এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

৪.৪ কমার্শিয়াল এ্যাপ্লায়েন্সেসে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশসমূহ চিহ্নিত করা।

এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ওয়াটার কুলার, ডিসপ্লে কেইস, বোতল টাইপ ওয়াটার কুলার, ডি- হিউমিডিফায়ারের গঠন সম্পর্কে জানতে পারব ।

 

Content added By

৪.৪.১ ওয়াটার কুলার 

যে হিমায়ন যন্ত্রের সাহায্যে পান করার পানিকে তৃপ্তিদায়ক তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে সরবরাহ করা হয় তাকে ওয়াটার কুলার বলে।

ওয়াটার কুলারের কাজ 

ওয়াটার কুলারের কাজ হচ্ছে পানিকে ঠান্ডা করে তৃপ্তিদায়ক করা । ওয়াটার কুলারের পানির তাপমাত্রা সাধারণত ৫°- ১০°C হয়ে থাকে।

ওয়াটার কুলারের ব্যবহার 

ওয়াটার কুলার সাধারণত নিচে উল্লেখিত স্থানে ব্যবহার করা হয়-

  • বাসাবাড়ি ওয়ার্ক শপ 
  • ছোট অফিস 
  • শিল্প প্রতিষ্ঠান 
  • বিমান বন্দর 
  • বণিজ্যিক ভবন 
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 
  • বড় জাহাজ 
  • বৃহৎ অফিস/আদালত 
  • বিপনী বিতান

ওয়াটার কুলারের প্রকারভেদ 

ওয়াটার কুলার সাধারণত দুই প্রকার -

১। বোতল টাইপ ওয়াটার কুলার । 

২। ট্যাপ টাইপ/ প্রেসার টাইপ ওয়াটার কুলার ।

বোতল টাইপ ওয়াটার কুলার

এই ধরনের ওয়াটার কুলার আকারে ছোট হয়। এই ওয়াটার কুলারে বোতলের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়। পানি ফুরিয়ে গেলে আবার বোতল ভর্তি করে ওয়াটার কুলারে পানি সরবরাহ করা হয়।

ট্যাপ টাইপ / প্রেসার টাইপ (Tap Type) ওয়াটার কুলার 

এই ওয়াটার কুলারের ক্ষমতা বোতল টাইপ ওয়াটার কুলারের তুলনায় বেশি হয়। এই কুলারে বোতলের মাধ্যমে পানি সরবরাহ না করে সরাসরি কোন ট্যাংক হতে পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।

গঠন প্রণালী

ওয়াটার কুলারের মধ্যকার সার্কিট অনুযায়ী মুলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়-

  • রেফ্রিজারেশন সার্কিট
  • বৈদ্যুতিক সার্কিট
  • ওয়াটার সার্কিট

কার্যপ্রণালী

ওয়াটার কুলারের কেবিনেটটি সাধারণত শীট মেটালের সাহায্যে তৈরি করা হয়। এই শীট মেটালের কেবিনেটের নিচের দিকে থাকে কন্ডেনসার, কম্প্রেসর প্রভৃতি। উপরের দিকে বসানো থাকে পানির ট্যাংক (Tank), এটা (Stain less Steel) দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে কোন প্রকার মরিচা না পড়ে। এই ট্যাংকটি এক বিশেষ ধরনের ২ ইঞ্চি পুরু কোমের সাহায্যে মোড়ানো থাকে। যাতে কোন প্রকার তাপ সঞ্চালিত হতে না পারে। এই প্রকার ওয়াটার কুপারের মধ্যে এয়ার কুন্ড কন্ডেন্সার ব্যবহার করা হয়। বোতল টাইপ ওয়াটার কুলারের ক্ষেত্রে একটি পানির বোতলকে পানির ট্যাংক এর উপর উপুর করে বসানো হয় আর ট্যাপ টাইপ ওয়াটার কুলারের ক্ষেত্রে সরবরাহের পানির উৎসের সাথে সংযোগ দেয়া হয়। পানি প্রবেশের সাথে অবশ্যই একটি হ্যান্ড শার্ট অফ ভালভ (Hand Shut off Valve) ব্যবহার করতে হয়।

ওয়াটার কুলারের ওয়াটার লাইন

ওয়াটার কুলার এর পানির সংযোগ ওয়াটার লাইন বা Supply Water Line থেকে হয়ে থাকে। যেখান থেকেই পানির সাপ্লাই দেয়া হোক না কেন প্রথমে হ্যান্ড পার্ট অফ ভাল অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে। এর পরে রবার/কপার/স্টিল পাইপ দিয়ে ওয়াটার কুলার এর স্টোরেজ ট্যাংকে নিতে হবে, তবে ট্যাংকের আগে অবশ্যই যেন একটি ফিল্টার বা স্ট্রেইনার যুক্ত থাকে যা পানিকে পরিশোধিত করে স্টোরেজে প্রেরণ করবে। স্টোরেজে পানির পরিমাণ একটি ফ্লোট ভাল্ব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এরপরে পাইপ দিয়ে ট্যাগে সংযুক্ত থাকবে। পানি ব্যবহার করার পর যে পানি নষ্ট হবে বা বাইরে পড়বে সে পানি একটি ড্রেন পাইপ দিয়ে সোজা ছেনে চলে যাবে।

সাবধানতা

সাপ্লাই পানির পাইপে যেন কোন প্যাচ না পড়ে ও ফিল্টার যেন জ্যাম / ময়লা যুক্ত না হয় সে জন্য সময় মতো পরিষ্কার রাখতে হবে। পানির পর্যাপ্ত সরবরাহের দিকে নজর দিতে হবে।

 

 

Content added By

৪.৪.২ ওয়াটার কুলারের যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক বর্তনীর যন্ত্রাংশ সমূহ

  • কম্প্রেসর
  • কন্ডেন্সার
  • কেপিলারী টিউব
  • স্ট্রেইনার 
  • ইভাপোরেটর
  • কভেলার ক্যান
  • ওয়াটার ট্যাংক
  • ওয়াটার লাইন
  • ড্রেইন লাইন।
  • ওয়াটার ফিল্টার
  • বেসিন
  • ওয়াটার ট্যাপ

ওয়াটার কুলারের রেফ্রিজারেশন সাইকেল দক্ষতার সাথে পরিচালনা করার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ নিয়ে গঠিত বর্তনীকে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট বলে।

ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রাংশসমূহ

  • সাপ্লাই প্লান্স
  • থার্মোস্ট্যাট সুইচ
  • ওভারলোড প্রোটেক্টর
  • ফ্যান মোটর
  • রিলে

ক্ষমতা 

কাজ করার হারকে ক্ষমতা বলে। অর্থাৎ একক সময় কতটুকু পরিমানের কাজ হয়েছে তা ক্ষমতা দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এর ক্ষমতা লিটার / ঘন্টা বা প্যালন / ঘন্টা দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

ওয়াটার কুলারের ক্ষমতা

ওয়াটার ঝুলারের ক্ষমতা বলিতে আমরা বুঝি একটি ওয়াটার কুলারে প্রতি ঘন্টায় কত লিটার বা গ্যালন পানি ঠান্ডা হয়। অর্থাৎ এক ঘন্টায় একটি ওয়াটার কুলার কতটুকু পরিমাণ পানি ঠান্ডা করতে পারে।

ক্ষমতার আনুসাঙ্গিক বিষয় 

একটি ওয়াটার কুপারের ক্ষমতা আবার নিচে উল্লেখিত বিষয়ের উপর নির্ভরশীল যথা-

  • প্রবেশকৃত পানির তাপমাত্রা 
  • কম্প্রেসরের ক্ষমতা 
  • কুলিং করেলের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস 
  • কন্ডেন্সার এর ভাগ অপসারণ ক্ষমতা
  • ক্যাপিলারির দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস
  • পানির ট্যাংক এর ইন্সুলেশন 
  • পানি ব্যবহারের পরিমাণ 
  • থার্মোষ্ট্যাট এর নিয়ন্ত্রণ

বর্ণনা 

ওয়াটার কুলারে বেশীর ভাগ ব্যবহৃত হয় সিল্ড টাইপ রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর। এই কম্প্রেসরের সাথে লাগানো থাকে একটি ওভার লোড প্রোটেক্টরএবং একটি রিলে। বর্তমানে কারেন্ট কয়েল রিলের চাইতে P.T.C রিলে বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ইউনিটে একটি বিশেষ যন্ত্রাংশ হলো কন্ডেন্সার ফ্যান । এই ফ্যান থার্মোষ্ট্যাট সুইচ এর পরবর্তী পয়েন্টের সাথে প্যারালালে সংযুক্ত থাকে অর্থাৎ কম্প্রেসর Off হলে Fan Off হবে।

 

 

Content added By

৪.৪.৩ ডিসপ্লে কেইস

ডিসপ্লে কেইস কথাটির অর্থ প্রদর্শন করা। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রদর্শন করার জন্য ডিসপ্লে কেইস ব্যবহার করে থাকে। এর সামনের দিকে একটি কাঁচ থাকে যাতে সাজানো জিনিসগুলো ক্রেতারা সহজে দেখতে পান। কাঁচের বাইরের দিকেই সাধারণত টিউব লাইট ফিট করা থাকে, যাতে টিউব লাইট হতে উত্তাপ ডিসপ্লে কেইসের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে না পারে। ডিসপ্লে কেইসের মধ্যে এক ধরনের রেফ্রিজারেন্টিং মেশিনারী ফিট করা থাকে। এর সাহায্যে ডিসপ্লে কেইসের ভেতরকার তাপমাত্রা ৪০°F হতে ৪৫°F এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ডিসপ্লে কেইসের মধ্যে যে সব তাক থাকে সেগুলো ইভাপোরেটর কয়েলের মাধ্যমে ঠান্ডা রাখা হয়। এই কয়েলগুলো প্রতিটি তাকের নীচে প্যারালালে আটকানো থাকে। ডিসপ্লে কেইসে রেফ্রিজাশেন এর সমস্ত যন্ত্রাংশ থাকে তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কন্ডেন্সিং ইউনিট কেসের নীচে ফিট করা থাকে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কন্ডেন্সিং ইউনিট সুবিধা জনক স্থানে বাইরে ফিট করা থাকে। যদি কন্ডেন্সিং ইউনিট বাইরের সুবিধা জনক স্থানে ফিট করা থাকে সেক্ষেত্রে কন্ডেন্সিং ইউনিট এবং কুলিং ইউনিট ইভাপোরেটর ইউনিটের কপার পাইপগুলো ভালভাবে ইন্সুলেশন করা থাকে। কোন কোন ডিসপ্লে কেইসের ভেতরের তাপমাত্রা নির্দেশ বা দেখার জন্য ডায়াল টাইপ থার্মোমিটার (Dial Type Thermometer) বসানো থাকে যাতে সহজেই ভেতরের তাপমাত্রা দেখা ও বোঝা যায়।

অর্থাৎ যে শীতল যন্ত্রের ভেতরকার সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য বাইরের থেকে দেখা যায় তাহাকে Display Case বলে।

ডিসপ্লে কেইস সার্ভিসিং করার সময় বিশেষ করে ইভাপোরেটর কন্ডেন্সার ও কুলিং ফ্যান ভাল ভাবে পরিষ্কার আছে কিনা তা দেখা দরকার। কন্ডেন্সারে ফ্যান মোটর খুলে শ্যাফটে (Shaft) গ্রীজ বা মবিল দিলে ভাল হয়। বিশেষ করে দেখা যায় ডিসপ্লে কেইসের ড্রেন লাইন নানা শাকসবজি বা মাছ মাংশ এর ছোট ছোট টুকরো দিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভেতরে ছোট ধরনের বন্যা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে ড্রেন লাইন ভাল করে খুলে আবার পরিষ্কার করে লাগানো উচিৎ। ডিসপ্লে কেইসে দ্রব্যাদি রাখতে হলে খেয়াল রাখতে হবে যে পেছনের তাক থেকে যেন নিরাপদ দূরত্ব বজায় থাকে।

 

 

Content added By

৪.৪.৪ ডি-হিউমিডিফায়ার

যে যন্ত্রের সাহায্যে কক্ষের মধ্যস্থিত বাতাসের আর্দ্রতা অর্থাৎ বাতাসের মধ্যস্থিত জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কে কমানো যায় তাকে ডি-হিউমিডিফায়ার বলে।

প্রধান যন্ত্রাংশ 

  • কম্প্রেসর 
  • কভেলার 
  • কভেলার ক্যান 
  • ইভাপোরেটর 
  • ট্রোরেজ বিন বা ট্রে 
  • বডি 

 

Content added By

৪.৪.৫ ইলেকট্রিক ডি-হিউমিডিফায়ার

ইলেকট্রিক ডি-হিউমিডিফায়ার এর কাজ হচ্ছে বাতাস হতে জলীয় কনা অপসারণ এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতা হতে ঘরকে রক্ষা করে। গরম কালে অতিরিক্ত আর্দ্রতা অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং ঘরে রক্ষিত দামী জিনিসপত্রে ছত্রাক জন্মায়, যন্ত্রপাতি ও ধাতব-দ্রবাদি মরিচা ধরে, ঘরের দরজা জানালা ড্রয়ার ইত্যাদির কাঠ ফুলে উঠে। 

গঠন

ডি-হিউমিডিফায়ার গৃহে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের নীতিতে চলে তাই এতে মোটর চালিত কম্প্রেসর, একটি কন্ডেন্সার ও একটি রিসিভার থাকে। ডি-হিউমিডিফায়ারের কুলিং কয়েল রেফ্রিজারেটরের স্থান দখল করে। রেফ্রিজারেটরের মতই ডি-হিউমিডিফায়ারে রেফ্রিজারেন্ট (সাধারণত ফ্রেয়ন) আবর্তিত হয়। রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহ কে একটি ক্যাপিলারী টিউব সার্কিটের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মোটর চালিত ফ্যান কর্তৃক কয়েলের ভেতর জলীয় কণা মিশ্রিত বাতাস টেনে নেয়।

অপারেশন 

ইলেকট্রিক ডি-হিউমিডিফায়ার রেফ্রিজারেটরের নীতিতে চলে। একটি কুলিং কয়েলের ভেতর দিয়ে বায়ুকে অতিক্রম করিয়ে বাতাস থেকে জলীয় কণা অপসারণ করে, ফলে বাতাসের জলীয় কণা জমা হয়। বাতাস হতে অপসারিত পানির পরিমাণ কম বেশি হয়। যা আর্দ্রতার পরিমাণ এবং যে এলাকা আর্দ্রতা মুক্ত করতে হবে তার আয়তনের উপর নির্ভর করে। ডি-হিউমিডিফায়ার যখন প্রথম অন করা হয় তখন বাতাস থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয় কণা অপসারিত করে। জলীয় কণা অপসারণের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া নির্দেশ করে যে ডি- হিউমিডিফায়ার স্বাভাবিক ভাবে কাজ করছে এবং কক্ষের আপেক্ষিক আর্দ্রতা একটি নিরাপদ মানে কমিয়ে দিচ্ছে।

পরিচর্যা 

ডি-হিউমিডিফায়ার সাধারণত ৫৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর নিচে সন্তোষজনক ভাবে কাজ করে না এই তাপমাত্রায় আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে যুক্তি সঙ্গত লেভেলে রাখার জন্য কুলিং কয়েল ফ্রিজিং তাপমাত্রার নিচে চালানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যদিও কুলিং কয়েলে বরফ সহ ডি-হিউমিডিফায়ারকে চালানো যেতে পারে, ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য কয়েলকে এক ঘন্টা অন্তর অন্তর ডি-ফ্রষ্টিং (জমানো বরফ পরিষ্কার করা) করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সাধারণত ৬৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর নীচে ডি-হিউমিডিফায়ারকে চালানো অনুমোদন করা হয় না।

ব্যবহার ক্ষেত্র 

ডি-হিউমিডিফায়ার সাধারণত ব্যবহৃত হয় টেক্সটাইল মিল, ফেব্রিকেশন মিল, কেমিক্যাল ইত্যাদি সংরক্ষণাগার গবেষনাগার, ঔষধ শিল্প ইত্যাদিতে।

Mechanical Diagram of Dehumidifier

 

Electrical Diagram of Dehumidifier

 

 

Content added By