এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

২.২.২ ডি- হিউমিডিফায়ার (Dehumidifier)

মানুষের আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয় । তাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মূল কাজ হল কক্ষে বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা। কারণ বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করলে তাপমাত্রা এমনিতে নিয়ন্ত্রণ হয়ে যায়। আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য আর্দ্রতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য। গ্রীষ্মকালে বাতাসের আর্দ্রতা ৫০% হতে ৬৮% এবং শীতকালে ৪০% হতে ৫৫% রাখা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আর্দ্রতা হ্রাস করণ ঃ বায়ুর তাপমাত্রার সাথে আর্দ্রতা যথেষ্ট সম্পর্ক যুক্ত। গ্রীষ্মকালে বায়ুতে আর্দ্রতা বেশি থাকে। তাই ঐ সময় বায়ুর আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা উভয়ই কমানোর প্রয়োজন হয়। বায়ুর আর্দ্রতার কমানোর পদ্ধতিকে ডি-ডিউমিডিফিকেশন এবং যার সাহায্যে আর্দ্রতা কমানো হয়, তাকে ডি- হিউমিডিফায়ার বলে।

সাধারণত দু'টি উপারে আর্দ্রতা কমানো হয়-

১। রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির মাধ্যমে 

৩। রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্যমে

ডি-হিউমিডিফায়ার দুই প্রকার - 

১। আবাসিক ডি-হিউমিডিফায়ার 

৩। বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিকারার

আবাসিক ডি-হিউমিডিফারার

কোন আবদ্ধকক্ষে বাতাসে অবস্থিত শুধু জলীয়বাষ্প বা আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ বা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হিমায়ন যন্ত্রকে ডি-হিউমিডিফায়ার বলা হয়। হিমায়ন যন্ত্রের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ছোট যন্ত্র। যা ঘরের মেঝেতে সুবিধা মত জায়গায় বসানো বা স্থাপন করা হয়। এয়ার কুলারের মত এতেও কিল্টার ব্যবহৃত হয়। যার জন্য কুলিং কয়েল ও কন্ডেলার ফিলে ময়লা জমতে পারে না।

এ ধরনের ইউনিটের ক্ষমতা সাধারণত ১/৮ হতে ১/৩ Hp পর্যন্ত হয়। ডি-হিউমিডিফায়ারের কার্য পদ্ধতি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ একটি আবাসিক রেফ্রিজারেটরের মতই। এতে কোন থার্মোস্ট্যাট ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।ডি-হিউমিডিফায়ার সাধারণত সিন্ড টাইপ বা হারমেটিক কম্প্রেসর-মোটর, এয়ার কুল্ড কন্ডেন্সার, ড্রায়ার, ক্যাপিলারি টিউব, কুলিং কয়েল এবং ফ্যানের সমন্বয়ে গঠিত। ডি- হিউমিডিফায়ারের সমস্ত অংশগুলো একটি আয়তাকার খাড়া কেসিং দিয়ে উপরের দিকে ও পার্শ্বের দুই দিকে ঢাকা থাকে এবং সামনের ও পেছনের দিকে বায়ু প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হয়। কুলিং কয়েলের সাথে একটি এয়ার ফিল্টার সংযুক্ত থাকে। এতে কুলিং কয়েল কন্ডেন্সার ধুলাবালি থেকে রক্ষা পায়। ইউনিট স্থানান্তর করার জন্য কেসিং-এর তলদেশ চারটি গোলাকার ছোট চাকা ব্যবহার করা হয়। কুলিং কয়েলের নিচে পানি জমার জন্য পাত্র থাকে যা থেকে মাঝে মাঝে পানি বের করে নিতে হয়।

ইউনিট চালু করলে কম্প্রেসর মোটর এবং ফ্যান মোটর উভয় এক সাথে চলতে থাকে, ফলে কুলিং কয়েল খুব ঠাণ্ডা হয়। কক্ষের বাতার ফ্যানের মাধ্যমে কুলিং কয়েল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় অধিক ঠাণ্ডা হয় এতে বাতাসে অবস্থিত জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়ে থাকে। সেই পানি বের করে দেয়া হয়। অপরদিকে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত বাতাস কক্ষে কন্ডেন্সারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও RH কমে যায়। এভাবে হিমায়ন প্রক্রিয়ায় ডি-হিউমিডিফায়ার কক্ষে বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

ডি-হিউমিডিফায়ারের ব্যবহার :

ডি-হিউমিডিফায়ার সাধারণত মূল্যবান ঔষধপত্র, রাসায়নিক পদার্থ, ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কম্পিউটার ল্যাব, সেনসিটিভ ইকুইপমেন্ট এবং সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি সংরক্ষণাগারে ব্যবহার করা হয়। তদুপরি মূল্যবান মেশিনারী বা যন্ত্রপাতি ও শুষ্ক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাসা বাড়ির আর্দ্রতা কমানোর জন্যও ব্যবহার করা যায় ।

 

বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিফায়ার

বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিফায়ার মিল কারখানা বা অফিস বিল্ডিং এর বাতাসে অবস্থিত জলীয়বাষ্প বা আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ বা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডি-হিউমিডিফায়ার বেশি ক্ষমতার হয়ে থাকে। প্লান্টটি একটি কক্ষে স্থপন করে সাপ্লাই এবং ফেরত ডাক্টের মাধ্যমে বিভিন্ন কক্ষে বাতাস সঞ্চালন করা হয়। চিত্র ২.৫ এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিফায়ারের বাতাস সঞ্চালন ব্যবস্থা দেখানো হয়েছে। ডাক্টের মধ্যে প্রবাহিত বাতাস কুলিং কয়েল বা ইভাপোরেটরের সংস্পর্শে আসলে তা ঠাণ্ডা হয়, ফলে বাতাসে অবস্থিত জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয় এবং পানির পাত্রে জমা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় বা নিয়ন্ত্রণ হয়। অপরদিকে পাত্রে জমাকৃত পানি ফ্লোট ভাল্ভ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ ও ড্রেন পাইপের মাধ্যমে অপসারণ হয় ।

 

বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিফায়ারের বিভিন্ন অংশগুলো নিম্নরূপ-

 

বাণিজ্যিক ডি-হিউমিডিফায়ার স্থাপন 

মেজারিং ইন্সট্রুমেন্ট এর সাহায্যে ডিহিউমিডিফায়ার পরীক্ষা

 

 

Content added By