এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ | NCTB BOOK

কন্ট্রোলিং ডিভাইসের ব্যবহার সর্বত্র বিরাজমান। যেখানে বিদ্যুৎ আছে, সেখানে নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করা হয় । উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণ এবং গ্রাহক পর্যায়ে এটির ব্যবহার বিদ্যমান। নিচে বিভিন্ন ধরনের সুইচের ব্যবহার উল্লেখ করা হলো।

ক) নাইফ সুইচ।

পো-ব্রেক নাইফ সুইচ: মধ্যম মানের কারেন্টের জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। নিম্ন মানের ও উচ্চ মানের কারেন্ট ব্যবস্থাপনায় সাধারণত এ সুইচ ব্যবহার করা হয় না। 

কুইক ব্রেক নাইফ সুইচ: এ সুইচগুলো সাধারণত মেইন সুইচ বোর্ডে ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক মোটর সার্কিট, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক কন্ট্রোল সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সার্কিট হতে বিচ্ছিন্ন করতে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।

মেইন সুইচ: বিদ্যুৎ মিটার বোর্ডের পর ব্যবহারকারীর সমগ্র সার্কিটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। 

সিঙ্গেল পোল সুইচ : লাইনের শুধু একটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। 

ডাবল পোল সুইচ: লাইনের দুইটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।

ট্রিপল পোল সুইচ: লাইনের তিনটি তারের সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছিন্ন করার কাজে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। 

আয়রন ক্ল্যাড (আই.সি.) সুইচ: আবাসগৃহে বা কারখানায় বা অনুরূপ স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বা বিচ্ছিন্ন করার জন্য মিটার বোর্ডের পরে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।

(খ) টাম্বলার সুইচ: সাধারণ বাতি জ্বালাতে এবং হিটার, ইস্ত্রি প্রভৃতি পাওয়ার সার্কিটে বিভিন্ন অ্যাম্পিয়ারের টাম্বলার সুইচ ব্যবহার করা হয়। 

ওয়ান-ওয়ে সুইচ: এ ধরনের সুইচ দুইটি তারের মধ্যে সংযোগ সাধন এবং বিচ্ছিন্ন করবার জন্য ব্যবহৃত হয়। সাধারণত বাতি, পাখা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আবাসিক ঘরে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়।

টু-ওয়ে সুইচ: এ সুইচগুলো সাধারণত একটি বা কয়েকটি বাতি একসঙ্গে দুই জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ উদ্দেশ্যে সিঁড়ি ঘরের বাতি বা বড় বড় হলো ঘরে যেখানে দুই জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়, সে সমস্ত জায়গায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।

ইন্টারমিডিয়েট সুইচ: কোন বাতিকে তিন বা তার অধিক জায়গা হতে নিয়ন্ত্রণ করতে এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়। এ রকম সার্কিটের দুই প্রান্তে দুইটি টু-ওয়ে সুইচ এবং মাঝখানে প্রয়োজন অনুসারে এক বা একাধিক ইন্টারমিডিয়েট সুইচ ব্যবহার করতে হয়। এটি সাধারণত সিঁড়ি ঘরের বাতি জ্বালানো নিভানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।

পুশ পুল সুইচ: এ ধরনের সুইচ সাধারণত টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়।

রোটারি সুইচ: এ ধরনের সুইচ সাধারণত বৈদ্যুতিক ওভেন, কুকার, হিটার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। মোটরের ঘূর্ণনের দিক পরিবর্তন, বেগ পরিবর্তন এবং সার্কিট কন্ট্রোল করার কাজে ব্যবহার করা হয়। 

বেড সুইচ: সাধারণত বিছানায় শুয়ে বাতি জ্বালানো এবং নিভানের জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পুশ বাটন সুইচ:  এ সুইচগুলো সাধারণত বৈদ্যুতিক মোটরে স্টার্টারের সাথে, বেল সার্কিটে, ল্যাম্প সার্কিটে ইত্যাদিতে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।

গ) ইলেকট্রো- ম্যাগনেটিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস:

ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক সুইচ বা ম্যাগনেটিক কন্ট্যাক্ট সাধারণত বৈদ্যুতিক মোটর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। 

ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রিলে সাধারণত কোন নিয়ন্ত্রণ সার্কিটকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজে ব্যবহার করা হয়।

• ইলেকট্রনিক কন্ট্রোলিং ডিভাইস বা ইলেকট্রনিক সুইচ: আজকাল বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সুইচ বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো কোন সার্কিটকে লজিক্যাল কন্ট্রোল, তুলনামূলক কন্ট্রোল, টাইমিং কন্ট্রোল, রিমোট কন্ট্রোল, মাইক্রো কন্ট্রোল ইত্যাদি করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

• চেঞ্জ ওভার সুইচ: একই লোড বিভিন্ন লাইন বা ফিডার থেকে এবং প্রয়োজনে নিজস্ব জেনারেটার থেকে চালনার জন্য চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করা হয়। যেখানে লোড সব সময় চালু রাখা প্রয়োজন সেখানে চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করা হয়, যেন কোন লাইন লোডশেডিং হলে সাথে সাথে চেঞ্জ ওভার সুইচ এর পজিশন পরিবর্তন করে সিস্টেম সচল রাখা যায়।

• চেঞ্জ ওভার সুইচের কার্যকারিতা: মাছের আড়ৎ (যেখান ক্যাপাসিটিভ হিটিং দিয়ে কাজ করানো হয়) এবং খাবার তৈরির ফ্যাক্টরিতে চেঞ্জ ওভার সুইচ ব্যবহার করে এক লাইন হতে লোড চেঞ্জ করে জেনারেটর লাইন দেওয়া হয়। আবার যখন সাপ্লাই লাইন চলে আসে তখন পুনরায় চেঞ্জ ওভারের মাধ্যমে লাইন দেওয়া হয়। চিত্রে সিঙ্গেল ফেজ চেঞ্জ ওভার দেখানো হলো।

চিত্র-৩.২ চেঞ্জ ওভার সুইচ

চেঞ্জ ওভার সুইচটি যখন এ অবস্থানে আছে তখন লোডটি মেইন লাইন দিয়ে চলছে। যখন মেইন লাইন অফ হবে তখন সুইচটি b অবস্থানে রেখে জেনারেটর চালু করলে লোডটি জেনারেটরের লাইনে চলবে। চেঞ্জ ওভার সুইচ এভাবে কাজ করে।

৩.২ প্রটেকটিভ ডিভাইস

প্রতিটি কাজের শুরুতেই একান্ত প্রয়োজন নিরাপত্তা। যে কোন যন্ত্র ব্যবহারে প্রটেকশন ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে যে কোন অস্বাভাবিক ঘটনার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে সিস্টেম বিচ্ছিন্ন করতে হয়। এ কাজের জন্য প্রটেকটিভ ডিভাইস হিসেবে ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার, রিলে ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক সিস্টেমে রক্ষণ যা (Protective Device) এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তার বিষয়টি খুব প্রয়োজন। শর্ট সার্কিট বা ওভার লোড জনিত ত্রুটিতে নিরাপত্তার জন্য বৈদ্যুতিক প্রটেকটিভ ডিভাইস কাজ করে। এ অধ্যায় পাঠে বৈদ্যুতিক প্রটেকটিভ ডিভাইস বিষয়ে ধারণা লাভ করা যাবে।

৩.২.১ প্রটেকটিভ ডিভাইসের সংজ্ঞা

কোন বৈদ্যুতিক সার্কিটে শর্ট সার্কিট, আর্থফন্ট বা ওভারলোড এর কারণে পূর্ব নির্ধারিত কারেন্ট এর অতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহের ফলে বর্তনীতে ব্যবহৃত ওয়্যারিং ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হবে। ঐ সকল ক্ষয়-ক্ষতি হতে সিসটোকে রক্ষা করার জন্য যে সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে প্রটেকটিভ ডিভাইস বলে। যেমন-ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি।

Content added By