নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় - রাষ্ট্র, নাগরিকতা ও আইন | NCTB BOOK

একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাষ্ট্র কী কাজ করে কিংবা রাষ্ট্র কী করতে পারে, আমাদের জানা দরকার। অর্থাৎ জনগণের জন্য রাষ্ট্র কী ধরনের সেবা প্রদান করে এবং এর সামর্থ্য কতটুকু এ পাঠ থেকে আমরা তা জানব। মানুষের প্রয়োজনেই রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে। মানব জীবনের সামগ্রিক কল্যাণ সাধনই রাষ্ট্রের কাজ। বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্র প্রধানত দুই ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে, যথা: নিয়ন্ত্রণমূলক এবং কল্যাণমূলক। এ দুই ধরনের ভূমিকার ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যেমন- অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি এবং কল্যাণমূলক বা ঐচ্ছিক কার্যাবলি।

অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রে বসবাসরত জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্র যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেগুলোকে অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ বলা হয়। রাষ্ট্রের অপরিহার্য কাজগুলো নিম্নরূপ। আর. এম. ম্যাকাইভার তাঁর The Modern State গ্রন্থে বলেছেন, 'আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক কাজ বা দায়িত্ব। নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষার নিশ্চয়তা থেকে রাষ্ট্র নামক সংগঠনের সৃষ্টি হয়। জনসাধারণকে আইন মেনে চলতে বাধ্য করা, সমাজের শাস্তি ভক্ষাকারীদের শাস্তির বিধান করা এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে থাকে। রাষ্ট্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ ও অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনী গড়ে তোলে। বাংলাদেশে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা দল ইত্যাদি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা রাষ্ট্রের আরেকটি অপরিহার্য কাজ। দেশের ভৌগোলিক অখতা এবং বৈদেশিক আক্রমণ থেকে দেশ রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন ও পরিচালনা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। আধুনিককালে প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলেছে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামর্থ্য ও আধুনিকায়ন একটি রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে, যেমন- আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব প্রদানে তাদের দেশরক্ষা বাহিনীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাষ্ট্রকে পরিচিত করা, রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত সম্পদের ওপর দাবি প্রতিষ্ঠিত করা, অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন, আঞ্চলিক কোর্ট গঠন, বহির্বিশ্বে অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করা, বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদান করা ইত্যাদি হচ্ছে রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক অপরিহার্য কাজ।

আইন প্রণয়ন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ। রাষ্ট্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইন প্রণীত হয়। দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট প্রভৃতি বিচারালয়ের মাধ্যমে দেশের সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজের মধ্যে পড়ে।

রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন, নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠে। এ কাঠামোয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, তাদের কর্মবণ্টন ও নির্দেশ, কাজ তদারক এবং পরিচালনা করা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব। অর্থ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহ ও বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের একটি মুখ্য কাজ। রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে এ অর্থ সপ্তাহ করা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজ। রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মালিকানার ওপর খাজনা ও কর নির্ধারণ এবং তা আদায় করা ও সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। রাষ্ট্র বাজেট প্রণয়ন, মুদ্রা প্রবর্তন ও মুদ্রা বিনিয়োগের ব্যবস্থা, গণনা ও পরিমাপের একক নির্ধারণ এবং মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনা,মুদ্রাস্ফীতি রোধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রভৃতিও রাষ্ট্রের মুখ্য কার্যাবলি।

কল্যাণমূলক বা ঐচ্ছিক কার্যাবলি : বর্তমানে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের দাবি করে। রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা এখন একমত যে, রাষ্ট্রের ভূমিকা শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং কর আদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয়। রাষ্ট্রকে অবশ্যই সমাজের সামগ্রিক উন্নতির জন্য, নাগরিকদের নৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক জীবনের পরিপূর্ণ দলগত। রাষ্ট্রের কার্যাবলির একটি ছক বিকাশে কল্যাণমূলক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। জনকল্যাণ ও উন্নয়নে রাষ্ট্রের তৈরি কর। এ কাজগুলো ঐচ্ছিক বা গৌণ কাজ। যে রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে যতবেশি উন্নত তার ঐচ্ছিক কার্যাবলি ততবেশি বিস্তৃত।

রাষ্ট্রের জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষিত নাগরিক তার অধিকার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন থাকেন এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হন। এজন্য রাষ্ট্র শিক্ষা বিস্তারের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করে এবং শিক্ষা সুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করে, নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্বসহ বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা করে ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং বিদ্যমান বিভিন্ন বৈষম্য ও কুপ্রথা দূরীকরণে রাষ্ট্র পুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয়, শিশুসদন, মাতৃমকাল কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, দেশব্যাপী অস্থায়ী হেলথ ক্যাম্পেইন প্রতিষ্ঠা প্রভৃতিও পরিচালনা করে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক টিকা প্রদান প্রভৃতি সেবাও রাষ্ট্র প্রদান করে। এছাড়া যৌতুক ও বর্ণ বা গোত্রপ্রথা দূরীকরণ, বাল্যবিবাহ রোধ এবং জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্য, যেমন- চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, তেল ইত্যাদি সরবরাহ প্রক্রিয়া সচল রাখা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তদুপরি খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, কৃষিতে ভর্তুকি প্রদান, সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহ, সেচের ব্যবস্থা করা, খাদ্য গুদামজাতকরণ প্রভৃতি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে স্বীকৃত। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খাদ্যের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। তাই রাষ্ট্রকে খাদ্য নিরাপত্তায় পূর্বের তুলনায় অধিক মনোযোগ দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে।

যে কোনো রাষ্ট্রের অর্থনেতিক উন্নতি তার শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়ন ও প্রসারের সাথে সংশ্লিষ্ট। রাষ্ট্রে নিত্যনতুন শিল্প গড়ে তোলা, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠায় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের উৎসাহ ও ঋণ প্রদান, শিল্পজোন প্রতিষ্ঠা, ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার, উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করা রাষ্ট্রের কাজ। আমদানি নির্ভর না হয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন যে কোনো রাষ্ট্রের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এজন্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণার জন্য রাষ্ট্রকে অনেক বেশি নজর দিতে হয়। এছাড়া রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কলকারখানা স্থাপন ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ।

দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যথা: রাস্তাঘাট, সেতু, সড়ক, রেলপথ, নৌ-চলাচল, বিমান যোগাযোগ ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ এবং যোগাযোগের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত থাকা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ। বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক বিপ্লব সাধিত হয়েছে। ইন্টারনেট, নেটওয়ার্কিং ও তরঙ্গের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বিশ্বে পারস্পরিক যোগাযোগ অনেক বেড়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সুষ্ঠু পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।

জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য তুলে ধরা রাষ্ট্রের কাজ। জাতীয়তাবোধ সৃষ্টিতে দেশীয় শিল্প, গান-বাজনা, আঞ্চলিক বৈচিত্র্য রক্ষা, লোকশিল্পের সরক্ষণ, জাদুঘর প্রতিষ্ঠা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ। জনগণের চিত্তবিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় মঞ্চ, খেলার মাঠ, পার্ক ও উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ হলো জনগণের স্বাধীনতা এবং অধিকার রক্ষা করা। রাষ্ট্র জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চলাচলের স্বাধীনতা, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করে। এছাড়া জনগণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় পরিবেশ সৃষ্টি, সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা, জনগণের বিপরীতমুখী স্বার্থের মধ্যে সমন্বয় সাধন, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণ, সমাজে দুর্নীতি প্রতিরোধ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ, শরণার্থীদের আশ্রয় দান ইত্যাদি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক রাজনৈতিক কাজ।

সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। রাষ্ট্রে বসবাসরত দরিদ্র,বিধবা, অনাথ ও প্রতিকীদের অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা, বেকারদের জন্য ভাতা, ব্যাংকদের জন্য সরকার ভাতা, পেনশন প্রদান ইত্যাদি সামাজিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ রাষ্ট্রের কল্যাণমূলক কার্যাবলি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। রাষ্ট্রের বিশাল কর্মীবাহিনীকে পরিচালনা করা ও নিয়ন্ত্রনে রাখা রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ। শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন শ্রমনীতিমালা প্রণয়ন, ন্যূনতম সঠিক মঞ্জুরি ও কাজের সময় নির্ধারণ, কাজের পরিবেশ সৃষ্টি, বোনাস, ইন্স্যুরেন্স, পেনশনসুবিধা প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি, কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ধর্ম অফিসার নিয়োগ প্রভৃতি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এছাড়া রাষ্ট্র বিবিধ উন্নয়নমূলক ও জনহিতকর কাজ সম্পাদন করে থাকে, যেমন- কৃষি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বনায়ন কর্মসূচি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য ও পুনর্বাসন, দুর্ভিক্ষ ও মহামারি প্রতিরোধ, নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি, বিদ্যুতায়ন ও জ্বালানি সরবরাহ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন, কালোবাজারি রোধ, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধ, অধিকার সচেতনতা সৃষ্টি ইত্যাদি বহুবিধ কাজ রাষ্ট্র সম্পাদন করে। রাষ্ট্র একটি বৃহদাকার সংগঠন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে হয়। তবে সার্বিকভাবে জনগণের কল্যাণ সাধনই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্বের কল্যাণকামী রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশে রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজের পরিধি দিনদিন ব্যাপক ও বিস্তৃত হচ্ছে।

 

Content added || updated By