নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - সাহিত্য কণিকা (বাংলা) - কৃষি শিক্ষা | NCTB BOOK

বন নার্সারি
আভিধানিক অর্থে বনজ নার্সারি হলো চারা গাছের আলয় বা চারালয়। নার্সারি হলো এমন একটি স্থান যেখানে চারা স্থানান্তর ও রোপণের পূর্ব পর্যন্ত পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় । আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করে একটি আদর্শ নার্সারি থেকে সুস্থসবল ও সুন্দর চারা পাওয়া সম্ভব। নার্সারিতে বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হয় । আবার আধুনিক পদ্ধতিতে কলম থেকেও উন্নতমানের চারা উৎপাদন করা হয় ।

নার্সারির প্রয়োজনীয়তা
এমন অনেক বীজ রয়েছে যেগুলো গাছ থেকে ঝরে পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোপণ করতে হয় । তা না হলে অঙ্কুরোদগমের হার কমতে থাকে। এসব প্রজাতির জন্য নার্সারি একান্ত অপরিহার্য । যেমন- গর্জন, শাল, রাবার, তেলসুর প্রভৃতি উদ্ভিদের বীজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোপণ করতে হয় । ভালোমানের বাগান করতে প্রয়োজন উন্নতমানের সুস্থ, সবল চারা। এ ধরনের চারা নার্সারিতে তৈরি করা যায়। আরও যেসব কারণে নার্সারি অপরিহার্য তাহলো-

  • সময়মতো উন্নতমানের সুস্থসবল ও বড় চারা পাওয়া যায় ।
  • বিভিন্ন বয়সের চারা বিপণন ও বিতরণে সুবিধা হয় ।
  • অনেক চারা একসাথে পরিচর্যা করতে সুবিধা হয় ।
  • কম পরিশ্রম ও কম খরচে চারা উৎপাদন করা যায় ।
  • স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প খরচে অনেক চারা পাওয়া যায় ।

আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নার্সারির অবদান

  • নার্সারিতে বনজ, ফলজ ও ঔষধি উদ্ভিদের চারা উৎপাদন করে জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করা হয় । এর ফলে বৃক্ষায়ন বৃদ্ধি পায় ।
  • নার্সারিতে কাজ করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে ।
  • নার্সারি ব্যবসা করে অনেক লোকের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসে ।
  • নার্সারিতে উৎপাদিত চারা দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বনায়ন করা হয় ।
  • উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী তৈরিতে নার্সারিতে উৎপন্ন চারা রোপণ করা হয় ।

বন নার্সারির ধরন

নার্সারির ধরন : নার্সারি বিভিন্ন ধরনের হয় যেমন-

১. মাধ্যম ভিত্তিক                                           ৩. অর্থনৈতিক ভিত্তিক
২. স্থায়িত্ব ভিত্তিক                                           ৪. ব্যবহার ভিত্তিক

১। মাধ্যম ভিত্তিক নার্সারি আবার দুই ধরনের

ক. পলিব্যাগ নার্সারি
এ ধরনের নার্সারিতে পলিব্যাগে চারা উত্তোলন করা হয় । পলিব্যাগ সহজে সরানো যায় বলে চারাকে খরা, বৃষ্টি ও দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা যায় । গাছ থেকে গাছে রোগ সংক্রমণ কম হয় । এ পদ্ধতিতে নিবিড়ভাবে চারার যত্ন নেওয়া যায় ।

খ. বেড নার্সারি
নার্সারি তৈরির এ পদ্ধতিতে সরাসরি মাটিতে বেড তৈরি করে চারা উৎপাদন করা হয় । এ নার্সারিতে এক সাথে অল্প জায়গায় অধিক সংখ্যক চারা তৈরি করা যায় । ফলে বীজের অপচয় কম হয় । দ্রুত বর্ধনশীল চারা উৎপাদন ভালো হয় । কাটিং ও মোথা থেকে চারা উৎপাদন সহজ হয় । চারা উৎপাদনের জন্য বেডের মাটি উর্বর হতে হয়।

২। স্থায়িত্ব ভিত্তিক নার্সারি দুই ধরনের যেমন-

ক. স্থায়ী নার্সারি
এ ধরনের নার্সারিতে বছরের পর বছর চারা উত্তোলন করার সুযোগ থাকে । স্থায়ী নার্সারির সুবিধা হলো নার্সারির জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন করা যায়। গ্রিন হাউজ ও বীজাগার নির্মাণ করা যায় তবে মূলধনের প্রয়োজন বেশি হয় । চারার পরিবহন খরচ বেশি হয় ।

খ. অস্থায়ী নার্সারি
এ নার্সারিতে চাহিদা অনুযায়ী চারা উৎপাদন করা হয় । অসুবিধাটা হলো এ ধরনের নার্সারি সংরক্ষণে বেগ পেতে হয়।

৩. অর্থনৈতিক ভিত্তিতে নার্সারি দুই ধরনের যেমন-

ক. গার্হস্থ্য নার্সারি
পারিবারিক প্রয়োজন অনুযায়ী ফুল, ফল ও কাঠের চারা উত্তোলন করা হয় ।

খ. ব্যবসায়িক নার্সারি
এ নার্সারিতে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ফল, সবজি, ফুল, কাঠ ও ঔষধি উদ্ভিদের চারা উত্তোলন করে বিক্রয় ও সরবরাহ করা হয় ।

৪ । ব্যবহার ভিত্তিক নার্সারি
উদ্ভিদের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে এ ধরনের নার্সারি করা হয় । যেমন- মেহগনি, সেগুন, রেইনট্রি গাছের চারা উৎপাদনের জন্য তৈরি নার্সারি ।

কাজ : শিক্ষার্থীরা দলগত ভাবে বন নার্সারি পরিদর্শন করে বৃক্ষের তালিকা তৈরি করবে ।

বন নার্সারির বীজ

বনজ উদ্ভিদের বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
বীজ হলো উদ্ভিদের প্রধান বংশ বিস্তারক উপকরণ । ভালো চারা পেতে হলে ভালো বীজ প্রয়োজন । এ জন্য নির্দিষ্ট গুণাগুণ সম্পন্ন মাতৃগাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে । সংগৃহীত বীজ আহরণ থেকে রোপণের পূর্ব পর্যন্ত সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হলে বীজ পোকা-মাকড়, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি দিয়ে আক্রান্ত হয় । ফলে বীজের মানের অবনতি হয় । অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা কমে যায় । তাছাড়া বীজ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে এর গুণাগুণ নির্ণয় করতে হবে। বীজকে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণের পর বাজারজাতকরণ ও বিতরণ করা দরকার। এ পাঠে আমরা নির্বাচন, বীজ সংগ্রহ পদ্ধতি, বীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি, বীজ পরীক্ষা ও বীজ বপন পূর্ববর্তী প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে জানব ।

মাতৃগাছ নির্বাচন : মধ্য বয়সী, সুস্থসবল, রোগমুক্ত এবং অধিক ফল উৎপাদনকারি গাছকে নির্বাচন করা। নির্বাচিত এসব গাছ থেকে উপযুক্ত সময়ে বীজ সংগ্রহ করতে হবে । ভালো চারা উৎপাদনের জন্য উত্তম গুণাগুণ সম্পন্ন মাতৃগাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা অপরিহার্য । আমাদের দেশে এক বা একাধিক উৎস হতে মাতৃগাছ শনাক্ত করে বীজ সংগ্রহ করা হয় । যেমন-

১) নিজ ও অন্য এলাকার কৃষকের বাড়ি
২) পার্ক বা বাগান এলাকা বা বনাঞ্চল
৩) রাস্তার পাশের বৃক্ষ

বীজ সংগ্রহ পদ্ধতি
সাধারণত দুইভাবে গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয় ।

১। ভূমি হতে বীজ সংগ্রহ : বীজ পাকার পর যখন কিছু বীজ মাটিতে পড়ে তখন বীজ সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। বীজ পাকার মধ্যবর্তী সময়ে এ বীজ সংগ্রহ করতে হয়। যেসব গাছের ফল পেকে ফাটে না এবং বীজ ছড়িয়ে পড়ে না সেসব বীজ এ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয়। সেগুন, গর্জন, শাল, কদম, পিতরাজ, তেলসুর প্রভৃতি উদ্ভিদের বীজ ভূমি থেকে সংগ্রহ করা যায় ।

২। গাছ থেকে ফল ও বীজ সংগ্রহ : এ পদ্ধতিতে বীজ সংগ্রহের ক্ষেত্রে যখন ফল পরিপক্ব হবে তখন দা বা ছুরি দিয়ে গাছের ছোট ছোট ডাল কেটে সরাসরি গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করা হয়। ছোট ছোট বীজ যা মাটিতে পড়লে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় ফলে মাটি হতে সরাসরি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না । সে সব বীজ এ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয় । যেমন-

ক) পড জাতীয় – বাবলা, কড়াই

খ) ক্যাপসিউল- মেহগনি, চম্পা

গ) কোণ-পাইন ।

গাছ থেকে ফল ও বীজ সংগ্রহের পর রোদে শুকাতে হবে। এরপর পড়, ক্যাপসুল বা কোণ ফাটিয়ে বীজ পৃথক করতে হবে।

বীজ নিষ্কাশন : ফল সংগ্রহ করার পর বীজগুলোকে শাঁস, আবর্জনা, খোসা ইত্যাদি থেকে পৃথক করাই হলো বীজ নিষ্কাশন । বীজ নিষ্কাশনের প্রধান তিনটি পদ্ধতি হলো-

১ । বাছাই পদ্ধতি : যে সব গাছের অঙ্কুরোদগমকাল সংক্ষিপ্ত অর্থাৎ ৪-৭ দিন, এসব ক্ষেত্রে বাছাই পদ্ধতি ব্যবহার হয় । এসব গাছের গোটা ফলই বীজ হিসাবে বপন করা হয় । যেমন-নারিকেল, গর্জন, শাল, সেগুন বীজ । সেগুন বীজ রোদে শুকালে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে ।

২। শুকনো পদ্ধতি : জারুল, তুলা, ইপিল-ইপিল, মেনজিয়াম, বাবলা, মেহগনি, কড়ই গাছের বীজ শুকনোপদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা হয় । গাছ থেকে ফল পেড়ে ভালো করে রোদে শুকাতে হয় । ফল ফেটে যখন বীজ বেরিয়ে আসে, তখন মাড়াই করে বীজ নিষ্কাশন করা হয় ।

৩। পচন পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে ফল পানিতে পচানোর পর বীজ বের করা হয়, তারপর বাতাসে শুকাতে হয় । যেমন- আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, পেয়ারা ইত্যাদি ।

বীজ সংরক্ষণ
গাছ থেকে বীজ সংগ্রহের পর পরবর্তী বপন পর্যন্ত বীজ সংরক্ষণ করা হয় । সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ না করলে বীজের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় । ফলে বীজের মানের অবনতি হয়। যেমন- গর্জন, শাল, সেগুন, চাপালিশ, তেলসুর প্রভৃতি গাছের বীজ গুদামজাত করলে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা হ্রাস পায় । এসব গাছের বীজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই বপন করতে হবে। বীজ অপেক্ষাকৃত হালকা করে বিছিয়ে গুদামজাত করা আবশ্যক । বীজ সব সময় শুকনো রাখতে হবে । অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা ও শুষ্ক স্থানে বীজ রাখতে হবে । তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বীজ খোলা অবস্থায় রাখা হয়। আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এবং রেফ্রিজারেটরে এ বীজ সংরক্ষণ করা যায় ।

কাজ : বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি মৌখিকভাবে উপস্থাপন করবে ।

বন নার্সারি তৈরির কৌশল
স্থায়ী ও অস্থায়ী উভয় নার্সারি তৈরির জন্যই প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও কিছু নিয়মনীতি ।

স্থায়ী নার্সারি
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চারা উৎপাদনের জন্য স্থায়ী নার্সারি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বন বিভাগ, হর্টিকালচার, বিএডিসির উদ্যান, প্রাইভেট নার্সারি কেন্দ্রগুলো স্থায়ী নার্সারি । স্থায়ী নার্সারি স্থাপনের বিবেচ্য বিষয়গুলো হলো-

১ । স্থান নির্বাচন
আলোবাতাসপূর্ণ খোলা মেলা উঁচু ভূমি হবে । বর্ষার পানি উঠে না এবং জলাবদ্ধতা হয় না এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে । উর্বর বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি সম্পন্ন হবে । উন্নত যোগাযোগ ও পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থা রাখতে হবে । পর্যাপ্ত জমি ও শ্রমিক পাওয়া যায় এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে ।

২। নার্সারির জায়গার পরিমাণ নির্ণয়
এক বর্গমিটার সীড বেড বা পট বেডের জায়গা নিৰ্ণয়

 পলিব্যাগের আকার  প্রতি বর্গ মিটারে চারার সংখ্যা
 ১৫ সেমি x ১০ সেমি
 ১৮ সেমি x ১২ সেমি
 ২৫ সেমি x ১৫ সেমি
 ৬৫ টি
 ৪৫টি
 ২৬ টি
 সীড বেডে চারা হতে চারার দূরত্ব  প্রতি বর্গ মিটারে চারার সংখ্যা

 ৫ সেমি x ৫ সেমি

 ১৮ সেমি x ১২ সেমি

 ২৫ সেমি x ১৫ সেমি

 ৪০০ টি

 ২০০ টি

 ১০০ টি

৩ । বেড়া নির্মাণ
অনিষ্টকারী জীবজন্তু ও পথচারীদের হাত থেকে চারা গাছ রক্ষা করার জন্য বেড়া দেওয়া দরকার । স্থায়ী নার্সারিতে বেড়া দেওয়ার উপায়-

ক) ইটের দেয়াল : স্থায়ী নার্সারির চার দিকে উঁচু ইটের দেয়াল নির্মাণ করে বেড়া দেওয়া যায় ।

খ) কাঁটা তারের বেড়া : স্থায়ী নার্সারিতে কাঁটা তারের বেড়া সহজে দেওয়া যায় ।

গ) লোহার জালের বেড়া : লোহার জাল খুঁটির সাথে বেঁধে দিয়ে বেড়ার পাশ দিয়ে জীবন্ত গাছ লাগানো যেতে পারে । কাঁটা তারের বেড়ার মতো এ বেড়াতেও তিন ধরনের খুঁটি ২ মিটার অন্তর অন্তর ব্যবহার করা যায় ।

ঘ) জীবন্ত গাছের বেড়া : দূরন্ত বা কাঁটা মেহেদী, মেন্দী, ঢোল কলমী প্রভৃতি জীবন্ত গাছ দিয়ে নার্সারির চারদিকে স্থায়ী বেড়া দেওয়া যায় ।

৪ । ভূমি উন্নয়ন
নার্সারি স্থান নির্বাচনের পর পরই উন্নয়নের কাজ করতে হয় । নার্সারি বেড তৈরির স্থান উত্তমরূপে পরিষ্কার করতে হবে । মাটি তৈরির সময় বৃষ্টির বা সেচের পানি যাতে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য মাটি ঢালু ও ড্রেন করতে হবে । ভূমির মাটি দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ হতে হবে ।

৫। অফিস ও আবাসিক এলাকা
নার্সারির অফিস ঘরটি প্রধান রাস্তার পার্শ্বে মূল গেটের কাছে অবস্থিত হওয়া প্রয়োজন । অফিস ও আবাসিক এলাকা চারা উৎপাদন এলাকার বাইরে রাখতে হবে । নার্সারি এলাকার ভিতরে আবাসন ঠিক নয় ।

৬। বিদ্যুতায়ন
স্থায়ী নার্সারিতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকা ভালো । এতে নার্সারি রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা হয় ।

৭। রাস্তা ও পথ
নার্সারিতে প্রবেশের জন্য একটি প্রধান রাস্তা থাকা আবশ্যক। প্রধান রাস্তাটি পরিকল্পিতভাবে নার্সারির ভিতরের পথগুলোর সাথে যুক্ত থাকবে ।

৮। সেচ ব্যবস্থা
নার্সারিতে চারা উত্তোলনের জন্য পানি প্রয়োজন । সে জন্য নার্সারি স্থাপনের শুরুতেই উত্তম সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে ।

৯। নর্দমা ও নালা
নার্সারিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে । এ কারণে প্রয়োজনীয় নর্দমা ও পার্শ্বনালার ব্যবস্থা রাখতে হবে । স্থায়ী নার্সারিতে এগুলো পাকা করতে হবে । নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ।

১০। নার্সারি ব্লক
নার্সারির চারা উত্তোলনের স্থানকে কয়েকটি ব্লকে ভাগ করতে হবে। প্রত্যেক ব্লককে আবার কয়েকটি সীড বেড বা পট বেডে ভাগ করতে হবে । প্রত্যেক ব্লকে ১০-১২ টি বেড থাকতে পারে । গ্রিন হাউজ সেড রাখার জায়গা, কমপোস্ট তৈরির গর্ত, মাটি রাখার স্থান ইত্যাদিও সুবিধামতো বিভিন্ন ব্লকে ভাগ করে দিতে হবে।

১১ । নার্সারি বেড
বেড সাধারণত দুই রকম হতে পারে-

ক) সরাসরি বীজ বপন করে চারা উত্তোলনের জন্য বেড : এ জন্য জমি ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে । জমির মাটি কোদাল বা লাঙল দিয়ে আগলা করতে হবে । সব রকম আগাছা নুড়ি পাথর পরিষ্কার করে ভালো করে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে । অতঃপর জায়গা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ১ মিটার × ৩ মিটার × ২০ সেমি আকারে বেড তৈরি করতে হবে। বেড তৈরির পর প্রয়োজনীয় গোবর বা কমপোস্ট ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে কয়েকদিন রেখে দেওয়ার পর বীজ বপন করতে হবে ।

খ) পলিব্যাগে চারা উত্তোলনের জন্য বেড তৈরি : এক্ষেত্রে মাটিতে চাষ করার প্রয়োজন নেই । কেবল দুটি বেডের মধ্যবর্তী স্থানের মাটি তুলে বেডকে ১০-১৫ সেমি উঁচু করে উপরিভাগ সমান করতে হয় । এরপর বেডের ধার তৈরি করা হয় । তবে নার্সারি স্থানের প্রযোজ্যতা অনুযায়ী বেডের আকার ছোট বড় হতে পারে ।

 কাজ : শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের নিকটবর্তী যে কোনো একটি বনজ নার্সারি পরিদর্শন করবে ।  নার্সারিতে যে সব বৃক্ষের চারা আছে তার তালিকা তৈরি করে দলগতভাবে শিক্ষকের কাছে জমা দিবে ।


 

Content added By