অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - বিজ্ঞান - অম্ল, ক্ষারক ও লবণ | NCTB BOOK

কাজ : পানি ও খাবার লবণের মিশ্রণে লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন হয় কি না তা পর্যবেক্ষণ

প্রয়োজনীয় উপকরণ : বিকার, নাড়ানি, লবণ, পানি, লাল ও নীল লিটমাস কাগজ, চিমটা 

পদ্ধতি : একটি বিকারে ৫০ মিলিলিটার পানি নিয়ে তাতে ১০-১৫ গ্রাম খাবার লবণ যোগ করো। নাড়ানি দিয়ে ভালোভাবে নাড়া দাও। এবার চিমটা দিয়ে প্রথমে নীল লিটমাস কাগজ ও পরে লাল লিটমাস কাগজ লবণ-পানির মিশ্রণে ডুবাও। লিটমাস কাগজের রং কি পরিবর্তন হলো? না, হলো না। কেন হলো না?

কারণ এখানে কোনো এসিড বা ক্ষারক নেই। এসিড থাকলে নীল লিটমাস লাল হতো আর ক্ষারক থাকলে লাল লিটমাস নীল হতো। পানিতে যে লবণ আছে তা একটি নিরপেক্ষ পদার্থ। না এসিড, না ক্ষারক। তাই কোনো লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন হয় না। খাবার লবণের মতো অনেক লবণ আছে যারা নিরপেক্ষ পদার্থ অর্থাৎ এরা লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন করে না।

কখনো কখনো বিশেষ কারণে অর্থাৎ দূষিত পানিতে এসিড বা ক্ষারক থাকতে পারে। তখন কিন্তু নিরপেক্ষ পদার্থ হলেও পানি লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন করতে পারে।

কাজ : ফুল ও সবজির নির্যাস তৈরি এবং অম্ল ও ক্ষারক শনাক্তকরণ

প্রয়োজনীয় উপকরণ : জবা, বাগান বিলাস ও হলুদ কৃষ্ণচূড়া ফুলের পাপড়ি, বেগুনি বাঁধাকপির পাতা, সালাদ তৈরির বীট, পুঁই শাকের বীজ, বিকার (৬টি), নাড়ানি, পানি, বুনসেন বার্নার বা গ্যাসের চুলা, ফিল্টার কাগজ, বোতল, কাগজ, কলম, লেবুর রস, ভিনেগার, টক দই, চুনের পানি, সাবান পানি, খাবার সোডা, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, কাচের খন্ড, ড্রপার।

পদ্ধতি : উপরে বর্ণিত নানা রকম ফুল ও সবজির উপাদান সংগ্রহ করো। আলাদাভাবে এক একটি বিকারে এক একটি ফুলের পাপড়ি বা সবজির উপাদান নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে বুনসেন বার্নার বা চুলায় জ্বাল দাও ৷ পানি প্রায় অর্ধেক হলে মিশ্রণগুলো ঠাণ্ডা করো। ফিল্টার কাগজ দিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে ছেঁকে প্রাপ্ত নির্যাস ভিন্ন ভিন্ন বোতলে রাখ। কোন বোতলে কোন ধরনের নির্যাস তা বোতলের গায়ে লিখে রাখ। এবার টেস্টটিউব নিয়ে একে একে লেবুর রস, চুনের পানি, টক দই, ভিনেগার, সাবান পানি, খাবার সোডা, HCl, NaOH নাও ও কোনটিতে কী নিলে তা গায়ে লিখে রাখ। এবার একটি নির্যাস নিয়ে ড্রপার দিয়ে অল্প পরিমাণে প্রতিটি টেস্টটিউবে যোগ করে ভালোভাবে ঝাঁকাও। নির্যাসের রঙে কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছ? কোন কোন দ্রব্যের ক্ষেত্রে বর্ণ লাল ও কোন কোন ক্ষেত্রে নীল হয়েছে তা ছক তৈরি করে লিখে রাখ। এই ছক থেকে তোমরা বুঝতে পারবে কোন দ্রব্যটি এসিডীয় ও কোনটি ক্ষারকীয় ।

একে একে প্রতিটি নির্যাস নিয়ে রং পরিবর্তন ছকে লিখে রাখ। এবার প্রতিটি দ্রব্য নিয়ে লাল ও নীল লিটমাস কাগজ দিয়ে দেখ কোন দ্রব্যটি অম্লীয় আর কোনটি ক্ষারকীয়। একই ধরনের সকল বস্তু একই রকম বর্ণ ধারণ করে।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে যা শিখলাম-

- যে সমস্ত পদার্থ পানিতে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে তারা হলো অম্ল বা এসিড। 

- অম্ল নীল লিটমাসকে লাল করে। অম্ল টক স্বাদযুক্ত হয়।

- ধাতব অক্সাইড ও হাইড্রোক্সাইডসমূহ হলো ক্ষারক। ক্ষারক লাল লিটমাসকে নীল করে ৷ 

– ক্ষার হলো সেই সমস্ত ক্ষারক যারা পানিতে দ্রবীভূত হয়। ক্ষারকসমূহ কটু স্বাদের হয়।

- নির্দেশকসমূহ নিজেদের বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো একটি বস্তু অম্ল, ক্ষারক না নিরপেক্ষ তা নির্দেশ করে।

- লবণ হলো অম্ল ও ক্ষারকের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন নিরপেক্ষ পদার্থ।

- এসিডের সাথে ধাতব কার্বনেট বা বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় লবণ, পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি হয়। 

- এসিডের সাথে ধাতুর বিক্রিয়ায় লবণ ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।

Content added || updated By