এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

চিংড়ি চাষ একটি অত্যন্ত লাভজনক কার্যক্রম হলেও বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সময় চিংড়ি চাষে সফলতা নাও আসতে পারে। ব্যর্থতার মাঝে যে সমস্ত কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো- পোনা মজুদের পূর্বে সঠিক নিয়মে পুকুর হতে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর না করা। রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ চাষকৃত পুকুরে কী ক্ষতি করতে পারে এ ব্যাপারে অনেকের সুস্পষ্ট ধারনা নেই। নিচে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

রাক্ষুসে মাছ: যে সমস্ত মাছ সরাসরি অন্য মাছ বা চিংড়ি ধরে খায় তাদেরকে রাক্ষুসে মাছ বলে, যেমন- ফলি, বোয়াল, ভেটকি, ৰেলে, শোল, গজার প্রভৃতি। এরা চাষকৃত চিংড়ি বা চিংড়ির পিএল সরাসরি খেয়ে ফেলে, ফলে চিংড়ির উৎপাদন কমে যায়। নিচে কতিপয় রাক্ষুসে মাছের ছবিসহ নাম উল্লেখ করা হলো :

চিত্র-২.৭: প্রধান প্রধান রাক্ষুসে মাছ 

অবাঞ্ছিত মাছ: যে সমস্ত মাছ সরাসরি অন্য মাছকে যায় না কিছু চাষকৃত মাছের সাথে অক্সিজেন, খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে তাঁর প্রতিযোগীতা করে তাদের অবাঞ্ছিত মাছ বলে, যেমন- পারলে, ভাগনী, চা তেলাপিয়া, কাকিলা প্রভৃতি অন্যতম। পুকুরে এ ধরনের মাছ থাকলে খাদ্যের অপচয় হয় এবং উৎপাদন অনেক কমে যায়। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য অবাঞ্ছিত মাছের নাম উল্লেখ করা হলো :

চিত্র-২-৮: প্রধান প্রধান অবাঞ্ছিত মাছ

নিম্নলিখিত কারণে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ চিংড়ি চাষের ঘের/পুকুর থেকে দূর করা প্রয়োজন-

ক) রাক্ষুসে মাছ চাষকৃত মাছের পোনা খেয়ে ফেলে ফলে উৎপাদন আশানুরূপ হয় না।
খ) পুকুরে মজুতকৃত চিংড়ির সঠিক রেকর্ড সংরক্ষণে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
গ) অবাঞ্ছিত মাছ চাষকৃত চিংড়ির খাদ্যে ভাগ বসায়। তাছাড়া চাষকৃত চিংড়ির সঙ্গে বাসস্থান ও অক্সিজেনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়েও প্রতিযোগিতা করে।
ঘ) উভয় প্রকার মাছই পুকুরে রোগ-জীবাণুর বাহক এবং আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে, কারণ বিভিন্ন প্রকার মাছের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা এক নয়।
ঙ) উভয় প্রকার মাছের উপস্থিতিতেই চিংড়ির উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, উৎপাদন কম হয় এবং লাভের অংশ কমে যায়।

চ) দেখা গেছে ১ কেজি রাক্ষুসে মাছ প্রায় ১০ কেজি চাষকৃত চিংড়ি খেয়ে ফেলে, আবার ১ কেজি রাক্ষুসে মাছ ১০ কেজি চাষযোগ্য মাছের খাদ্য খেয়ে ফেলে।

Content added By