একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | NCTB BOOK

মি. আলী বেড়াতে যাবেন। বিমানের টিকেট, হোটেল বুকিংসহ অনেক কাজ কম্পিউটারে বসে আর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সেরেছেন। অর্থাৎ বিমান কোম্পানি, হোটেল কোম্পানি এভাবে বিভিন্ন ব্যবসায় এখন ICT নির্ভর। মি. চৌধুরী ব্যাংকে যান। One stop service। একজন ব্যাংক কর্মী চেক পাওয়ার পর কম্পিউটারে মি. আলীর হিসাবে যেয়ে দ্রুত পোস্টিং দিয়ে এক মিনিটেই টাকা দিয়ে দিচ্ছেন। ATM (Automated teller machine) বুথে যেয়ে নিজেই টাকা উঠাচ্ছেন। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান Walmart তাদের মালামাল সংগ্রহে ফরমায়েশ দেয়ার পদ্ধতি বাদ দিয়েছে। কোনো মাল বিক্রয় হওয়ার সাথে সাথে সরবরাহকারীর সার্ভারে তথ্য উঠে যাচ্ছে। ফলে নির্দেশিত পর্যায়ে গেলেই সে মাল সরবরাহ করছে। এখন ব্যবসায়ে স্টক রেজিস্টার লাগে না, হিসাবের খাতা • নেই- সব কম্পিউটারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবাদে ব্যবসায় ও ব্যবসায় কার্যক্রম এক নতুন রূপ লাভ করেছে । কত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে । এর সব কিছুই এর প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্বের দিক নির্দেশ করে। নিম্নে ব্যবসায়ে এর প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

  • তথ্যের দ্রুত প্রেরণ (Quick transmission of information): যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান অবদান হলো এর মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত তথ্য প্রেরণ করা যায়। যোগাযোগের উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে চোখের নিমেষে যে কোনো তথ্য যে কোনো দূরবর্তী গ্রাহকের নিকট পৌঁছানো সম্ভব হয় । ফেসবুকে যেমনি যে কোনো তথ্য, সংবাদ বা ছবি দ্রুত দেশ-বিদেশের বন্ধুদের কাছে পাঠানো যায় । . ব্যবসায় জগতে এখন এমন প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটেছে যা তথ্য বা সংবাদ প্রয়োজনীয় পক্ষসমূহের নিকট নিমিষেই প্রেরণ করছে।
  • দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ (Taking instant decision) : উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যবস্থাপকগণ দ্রুত যে কোনো ব্যবসায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হয়ে থাকেন। কম্পিউটারের বাটনে চাপ দিয়ে তার মাধ্যমে তারা পৃথিবীর যে কোনো স্থানের যে কোনো উৎস থেকে তাদের প্রাযোজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। ফলে তাদের পক্ষে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্যবসায়ের দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
  • যোগাযোগ ব্যয় হ্রাস ( Lowering communication cost) : আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি শুধুমাত্র যোগাযোগের সময়ই সাশ্রয় করে না যোগাযোগ ব্যয় কমাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ই-মেইলের মাধ্যমে সাধারণ ডাকে পত্র প্রেরণের খরচ অপেক্ষা অনেক কম খরচে তথ্য একস্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ করা যায়। ভাইভারে অতি কম খরচে পৃথিবীর যে কোনো স্থানে ঘন্টার পর ঘণ্টা কথা বলা যায়। ইন্টারনেটে অডিও কনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়। এরূপ একটা কনফারেন্সের জন্য সাধারণ ব্যয়ের কার্যত তা কোনো খরচের পর্যায়েই পড়ে না ।
  • কাজের গতি ও দক্ষতা বৃদ্ধি (Increasing the speed and efficiency of work): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে দ্রুত তথ্য পাওয়ায় যেমনি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় তেমনি এতে কাজের গতিও অনেক বৃদ্ধি পায় । একজন ব্যক্তি অফিসে বসেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবাদে স্বল্পসময়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারে। অনেকের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। দূরে বসেও কাজ তত্ত্বাবধান করার সুযোগ পায়। একজন তথ্য জ্ঞানসমৃদ্ধ মানুষ স্বভাবতই সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারায় তার কর্মদক্ষতা অনেক বাড়ে।
  • প্রতিযোগিতার সামর্থ্য বৃদ্ধি (Increasing the ability of competition) : এরূপ প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতার সামর্থ্যও বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। যারা এক্ষেত্রে এগিয়ে তারা সমবসময়ই অন্যদের তুলনায় কার্যক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পায় । বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এ প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার করতে পারার কারণে এগিয়ে। আমাদের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী যারা এক্ষেত্রে এগিয়ে অন্যদের চেয়ে তারা ভালো করছে । এরূপ যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োজনেই শিল্পগুলো বিদেশী কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। অর্থাৎ যারা এর ব্যবহারে এগিয়ে তারা বিদেশী ক্রেতাদেরও বেশি টানতে পারছে। সকল ক্ষেত্রেই এ বিষয়টি এখন প্রযোজ্য।
Content added By