অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি - বিরামচিহ্ন | NCTB BOOK

কমা (, )

বাক্যে অল্প বিরতি বোঝাতে কমা বসে। নানা প্রয়োজনে বাক্যে কমাচিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন :

 

১. বাক্যের অর্থ স্পষ্ট করার জন্য কমা বসে। যেমন :

          তুমি যাবে, না যাবে না?

          সুখ চাও, সুখ পাবে পরিশ্রমে।

 

২. বাক্যে সম্বোধনের পর কমা বসে। যেমন :

          সেতু, পড়তে বসো।

          বিথু, খাবে এসো।

 

৩. একই পদের একাধিক শব্দ পাশাপাশি ব্যবহৃত হলে কমা বসে। যেমন :

          বিশেষ্য : পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদী।

          বিশেষণ : সুখ, দুঃখ, আশা, নিরাশা একই মালার ফুল।

          সর্বনাম : তুমি, আমি ও রবিন বাজারে যাব।

 

৪. একই ধরনের একাধিক বাক্য বা বাক্যাংশকে আলাদা করতে কমা বসে। যেমন :

          শ্রেষ্ঠা ক্লাসে ঢুকল, বই রাখল, তারপর বেরিয়ে গেল৷

          আমাদের কাছে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ খুবই আনন্দের দিন।

 

৫. বাক্যে উদ্ধৃতিচিহ্নের আগে কমা বসে। যেমন :

          মা বললেন, “অঙ্ক করতে বসো।”

          আমি বললাম, “গল্পের বই পড়তেই ভালো লাগছে।”

 

সেমিকোলন ( ; )

একাধিক বাক্যের মধ্যে নিকট সম্পর্ক থাকলে তাদের মাঝে যোগসূত্র রক্ষার জন্য সেমিকোলন ব্যবহার করা হয়। সেমিকোলনচিহ্ন কমার চেয়ে দ্বিগুণ সময় বিরতি নেয়। যেমন :

 

১. দুটো বাক্যের মধ্যে ভাব বা অর্থের সম্বন্ধ থাকলে সেমিকোলন বসে। যেমন :

          দিনটা ভালো নয়; মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ছে।

          কথাটা বলা সহজ; করা কঠিন।

 

২. একাধিক বাক্য সংযোজক অব্যয়ের দ্বারা যুক্ত না হলে সেমিকোলন বসে। যেমন :

          আগে স্কুলের পড়া; পরে গল্পের বই।

 

৩. যেসব অব্যয় বৈপরীত্য বা অনুমান প্রকাশ করে, তাদের আগে সেমিকোলন বসে। যেমন :

          মনোযোগ দিয়ে পড়; তাহলেই ভালো ফল করবে।

          ছেলেটি মেধাবী; কিন্তু ভারি অলস৷

 

কোলন ( : )

বাক্যে নানা কারণে কোলনচিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন :

 

১. উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত বোঝাতে : 

           বাংলা সন্ধি দু প্রকার : স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি।

 

২. উদ্ধৃতির আগে :

           রবীন্দ্রনাথ বলেছেন : “মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে।

 

৩. নাটকের সংলাপের আগে :

           দুকড়ি : কী চাই?

           কাঙালি : আজ্ঞে, মহাশয় হচ্ছেন দেশহিতৈষী।

           দুকড়ি : তা তো সকলেই জানে কিন্তু আসল ব্যাপারটা কী ?

           কাঙালি : আপনি সাধারণের হিতের জন্য প্রাণপণ–

 

হাইফেন ( - )

হাইফেনকে বাংলায় সংযোগ চিহ্ন বলা হয়। বিভিন্ন কারণে বাক্যে হাইফেনের ব্যবহার হয়। যেমন :

 

১. দুটো শব্দের সংযোগ বোঝাতে হাইফেন বসে। যেমন :

           আমার মা-বাবা বেড়াতে গেছেন।

           পাপ-পুণ্য, ভালো-মন্দ বিবেক দিয়ে বুঝতে হয়।

 

২. সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখাবার জন্য হাইফেন বসে। যেমন :

           আমাদের প্রীতি-উপহার গ্রহণ করুন।

           তাদের মধ্যে অহি-নকুল সম্পর্ক।

 

৩. একই ধরনের শব্দ প্রকাশের ক্ষেত্রে হাইফেন বসে। যেমন :

           বাংলাদেশ নদ-নদীর দেশ।

           ঢাকা-খুলনা-বরিশাল এ দেশের বড় শহর।

Content added By