নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা | NCTB BOOK

বাংলাদেশের আইনসভা:

গঠন

সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে আইনসভা অন্যতম । বাংলাদেশের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ। এটি এক কক্ষবিশিষ্ট । জাতীয় সংসদের মোট সদস্যসংখ্যা ৩৫০। এর মধ্যে ৩০০ জন সদস্য জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন এবং অবশিষ্ট ৫০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত । বাংলাদেশকে মোট ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ভাগ করা হয়েছে। এ সকল নির্বাচনী এলাকা থেকে নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন করে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিভিন্ন দলের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার আনুপাতিক হারে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যরা সাধারণ আসনে নির্বাচিত সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। তবে মহিলা সদস্যগণ ইচ্ছা করলে ৩০০ আসনের যে কোনোটিতে সরাসরি প্রতিদ্বন্ধিতার মাধ্যমেও নির্বাচিত হতে পারেন।

সংসদে একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার থাকেন। তাঁরা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। তাঁদের কাজ সংসদ অধিবেশন পরিচালনা করা। সংসদের কার্যকাল পাঁচ বছর। এর পূর্বেও রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। সংসদের একটি অধিবেশন সম্পন্ন হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আরেকটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে হয়। মোট সদস্য সংখ্যার মধ্যে কমপক্ষে ৬০ জন উপস্থিত থাকলে কোরাম হয় এবং সংসদ অধিবেশন পরিচালনা করা যায় । প্রধানমন্ত্রী সাধারণত সংসদের নেতা । আসনসংখ্যার দিক দিয়ে নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দলের প্রধান সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়। সংসদের অনুমতি ছাড়া একনাগাড়ে ৯০ বৈঠক দিবস সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায় ।

পাঁচ বছর পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । ন্যূনতম ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন । তবে কেউ আদালত দ্বারা দেউলিয়া বা অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হলে বা অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিলে বা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ড ভোগ করলে সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবেন ।