নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - আইন, স্বাধীনতা ও স্বাম্য | NCTB BOOK

আইন কত প্রকার তা নির্দিষ্ট নয়। এ সম্পর্কে বিভিন্নজন বিভিন্ন মত দিয়েছেন। অধ্যাপক হল্যান্ড আইনকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করেছেন-
১. ব্যক্তিগত আইন ২. সরকারি আইন ।
মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে আইন দুই প্রকার। ১. জাতীয় আইন ২. আন্তর্জাতিক আইন। জাতীয় আইনকে তিনি আবার দুইভাগে ভাগ করেছেন- ক. সাংবিধানিক আইন খ. সাধারণ আইন ।
আইনের উৎসের ভিত্তিতে আইন আবার ছয় প্রকার-
১. শাসনতান্ত্রিক আইন
২. সাধারণভাবে প্রণীত আইন ৩. প্রথাভিত্তিক সাধারণ আইন
৪. বিভাগীয় কর্মকর্তা কর্তৃক প্রণীত আইন
৫. শাসনবিভাগীয় আইন ৬. আন্তর্জাতিক আইন।
আইন সাধারণত তিন প্রকার-
১. রাষ্ট্র সম্পর্কিত আইন (Public Law)
২. ব্যক্তি সম্পর্কিত আইন (Private Law)
৩. আন্তর্জাতিক আইন (International Law)
১. রাষ্ট্র সম্পর্কিত আইন : রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত ও বলবৎকৃত নিয়মকানুনই হলো রাষ্ট্র সম্পর্কিত আইন। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে নানা ধরনের আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হয়। রাষ্ট্র সম্পর্কিত আইন সাধারণত আইনসভা বা পার্লামেন্টে প্রণীত হয়ে থাকে । রাষ্ট্র সম্পর্কিত আইন আবার নিম্নরূপ-
ক. ফৌজদারি আইন : রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের কাজ পরিচালনার জন্য এ ধরনের আইন প্রণয়ন করা হয়। সমাজে শান্তি বজায় রাখা এবং ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিত করা এবং দণ্ড দেয়ার জন্য ফৌজদারি আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

খ. প্রশাসনিক আইন : প্রশাসনিক আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনসেবা নিশ্চিত করা হয় ও সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তি বর্গের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
২. ব্যক্তি সম্পর্কিত আইন : এ আইন রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রণীত না হলেও সামাজিকভাবে স্বীকৃত। ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক রক্ষা ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এ আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যেমন- চুক্তি ও দলিল সংক্রান্ত আইন ।
৩. আন্তর্জাতিক আইন : এক রাষ্ট্রের সাথে অন্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক রক্ষার জন্য যে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হয়, তাকে আন্তর্জাতিক আইন বলে। বিভিন্ন রাষ্ট্র পরস্পরের সাথে কেমন আচরণ করবে, এক রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের সাথে কেমন ব্যবহার করবে, কীভাবে আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধান করা হবে তা আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।