নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - খাদ্যের কাজ ও উপাদান | NCTB BOOK

খাদ্যের ছয়টি উপাদানের মধ্যে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটই সবচেয়ে বেশি শক্তি উৎপন্ন করে। প্রায় সব প্রাকৃতিক খাদ্যবস্তুর মধ্যে এদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। স্নেহ জাতীয় পদার্থগুলোকে ভাঙলে ফ্যাটি এসিড গ্লিসারল পাওয়া যায়

স্নেহপদার্থের শ্রেণিবিভাগ

) স্নেহপদার্থের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগস্নেহ পদার্থকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দুই ভাগে ভাগ করা যায়

() কঠিনস্নেহযেসব স্নেহ পদার্থ স্বাভাবিকভাবে চাপে কঠিন আকৃতির হয় তাদেরকে কঠিনস্নেহ বলে যেমন- প্রাণির চর্বি, মাখন ইত্যাদি

() তরলস্নেহযেসব স্নেহ পদার্থ স্বাভাবিক তাপে চাপে তরল অবস্থায় থাকে তাকে তরল স্নেহ বলে।

যেমন- সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি।

) উৎস অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগউৎস অনুযায়ী স্নেহ পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়উদ্ভিজ্জস্নেহ প্রাণিজ স্নেহ

() উদ্ভিজ্জস্নেহযেসব স্নেহপদার্থ উদ্ভিজ জগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদের উদ্ভিজ্জস্নেহ বলে। যেমন- নারিকেল তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি।

() প্রাণিজস্নেহযে সকল স্নেহপদার্থ প্রাণিজগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদের প্রাণিজস্নেহ বলে। যেমন- গরুর চর্বি, ঘি, মাখন, মাছের তেল ইত্যাদি।

খাদ্য উৎস

() প্রথম শ্রেণির স্নেহ এখানে স্নেহের পরিমাণ ৯০%-১০০% সয়াবিন তেল, ঘি, মাখন, সরিষার তেল, কড় মাছের তেল, শার্ক মাছের তেল ইত্যাদি।

() দ্বিতীয় শ্রেণির স্নেহএখানে স্নেহের পরিমাণ ৪০%-৫০% বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যেমনচীনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট, নারিকেল ইত্যাদি।

() তৃতীয় শ্রেণির স্নেহ এখানে স্নেহের পরিমাণ ১৫%-২০% দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, যকৃৎ ইত্যাদি। - আমাদের খাদ্যে দৈনিক ক্যালরির ২০%-২৫% স্নেহপদার্থ থেকে গ্রহণ করা উচিত।

 স্নেহপদার্থের কাজ -

১। স্নেহপদার্থের প্রধান কাজ হলো তাপ শক্তি সরবরাহ করা। গ্রাম স্নেহপদার্থ থেকে দেহে কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়। দেহে শক্তির উৎস হিসেবে জ্বালানিরূপে সঞ্চিত থাকে

২। কোষ প্রাচীরের সাধারণ উপাদান হিসেবে কোলেস্টেরল ফসফোলিপিড জাতীয় স্নেহ পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ

ভূমিকা পালন করে।

৩। ভিটামিন , ডি, কেকে দ্রবীভূত করে দেহের গ্রহণ উপযোগী করে তোলে

 

8 দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে সংরক্ষণের জন্য স্নেহপদার্থের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

৫। দেহ থেকে তাপের অপচয় রোধ করে শরীর গরম রাখে।

৬। স্নেহপদার্থ প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড সরবরাহ করে চর্মরোগের হাত থেকে রক্ষা করে

 

অভাবজনিত ফল

 

১। স্নেহজাতীয় খাদ্যের অভাবে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের অভাব দেখা যায়

২। ত্বক শুকনো খসখসে ভাব ধারণ করে। অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিডের অভাবে শিশুদের দেহে একজিমা দেখা দিতে পারে।

Content added By