এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

যেসব রোগের সংক্রমণে বাগদা চিংড়ির চাষ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয় সেগুলো হলো ভাইরাল, ব্যকটেরিয়াল ও ফাংগাল সংক্রমণ। রোগ সংক্রমণের প্রধান কারণগুলো হলো-

  • নিয়মিত পানি পরিবর্তন না করা 
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেনের ঘাটতি
  • হ্যাচারির যন্ত্রপাতি অপরিষ্কার রাখা
  • পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করা
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারের সরবরাহ নিশ্চিত না করা।

উপরোক্ত কারণগুলোর সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করলে হ্যাচারিতে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকে। হ্যাচারিতে যেসকল রোগ দেখা দেয় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-

Content added By

চিংড়ি চাষের সবচেয়ে ক্ষতিকর জীবাণুগুলোর মধ্যে আলোকদায়ক জীবাণু একটি। চিংড়ির বহিত্বক বা অস্ত্রে অথবা অন্যান্য অঙ্গে হয়ে থাকে। চিংড়ি বেশি মাত্রায় এ রোগে আক্রান্ত হলে ধীরে ধীরে মৃত্যু মুখে পতিত হতে পারে। এসব ব্যাকটেরিয়া প্রথমে যকৃত ও অগ্নাশয় গ্রন্থিকে আক্রান্ত করে এবং পরিশেষে দেহের বিভিন্ন স্থানে গর্ত তৈরির মাধ্যমে আক্রান্ত করে। Vibrio harveyi, V. splendidus প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়া এ রোগের জন্য দায়ী।

লক্ষণ

১) যকৃত ও অগ্নাশয় গ্রন্থি বাদামী বর্ণ ধারণ করে।

২) অগ্নাশয় গ্রন্থি ছোট হয়ে যায়।

৩) দেহে গর্ত দেখা যায় এবং পরিশেষে উপাঙ্গের উপরের অগ্রভাগ পচন ধরে।
 

প্রতিকার

১) Quinoline antibiotic ব্যবহার করা হয়।

২) মাইক্রোএলজি, ব্যাকটেরিওফাজ ও প্রোবায়োটিক এর ব্যবহার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে পারে।

৩) প্রতিদিন ৮০% পানি পরিবর্তন করে নতুন পানি যোগ করতে হবে।

Content added By

হ্যাচারিতে ভাইরাসের আক্রমণ বেশি হয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পোনা মারা যায়। সংক্রমণ রোধে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। বাগদা চিংড়ির ভাইরাসজনিত রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিম্নরূপ: 

ব্যাকুলো (Baculovirus penaei) ভাইরাস

এ ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে রিপোর্ট করা এবং ভালভাবে বর্ণিত একটি ভাইরাস। এটি তাইওয়ানে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এটি চিংড়িকে প্রথমে প্রোটোজুইয়্যা ধাপে এবং পরে মাইসিস ধাপে আক্রান্ত করে। বেশিরভাগ সময় ৯০% পোনা মারা যায়।

লক্ষণ

১) হেপাটোপ্যানক্রিয়াস এবং মিডগাট এপিথেলিয়াল কোষে একাধিক গোলাকার ছোট সাদা পাইপের মত দেখা যায়।

২) চিংড়ি খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দেয়।
 

প্রতিকার

১) এ রোগের কোনো নির্দিষ্ট বা সঠিক চিকিৎসা নেই। তবে আক্রান্ত পোনাকে কিমা করা ওয়েস্টার (oyester) এর মাংস খাওয়ানো হয়।

২) পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়ু সঞ্চালক ব্যবহার করে তাদের পরিচর্যা করা হয়।

৩) হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে।

৪) সংক্রমণ রোধ করতে ডিম এবং নগ্নিকে ৩ ঘন্টা যাবৎ পরিষ্কার লবণাক্ত পানিতে ধৌত করে তারপর ট্যাংকে স্থানান্তর করতে হবে।

Content added By

এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ যা প্রায় সব বাগদা চিংড়ির হ্যাচারিতে আক্রমণ ঘটায়। সংক্রামক জীবাণু হলো Phycomycetus fungi, Lagenidium sp., Sirolpidium sp., Phythium; Leptolegonia mania প্রভৃতি।

লক্ষণ
১) আকস্মিক মৃত্যু ঘটে এবং মৃত্যুর হার ২০-১০০%।

২) লার্ভার দেহে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।

প্রতিকার

১) লার্ভার ট্যাংক জীবাণুমুক্তকরণ, পানি পরিস্রাবণ, ক্লোরিনেশন করা উচিত।

২) বিভিন্ন ধরনের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যায়। যেমন: ০২ পিপিএম (ইফান (Treflan)। 

৩) ১-১০ পিপিএম ফরমালিন ব্যবহার করা যেতে পারে। 

৪)  NaCl, KCI, MgCl এর মিশ্রণে ব্যবহৃত ঔষধ Legenidium এর আক্রমণকে হ্রাস করে।

৫) ২০ পিপিএম পরিষ্কারক সাবান গুড়া (Detergent) দিয়ে ডিম জীবাণুমুক্তকরণ করা যেতে পারে।

Content added By

ক্লোরামফেনিকল, সারাফ্লক্সাসিন, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ও এনরোফ্লক্সাসিন প্রায়শই বাগদা চিংড়ির এন্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে অধিক পরিমাণে ব্যবহারে প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার না করাই উত্তম এতে লার্ভার ক্ষতি হয়। প্রতিষেধক ঔষধ এবং এদের প্রয়োগ মাত্রা নিম্নরুপ:

ঔষধ

মাত্রা

অক্সিটেট্রাসাইক্লিন

অক্সোলিনিক এসিড

ফিউরাসল (Furasol )

জেনটিন ভায়োলেট (Gentin violet)

ফরমালিন (Formalin )

১০-২০ পিপিএম

০.১-০.৫ পিপিএম

১.০-২.৫ পিপিএম

০.১-০.২ পিপিএম

২৫-৫০ পিপিএম

 

Content added By