এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ | NCTB BOOK

আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলতে সম্পূর্ণ আর্থিং পদ্ধতির রেজিস্ট্যান্সকেই বোঝায়। বাড়ি, ওয়ার্কশপ, কলকারখানার মেইনআর্থ টার্মিনাল থেকে আর্থ ইলেকট্রোডের মাধ্যমে যে রেজিস্ট্যান্স পাওয়া যায়, তাকে আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলে। মোট কথা আর্থ লিড এবং আর্থের নিরবিচ্ছিন্ন তারের রেজিস্ট্যান্সকেই আর্থ রেজিস্ট্যান্স বলে। আর্থিং এর রেজিস্ট্যান্স খুব কম হওয়া বাঞ্ছনীয়। সামান্য কারেন্টও যদি কোন সরঞ্জামাদির বড়িতে আসে তা যেন সাথে সাথে আর্থিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই মাটির নিচে যেতে পারে সে জন্যই আর্থ রেজিস্ট্যান্স কম হওয়া দরকার। বাসা বাড়ির ক্ষেত্রে আর্থ রেজিস্ট্যান্স সর্বনিম্ন ১১৫ এবং পাহাড়ি এলাকায় সর্বোচ্চ ৫১২ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। আর বড় বড় মিল ফ্যাক্টরিতে আর্থ রেজিস্ট্যান্স ১২ এর কম হওয়া উচিৎ।

আর্থিং সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা তা নিম্নলিখিত যে কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়-

১। মেগার বা আর্থ টেস্টার পদ্ধতি ও

২। টেস্ট ল্যাম্প পদ্ধতি।

এখানে মেগার বা আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপের পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো: মেগার বা আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ ইলেকট্রোডের রেজিস্ট্যান্স মাপা হয়। এতে তিনটি টার্মিনাল থাকে। 

(ক) আর্থ টার্মিনাল, (খ) পটেনশিয়াল টার্মিনাল এবং (গ) কারেন্ট টার্মিনাল। 

যে আর্থ ইলেকট্রোড এর রেজিস্ট্যান্স মাপতে হবে তার সঙ্গে E টার্মিনাল কানেকশন করতে হবে। এবার স্পাইক নিয়ে একই লাইনে ঐ আর্থ ইলেকট্রোড হতে ৫ থেকে ১০ মিটার পর পর দূরে মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। প্রথমটির অর্থাৎ আর্থ ইলেকট্রোড এর নিকটবর্তী স্পাইককে P টার্মিনালের সাথে এবং পরবর্তী দ্বিতীয়টির সাথে C টার্মিনাল সংযোগ করতে হবে। এবার মেগারের হাতলের সাহায্যে জেনারেটরকে ঘুরালে E হতে মাটির মধ্য দিয়ে C তে পরবর্তী কারেন্ট প্রবাহিত হবে। এ কারেন্টকে I ধরলে এবং E হতে P পর্যন্ত ভোল্টেজকে V ধরলে E হতে P পর্যন্ত আর্থের রেজিস্ট্যান্স হবে, R=VIΩ=, R এর মান অবশ্য আর্থ টেস্টারে সরাসরি রিডিং পাওয়া যাবে। যাহা চিত্রে দেখানো হলো।

চিত্র-৪.৯ আর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ (তিন টার্মিনাল আর্থ টেস্টার)

এভাবে মাঝের স্পাইককে একই লাইনে ১.৫ মিটার হতে ৩ মিটার যথাক্রমে আর্থ ইলেকট্রোডের নিকট ও দূরে সরিয়ে পোঁতে আরও একবার রিডিং নিতে হবে। তারপর মোট তিনটি রিডিং এর গড় মানকে আর্থের রেজিস্ট্যান্স ধরা হবে। কিন্তু জনবহুল শহরে যেখানে P এবং C স্পাইক পৌতার জায়গা নেই। সেখানে আর্থ টেস্টারের P ও C টার্মিনাল দুইটিকে শর্ট করে তার সংগে একটি লিডিং তার সংযোগ করে পানির পাইপের সংঙ্গে সংযোগ করতে হবে। এবার হাতল ঘুরিয়ে টেস্টারের রিডিং নিতে হবে। প্রথম রিডিং হতে দ্বিতীয় রিডিং বাদ দিলে আর্থ রেজিস্ট্যান্স এর মান পাওয়া যায়। টেস্ট করার সময় সতর্ক হতে হয় যেন আর্থ ইলেকট্রোড ও স্পাইক কাছাকাছি না থাকে।

আর্থ টেস্টারের সাহায্যে আর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপের সাবধানতাগুলো হলো- 

১। আর্থ টেস্টারের পাঠ সাবধানতার সাথে প্রবণ করতে হবে।

২। সাহায্যকারী স্পাইক মাটির মধ্যে ১ মিটার পর্যন্ত পৌঁততে হবে।

৩। টার্মিনাল সংযোগ শক্তভাবে আটকাতে হবে যাতে খুলে না যায়।

৪। রেজিস্ট্যান্স আছে কিনা তা জানার জন্য আর্জিং রেজিস্ট্যান ১ বৎসর পর পর পরীক্ষা করা উচিত।

তাছাড়া আর্থ টেস্টিং বন্ড দিয়ে খুব সহজেই আর্থ রেজিস্ট্যান্স এর অবস্থা জানা যায় সেক্ষেত্রে টেস্ট বাতির এক প্রাপ্ত সাপ্লাইয়ের সাথে এবং অন্য প্রাপ্ত ঐ আর্থিং এর সাথে সংযোগ করলে বাতি যদি ভালোভাবে জ্বলে তবে বুঝতে হবে আর্থিং ভালো, না হলে আর্থিং ভালো হয় নাই। যদি বাড়ির আর্থ কানেকশন থেকে কিছু দূরে (অর্থাৎ যত দূরে পরস্পরের রেজিস্ট্যান্স ক্ষেত্র জড়াজড়ি হয় না) নলকুপের পানির লাইন আর্থ টেস্টার ছাড়াই আর্থ টেস্টিং বাজি দিয়ে খুব সহজেই আর্থিং এর কার্যকারিতা জানা যায়। পাইপ প্রভৃতি এমন আর্থ করা জিনিস পাওয়া যায় যার রেজিস্ট্যাল এত কম যে বিবেচনার মধ্যে আসে না। তবে একটি ভোল্টমিটার আর একটি অ্যামিটার দিয়ে আর্থ কানেকশনের রেজিস্ট্যান্স বের করা যেতে পারে। চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে, নলকূপের পানির লাইন আর আর্থ কানেকশনের সঙ্গে একটি অ্যামিটার লাগিয়ে তা দিয়ে অল্টারনেটিং কারেন্ট দিতে হবে, আর ঐ দুইয়ের মধ্যের ভোল্টেজ পরিমাপ করতে হবে।

চিত্র-৪.১০ একটি ভোল্টমিটার এবং একটি অ্যামিটার দিরে অর্থ রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ।

এখন যদি জলের পাইপের রেজিস্ট্যান্স ধর্তব্যের মধ্যে না হয়, তবে মাটির রেজিস্ট্যান্স = ভোল্টেজ/কারেন্ট

৪.২.৫ বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং টেস্টিং এর সতর্কতা বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং টেস্টিং এর সতর্কতাগুলো হলো-

• সরবরাহ না থাকলে নিয়ন টেস্টার বা টেস্ট ল্যাম্পের মাধ্যমে পোলারিটি টেস্ট করা যাবে না।

• সরবরাহ থাকলে আর্থ টেস্টার বা মেগারের মাধ্যমে পোলারিটি টেস্ট করা যাবে না।

• কনটিনিউয়িটি টেস্টের সময় সকল লোড লাগাতে হবে বা টার্মিনালসমূহ শর্ট করতে হবে।

•আর্থ ইলেকট্রোড ও স্পাইক কাছাকাছি পুঁতা যাবে না।

• বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

• ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স টেস্টের সময় রিডিং ১০ সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ১ মিনিট সময়ের মধ্যে গ্রহন করতে হবে।

• আর্থ ইলেকট্রোডের সাথে আর্থ টেস্টারের E টার্মিনাল, আর্থ ইলেকট্রোড এর নিকটবর্তী স্পাইককে P টার্মিনাল এবং অন্যটি C টার্মিনালে সংযোগ করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Content added || updated By