On This Page
এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

চিংড়ির পোস্ট লার্ভা উৎপাদনে রুড বা মা চিংড়ির গুরুত্ব অপরিহার্য। প্রাকৃতিক উৎস থেকে রুড সংগ্রহ করলে তার গুণগতমান অনেক ভালো হয়। ব্রুড সংগ্রহের সময় স্বাস্থ্যবান এবং রোগমুক্ত চিংড়ি নির্বাচন করতে হবে। ব্লুড যেন সবল, কর্মতৎপর, উজ্জ্বল বর্ণের এবং যতটা সম্ভব বড় ও পরিপক্ক হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। ভালো মানের ব্রুড হলে পোনার মান ভালো হবে এবং অধিক পরিমাণে পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-

  •  প্রাকৃতিক উৎস থেকে বাগদা চিংড়ির ব্রুড সংগ্রহ করতে পারব।
  • বাগদা চিংড়ির ব্রুড পরিবহণ পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারব।
  •  সংগৃহীত বাগদা চিংড়ির রুড শোধন, অভ্যস্তকরণ ও অবমুক্ত করতে পারব।
  • বাগদা চিংড়ির আশ্রয়স্থল তৈরি করতে পারব।
Content added By
Please, contribute to add content into প্রাকৃতিক উৎস থেকে ব্রুড সংগ্রহ.
Content

কৃত্রিমভাবে বাগদা চিংড়ির পোস্ট লার্ভা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্রুড চিংড়ির গুণগতমান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত ব্রুড চিংড়ির গুণগতমান ভালো হয়। বাগদা চিংড়ি উপকূল থেকে বহুদুরে সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে লবণাক্ততা আছে এমন মোহনা বা উপকূলীয় নদীতেও বসবাস করে।

Content added By

প্রজননক্ষম স্ত্রী ও পুরুষ বাগদা চিংড়ি মার্চ থেকে নভেম্বর এর মধ্যে সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা যায়। ডিমওয়ালা চিংড়ি দুই প্রকার যথাঃ সম্পূর্ণ পরিপক্ক ও পূর্ণবয়স্ক চিংড়ি। সম্পূর্ণ পরিপক্ক চিংড়ি হ্যাচারিতে এনে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করলে আপনা আপনি ডিম ছেড়ে দেয় কিন্তু পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী চিংড়ির চক্ষু দন্ড কর্তন ছাড়া ডিম দেয় না। গভীর সমুদ্রে মাছ বা চিংড়ি ধরার কাজে নিয়োজিত ট্রলার থেকে পরিপক্ক চিংড়ি সংগ্রহ করা যায়। অন্যদিকে টেকনাফের উপকূলবর্তী এলাকায় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কিছু কিছু পরিপক্ক চিংড়ি পাওয়া যায়। স্ত্রী চিংড়ির জন্য সর্বনিম্ন ওজন ৮০-১৫০ গ্রাম এবং পুরুষ চিংড়ির জন্য ওজন ৫০-১২০ গ্রাম হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে পরিপক্ক চিংড়ি পাওয়া না গেলে খামার থেকে পূর্ণ বয়স্ক চিংড়ি সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত চিংড়ি হতে তুলনামূলক অনেক বেশি পরিমাণে পোনা উৎপাদন করা যায়। 

Content added By

বাগদা চিংড়ি মজুদের জন্য সরাসরি সামুদ্রিক পানি ব্যবহার করা হয় না। প্রথমে পানি মজুদ বা স্টোরেজ ট্যাংকে থিতানোর জন্য জমা করে রাখা হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যে মজুদ ট্যাংকের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবেঃ- 

ক) মজুদ ট্যাংকের পানির গভীরতা ১ মিটার রাখতে হবে।

খ) মজুদ ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতা সাধারণত ৮-১৬ টন পর্যন্ত হতে পারে।

প) প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ৪০% থেকে ৫০% পানি পরিবর্তন করতে হবে। 

ঘ) পানি মজুদের পর বালি ছাকুনি (sand filtration) ব্যবহার করে পানিতে ভাসমান বা ঝুলন্ত ( suspended) পদার্থসমূহ দূর করা হয়। সামুদ্রিক পানিতে প্রচুর জীবাণু থাকতে পারে। এদের ছাকুনির মাধ্যমে সর্বাংশে নির্মূল করা সম্ভব নয়। তাই রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করে পানিকে জীবাণুমুক্ত করা হয়। ব্রুড চিংড়িকে প্লাস্টিকের বালতি বেসিন (bucket), চৌবাচ্চা, রেজিফোম বাক্স (regifoam box), ফাইবার গ্লাস বা গ্লাস ট্যাংকের ভেতরে মজুদ করা যায়। সাধারণত প্রতি ঘন মিটারে ১২-৩৬ টি ব্রুড চিংড়ি মজুদ করা হয়ে থাকে।

Content added By

মজুন ট্যাংকের পানির গুণাগুন নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে পানির ভাপমাত্রা, লবণাক্ততা, পিএইচ (pH), দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা, অ্যামোনিয়া, নাইট্রাইট ইত্যাদি অনুকূলে রাখতে হবে।

প্যারামিটার

পরিমাণ

তাপমাত্রা

লবনাক্ততা 

দ্রবীভূত অক্সিজেন

পিএইচ (pH)

জ্যামোনিয়া

নাইট্রাইট

২৭ ডিগ্রি সে.-৩২ ডিগ্রি সে.

২৮-৩৩ পিপিটি

৩-৪ মিলিগ্রাম/লিটার

৮.০-৮.৫

০.৫-১৩.০ মিলিগ্রাম/ লিটার

০.৪৮-০.৯৮ মিলিগ্রাম/লিটার

রুক্ত চিংড়িকে মজুদ ট্যাংকে কয়েক ঘন্টা থেকে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ পর্যন্ত রাখা হয় যতক্ষণ না পরিবহণের জন্য প্রভুত হয়ে থাকে। মজুদ ট্যাংকের পানির গুণাগুণের আকস্মিক পরিবর্তন হলে ব্রড চিংড়ি মারা যেতে পারে এবং এ থেকে সৃষ্ট পীড়নের ফলে ডিমের উৎপাদন কমে যেতে পারে। তাই পানির গুণাগুন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

Content added By

ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ পদ্ধতি পূর্ণবয়স্ক চিংড়ির পরিবহণের অনুরূপ হলেও চিংড়ির উপরে ডিমের অবস্থানের কারণে ডিমওয়ালা চিংড়ি পরিবহণে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কেননা একই পাত্রে অনেকগুলো চিংড়ি পরিবহণ করার সময় চিংড়ির পায়ের আঘাতে ডিম বেরিয়ে আসতে পারে।

Content added || updated By

যদি একটি পিকআপ ভ্যানের ধারণ ক্ষমতা ১ টন পিডিসি ট্যাংক বা এর সমপরিমাণ হয় তাহলে ১ ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ৪০০টি ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করা যেতে পারে। যদি পরিবহণ দূরত্ব ৪ ঘণ্টা বা তার অধিক হয়ে থাকে তাহলে ২০০ টির বেশি রুড চিংড়ি পরিবহণ করা যাবে না। ৩০ সেমি লম্বা এবং ৬ থেকে ৮ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট প্লান্টিক পাইপের মধ্যে ব্রুড চিংড়ি প্রবেশ করিয়ে পরিবহণ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। পাইপের গায়ে অবশ্যই ৪০ থেকে ৫০টি ছিদ্র থাকতে হবে এবং পাইপের সুখ মশারির কাপড় দিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

 চিত্র-১-১: ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ

Content added By

পরিবহণের সময় পানির তাপমাত্রা অনুকুল অবস্থায় রাখার জন্য পিকআপ ভ্যানে পানি ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ব্লুড চিংড়িকে পরিবহণের সময় প্লাস্টিক ব্যাগে অক্সিজেন যুক্ত পানি পূর্ণ করে পরিবহণ করা যেতে পারে। প্লাস্টিক ব্যাগের পানির তাপমাত্রা অনুকুল অবস্থায় রাখার জন্য প্রতি ২ লিটার পানির জন্য ১০০ গ্রাম ওজনের বরফের টুকরা প্লাস্টিক ব্যাগের পানির মধ্যে ভাসিয়ে দিতে হবে। বরফ সংরক্ষণের জন্য পিক আপ ভ্যানের মধ্যে আইস বক্স অথবা ছোট রেফ্রিজারেটর রাখা যেতে পারে। বরফের টুকরা ব্যবহারের সময় চিংড়ির রোস্ট্রামটিতে স্পঞ্জ জাতীয় পদার্থ লাগিয়ে দিতে হবে যেন আঘাতজনিত কারণে রোস্টামটি ভেঙ্গে না যায় ।

Content added By

সাধারণভাবে বাগদার ক্ষেত্রে স্ত্রী ও পুরুষ চিংড়ি হাতে না নিয়ে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। মোটামুটিভাবে ৫ গ্রাম দৈহিক ওজনের পর এদের দেহের বুকের অংশ ( vertical side) পরীক্ষা করে সহজেই স্ত্রী ও পুরুষ শনাক্তকরণ করা সম্ভব। পূর্ণবয়স্ক বাগদার সব থেকে কাছাকাছি সাঁতারের পা জোড়া যদি বুকের কাছাকাছি সংযুক্ত থাকে তবে বুঝতে হবে এরা পুরুষ। এছাড়া স্ত্রী বাগদার ৪র্থ ও ৫ম জোড়া পায়ের (walking leg) মাঝামাঝি প্রজনন অঙ্গ (genital organ) চ্যাপ্টা ও গোলাকার আকৃতির বা হৃৎপিন্ড আকৃতির (heart shape) হয়ে থাকে।

পূর্ণবয়স্ক ও ডিম্বাশয় বৃদ্ধি প্রাপ্ত স্ত্রী বাগদা চিংড়িকে আলোর বিপরীত দিকে উঁচু করে ধরলে এদের পিঠের অংশে লম্বা ডিম্বাশয় দৃষ্টিগোচর হয়। স্ত্রী বাগদার পরিপক্ক ডিম্বাশয় মাথা থেকে লেজের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রলম্বিত হতে পারে। তাই প্রজনন মৌসুমে পূর্ণবয়স্ক ও বয়ঃপ্রাপ্ত চিংড়ি শনাক্তকরণ করা খুবই সহজ।

Content added By

হ্যাচারিতে ব্রুড চিংড়ি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ও এককোষী প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে যা চিংড়ি পোনায় সংক্রমিত হয়ে থাকে। হ্যাচারি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত না রাখলে হ্যাচারিতে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।

হ্যাচারি জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের ওপর গুরুত্ব দিলে সাধারণত পোনা রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। বিষয়গুলো নিম্নরূপ:

ক) হ্যাচারিতে ব্যবহৃত পানি ও যন্ত্রপাতি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

খ) প্রতিটি ট্যাংক হতে সঠিক পরিমাণে পানি পরিবর্তন করতে হবে।

গ) প্রতিটি ট্যাংকের তলদেশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। 

ঘ) ট্যাংকে গুণগতমান সম্পন্ন খাদ্য সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

ঙ) পোনা উৎপাদন কার্যক্রম শেষে ট্যাংকসমুহ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে।

চ) পানিতে সবসময় বায়ু সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

ছ) পানির তাপমাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখতে হবে।

 

সারণি প্রজনন ট্যাংকে ব্রুড চিংড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য

ক্রম

পরীক্ষনীয় বিষয়

শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য

সংগৃহীত ব্রুড চিংড়ি রোগাক্রান্ত কি না

চিংড়ির ফুলকা বিকৃত, নোংরা বা অপরিচ্ছন্ন কি না

চিংড়ির ত্বকের উপর রক্তের দাগ বা সাদা দাগ আছে কি না

সাঁতারের উপাঙ্গগুলো ফোলা আছে কি না

সঠিকভাবে চিংড়ি খোলস পরিবর্তন করছে কি না

চিংড়ির দেহাবরনীর উপর কালো দাগ বিদ্যমান কি না 

চিংড়ির উপাঙ্গ বা এন্টেনা ভেঙ্গে গেছে কি না

দেহের আকৃতি অস্বাভাবিক কি না

দেহের বর্ণ স্বাভাবিক কি না

চিংড়ির শরীরের গঠন ও চলাচল স্বাভাবিক নয়।

চিংড়ির খোলস পরিবর্তন এবং বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় না।

চিংড়ির খোলস পরিবর্তনে পীড়নের সৃষ্টি হয় এবং খোলস পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্বল চিংড়ির রূপান্তর
হয়।

চিংড়ির দেহের বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ লক্ষ্য করা যায় এবং আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।

চিংড়ির দেহাবরনীর উপর শেওলা বিদ্যমান থাকে।

স্থানীয়ভাবে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত।

ত্রুটিপূর্ণ পরিবহণ পদ্ধতি বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত।

ডিম দেয়ার উপযুক্ত ছোট আকৃতির মাদার শ্রিম্প সাধারণত কম ডিম দিয়ে থাকে।

উজ্জ্বল বর্ণের চিংড়ি সাধারণত রোগমুক্ত হয়।

 

Content added || updated By

ব্রুড চিংড়ি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে এনে ২৫ পিপিএম মাত্রার ফরমালিনে ১৫-২০ মিনিট রেখে জীবাণুমুক্তকরণ করে নিতে হবে। যদি স্ত্রী ব্রুড চিংড়িতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক পিগমেন্টেশন অথবা ক্ষত দেখা দেয় তাহলে ৫০ পিপিএম মাত্রায় অক্সিটেট্রাসাইক্লিন অথবা এরিথ্রোমাইসিন দ্রবণে ১০ মিনিট চুবিয়ে রাখতে হবে। চিংড়িকে প্রজনন ক্ষেত্র ৩-৪ দিন পরিচর্যা করা হয়। এরপর স্বাস্থ্যবান ব্লুডকে ম্যাচুরেশন ট্যাংকে স্থানান্তর করা হয়।

Content added By

মা চিংড়িকে হ্যাচারিতে আনার পর হ্যাচারির পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে হয়। খাপ খাওয়ানোর জন্য হ্যাচারিতে ব্যবহৃত চৌবাচ্চা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে চৌবাচ্চায় সমুদ্রের পানি ব্যবহার করা হয়। আশ্রয়স্থল স্থাপনের জন্য ট্যাংকে ঝরনার ব্যবস্থা রাখা উচিত। ট্যাংকের তলদেশে রুডের আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং ট্যাংক ঘরের মধ্যে স্থাপন করা হয়। এখানে প্রাথমিকভাবে ব্লুড চিংড়িকে শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া বা স্কুইড প্রভৃতির মাংস খাওয়ানো হয়।

Content added By

ক. পানির ইনলেট পাইপ

খ. পিভিসি পাইপ

গ. পরিশোষক পাত (filter sheet)

ঘ. বালি স্তর (sand layer) 

ঙ. নুড়ি পাথর স্তর (gravel layer )

চ. সমকেন্দ্রিক পিভিসি পাইপ (concentric PVC Pipe )

ছ. জীবাণু অপসারণকৃত পাইপ (removable waste pipe)

জ. আউটলেট পাইপ

Content added By

সাধারণত বৃত্তাকার আকৃতির ট্যাংক আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বৃত্তাকার ট্যাংকের আয়তন ৪ মি×১.২ মি হতে হবে। বৃত্তাকার ট্যাংকটি ব্ল্যাক ফাইবার গ্লাস সিট দিয়ে নির্মাণ করা হয়। ট্যাংকের তলদেশে ১০ সেমি পুরুত্বের নুড়িপাথরের স্তর দেওয়া হয় এবং এর উপরে সিনথেটিক কাপড় রাখা হয়। সিনথেটিক কাপড়ের উপর ৫ থেকে ১০ সেমি পুরুত্বের বালির স্তর দেওয়া হয়। নুড়িপাথর স্তরে ছিদ্রযুক্ত পাইপগুলো ৯০ মিমি পুরুত্বের পিভিসি পাইপের মধ্যে বসানো হয়। এই পিভিসি পাইপ ভার্টিকাল পাইপের সাথে সংযুক্ত করা হয় যা দিয়ে সমুদ্রের পানি সরবরাহ করা হয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত পাইপ ট্যাংকের কেন্দ্রে রাখা হয়। ট্যাংকের মধ্যে ইনলেট পাইপের মাধ্যমে পানি প্রবেশ করে তারপর ভার্টিক্যাল টিউবের মধ্য দিয়ে যায়। এরপর পানি ছিদ্রযুক্ত পাইপের মধ্যে, পরবর্তীতে নুড়ি পাথরের মধ্যে, পরবর্তীতে সিনথেটিক এর স্তরে এবং এরপর বালির স্তরে যায়।

Content added By

৪ মি×১.২ মি আয়তনের বৃত্তাকার ট্যাংকে ৫০ থেকে ৭০টি ব্রুড চিংড়ি রাখা যায়। এক্ষেত্রে ১টি স্ত্রী চিংড়ির জন্য ১টি পুরুষ চিংড়ি রাখা উচিত। সাধারণত প্রতি বর্গমিটারে ১০০-২০০ গ্রাম ওজনের ৪ থেকে ৬টি ব্লুড চিংড়ি মজুদ করা হয়।

Content added By

পরিপক্ক চিংড়ি মজুদের পূর্বে ব্রুড চিংড়িকে অভ্যস্তকরণ করে নেয়া হয়। ব্লুড চিংড়িকে যথাযথভাবে অভ্যস্তকরণ না করে পুকুরে মজুদ করলে চিংড়ির বেঁচে থাকার হার হ্রাস পায়। এছাড়া চিংড়ির উৎপাদিত ডিমের সংখ্যাও হ্রাস পায়। তাই চিংড়ি মজুদকালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

Content added By

বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে বাহিরের অক্সিজেন মিশ্রিত বাতাস পানির গভীরে প্রবেশ করানোর মাধ্যমে পানির ভিতরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখার যন্ত্রের নাম এ্যারেটর। এ্যারেটর পুকুরের পরিবেশগত সামগ্রিক উন্নতির জন্য বড় ভুমিকা পালন করে থাকে।

একটি ভালো গুণসম্পন্ন এ্যারেটর নির্বাচনের জন্য যেসব সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:

  • কম শব্দ সৃষ্টি করে এমন এ্যারেটর 
  •  দীর্ঘ কর্মজীবন ও কম ওজন
  •  প্রতিস্থাপন ও সহজ কার্যপ্রণালী
  • উচ্চ অক্সিজেন স্থানান্তর ক্ষমতা
  • স্টেইনলেস টেকসই ফ্রেম

 চিংড়ি চাষের অগ্রগতির সাথে সাথে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও উন্নত হচ্ছে। একটি এয়ার পাম্প ট্যাংকের বাইরে থেকে বাতাস শুষে ট্যাংকের ভিতরে নিমজ্জিত যন্ত্রপাতিতে পাম্প করে। তাই সঠিক দিক এবং সঠিক চাপে বায়ু প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ে একটি এয়ার পাম্পের আনুষঙ্গিক সরঞ্জামের বর্ণনা দেওয়া হলো-

১. এয়ারলাইন টিউবিং- এয়ার পাম্প থেকে ট্যাংকের পানিতে নিমজ্জিত সরঞ্জামে বায়ু প্রবাহকে নির্দেশ করে ভালভ চেক করতে হবে। যদি পাম্প বন্ধ হয়ে যায় বা শক্তি হারায় তবে চিংড়ির ট্যাংক থেকে পানি বের হওয়াকে বাধা দেয়।

২. এয়ার ভালভ- এয়ার পাম্প থেকে ট্যাংকে আসা বায়ু প্রবাহের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। 

৩. টি স্প্রিটার- একটি এয়ারলাইনকে দু'টি গতিপথে বিভক্ত করে, একটি একক এয়ার পাম্পকে দু'টি ডিভাইস চালানোর অনুমতি দেয়।

৪. গ্যাং ভালভ- একটি এয়ার পাম্প থেকে চারটি ভিন্ন ট্যাংকে বায়ু প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।

 ৫. এয়ারলাইন হোল্ডার- ট্যাংকের ভিতরে বা বাইরে এয়ারলাইন টিউবিংকে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে একটি সাকশন কাপ ব্যবহার করে। 

৬. এয়ারলাইন সংযোগকারী- দীর্ঘ দূরত্বে পৌঁছানোর জন্য এয়ারলাইন টিউবিংয়ের দু'টি টুকরো একসাথে সংযুক্ত করে।

এয়ার পাম্প, ট্যাংক ডিভাইস এবং প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক উপকরণ কিনতে এবং এয়ার পাম্প স্থাপন করতে নিম্নের মৌলিক নির্দেশাবলী অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি-

১। এয়ার পাম্পটিকে ট্যাংকের বাইরে রাখা উচিত এবং তারপরে এয়ারলাইন টিউবিংটি সঠিক দৈর্ঘ্যে কেটে দিতে হবে যাতে এটি ট্যাংকের ভিতরে এর আনুষঙ্গিক সরঞ্জামের সাথে বায়ু পাম্প সংযোগ করার জন্য যথেষ্ট দীর্ঘ হয়।

২। এয়ারলাইন টিউবিংয়ের এক প্রান্ত ট্যাংকের ভিতরের সরঞ্জামের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ডিভাইসটিকে ট্যাংকের ভিতরে রাখতে হবে। তারপর এয়ারলাইন টিউবিংয়ের অন্য প্রান্তটি এয়ার পাম্পের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

৩। স্পঞ্জ ফিল্টার এবং ট্যাংক ডিভাইসের মাঝখানে কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় এয়ারলাইন টিউবিংটি কেটে এর মধ্যে চেক ভালভটি সংযুক্ত করতে হবে যাতে ফ্ল্যাপারসহ চেক ভালভের শেষ অংশ বায়ু পাম্পের মুখোমুখি হয়।

৪। যদি চেক ভালভটি পিছনের দিকে স্থাপন করা হয় তবে এয়ার পাম্প চালু করার সময় কোনও বায়ু প্রবাহিত হবে না, তাই চেক ভালভটির চারপাশে আলতোভাবে টোকা দিতে হবে।

৫। এয়ার পাম্পের পাওয়ার ক্যাবল দিয়ে একটি ড্রিপ লুপ তৈরি করতে হবে তারপর বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। অতঃপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্যাংকের ডিভাইস থেকে বুদবুদ পরিলক্ষিত হবে।

Content added By

এ্যারেটর হল বায়ু চলাচলের যন্ত্র যা পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হয়। এটি দ্রবীভূত গ্যাস (যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড) অপসারণের জন্য পানি এবং বায়ুকে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে নিয়ে আসে এবং লোহা, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং উদ্বায়ী জৈব রাসায়নিকের মতো দ্রবীভূত ধাতুগুলিকে জারিত করে। চিংড়ি চাষিদের লক্ষ্য হল ঝুঁকি কমিয়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং মুনাফা অর্জন করা। এ্যারেটর হলো পানির গুণগত মানের ব্যবস্থাপনা এবং অক্সিজেন ঘাটতি হ্রাসের জন্য সবচেয়ে দ্রুত সমাধান প্রক্রিয়া। এটি অ্যামোনিয়া, ক্লোরিন, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইড, আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো রাসায়নিক পদার্থগুলিকে অপসারণ করে ফলে চিংড়ি চাষের পানির গুণগতমান উন্নয়নে প্রভাব ফেলে।

এ্যারেটরের মূল উদ্দেশ্য হল অক্সিজেন সরবরাহ করা এবং পানিতে অক্সিজেন ছড়িয়ে দেওয়া। এ্যারেটর নির্বাচন করার সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল অক্সিজেন বিচ্ছুরণ। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি বাগদা চিংড়ির বৃদ্ধি, বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এ্যারেটর অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে পানির প্রাথমিক খাদ্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে। পুকুরের তলদেশে বসবাসকারী চিংড়ির মতো প্রজাতির জন্য পানির নীচের স্তরে অক্সিজেন সরবরাহ করা আবশ্যক। এ্যারেটর ব্যবহারের ফলে স্রোতের বিপরীতে চিংড়ি সাঁতার কাটে। ফলে চিংড়ির শরীরে কোনো ময়লা বা ক্ষতিকর প্রাণী লেগে থাকতে পারে না। পানিতে অক্সিজেন মেশানো ও সরবরাহের ফলে খাদ্যের অপচয় কম হয়, পানির তলদেশ পরিষ্কার হয় এবং চিংড়ি রোগমুক্ত থাকে। 

Content added By

কাজের ভিন্নতার ওপর নির্ভর করে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এ্যারেটর পাওয়া যায়। সেগুলো হল:

ক) প্যাডেল হইল এ্যারেটর

খ) ফিস পন্ড এ্যারেটর 

গ) টারবাইন এ্যারেটর

ঘ) ডিফিউজার এ্যারেটর

ঙ) সাবমারসিবল পাম্প 

প্যাডেল হুইল এ্যারেটর পুকুরের উপরের স্তরে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মোটর-এর শক্তি ভেদে ২ ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত পানির নিচে ডুবানো থাকে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ আরপিএম এ এই হুইলগুলো ঘুরে থাকে। তবে বাণিজ্যিক প্যাডেলগুলো ৯০ আরপিএম এর মতো ঘুরে থাকে যেখান থেকে প্রতি অশ্বক্ষমতার (HP) জন্য ঘন্টায় ৩ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন তৈরি হতে পারে। প্যাডেল হুইল এ্যারেটর এর অসুবিধা হল এ ধরনের এ্যারেটর পুকুরের তলদেশে তেমন কাজ করতে পারে না। আমাদের দেশের পুকুরের পরিবেশগত দিক বিবেচনা করলে সাবমারসিবল পাম্প সব থেকে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ এটি পানির তলদেশ থেকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে যখন উপরের স্তরে আসে তখন প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন পানিতে মেশাতে মেশাতে আসে এবং অধিক অক্সিজেনের কারণে পুকুরের সমগ্র পরিবেশের উন্নতি ঘটে।

চিত্র-৫.২ (ক) এ্যারেটর পাম্প, (খ) প্যাডেল হইল এ্যারেটর

Content added By

বর্তমানে বেশিরভাগ চিংড়ি চাষিদের কাছে কম বিদ্যুৎ খরচের অত্যন্ত দক্ষ বৈদ্যুতিক মোটরসহ এ্যারেটর রয়েছে। সমস্ত এ্যারেটর সিস্টের এর জন্য একটি নির্দিষ্ট শক্তির উৎস প্রয়োজন। হ্যাচারি বিদ্যুতের লাইনের কাছাকাছি থাকলে খুব ভালো হয়। প্রতি ৩০০- ৫০০ কেজি অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য ১ অর্থক্ষমতার (HP) এ্যারেটর প্রয়োজন। এক অশ্বক্ষমতা বিশিষ্ট একটি এ্যারেটর এক ফটা চালু থাকলে প্রায় ১ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। হেন্টর প্রতি চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রতি হেক্টরে বিদ্যুৎ খরচের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাৰে।

Content added By

ব্রুডস্টক ব্যবস্থাপনার জন্য অভ্যস্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। ব্রুড চিংড়ি পরিবহণের পর যে পরিবেশে রাখা হবে তার নিয়ামকগুলোকে সর্বোত্তম রাখা উচিত যাকে বাগদা চিংড়ির সর্বোচ্চ বেঁচে থাকার হার নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে চিংড়ির পরিপককরণ এবং উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের অভ্যন্তকরণের ফলে চিংড়ির টেকসই উৎপাদন, উৎপাদিত ডিমের সংখ্যা ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও চিংড়ির পরিপক্ষতা ও প্রজননের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যদি অভান্তকরণ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পালন না করা হয় তাহলে চিংড়ির উর্বরতার হার হ্রাস পেতে পারে।

Content added By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ্যাপ্রোন ও পোশাক পরিধান করা। 
  • প্রয়োজন অনুযায়ী কাজের স্থান, পিক-আপ ভ্যান প্রস্তুত করা ও পরিষ্কার করা।
  • কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী পিক-আপ ভ্যানে এ্যারেশন সংযোগ স্থাপন করা।
  • পিক-আপ ভ্যান নেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া।
  • পিক-আপ ভ্যানের আকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ বাগদা চিংড়ির ব্রুড পরিবহণ করা। পিক-আপ ভ্যানে পানি ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করা।
  • পরিবহণকালীন প্রয়োজনীয় টুলস ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা।
  • পরিবহণকালীন যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা।
  • কাজের শেষে ব্যবহৃত টুলস ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করা।

 

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

ক্রমনাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা
০১এ্যাপ্রোনশিক্ষার্থীর মাপ মতো১টি
০২হ্যান্ড গ্লোভসমাঝারি মাপের১ জোড়া
০৩মাস্কতিন স্তর বিশিষ্ট১টি

(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ

ক্রম নাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা
০১পিভিসি ট্যাংকমাঝারি মাপের১টি
০২প্লাস্টিক পাইপপরিমাণমত 
০৩মশারির কাপড় পরিমাণমত 
০৪ছিদ্রযুক্ত প্লাস্টিক পাইপপরিমাণমত 
০৫বরফের টুকরোপরিমাণমত 
০৬বাগদা চিংড়ির ব্রুডপরিপক্ক৪ টি
০৭প্লাস্টিক ব্যাগমাঝারি মাপের৫ টি
০৮আইস বক্স বা ছোট রেফ্রিজারেটরমাঝারি মাপের২টি
০৯স্কুপ নেটমাঝারি মাপের১টি
১০এয়ার/অক্সিজেন টিউবছোটপরিমাণ মত

(গ) কাজের ধারা

১। পিক-আপ ভ্যান যথাযথভাবে প্রস্তুত করো এবং তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখ। যাতে চিংড়ির ব্রুড ময়লা বা কোনো জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত না হয়।

২। ব্রুড চিংড়ি পরিবহণের পূর্বে বাছাই কর কাজটি সকাল বেলা করতে হবে কারণ বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানির তাপমাত্রা বেড়ে যায় এতে পীড়নের সৃষ্টি হয়।

৩। কত দূরত্বে রুড চিংড়ি পরিবহণ করা হবে তার ওপর রুডের টেকসইকরণ নির্ভর করে। দূরবর্তী স্থানে পরিবহণের পূর্বে ব্রুড চিংড়িকে ৪৮ ঘন্টা অভুক্ত রাখ।

৪। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ির ব্রুড পরিবহণের ক্ষেত্রে পাত্রের উপরের দিক বা মুখ খোলা রাখ যাতে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে। এক্ষেত্রে সময়ে সময়ে পানি বদল করো। ব্রুড চিংড়ি পরিবহণের সময় পরিবহণ ট্যাংকের ভিতর পলিথিনের ব্যাগ ঢুকিয়ে তার মধ্যে চিংড়ির ব্রুড পরিবহণ করা উচিত।

৫। এছাড়া মোটা কাপড় বা ত্রিপলের তৈরি বিভিন্ন আকারের উন্মুক্ত পাত্র বিশেষ ধরনের ধাতব নির্মিত ফ্রেমে আটকিয়ে রেখে ব্রুড পরিবহণ করো। এসময় ব্যাটারি চালিত এ্যারেটর এর সাহায্যে পানিতে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করো। এতে পানিতে ছোট ছোট বুদ বুদ তৈরি হয় ফলে রুডগুলো একে অপরকে আঘাত করার কোনো সুযোগ থাকে না।

৬। স্বল্প দূরত্বে ব্রুড চিংড়ি পরিবহণের ক্ষেত্রে বদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার করো। সাধারণত মোটা পলিথিন ব্যাগে ব্রুড পরিবহণ করা হয় এবং অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে। পলিথিন ব্যাগ যাতে না ফেটে যায় সেজন্য কাঠের বা মোটা কাগজের তৈরি বক্সে রাখ।

৭। ব্রুড পরিবহণের সময় পিক-আপ ভ্যান ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দাও যাতে সূর্যের আলো পানিতে পৌছাতে না পারে। এতে পানির তাপমাত্রা ঠিক থাকবে এবং বাইরের ধুলাবালি ভেতরে কম প্রবেশ করবে।

৮। পিকআপ ভ্যানের আকার অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করো। পিকআপ ভ্যানের ধারণক্ষমতা ১ টন পিডিসি ট্যাংক এর সমপরিমাণ হলে ১ ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ৪০০ টি ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করো। যদি দূরত্ব ৪ ঘন্টা বা তার অধিক হয়ে থাকে তাহলে ২০০ টির বেশি ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করো না। ৩০ সেমি লম্বা এবং ৬-৮ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট ছিদ্রযুক্ত প্লাস্টিক পাইপের মধ্যে ব্লুড চিংড়ি প্রবেশ করিয়ে পরিবহণ করো। পাইপের মুখ মশারির কাপড় দিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা নাও।

৯। পরিবহণের সময় পানির তাপমাত্রা অনুকুলে রাখার জন্য পিক-আপ ভ্যানের পানি ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করো। এক্ষেত্রে প্লাস্টিক ব্যাগে অক্সিজেনযুক্ত পানি পূর্ণ করে পরিবহণ করো। পানির তাপমাত্রা অনুকুলে রাখার জন্য প্রতি ২ লিটার পানির জন্য ১০০ গ্রাম ওজনের বরফের টুকরা প্লাস্টিক ব্যাগের পানির মধ্যে ভাসিয়ে দাও। বরফ সংরক্ষণের জন্য পিকআপ ভ্যানের মধ্যে আইস বক্স অথবা ছোট রেফ্রিজারেটর রাখ।

 

সতর্কতা

১। পরিবহণ পাত্রের তাপমাত্রা যেন কোনক্রমেই বেশি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

২। পরিবহণকালে ব্রুড চিংড়ি যেন কোনরকম আঘাত প্রাপ্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৩। বাগদা চিংড়ির ব্রুডগুলোকে সাবধানে হ্যান্ড গ্লোভস পরে ধরতে হবে।

 ৪। ব্রুড পরিবহণের তাপমাত্রা ২০-২৫ ডিগ্রি সে. এর মধ্যে রাখা উচিত।

৫। বরফের টুকরা ব্যবহারের সময় চিংড়ির রোস্ট্রামটিতে স্পঞ্জজাতীয় পদার্থ লাগিয়ে দিতে হবে যেন আঘাতজনিত কারণে রোস্ট্রামটি ভেঙ্গে না যায়।

৬। পরিবহণকৃত ব্রুড চিংড়ি হ্যাচারিতে এনে অভ্যস্তকরণ করতে হবে যাতে তাপমাত্রার ব্যবধানজনিত কোনো পীড়ন না পড়ে।

 

আত্মপ্রতিফলন

বাগদা চিংড়ির ব্রুড পরিবহণ কৌশল সম্পর্কে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।

Content added By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ্যাপ্রোন ও পোশাক পরিধান করা।
  •  প্রয়োজন অনুযায়ী কাজের স্থান পরিষ্কার করা এবং প্রস্তুত করা।
  • প্রয়োজন অনুসারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নির্বাচন এবং সংগ্রহ করা।
  •  কাজ শেষে কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা।
  • অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা।
  •  কাজের শেষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা।

 

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

ক্রমনাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা 
০১ এ্যাপ্রোনশিক্ষার্থীর মাপ মতো১টি
০২হ্যান্ড গ্লোভসমাঝারি মাপের১ জোড়া
০৩মাস্কতিন স্তর বিশিষ্ট১টি

 

(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ

ক্রম নাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা 
০১প্লাস্টিকের বালতিমাঝারি মাপের২টি
০২প্লাস্টিকের গামলামাঝারি মাপের২টি
০৩পাতিলমাঝারি মাপের২টি
০৪জীবাণুনাশক দ্রবণপরিমাণমত
০৫মিটার স্কেল১ মিটার১ টি
০৬টিস্যু পেপারসাধারণ৫ টি
০৭ফরমালিনপরিমাণমত২ টি
০৮পামছামাঝারি মাপের১ টি

 

গ) কাজের ধারা

১। ব্রুড চিংড়ি সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে এনে একটি পাত্রে ২৫ পিপিএম মাত্রার ফরমালিন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করো।

২। ফরমালিনের পরিবর্তে মা চিংড়িকে হ্যাচারিতে এনে ৫ পিপিএম মাত্রার জীবাণুনাশক দ্রবণে নিয়ে জীবাণুমুক্ত করো।

৩। চিংড়িকে জীবাণুনাশক দ্রবণে ১ ঘন্টা রেখে দাও।

৪। ব্রুড চিংড়িকে শোধন এর সময় কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ক্ষত দেখা গেলে ৫০ পিপিএম মাত্রার অক্সিটেট্রাসাইক্লিন অথবা এরিথ্রোমাইসিন দ্রবণে ১০ মিনিট রাখ।

৫। চিংড়ি শোধন এর পর প্রজননক্ষম চিংড়িকে ৩-৪ দিন ব্রিডিং গ্রাউন্ড এ পরিচর্যা করো।

৬। গৃহীত কার্যপ্রণালী ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করো।

 

সতর্কতা

১। ব্রুড চিংড়ি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার রাসায়নিক দ্রবণে চুবাতে হবে।
২। রাসায়নিক দ্রবণের মাত্রা যেন কোন ক্রমেই প্রয়োজনের থেকে বেশি না হয় এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৩। রুড শোধন এর সময় পানির তাপমাত্রা সঠিক রাখার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আত্মপ্রতিফলন
ব্রুড শোধন করার কৌশল অনুশীলন করার বিষয়ে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে। 

Content added By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ্যাপ্রোন ও পোশাক পরিধান করা।
  • প্রয়োজন অনুসারে কাজের স্থান (রেস্ট ট্যাংক, ম্যাচুরেশন ট্যাংক) পরিষ্কার করা এবং প্রস্তুত করা।
  • জীবাণুমুক্ত ব্রুডকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেন্ট ট্যাংকে রাখা।
  • রেস্ট ট্যাংকে ঝরণা অথবা এ্যারেশন নিশ্চিত করা।
  • বাগদা চিংড়ি এর ব্রুড এর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা। প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং সরঞ্জামসমূহ সুশৃঙ্খলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা।

 

ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

ক্রম নাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা
০১এ্যাপ্রোনশিক্ষার্থীর মাপ মতো১টি
০২হ্যান্ড গ্লোভসমাঝারি মাপের১ জোড়া
০৩মাক্ষতিন স্তর বিশিষ্ট১টি

খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ

ক্রম নাম স্পেসিফিকেশনসংখ্যা
০১ট্যাংকমাঝারি মাপের২ টি
০২স্কুপ নেটমাঝারি মাপের২ টি
০৩পাইপমাঝারি মাপের২ টি
০৪বাগদা চিংড়ির ব্রুডপরিমাণমত
০৫বাগদা ব্রুড এর খাবারকুচো চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, স্কুইড, কাঁকড়ার মাংস, গরু বা খাসির কলিজা ইত্যাদিপরিমাণমত

 

গ) কাজের ধারা

১। বাগদার ব্রুড চিংড়িকে জীবাণুমুক্ত করে রেস্ট ট্যাংকে ৩ থেকে ৪ দিন পরিচর্যা করে অভ্যস্তকরণ করো। 

২। এ সময় স্ত্রী ও পুরুষ চিংড়িকে আলাদা করে রাখ।

৩। অভ্যস্তকরণ ট্যাংকে ব্রুড চিংড়িকে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে কুচো চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, স্কুইড বা কাঁকড়ার মাংস অথবা গরু বা খাসির কলিজা সরবরাহ করা উচিত।

৪। অভ্যস্তকরণ ট্যাংকের পানি প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ৪০% থেকে ৫০% পরিবর্তন করা উচিত। 

৫। ট্যাংকের পানির গভীরতা ১ মিটার রাখা উচিত এবং ট্যাংকের তলদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করো। 

৬। রেন্ট ট্যাংকে এ্যারেশন নিশ্চিত করতে হবে ফলে চিংড়ি যৌন কার্য সম্পাদনে বেশি তৎপর হয়।

৭। রেস্ট ট্যাংকে এ্যারেশন হিসেবে এয়ার অক্সি টিউব ব্যবহার করা যেতে পারে।

৮। বাগদা চিংড়ির ব্রুডকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ও এককোষী প্রাণির আক্রমণ হতে রক্ষার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন। 

৯। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরে চিংড়িকে ম্যাচুরেশন ট্যাংকে অবমুক্ত করো। এসময় স্ত্রী ও পুরুষ চিংড়িকে ১:১ অনুপাতে রাখ। ম্যাচুরেশন ট্যাংকের প্রতি বর্গমিটারে ১০০-২০০ গ্রাম চিংড়ি মজুদ করা যায়।

১০। এরপর ব্যবহৃত সরঞ্জামসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করো।

১১। গৃহীত কার্যপ্রণালী ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করো।
 

সতর্কতা

১। হ্যাচারিতে ব্যবহৃত পানি ও ট্যাংক জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

২। ট্যাংকের তলদেশ নিয়মিত পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

৩। চিংড়ি অভ্যস্তকরণ এর সময় পানিতে সবসময় বায়ু সরবরাহ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৪। ট্যাংকে পানির তাপমাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখতে হবে।

৫। চিংড়ি অবমুক্তকরণ করার সময় পুরুষ এবং স্ত্রী চিংড়ি এর অনুপাতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আত্মপ্রতিফলন
ব্রুড অভ্যস্তকরণ এবং অবমুক্তকরণ করার কৌশল সম্পর্কে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।

Content added By

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:

১। ব্রুড স্ত্রী ও পুরুষ চিংড়ির ওজন কত হওয়া উচিত?

২। এ্যারেটর কী?

৩। মজুদ পুকুরে প্রতিদিন কত শতাংশ পানি পরিবর্তন করা উচিত?

৪। আশ্রয়স্থলে চিংড়ি মজুদের হার কত?

৫। মজুদ ট্যাংকের পানির গভীরতা কত থাকা উচিত?

৬। বালি ছাকনির কাজ কী?

৭। ব্রুড চিংড়ি জীবাণুমুক্তকরণে কী কী এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়?

সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:

১। রুড চিংড়ি বলতে কী বোঝায়?

২। একটি ভালো গুণসম্পন্ন এ্যারেটর এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

৩। এ্যারেটর কত প্রকার ও কী কী?

৪। চিংড়ি অভ্যস্তকরণ বলতে কী বোঝায়? 

৫। আশ্রয়স্থল তৈরির উপকরণগুলোর নাম লেখ।

৬। চিংড়ির অভ্যস্তকরণ বলতে কী বোঝায়?

রচনামূলক প্রশ্ন :

১। ব্রুড চিংড়ির পরিবহণ পদ্ধতি বর্ণনা করো।

২। ব্রুড শনাক্তকরণ পদ্ধতি বর্ণনা করো।

৩। রুডের স্বাস্হ্য পরিচর্যা সম্পর্কে বর্ণনা করো। 

৪। প্রজনন ট্যাংকে ব্লুড মজুদের পূর্বে যে সকল বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত তা সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

৫। আশ্রয়স্থল স্থাপনের কৌশল বর্ণনা করো।

৬। এ্যারেটর সম্পর্কে বর্ণনা করো।

Content added By

Promotion