এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

৩.২.২ খনিজ পদার্থের অভাবজনিত রোগ (Mineral deficiency disease) 

(ক) ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এর অভাবজনিত রোগ Diseases due to deficiency of calcium and phosphorus

আমিষ, শ্বেতসার, চর্বি এবং ভিটামিনের মতো পাখির খাদ্যে খনিজ পদার্থের একান্ত প্রয়োজন। পাখির দৈহিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য রক্ষা এবং প্রজননের জন্য খনিজ পদার্থ অত্যাবশ্যক। তবে অধিক পরিমাণে খনিজ পদার্থ বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে । তাই পরিমিত পরিমাণ খনিজ পদার্থ খাদ্যের সাথে সরবরাহ করতে হয়। 

কাজ:

  • পাখি/মুরগির দেহের অস্থি গঠন, ডিমের খোসা তৈরিতে খনিজ পদার্থ অত্যাবশ্যক। 
  • দেহের অম্ল-ক্ষারত্ব সমতা রক্ষা করে । 
  • খনিজ শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্যে বিপাকে সাহায্যে করে ।

অভাবজনিত লক্ষণ:

  • ঠোঁট নরম ও বাঁকা হয়। 
  • ডিমের খোসা নরম ও পাতলা হয় 
  • খোসা ছাড়া ডিম দেয়। 
  • অস্থির গঠন ঠিক মতো হয় না। 
  • রক্ত জমাট বাঁধে না। 
  • রিকেট রোগ ও কেজ লেয়ার ফ্যাটিগ রোগ হয়। 
  • বাচ্চা ফোটার হার কমে যায়।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:

  • মাছের গুঁড়া, ঝিনুক, হাড়, দানা শস্য, পালং শাক ইত্যাদি মুরগির খাদ্যে সরবরাহ করলে এই রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় ।
  • মুরগির খাদ্যের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অনুপাত হবে বাচ্চা মুরগিতে ২.২ঃ১। 
  • মুরগির খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অনুপাত হবে- বাড়ন্ত মুরগিতে ২.৫ঃ১ । 
  • মুরগির খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অনুপাত হবে ডিমপাড়া মুরগিতে ৯৪১।

 

(খ) সোডিয়াম এর অভাবজনিত রোগ (Diseases due to deficiency of Sodium) 

সোডিয়ামের কাজঃ

  • দেহের অম্ল-ক্ষারত্ব সমতা রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত জরুরি। 
  • অস্থি গঠন করে ।

অভাবজনিত লক্ষণ:

  • দৈহিক বৃদ্ধি ঠিকমত হয় না । 
  • ক্যানাবলিজম রোগ হয় । 
  • হাড় নরম হয়। রক্ত পাতলা হয় । 
  • ডি-হাইড্রেশন দেখা দেয় ও মৃত্যু ঘটে।

প্রতিকার ও চিকিৎসা: খাদ্যে সাধারণ লবণ সরবরাহ করে এর অভাব দূর করা যায়।

 

(গ) জিংক এর অভাবজনিত রোগ (Diseases due to deficiency of Zinc ) 

জিংকের কাজঃ

  • পাখির দৈহিক বৃদ্ধি, পালক গজানো ও ডিম উৎপাদনের জন্য জিংক প্রয়োজন । 
  • অস্থির গঠনে জিংক প্ৰয়োজন ।

অভাবজনিত লক্ষণ:

  • দৈহিক বৃদ্ধি ঠিকমত হয় না । 
  • পালক কম গজায় ও পায়ের চামড়া উঠে যায় । 
  • পায়ের হাড় খাটো ও মোটা হয় । 
  • মুরগি ঠোকরা ঠুকরি করে ।

প্রতিকার ও চিকিৎসা:

  • মুরগির খাদ্যে জিংকের বা জিংক সমৃদ্ধ উপকরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে ।

 

ঘ) সেলেনিয়াম এর অভাবজনিত রোগ (Diseases due to deficiency of Selenium) 

সেলেনিয়ামের কাজঃ

  • সেলেনিয়াম হচ্ছে গ্লুটাথায়োন পারোক্সিডেজ ( Glutathion Peroxidase) নামক এনজাইমের অংশ যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে ।

অভাবজনিত লক্ষণ :

  • ডিম বসানোর ৪র্থ দিনে ভ্রুণের মৃত্যু হয়। 
  • চামড়ার নিচে পানি জমে । 
  • দৈহিক বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না ৷
  • রক্তশূন্যতা দেখা দেয় ।

প্রতিকার ও চিকিৎসা:

  • ছোলা জাতীয় খাদ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে বা খাদ্যে সেলেনিয়াম যুক্ত করলে এর অভাব দূর হয় ।

 

ঙ) লৌহ ও কপার এর অভাবজনিত রোগ (Diseases due to deficiency of Iron and Cupper)

অভাবজনিত লক্ষণ

  • রক্তশূণ্যতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হয় । 
  • লাল পালক এর রং ফ্যাকাশে হয় । 
  • স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ।

প্রতিকার ও চিকিৎসাঃ 

শাকসবজি, ঘাস, মাছের গুঁড়া ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। খাদ্যে ফেরাস সালফেট ও কপার সালফেট সংযোজন করতে হবে।

 

 

 

Content added By