ্টিগুলোর যত্ন নেই, সকল সৃষ্টির সাথে আমাদের সংযোগ অনুভব করতে পারি, এবং স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসায় সিক্ত হই।

 

বাড়ির কাজ

তোমার শিক্ষক বাড়িতে করার জন্য তোমাকে একটি মজার কাজ দিবেন। কাজটি হতে পারে এরকম: তোমার নিজের বা প্রতিবেশীর কোনো pet-এর যত্ন নিবে। কাজটি কীভাবে করতে পারো তা তোমাকে একটু বুঝিয়ে দিচ্ছি, তুমি মন দিয়ে শোনো। হতে পারে তুমি pet টিকে গোসল করালে বা খাওয়ালে বা পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে। তবে তুমি চাইলে তোমার পছন্দমতো অন্য কোনো যন্ত্রের কাজও করতে পারো। তবে এ কাজগুলো করার সময় তোমাকে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যেমন অসুস্থ পশুর কাছে না যাওয়া, আঁচড় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা, এবং এমন পশুর যত্ন নেওয়া যার টিকাসমূহ হালনাগাদ আছে। পরবর্তী সেশনে তোমার অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করতে হবে। Pet-এর বিষয়ে তোমার বাবা-মা/অভিভাবকের সাহায্য লাগতে পারে। তাই তোমার বাবা-মা/অভিভাবককে নিচের লেখাটি দেখাও।


প্রিয় বাবা-মা/অভিভাবক,

আপনার সন্তান/পোষাকে pet-এর উপর একটি বাড়ির কাজ দেওয়া হয়েছে। তাকে এ বিষয়ে সাহায্য করুন। যদি আপনার সন্তান/পোষ্যের কোনো অ্যালার্জি থাকে, বা অন্য কোনো সমস্যা থাকে তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।


যদি তোমার শ্রেণিকক্ষে projector-এর ব্যবস্থা থাকে তবে উপস্থাপনের দিন তুমি pen drive-এ ছবি নিয়ে আসতে পারো। চাইলে pen drive-এর বদলে শিক্ষককে তুমি ইমেলও করতে পারো। সেক্ষেত্রে তোমার শিক্ষকের ইমেল ঠিকানা জেনে নাও। Projector-এর সুবিধা না থাকলে যে পশুটির তোমরা যত্ন নিয়েছো তার একটি ছবি নিজে হাতে এঁকে ফেলো, ছবিটির নিচে তোমার পোষা প্রাণিটির নাম লিখো এবং ছবিটি শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যাও।

Content added By