On This Page
এসএসসি(ভোকেশনাল) - উইভিং-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

১. পরীক্ষার নাম : রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সাথে পরিচিত্তি।

সংজ্ঞা রক্ষণাবেক্ষণ
কোনো যন্ত্র বা মেশিনপত্রকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্ররোজনীর অংশে তেল, গ্রিজ ইত্যাদি প্রয়োগসহ সার্বিক যত্ন নেওয়া অর্থাৎ শিল্পকারখানা বা প্লান্টের মেশিনপত্র, সরঞ্জামাদি, কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্যের প্রস্তুতকারকের নির্দেশ মোতাবেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ভৈল প্ররোপসহ সার্বিক যত্ন দেওয়ার যথোপযুক্ত প্রক্রিরাই হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণ।

রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
মেশিনের পরিচর্যা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো।
ক) হ্যান্ড টুলস - 
* হ্যামার 
* ফাইল 
* চিলে
* বেঞ্চ
* ডিভাইডার 
* অ্যাডজাস্টেবল রেঞ্চ 
* পাইপ রেঞ্চ 
* প্যানার 
* বক্স রেঞ্চ 
* টর্ক রেফ

২. পরীক্ষার নাম : নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট যন্ত্রের পরিচিতি।

সংজ্ঞা
ক) মেরামত : কোনো মেশিন/যন্ত্রপাতি কোনো কারণে যদি পূর্বের ন্যায় কাজ করতে অক্ষম হয়, তবে তাকে পূর্বের ন্যায় কাজ করা সক্ষম করে তোলার জন্য যে কাজটি করা হয় তাই মেরামত । 
খ) পরিষ্কারকরণ উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত মেশিন/যন্ত্রপাতি ইত্যাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে ধুলা, ময়লা, আবর্জনা দূর করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে পরিষ্কারকরণ। 
গ) অয়েলিং ও গ্রিজিং : ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে সচল ও ভালো রাখা, ঘর্ষণজনিত ক্ষয় হ্রাস ও বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অয়েল/লুব্রিক্যান্ট ও গ্রিজ প্রদান করার পদ্ধতিকে অয়েলিং ও গ্রিজিং বলে।

ওয়েলিং, গ্রিজিং-
এ যন্ত্রপাতির তালিকা : 
* অয়েল পাম্প 
* গ্রিজ গান 
* অয়েল ক্যান্ট
* হ্যান্ড পাম্প। 

সতর্কতা 
* স্প্যানার, এলকি ইত্যাদি নাম্বার অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। নির্দিষ্ট নাম্বারের জন্য নির্দিষ্ট টুলস / সরঞ্জাম রয়েছে। 
* স্টিলের হ্যামার পরিহার করে কাঠের অথবা প্লাস্টিকের হ্যামার ব্যবহার করা উচিত। 
* সাবধানতার সঙ্গে সরঞ্জাম নাড়াচাড়া করা উচিত। 

মন্তব্য/উপসংহার

৩. পরীক্ষার নাম : ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পর পরিষ্কারকরণ। 

সংজ্ঞা :
ক) পরিষ্কারকরণ : উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত মেশিনসমূহ ভালো রাখার তাগিদে ও এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়াকেই পরিষ্কারকরণ বলা হয়।

ব্যবহারের পর ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ 
রক্ষণাবেক্ষণ কাজের শেষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহ এখানে সেখানে না রেখে প্রতিটি টুলস বা যন্ত্রকে যত্ন সহকারে পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী যাতে সহজেই উক্ত টুলস বা যন্ত্রপাতি হাতের কাছে পাওয়া যায়।

সতর্কতা 
* যে কোনো যন্ত্রপাতি বা টুলস ব্যবহারের পর এখানে সেখানে ফেলে রাখা উচিত নয় । 
* টুলস বা যন্ত্রপাতি পরিষ্কার না করলে যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
* সাবধানতার সঙ্গে প্রতিটি টুলস নির্দিষ্ট স্থানে যত্ন সহকারে রেখে দেওয়া উচিত। 

মন্তব্য

৪. পরীক্ষার নাম : রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সতর্কতা 

সংজ্ঞা
ক) দুর্ঘটনা : যে ঘটনাপ্রবাহ দ্বারা কর্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ও ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয় তাকে দুর্ঘটনা বলে। দুর্ঘটনা হলো একটি অপরিকল্পিত, অনিয়ন্ত্রিত, অপ্রত্যাশিত হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা, যার দ্বারা জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। 

(খ) নিরাপত্তা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান চলমান সকল কাজকর্ম যাতে কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত বা অবাঞ্ছিত ঘটনার উদ্ভব না হতে পারে তার জন্য পরিকল্পিতভাবে কর্মী, যন্ত্রপাতি, মেশিন ও কর্মশালায় বিভিন্ন স্বীকৃত বিধিব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং এর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কর্মস্থলে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিহত করাকে নিরাপত্তা বলে ।

নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা 
* প্রথমেই কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত মানের বা উপযুক্ত মাপের যন্ত্রপাতি নির্বাচন করতে হবে। 
* যেখানে ব্যবহার করবে তার সম্বন্ধে ভালো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 
* আঘাত করা বা যন্ত্র দ্বারা চাপ দেওয়ার পূর্বে নির্দিষ্ট করতে হবে যে কতটুকু আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হবে। 
* ঠিক কোনো স্থানে যন্ত্রপাতি বা টুলস ফিট করবে তা নিশ্চিত করতে হবে। 
* সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা সহজ হবে। 

মন্তব্য :

৫. পরীক্ষার নাম : কটন ফাইবারের পরিচিতি ও শনাক্তকরণ। 

সংজ্ঞা
ক) শনাক্তকরণ : বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ফাইবার চেনার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করে ফাইবার এর গুণাগুণ যাচাই করে ফাইবার এর নামকরণ নির্দিষ্ট করা হয় তাকে বলা হয় শনাক্তকরণ।

কটন ফাইবারের প্রাথমিক পরিচিতি 
কটন ফাইবার প্রাকৃতিক ফাইবারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ফাইবার। ব্যবহারের দিক থেকেও সবচেয়ে জনপ্রিয়। পানি শোষণ ক্ষমতা বেশি বলে এই ফাইবারের তৈরি পোশাক খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। এ ফাইবার কোমল ও নমনীয় গুণের অধিকারী। ইহা দ্বারা আকর্ষণীয় ও আরামদায়ক পোশাক তৈরি করা সম্ভব। কটন ফাইবারের রং সাদা বা সাদার কাছাকাছি। ফাইবারের দৈর্ঘ্য ১০ মিমি থেকে ৬৫ মিমি পর্যন্ত হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ
ক) কাউন্টিং গ্লাস 
খ) অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
গ) মোমবাতি ও ম্যাচ
ঘ) সালফিউরিক অ্যাসিড
ঙ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড 
চ) ফেনল
ছ) টেস্ট টিউব
জ) পিপেট

শনাক্তকরণের ধাপ
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আনুবীক্ষণিক পরীক্ষা।

সতর্কতা
• নমুনা সংগ্রহ করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। নমুনা সঠিক না হলে পরীক্ষার ফলাফলও সঠিক হবে না। 
• জ্যাসিড জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে অতিমাত্রায় সতর্ক থাকা উচিত। নতুবা যে কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মন্তব্য/উপসংহার

৬. পরীক্ষার নাম জুট ফাইবারের পরিচিতি ও শনাক্তকরণ। 

ফুট ফাইবারের পরিচিত্তি
ফুট সেলুলোজিক ফাইবার। তবে তুলার তুলনায় ছুটে সেলুলোজের পরিমাণ কম। জুট ফাইবার কিছুটা শক্ত ও খসখসে। ফুট ফাইবার ছালজাতীয় ফাইবার ফুট ও জুটের তৈরি দ্রব্য সহজেই পচনশীল मय পাঁচ থেকে সাত মাসের মধ্যেই ইহা মাটির সাথে মিশে যায়। ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। এ জন্য ফুটকে পরিবেশবন্ধু বলা হয়। জুট দেখতে সোনালি ও সাদা। কম স্থিতিস্থাপকসম্পন্ন। সহজেই রং করা যায়। কাগজ তৈরির মত হিসেবে সবুজ পাট ব্যবহার করা হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ 
ক) অণুবীক্ষণ যন্ত্র। 
খ) মোমবাতি ও ম্যাচ
গ) সালফিউরিক অ্যাসিড
ঘ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
ঙ) টেস্ট টিউব
চ) পিপেট

শনাক্তকরণের ধাপ 
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা। 

ক) ভৌত পরীক্ষা : 
ভৌত পরীক্ষায় কোনো সगाরে প্রয়োজन না। আর এই ভৌত পরীক্ষা নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায়। 
(১) স্পর্শ পরীক্ষা 
(২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা।

১) স্পর্শ পরীক্ষা : 
স্পর্শ পরীক্ষা সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। জুট- গরম, স্মিতিস্থাপক ও কর্কশ। 

২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা : 
বিভিন্ন টেক্সটাইল ফাইবারের গঠনগত উপাদানের কারণে আগুনে পোড়ার পর ফাইবারের আচরণও ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। ফলে উক্ত আচরণ শনাক্ত করে ফাইবারকে চেনা যায়।

জুট-
আগুনে সহজেই পুড়ে যায়। 
হলুদ শিখাসহ তাড়াতাড়ি পুড়ে যায়। 
হালকা ধূসর ছাই পাওয়া যায় ।

খ) রাসায়নিক পরীক্ষা : 
সাধারণত দুইটি রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে ফাইবার শনাক্তকরণ করা হয়। 
১) স্টোইন টেস্ট 
২) সলভেন্ট টেস্ট 

গ) অণুবীক্ষণিক পরীক্ষা : 
অণুবীক্ষণের নিচে জুট আঁশ ধরে নিম্নলিখিত অবস্থা দৃষ্টিগোচর হয়। 

ফলাফল : 

মন্তব্য :

৭. পরীক্ষার নাম : সিল্ক ফাইবারের পরিচিতি ও শনাক্ত করণ। 

সিল্ক ফাইবারের পরিচিতি
সিল্ক প্রানিজ ফাইবার এবং একমাত্র প্রাকৃতিক ফিলামেন্ট ফাইবার। সিল্ক ফাইবার তার আকর্ষণীয় সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের জন্য কুইন অব ফাইবার বলে পরিচিত। সিল্ক ফাইবারের স্থিতিস্থাপকতা গুণ অনেক বেশি। ইহা বেশ নমনীয়, আর্দ্রতা ধারণ ক্ষমতাও বেশ ভালো। ইহা শতকরা ১১ ভাগ আর্দ্রতা ধারণ করতে পারে। সিল্ক ফাইবারের তৈরি বস্ত্র খুব আরামদায়ক। গ্রীষ্মকালীন পোশাক হিসেবে সিল্কের বস্ত্র ব্যবহৃত হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ

ক) অণুবীক্ষণ যন্ত্র। 
খ) মোমবাতি ও ম্যাচ
গ) সালফিউরিক অ্যাসিড 
ঘ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
ঙ) ফেনল 
চ) সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড
ছ) টেস্ট টিউব
জ) পিপেট ইত্যাদি

শনাক্তকরণের ধাপ 
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা।

ক) ভৌত পরীক্ষা :
১) স্পর্শ পরীক্ষা : গরম, মসৃণ ও স্থিতিস্থাপক সিঙ্ক ফাইবার 
২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা: ধীরে ধীরে পুড়ে, আগুন থেকে সরালে জ্বলে না। পালক বা চুল পোড়ার হালকা গছ । কালো গুটি বা দানা আকারের ছাই হয়। সিল্ক ফাইবার 
১) স্পর্শ পরীক্ষা : স্পর্শ পরীক্ষা সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। 
২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা: বিভিন্ন টেক্সটাইল ফাইবারের পঠনগত উপাদানের কারণে আগুনে পোড়ার পর ফাইবারের আচরণও ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। ফলে উক্ত আচরণ শনাক্ত করে ফাইবারকে চেনা যায়। 

খ) রাসায়নিক পরীক্ষা : 
সলভেন্ট টেস্ট: 
• গাছ ও উষ্ণ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের (HCI) সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না। 
• ঠাণ্ডা ও ঘন H2SO4 এর সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না। 
• ফেনল এর সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না উল বা সিল্ক হতে পারে। 
• ৫০% NaOH এর দ্রবণে উত্তপ্ত করলে দ্রবীভূত হয় সিল্ক ফাইবার হতে পারে। 
• ঘন ঠান্ডা NaOH অ্যাসিডে বিক্রিয়া করলে সিল্ক ফাইবার দ্রবীভূত হয়। 

ফলাফল: সিল্ক ফাইবার নিশ্চিত।

মন্তব্য।

৮. পরীক্ষার নাম : বিভিন্ন প্রকার সুতার কাউন্ট নির্ণয় ।

সংজ্ঞা
ক)কাউন্ট: কাউন্ট হচ্ছে এমন একটি সংখ্যা যা একক দৈর্ঘ্যের স্তর অথবা একক স্তরের দৈর্ঘ্যকে বোঝায় । 

প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct system) : 
প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে সুতার একক দৈর্ঘ্যের ভরকে কাউন্ট বলে। এ পদ্ধতিতে ফুট, উল, সিল্ক ইত্যাদি সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায়। নিম্নের সূত্রের সাহায্যে প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায় ।

মন্তব্য:

৯। পরীক্ষার নাম ব্যালেলের সাহায্যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় । 

সুতার কাউন্ট নির্ণয়ের জন্য ব্যালেন্স :
সুতার কাউন্ট নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যালেন্স হয়েছে। তবে সরাসরি নির্ণয়ের জন্য খুব অল্প সংখ্যক ব্যালেন্স রয়েছে। যেমন- মোরেলস ব্যালেন্স, কোয়াডেন্ট ব্যালেন্স, বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স ইত্যাদি।

এ ধরনের ব্যালেন্সে একটি বিম ব্যালেন্স থাকে যার পিছনে এমন একটি আলাদা রড থাকে যার আকৃতি এ ধরনের যে এতে ৫টি দিক রয়েছে। এতে বিভিন্ন কাউন্ট রেঞ্জের জন্য কাউন্ট ফেল খোদাই করে দাগাঙ্কিত থাকে। এ ক্ষেলের দুটি প্যান থাকে যার বাম দিকের প্যানে চিহ্নিত ওজন দেওয়া হয় ও বিয়ে নির্দিষ্ট রাইডার রাখা হয় এবং ডান দিকের প্যানে সুতার লি রাখা হয় ।

ধরা যাক, একটি কটন সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে এবং উক্ত সুতার কাউন্ট আনুমানিক ৩২ বিবেচনা করা হয়। তাহলে ছেলের চিহ্নিত দিক সামনে ঘুরিয়ে আনতে হবে এবং নাম প্যানে নির্দিষ্ঠ ওজন স্থাপন করে বিমে রাইডার রাখতে হবে। এ অবস্থায় বিষকে ব্যালেন্সড করার জন্য রাইডারকে বিমের উপর সামনে-পিছনে সরিয়ে অ্যাডজাস্ট করা হয়। এ অবস্থায় সরাসরি স্কেল হতে সুতার কাউন্টের পাঠ দেওয়া হয়। এ ধরনের কয়েকটি পাঠ নিয়ে সুতার গড় কাউন্ট বের করা হয় ।

কোয়াডেন্ট ব্যালেন্স: 
কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স এক-চতুর্থাংশ। এ যন্ত্রটিতে যে ব্যালেন্স ব্যবহৃত হয় তা বৃত্তের এক-চতুর্থাংশের ন্যায় বলে এর নাম কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স। একটি ধাতুর বা কাঠের নির্মিত পায়া এর উপর আটকানো দণ্ড-এর উপর স্কেল বসানো থাকে। তাতে সুতা ঝুলানোর জন্য একটি হুক এবং কাউন্ট নির্দেশের জন্য একটি পয়েন্টার স্কেলের সাথে বিন্দুতে এমনভাবে আটকানো থাকে যে, হুকের উপর সুতা ঝুলালে তা হুকের সাথে সাথে স্কেলের দিকে সরে যায়।

যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে তার নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের সুতা হুকে স্থাপন করলেই নির্দেশকটি স্কেলের মধ্যে একটি বিন্দু নির্দেশ করবে যা সরাসরি উক্ত সুতার কাউন্ট নির্দেশ করে। এভাবে কয়েকটি পাঠ নিয়ে গড় করলেই সুতার কাউন্ট পাওয়া যায়।

এ যন্ত্রটিতে সাধারণত তিনটি স্কেল থাকে যার সাহায্যে ৪ গজ স্লাইভার নমুনা ঝুলিয়ে এর হ্যাংক বের করা যায় যা সাধারণত ০.১ থেকে ১০ হ্যাং পর্যন্ত পাঠ দান করে। দ্বিতীয়টি ২০ গজ রেডিং নমুনা ঝুলিয়ে এর হ্যাংক বের করা যায় যা ০.১ থেকে ৬.০ পর্যন্ত পাঠ দেয়। তৃতীয় স্কেলটি সুতার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে ৮৪০ গজ সুতা ঝুলিয়ে এর কাউন্ট নির্ণয় করা যায়। এ স্কেলে সাধারণত ৪' কাউন্ট থেকে ৮০' কাউন্ট পর্যন্ত সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায়।

বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স
 সুতার ছোট ছোট টুকরা বা কাপড় হতে সংগৃহীত সুতার কাউন্ট বের করার জন্য এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়।।

পরীক্ষার শুরুতে নির্দেশকটি স্কেলের গায়ে ডেটাম লাইনের সাথে লেভেল করা হয়। এরপর যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে সে ধরনের সুতার একটি আদর্শ ওজন বিমের খাঁজে খাঁজে বসিয়ে দেওয়া হয়। এতে নির্দেশকটি ডেটাম লাইনের নিচে পড়ে যায়।

যে ধরনের সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে তা টেমপ্লেটের চিহ্নিত দিক হতে কয়েক টুকরো মেপে কেটে হুকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে যন্ত্রটির নির্দেশককে ডেটাম লাইনে আনতে যতগুলো সুতার প্রয়োজন পড়ে পরীক্ষিত সুতার কাউন্ট তত।

  • সতর্কতা 
    সুতার দৈর্ঘ্য ও ওজন নিতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। 
  • ব্যালেন্স সঠিকভাবে স্থাপন করতে হবে। 
  • মনোযোগের সঙ্গে পরীক্ষা করতে হবে।

১০। পরীক্ষার নাম : টুইস্ট টেস্টারের সাহায্যে সুতা টিপিআই (টুইস্ট/ইঞ্চি) নির্ণয়করণ।

সংজ্ঞা
ক) টুইস্ট : সুতা তৈরির উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কতগুলো ফাইবারকে একসাথে তাদের অগ্রভাগে যে মোচড় দেওয়া হয় তাকেই পাঁক পা টুইস্ট বলে।
ফাইবারগুলো সুতার অক্ষের চারপাশে ঘুরে ঘুরে অবস্থান নেয় বলে সুতা পাক বা টুইস্ট হয়। সুতার পাঁক ডান দিকে অথবা বাম দিকে হতে পারে। ডানদিকের পাক অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘোরে সে দিকের টুইস্টকে জেড টুইস্ট ও বামদিকে পাক অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে টুইস্টকে এস টুইস্ট বলে ।

টুইস্ট পরিমাপের যন্ত্র 
ক) অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার
সুতার পাক নির্ণয় করার জন্য অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। এই যন্ত্রের সাহায্যে সিঙ্গেল ও প্লাই সুতার পাক নির্ণয় করা যায়।

পরীক্ষণীয় দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্রথমে চলনশীল বাঁটকে নির্ধারিত স্থানে আটকাতে হবে। তারপর পরীক্ষণীয় সুতাকে ক্লাম্পে আটকানো হয়। সুতার পাক যে দিকে ঘুরবে ক্লাম্পের হাতল ও হুইলের সাহায্যে তার উল্টা দিকে ঘুরানো হয়। এই পদ্ধতি প্লাই সুতার ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি এবং সিঙ্গেল সুতার ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ১ ইঞ্চি হয়। সুতার সম্পূর্ণ পাক খুলেছে কি না তা দেখার জন্য পরীক্ষণীয় সুতার মধ্য দিয়ে একটি নিডেল টেনে দিতে হয় পাক খোলার জন্য। ক্লাম্প কতবার ঘুরবে তা ডায়ালের উপর পয়েন্টারের অবস্থান থেকে জানা যায় এবং সুতার পরীক্ষণীয় দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে ইঞ্চি প্রতি পাক সংখ্যা পাওয়া যায়। এভাবে ১০ থেকে ২০টি নমুনা পরীক্ষা করে পাক বের করা সম্ভব।

খ) টেনশন টুইস্ট টেস্টার 
এ পদ্ধতিতে সুতার পাক খোলা এবং পুনরায় পাক দেওয়া পদ্ধতিও বলা হয়। এ ধরনের টেনশন টাইপ টুইস্ট টেস্টার পাক সংকোচন নীতিতে কাজ করে। এ জাতীয় যন্ত্র কটন বা ফিলামেন্ট সুতার পাক নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যখন কোনো ফাইবার গুচ্ছকে পাক প্রদান করা হয় তখন তা দৈর্ঘ্যে সংকুচিত হয়ে পড়ে। ডান পাকের সুতাকে বাম দিকে ঘুরালে পাক খুলে যাবে এবং দৈর্ঘ্যে প্রসারিত হবে, যা পাক প্রদানের জন্য যতটুকু সংকুচিত হয়েছিল তার সমান। এখন যদি সুতাটিকে বাম দিকে ঘুরানো অব্যাহত রাখা হয় তবে সুতাটি পূর্বের তুলনায় বিপরীত দিকে পাক নিবে এবং পুনরার সংকুচিত হয়ে পড়বে। যতটি পাক খোলার পরে এটি প্রসারিত হয়েছিল ঠিক ততটি পাক প্রদান করলে পূর্বের মূল দৈর্ঘ্য পাওয়া যাবে। শুরু হতে শেষ পর্যন্ত যতবার ঘুরানোর ফলে সুতার মূল দৈর্ঘ্য পাওয়া যাবে সে সংখ্যাকে পরীক্ষিত দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি) এবং ২ দ্বারা ভাগ করলে প্রতি ইঞ্চি পাক সংখ্যা পাওয়া যাবে।

সতর্কতা: 
• সুতার প্রাপ্ত মেশিনে ভালোভাবে আটকাতে হবে। 
• সুতার পাক নিউট্রাল হয়ে থাকে আবার উল্টো দিকে থাকে যাতে পাক না হয়ে যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে। 

মন্তব্য :

১১। পরীক্ষার নাম: হাতে চরকা ও চরকি প্রস্তুত করা।

ভূমিকা
হ্যান্ডলুম অধ্যুষিত অঞ্চলে সাধারণত কাঠ, পেরেক ও স্পিডেলের জন্য লোহার রড দ্বারা কাঠমিস্ত্রিরা চরকা ও চরকি প্রস্তুত করে থাকেন। হাতের তৈরি চরকা ও চরকি বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উপকরণ 
ক) কাঠ 
খ) লোহার রড 
গ) পেরেক 
ঘ) সাইকেল/রিকশার অব্যবহৃত চাকা 
ঙ) কাঠমিস্ত্রির টুলস এবং সরঞ্জামসমূহ 
চ) বাঁশ

প্রস্তুত প্রণালী
চিত্রানুযায়ী চরকা ও চরকির যাবতীয় অংশ কাঠ দ্বারা প্রস্তুত করে জোড়া লাগানো হয়। শিক্ষার্থীরা বারবার অনুশীলন করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে চরকা-চরকি প্রস্তুত করতে পারে ।

সতর্কতা 
সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে কাঠের জোড়া লাগানো সঠিক হয়।

মন্তব্য/উপসংহার

১২। পরীক্ষার নাম : আম্বর চরকার ব্যবহার।

ভূমিকা 
আম্বর চরকা সাধারণ চরকার অনুরূপ তবে আম্বর চরকা তুলনামূলক বড়। চরকার এক প্রান্তে ঝুলন মশ স্পিন্ডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দড়ি পাকানো হয়।

পদ্ধতি 
সাধারণত কয়ের (Coir) ফাইবার দড়ি (কাতা) পাকানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কয়ের ফাইবার অর্থাৎ নারিকেলের ছোবড়া দ্বারা স্পিন্ডেলের সাথে ঝুলিয়ে, স্পিন্ডেলকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছোবড়ার দড়ি (কাতা) পাকানো হয় ।

ব্যবহার 
কয়ের ফাইবার (নারিকেলের ছোবড়া) দ্বারা দড়ি (কাতা) পাকানো হয়, যা গ্রামাঞ্চলে প্রচুর কাজে ব্যবহৃত হয়। পাকানো দড়ি দ্বারা পাপোস তৈরি করা হয়।

১৩। পরীক্ষার নাম : সুতা রিলিং করা সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন ।

সংজ্ঞা
ক) রিলিং : 
নির্দিষ্ট পরিধির অর্থাৎ জানা পরিধির ঘূর্ণায়মান সুইফট -এর চারদিকে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সুতা জড়ানোর প্রক্রিয়াকে রিলিং বলে।

রিলিং -এর পদ্ধতি : 
সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে রিলিং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। 
ক) সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং (Seven Lea or straight reeling) 
খ) ক্রস রিলিং (Cross reeling)। 
গ) ডায়মন্ড অথবা স্কেইন রিলিং (Diamond or skin reeling)

ক) সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং (Seven Lea or straight reeling)
এ পদ্ধতিতে প্রতিটি ১২০ গজের ৭টি সেট দ্বারা এক সঙ্গে লি করা হয় বলে এ ধরনের রিলিং মেশিনকে সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং বলা হয়। এখানে প্রতিটি লি সুইফট -এর ওপর সমদূরত্বে জড়াতে হয়, যার জন্য গাইড ওয়ার প্রতিটি লি থেকে একটু একটু দূরত্ব রেখে মুভ করে থাকে। প্রতি ৮০ বার ঘূর্ণনের পর গাইড ওয়ার -এর মুভমেন্ট স্বয়ংক্রিয় বন্ধ হয়ে যায়। এ লি গুলোকে আলাদা আলাদা রাখার জন্য একটির পর অন্যটি রঙিন সুতা দ্বারা বাঁধা হয় যাতে সহজেই শনাক্ত, বিক্রি ও রপ্তানি করা যায়।

খ) ক্রস রিলিং (Cross Reeling)। 
এ পদ্ধতিতে র্যাক আলাদা রাখা হয়। টি রোলার শ্যাফট এর উপর একটি রিভার থাকে যা বেভেল - এর মাধ্যমে রিলিং মেশিনকে চালনা করে থাকে। যখন সুইফট ঘুরতে থাকে তখন ২” হতে ৩" এর মধ্যে একটি দ্রুত তির্যক গতি পেয়ে থাকে, যা প্রয়োজনীয় পূর্ণ প্রস্থ জুড়ে স্তর গঠন করতে থাকে। এই প্রকার রিলিং মেশিনে যে কোনো দৈর্ঘ্যর সুতা জড়ানো হয়। 

গ) ডায়মন্ড অথবা স্কেইন রিলিং (Diamond or skin reeling)। 
এটি ক্রস রিলিং -এর অনুরূপ, তবে পার্থক্য এই যে, সুতা যাতে আড়াআড়ি না হয় তার জন্য বিশেষভাবে ক্রসিং করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হলো এই প্রকার বান্ডেলকে বাইরে অথবা ভেতরে বাঁধা হয়। ওয়েট প্রসেসিং -এর জন্য এই পদ্ধতির বান্ডেল খুবই সুবিধাজনক। এটি সাধারণত মূল্যবান সুতার জন্য ব্যবহৃত হয়।

রিলিং প্রসেসের বর্ণনা 
সুতাকে রিলিং করার পর হ্যাংক সুতাকে ভাঁজ করা এবং বহন করা সহজ হয়। স্পিনিং মিলসমূহে শেষ ব্যবহারের উপর নির্ভর করে রিং ববিন থেকে কোন অথবা রিলিং মেশিনে হ্যাংক উৎপাদন করা হয় । রিলিং মেশিনের সুইফট মেশিনের উভয় পার্শ্বে বা এক পার্শ্বে থাকে। রিল করার সময় সুতার কোন বা ববিনকে মেশিনের উপর অবস্থিত স্পিন্ডেলের উপর বসানো হয়। ববিনের থেকে সুতার প্রান্ত বের করে ইয়ার্ন গাইডের মধ্য দিয়ে সুইফট বা রিলের উপর জড়ানো হয়। এভাবে পাশাপাশি যতগুলো ইয়ার্ন গাইড রয়েছে প্রতিটি ইয়ার্ন গাইডের মধ্য দিয়ে সুতা এনে সুইফটে লাগানো হয় । নির্দিষ্ট পরিমাণে সুতা রিলের পৃষ্ঠে জড়ানোর 1 পর রিলিং মেশিন চালু করা হয়। রিলিং মেশিনে প্রতি গোছায় ২ হ্যাংক পরিমাণ অর্থাৎ (৮৪০ x ২) = ১৬৮০ গঞ্জ সুতা জড়ানোর পর মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ ধরনের নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের সুতাকে লি বা লাছা বা কাট বলে। প্রতিটি কাট বা লাছাকে মোটা সুতা দ্বারা আলাদা আলাদাভাবে বেঁধে রাখা হয় যাতে রিলের সুতাগুলো এলামেলো হয়ে না যায়। কটন স্পিনিং মিলসমূহে প্রতিটি রিলিং মেশিনে ৪০টি করে কোন অথবা রিং ববিন স্পিন্ডেলে বসানো থাকে। প্রতিটি কোন থেকে ১৬৮০ গজ এর লাছা তৈরি করা হয়। জুট স্পিনিং মিলসমূহে প্রতিটি রিলিং মেশিনে ২৪টি কোন অথবা স্পিনিং ববিন রিলিং মেশিনের স্পিন্ডেলে বসানো হয়। প্রতিটি ববিন থেকে ৩০০ গজ -এর এক একটি কাট তৈরি করা হয়। উপরোক্ত মোড়াসমূহ পরবর্তীতে একত্র করে বান্ডেলিং প্রেস মেশিনের সাহায্যে বান্ডেলে পরিণত করা হয়।

সতর্কতা : 
> লক্ষ রাখতে হবে সুতার নট ঠিকভাবে দেওয়া ও নট ছোট হওয়া। 
> সুতার নট না দিয়ে বান্ডেল বা নলী এর সুতা পেঁচিয়ে দেওয়া উচিত নয়। 
> রিং ববিনের অল্প সুতা কেটে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। 

মন্তব্য :

১৪। পরীক্ষার নাম : বিভিন্ন প্রকার নলীর সাথে পরিচিতি

সংজ্ঞা : 
(ক) নদী (Pirn) 
কাপড় তৈরির জন্য টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহৃত হয়। পড়েন সুতা প্যাকেজ আকারে জড়িয়ে মাকুতে স্থাপন করে শেডের মধ্যে চালনা করা হয়। মাকুতে স্থাপন করার জন্য চরকা বা পার্ন ওয়াইন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে পড়েন সুতার যে প্যাকেজ তৈরি করা হয় তাই নলী বা পার্ন। 

(খ) কপ (Cop) 
জুট ইন্ডাস্ট্রিতে সাটেল এর মধ্যে যে প্যাকেজ স্থাপন করা হয় তাকে কপ বলে । তবে কটন নলীর মতো জুটের নলীতে কোনো কাঠের খালি নলী অর্থাৎ খালি পার্নের ব্যবহার প্রয়োজন নেই। কপ এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে কোনো কাঠের দণ্ডের প্রয়োজন হয় না।

সতর্কতা 
০ নলীতে যাতে সুতা ধারাবাহিকভাবে পেঁচানো হয় তার দিকে লক্ষ রাখতে হয়। 
• যে কাঠিতে পার্ন তৈরি করা হবে তা যেন ত্রুটিমুক্ত হয়। 

মন্তব্য :

১৫। পরীক্ষার নাম: হ্যাংক থেকে নলী প্রস্তুতকরণ। 

সংজ্ঞা : 
হ্যাংক রিলিং মেশিনের সুইফট এর পরিধির সমান অর্থাৎ ১.৫ গজ দৈর্ঘ্যের পরিধির ৫৬০ বার ঘূর্ণনের ফলে ৮৪০ গজ দৈর্ঘ্যের এক একটি হ্যাংক তৈরি হয়ে থাকে। হ্যাংক থেকে চরকা-চরকির মাধ্যমে হাতের সাহায্যে নলী বা পার্ন তৈরি করা হয়। 

হ্যাংক থেকে নদী প্রস্তুত 
সাধারণত হ্যান্ডলুম ইন্ডাস্ট্রিতে চরকার সাহায্যে হ্যাংক থেকে নলী প্রস্তুত করা হয়। চরকার বড় পরিধির খাঁচায় হ্যাংক লাগানো হয় এবং স্পিন্ডেলে খালি নলী লাগানো হয়। অতঃপর হ্যাংক থেকে সুতা বের করে নলীতে হালকাভাবে এক অথবা দুই প্যাঁচ প্যাঁচিয়ে হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে আস্তে আস্তে নলীর এক প্রান্ত থেকে অনা প্রান্ত পর্যন্ত জড়ানো হয় । 

সতর্কতা 
০ চরকিতে যাতে সুতা প্যাচ না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে 
০ প্যাচানোর গতি সমান রাখতে হবে। 
০ নলীতে যাতে ধারাবাহিকভাবে সুতা প্যাচানো হয় তার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। 

মন্তব্য-

১৬। পরীক্ষার নাম : কাপড়ের ডিজাইন অনুযায়ী সুতার হিসাব নির্ণয়করণ ও ক্রিলে কোনো/চিজ স্থাপনকরণ । 

সংজ্ঞা : 
টেক্সটাইল ডিজাইন টেক্সটাইল সংক্রান্ত বুনন যা কাগজে অথবা কাপড়ে প্রতিফলিত করণকেই টেক্সটাইল ডিজাইন বলা হয়। 

সুতার হিসাব নির্ণয় - 
মনে করা যাক ২২" বহরের ১০০ গজ টানা প্রস্তুত করতে হবে। যদি ইঞ্চি প্রতি টানা সুতার সংখ্যা ৪০ ধরা হয়। তবে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে মোট কত হ্যাংক সুতার প্রয়োজন হবে তা বের করা সম্ভব। রিড কাউন্ট/ শানা নম্বর ৪০

১৭। পরীক্ষার নাম: তাতে বিম ভোলা। 

সংজ্ঞা : 
(ক) তাঁত 
যে যন্ত্রে দুই বা ততোধিক সারির কতগুলো সুতা লম্বালম্বি ও আড়াআড়িভাবে স্থাপন করে বুনন কার্য সম্পন্ন করা হয় তাকে তাঁত বা লুম বলে। 

(খ) বিম 
কাপড় তৈরি করার প্রয়োজনে কাপড়ের বহর অনুযায়ী লম্বালম্বিভাবে টানা সুতা সাজানোর প্রয়োজনে যে বস্তু ব্যবহার করা হয় সেটাই বিম।

তাঁতে বিম তোলার পদ্ধতি 
উইভার্স বিষকে ড্রইং ইন ও ডেন্টিং -এর পর লুম -এর পিছনে নির্দিষ্ট ব্রাকেটের উপর বসানো হয়। বিম তাতে তোলার জন্য ক্যারিয়ার অথবা লিফটার ব্যবহার করা হয়। তবে হ্যান্ড লুমে বিম তোলার জন্য দুইজন শ্রমিক হাত দ্বারা তুলে তাঁতের পিছনে ব্রাকেটের উপরে বসিয়ে দেয়। হ্যান্ড লুমের জন্য যে বিম তৈরি করা হয়। তা ওজনে হালকা করে তাঁতে টানা সুতার দৈর্ঘ্য কম থাকে। 

মন্তব্য

১৮। পরীক্ষার নাম: ক্রিলে সুতা সাজানো। 

সংজ্ঞা : 
(ক) ক্রিল ওয়ার্সিং-
এ বিমে সুতা জড়ানোর জন্য একসঙ্গে অনেক সুতার প্রয়োজন হয়। এই সুতা ড্রামে সাজানোর পূর্বে খাঁচার মতো করে তৈরি করে ফ্রেমে শলা বা কাঠির সাহায্যে অনেকগুলো সুতাপূর্ণ ফ্রাঞ্জ ববিন একসঙ্গে সাজানো থাকে। এই ফ্রেমটিকে ক্রিল বলে। 

(খ) ক্রিল 
ববিনগুলো আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি স্তরে স্তরে ফ্রেমে সাজানো হয়। ক্রিলে সুতা বা ববিন সাজানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি মেনে চলা হয় । এই পদ্ধতিকেই ক্রিল বলে । 

(গ) ফ্রাঞ্জ ববিন 
পাথলি ড্রামে টানা সাজানোর পূর্বে টানা সুতাকে ক্রিলে সাজানোর সুবিধার্থে কাঠের তৈরি যে দণ্ডে সুভা জড়ানো হয় উক্ত দণ্ডটিকে ববিন বলে। 

পদ্ধতি
 উইভার্স বিম তৈরির জন্য টানা সুতার হিসাব অনুযায়ী টানা সুতার দৈর্ঘ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফ্লাঞ্জ ববিনে সুতা জড়ানো হয়। ক্রিলে ববিন সাজানোর পূর্বে টানা সংখ্যা হিসাব করে সে অনুযায়ী অর্থাৎ টানায় মোট সুতা ৩০০টি হলে ১৫টি ববিন ৬ বার বাঁধন ঠিক করে ড্রামে সুতা স্থানান্তর করতে হবে। কাজেই ক্রিলে সুতা পূর্ণ ববিন ফ্রেমের খাঁচায় শলা বা কাঠিতে উপর নিচ পাশাপাশি সাজাতে হবে।

১৯। পরীক্ষার নাম ক্রিল থেকে ড্রামে সুতা স্থানাস্তর।

ড্রামে সুতা নেওয়া
ড্রামের পিছনে একটি ক্রিলের মধ্যে সুতাপূর্ণ ববিনগুলো সাজানো থাকে। শানার ইঞ্চি প্রতি কতটুকু সুতার প্রয়োজন ততটি ববিন নিয়ে কাজ করতে হবে। ববিন থেকে প্রতিটি সুতা প্রান্ত সেলেটের কাঠির চোখে ১টি ও ২টি কাঠির ফাঁকে ১টি এই নিয়মে টেনে একত্রে গিঁট দিয়ে পেরেকের সাথে আটকিয়ে ড্রামটি ঘূর্ণন শুনে গুনে ঘোরাতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যেন প্রতি ২টি পেরেকের মধ্যস্থলে ইঞ্চি প্রতি টানার দৈর্ঘ্যের সমতা ঠিক থাকে। পরিমিত পরিমাণ টানা নেওয়ার পর সেলেটের সাহায্যে সুতায় জো তুলতে হবে।

সর্তকতা 
০ লক্ষ রাখতে হবে যাতে প্রতি সেকশনে সুতার সংখ্যা সঠিক। 
০ ড্রামে ঘুরানোর সময় ঘূর্ণনের সংখ্যা সঠিক রাখতে হবে। নতুবা অপচয়ের হার বেড়ে যাবে।

২০। পরীক্ষার নাম মেশিন থেকে বিম নামানো।

ভূমিকা
ওয়ার্সিং মেশিনে উইভার্স বিম তৈরি হওয়ার পর সতর্কতার সঙ্গে বিম ক্যারিয়ার অথবা দুইজন শ্রমিক দুই পার্শ্ব থেকে হাত দ্বারা তুলে বিষ নামিয়ে আনেন। তবে উচ্চ গতিসম্পন্ন ওয়ার্নিং মেশিনের বিম প্রস্তুত হওয়ার পর বিমের দুই পার্শ্বের সাপোর্ট ব্রাকেট খুলে বিম ক্যারিয়ার অথবা লিফটার ওপরে সুতাপূর্ণ উঠানো হয় এবং বিম ক্যারিয়ারের মাধ্যমে উইভার্স বিমকে বিমের নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখা হয়। কখনও কখনও ওভারহেড ক্রেনের সাহায্যে ভারী উইভার্স বিম স্থানান্তর করা হয়।

ওয়ার্সিং মেশিন হতে বিম নামানোর পদ্ধতি
উচ্চগতি সম্পন্ন সাইজিং মেশিনে বিম তৈরি হওয়ার পর উক্ত সুতাপূর্ণ উইভার্স বিমের গঠন ও ওজন অনুসারে ১৭২ কেজি থেকে ১ টন বা তদাপেক্ষা বেশি ওজনের হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৪টি সুইচের মাধ্যমে বিম নামানো ও খালি বিম ওঠানোর কার্য সমাধা করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে মাত্র ২ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়।

সতর্কতা 
• বিম তৈরির সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে বিমের ব্যাস ফ্রাঞ্জের ব্যাসের তুলনায় বেশি না হয় । 
০ বিম তৈরির সময় ফ্রাঞ্জের দূরত্ব সঠিক রাখতে হবে। 
০ বিম নামানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে নতুবা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।

২১। পরীক্ষার নাম : বিভিন্ন প্রকার সাইজিং ম্যাটারিয়ালস সমন্ধে পরিচিতি।

সংজ্ঞা 
যে পদ্ধতিতে টানা সুতাকে বিভিন্ন প্রকার মাড়ের উপকরণ যুক্ত করে সুতার উপর বিদ্যমান বাড়তি আঁশগুলোকে সুতার পৃষ্ঠে মিশিয়ে দিয়ে সুতাকে চকচকে, ওজন বৃদ্ধি, মসৃণ ও শক্তিশালী করা হয় সে পদ্ধতিকে সাইজিং বলে।

বিভিন্ন প্রকার সাইজিং ম্যাটারিয়ালস

শ্বেতসারযুক্ত উপাদান (Adhesive substance)
একে মাড়/সাইজের মূল উপাদানও বলা হয়। এ উপাদানের জন্য মাড় আঠালো হয়। এ শ্বেতসারযুক্ত উপাদানের সাথে পানি মিশ্রিত করে তাপ প্রয়োগ করলে আঠালো পদার্থের পেস্ট (Paste) এ পরিণত হয় । উদাহরণ- মেইজ স্টার্ট (Maise starch), তেঁতুলের বিচির পাউডার (Tamarind seed powder), টপিওকা স্টার্চ (Topioca starch), ময়দা (Flour ), সাঞ্চ স্টার্চ (Sagoo starch), আলুর প্যালো (Potato starch), রাইচ স্টার্চ (Rice starch) ইত্যাদি প্রাকৃতিক স্টার্চ। আবার সিএমসি (Carboxy Methyl Cellulose), পিডিএ (Polyvenyle Alcohol), পলিঅ্যাক্রাইলিক অ্যাসিড ইত্যাদি কৃত্রিম স্টার্চ বা অ্যাডহেসিভ।

সফেনিং এজেন্টস (Softening Agents) 
সফেনিং এজেন্টকে কোমল রাখার উপাদানও বলা হয়। টানা সুতা কখনও কখনও শক্ত, অমসৃণ ও ভঙ্গুর হয় । এছাড়া ও সুতার খসখসে ভাব ও নমনীয়তা দূর করার জন্য সফেনিং এজেন্ট ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ- মাটন ট্যালো (Mutton tallow), টেলটেক্স (Teltex), নারিকেল তেল (Coconut oil), ক্যাস্টর অয়েল, তিলের তেল, তালের তেল, তুলার বীজের তেল, জলপাই এর তেল, রেডির তেল, প্যারাফিন ওয়াক্স (Parafin wax), চায়না মোম (China wax), সুগার ক্যান ওয়াক্স (Sugarcane wax), ওয়াক্স (Wax), সফট সোপ (Soft soap) ইত্যাদি।

হাইগ্রোসকোপিক এজেন্টস (Hygroscopic Agents) 
সুতাকে আর্দ্র রাখার জন্য হাইগ্রোসকোপিক এজেন্ট ব্যবহার করা হয়। আর্দ্র রাখার উপাদানসমূহ বাতাস হতে জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে থাকে। এ এজেন্টস ব্যবহার করার ফলে টানা সুতা অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণ আর্দ্রতা শোষণ করে সুতাকে নমনীয় রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণ- ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2), ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2), গ্লিসারিন, জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), ডাই ইথিলিন গ্লাইকল, সরবিটল ইত্যাদি।

অ্যান্টিসেপটিক এজেন্টস (Anticeptics ) 
একে বাংলায় প্রতিষেধক উপাদান বলা হয়। মিলডিউ অর্থাৎ ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিষেধক উপাদান ব্যবহার করা হয়। সাধারণত সমস্ত স্টার্চই ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্ক্ষা থাকে। কাজেই কার্বন সুতা সাইজিং করার প্রয়োজনে স্টার্চ -এর পাশাপাশি অ্যান্টিসেপটিকস প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়। উদাহরণ- জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), কপার সালফেট (CuSO4), সেলিসাইটিক অ্যাসিড (CaHa(OH)COOH), সোডিয়াম সিলকো ক্লোরাইড, বিটা নেপথলস, কার্বোলিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

নিউট্রালাইজিং এজেন্টস (Neutralizing Agents) 
মাড় দ্রবণ প্রস্তুত করার সময় দ্রবণের (PH) মাত্রা পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাজেই দ্রবণকে নিউট্রাল করার জন্য নিউট্রালাইজিং এজেন্টস যোগ করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত দ্রবনের (PH) মাত্রা ৬.৮ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত অল্প অল্প করে এ এজেন্টস ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ- সোডা অ্যাশ।

অ্যান্টিফোমিং এজেন্টস (Antifoaming Agents) 
মাড় দ্রবণ অথবা মাড় পেস্ট প্রস্তুত করার সময় দ্রবণে ফেনা হবার সম্ভাবনা দেখা যায়। যার ফলে উক্ত দ্রবণ টানা সুতায় প্রয়োগ করতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এ জন্য মাড় দ্রবণে অ্যান্টিফোমিং এজেন্টস ব্যবহার করা হয় । যা মাড়, পেস্ট বা দ্রবণে ফেনা উৎপন্ন হতে বাধা প্রদান করে । উদাহরণ-অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH), কেরোসিন, টার্পেন্টাইন, পাইন অয়েল, অ্যামাইল, অ্যালকোহল, সিলিকন ডিফোমার ইত্যাদি ।

টিনটিং বা রঞ্জক উপাদান (Tinting of Colouring Agents ) 
টানা সুতা ও উৎপাদিত কাপড়ের প্রাকৃতিক রংকে নিউট্রালাইজড করার জন্য এ এজেন্ট ব্যবহৃত হয়। সাধারণত যে সমস্ত কাপড় যে অবস্থায় বিক্রি হবে উক্ত কাপড় প্রস্তুত করতে টানা সুতায় মাড় দেওয়ার সময় এ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। উদাহরণ- টিনাপল (Tinapol) আলট্রা মেরিন ব্লু, অ্যাসিড ডাই ও অপটিক্যাল ব্রাইটেনিং এজেন্ট ইত্যাদি।

ওয়েটিং এজেন্টস (Weighting Agents) 
সুতা ও উৎপাদিত কাপড়ের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য যে পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলোই ওয়েটিং এজেন্ট। শুধু গ্রে অবস্থায় বিক্রি করার জন্যই এ ধরনের এজেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উদাহরণ- চায়না ক্লে (China clay), চক বা খড়িমাটি (CaCO3), ফ্রেঞ্চ চক (French Chalk), ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ( MgSO4), সোডিয়াম সালফেট (Na2SO4), ম্যানেশিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) ইত্যাদি।

সতর্কতা 
• সাইজিং -এর প্রতিটি উপাদানের গুণাগুণ ভালোভাবে জানতে হবে। 
• কোনো উপাদান কী কাজ করে সে বিষয়ে জ্ঞান থাকা ভালো। 
০। পরবর্তী সাইজ নির্বাচনের সময় সতর্ক থাকতে হবে। 

মন্তব্য

২২। পরীক্ষার নাম : সাইজিং -এর রেসিপি নির্বাচন। 

সংজ্ঞা : 

রেসিপি

সাইজিং করার জন্য সাইজের কোন উপাদান নেওয়া হবে এবং উপাদানের কোনটি কতটুকু পরিমাণ নেওয়া হবে এটাই সাইজিং -এর রেসিপি। সাইজিং -এর রেসিপি নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ ঃ 

• যে সুতাকে সাইজিং করা হবে তার ধরন 

• উপকরণের মূল্য 

• ভিসকোসিটি অর্থাৎ আঠালোভাবে স্থায়িত্ব 

০ আঠালো জাতীয় পদার্থ 

০ ডিসাইজিং -এর সময় সহজেই অপসারণের যোগ্যতা

উপরোক্ত মাড় দ্রবণ বা পেস্ট সাধারণত ১০০ ভাগ কটন সুতার জন্য প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। 

সতর্কতা 
০ সাইজের নির্বাচনে সঠিক উপাদান বাছাই করা। 
০ আঠালো উপাদান ও প্রতিষেধক উপাদান যেন সঠিক হয়। 

উপসংহার /মন্তব্য

২৩। পরীক্ষার নাম : হ্যাংক সুতায় মাড় করার প্রস্তুতপ্রণালি।

ভূমিকা

হ্যান্ডলুম ফ্যাক্টরি বা কুটির শিল্পের তাঁতিদের মধ্যে হ্যান্ড সাইজিং প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে মাড়ের শ্বেতসার হিসেবে খৈ, চালের গুঁড়া এবং ময়দাই সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে খুব অল্প সুতার ক্ষেত্রে ভাতের মাড়ও ব্যবহার করা হয়।

উপাদান 
মিহি সুতার জন্য থৈ -এর মাড়ই উৎকৃষ্ট। মোটা বা মাঝারি সুতার জন্য চালের মাড় উৎকৃষ্ট। সিদ্ধ চালের চেয়ে আতপ চাল হলে ভালো হয়। কখনও কখনও তাঁতিরা মাড়ের সাথে একটু চুন, এক/আধ ফোঁটা কার্বলিক অ্যাসিড, ফরমালডিহাইড অথবা জিংক ফ্লোরাইড ব্যবহার করে।

উপরোক্ত সাইজিং উপাদানের কাজ

থৈ বা চালের গুঁড়া আঠালো পদার্থের জন্য চুন ব্যবহার করার ফলে মাড় আরও একটু আঠালো হয় এবং ফাঁকে নষ্ট করে না। তুঁতে ব্যবহার করার কারণে টানা সুতা পোকায় কাটে না। কার্বনিক অ্যাসিড ও জিংক ক্লোরাইড ব্যবহার করায় ইঁদুরে কাটে না ও টানায় মিলডিউ ধরে না।

প্রস্তুতপ্রণালি 
পরিমিত পরিমাণ থৈ একটি পাত্রে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখবে। পরে ঐ পাত্র থেকে থৈ উঠিয়ে অন্য পাত্রে ভালো করে চটকাতে হবে। চটকানো শেষ হলে কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিয়ে মণ্ড বের করবে। মণ্ডের সাথে অন্য কেমিক্যাল মিশিয়ে যখন বেশ আঠালো বোধ হবে তখন টানা সুতায় প্রয়োগ করতে হবে।

সতর্কতা

• মাড় প্রস্তুত করার সতর্ক থাকতে হবে 
• মাড় যাতে ঘন আঠালো হয় তার প্রতি যত্নবান হতে হবে। 
• কৃষ্ণ মাতৃ বেশিদিন ফেলে রাখা যাবে না।

Content added || updated By

সংজ্ঞা রক্ষণাবেক্ষণ
কোনো যন্ত্র বা মেশিনপত্রকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্ররোজনীর অংশে তেল, গ্রিজ ইত্যাদি প্রয়োগসহ সার্বিক যত্ন নেওয়া অর্থাৎ শিল্পকারখানা বা প্লান্টের মেশিনপত্র, সরঞ্জামাদি, কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্যের প্রস্তুতকারকের নির্দেশ মোতাবেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ভৈল প্ররোপসহ সার্বিক যত্ন দেওয়ার যথোপযুক্ত প্রক্রিরাই হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণ।

রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
মেশিনের পরিচর্যা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো।
ক) হ্যান্ড টুলস - 
* হ্যামার 
* ফাইল 
* চিলে
* বেঞ্চ
* ডিভাইডার 
* অ্যাডজাস্টেবল রেঞ্চ 
* পাইপ রেঞ্চ 
* প্যানার 
* বক্স রেঞ্চ 
* টর্ক রেফ

Content added || updated By

সংজ্ঞা
ক) মেরামত : কোনো মেশিন/যন্ত্রপাতি কোনো কারণে যদি পূর্বের ন্যায় কাজ করতে অক্ষম হয়, তবে তাকে পূর্বের ন্যায় কাজ করা সক্ষম করে তোলার জন্য যে কাজটি করা হয় তাই মেরামত । 
খ) পরিষ্কারকরণ উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত মেশিন/যন্ত্রপাতি ইত্যাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে ধুলা, ময়লা, আবর্জনা দূর করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে পরিষ্কারকরণ। 
গ) অয়েলিং ও গ্রিজিং : ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে সচল ও ভালো রাখা, ঘর্ষণজনিত ক্ষয় হ্রাস ও বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অয়েল/লুব্রিক্যান্ট ও গ্রিজ প্রদান করার পদ্ধতিকে অয়েলিং ও গ্রিজিং বলে।

ওয়েলিং, গ্রিজিং-
এ যন্ত্রপাতির তালিকা : 
* অয়েল পাম্প 
* গ্রিজ গান 
* অয়েল ক্যান্ট
* হ্যান্ড পাম্প। 

সতর্কতা 
* স্প্যানার, এলকি ইত্যাদি নাম্বার অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। নির্দিষ্ট নাম্বারের জন্য নির্দিষ্ট টুলস / সরঞ্জাম রয়েছে। 
* স্টিলের হ্যামার পরিহার করে কাঠের অথবা প্লাস্টিকের হ্যামার ব্যবহার করা উচিত। 
* সাবধানতার সঙ্গে সরঞ্জাম নাড়াচাড়া করা উচিত। 

মন্তব্য/উপসংহার

Content added By

সংজ্ঞা :
ক) পরিষ্কারকরণ : উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত মেশিনসমূহ ভালো রাখার তাগিদে ও এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়াকেই পরিষ্কারকরণ বলা হয়।

ব্যবহারের পর ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ 
রক্ষণাবেক্ষণ কাজের শেষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহ এখানে সেখানে না রেখে প্রতিটি টুলস বা যন্ত্রকে যত্ন সহকারে পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী যাতে সহজেই উক্ত টুলস বা যন্ত্রপাতি হাতের কাছে পাওয়া যায়।

সতর্কতা 
* যে কোনো যন্ত্রপাতি বা টুলস ব্যবহারের পর এখানে সেখানে ফেলে রাখা উচিত নয় । 
* টুলস বা যন্ত্রপাতি পরিষ্কার না করলে যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
* সাবধানতার সঙ্গে প্রতিটি টুলস নির্দিষ্ট স্থানে যত্ন সহকারে রেখে দেওয়া উচিত। 

মন্তব্য

Content added || updated By

সংজ্ঞা
ক) দুর্ঘটনা : যে ঘটনাপ্রবাহ দ্বারা কর্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ও ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয় তাকে দুর্ঘটনা বলে। দুর্ঘটনা হলো একটি অপরিকল্পিত, অনিয়ন্ত্রিত, অপ্রত্যাশিত হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা, যার দ্বারা জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। 

(খ) নিরাপত্তা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান চলমান সকল কাজকর্ম যাতে কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত বা অবাঞ্ছিত ঘটনার উদ্ভব না হতে পারে তার জন্য পরিকল্পিতভাবে কর্মী, যন্ত্রপাতি, মেশিন ও কর্মশালায় বিভিন্ন স্বীকৃত বিধিব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং এর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কর্মস্থলে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিহত করাকে নিরাপত্তা বলে ।

নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা 
* প্রথমেই কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত মানের বা উপযুক্ত মাপের যন্ত্রপাতি নির্বাচন করতে হবে। 
* যেখানে ব্যবহার করবে তার সম্বন্ধে ভালো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 
* আঘাত করা বা যন্ত্র দ্বারা চাপ দেওয়ার পূর্বে নির্দিষ্ট করতে হবে যে কতটুকু আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হবে। 
* ঠিক কোনো স্থানে যন্ত্রপাতি বা টুলস ফিট করবে তা নিশ্চিত করতে হবে। 
* সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা সহজ হবে। 

মন্তব্য :

Content added || updated By

সংজ্ঞা
ক) শনাক্তকরণ : বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ফাইবার চেনার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করে ফাইবার এর গুণাগুণ যাচাই করে ফাইবার এর নামকরণ নির্দিষ্ট করা হয় তাকে বলা হয় শনাক্তকরণ।

কটন ফাইবারের প্রাথমিক পরিচিতি 
কটন ফাইবার প্রাকৃতিক ফাইবারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ফাইবার। ব্যবহারের দিক থেকেও সবচেয়ে জনপ্রিয়। পানি শোষণ ক্ষমতা বেশি বলে এই ফাইবারের তৈরি পোশাক খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। এ ফাইবার কোমল ও নমনীয় গুণের অধিকারী। ইহা দ্বারা আকর্ষণীয় ও আরামদায়ক পোশাক তৈরি করা সম্ভব। কটন ফাইবারের রং সাদা বা সাদার কাছাকাছি। ফাইবারের দৈর্ঘ্য ১০ মিমি থেকে ৬৫ মিমি পর্যন্ত হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ
ক) কাউন্টিং গ্লাস 
খ) অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
গ) মোমবাতি ও ম্যাচ
ঘ) সালফিউরিক অ্যাসিড
ঙ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড 
চ) ফেনল
ছ) টেস্ট টিউব
জ) পিপেট

শনাক্তকরণের ধাপ
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আনুবীক্ষণিক পরীক্ষা।

সতর্কতা
• নমুনা সংগ্রহ করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। নমুনা সঠিক না হলে পরীক্ষার ফলাফলও সঠিক হবে না। 
• জ্যাসিড জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে অতিমাত্রায় সতর্ক থাকা উচিত। নতুবা যে কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মন্তব্য/উপসংহার

Content added By

ফুট ফাইবারের পরিচিত্তি
ফুট সেলুলোজিক ফাইবার। তবে তুলার তুলনায় ছুটে সেলুলোজের পরিমাণ কম। জুট ফাইবার কিছুটা শক্ত ও খসখসে। ফুট ফাইবার ছালজাতীয় ফাইবার ফুট ও জুটের তৈরি দ্রব্য সহজেই পচনশীল मय পাঁচ থেকে সাত মাসের মধ্যেই ইহা মাটির সাথে মিশে যায়। ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। এ জন্য ফুটকে পরিবেশবন্ধু বলা হয়। জুট দেখতে সোনালি ও সাদা। কম স্থিতিস্থাপকসম্পন্ন। সহজেই রং করা যায়। কাগজ তৈরির মত হিসেবে সবুজ পাট ব্যবহার করা হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ 
ক) অণুবীক্ষণ যন্ত্র। 
খ) মোমবাতি ও ম্যাচ
গ) সালফিউরিক অ্যাসিড
ঘ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
ঙ) টেস্ট টিউব
চ) পিপেট

শনাক্তকরণের ধাপ 
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা। 

ক) ভৌত পরীক্ষা : 
ভৌত পরীক্ষায় কোনো সगाরে প্রয়োজन না। আর এই ভৌত পরীক্ষা নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায়। 
(১) স্পর্শ পরীক্ষা 
(২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা।

১) স্পর্শ পরীক্ষা : 
স্পর্শ পরীক্ষা সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। জুট- গরম, স্মিতিস্থাপক ও কর্কশ। 

২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা : 
বিভিন্ন টেক্সটাইল ফাইবারের গঠনগত উপাদানের কারণে আগুনে পোড়ার পর ফাইবারের আচরণও ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। ফলে উক্ত আচরণ শনাক্ত করে ফাইবারকে চেনা যায়।

জুট-
আগুনে সহজেই পুড়ে যায়। 
হলুদ শিখাসহ তাড়াতাড়ি পুড়ে যায়। 
হালকা ধূসর ছাই পাওয়া যায় ।

খ) রাসায়নিক পরীক্ষা : 
সাধারণত দুইটি রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে ফাইবার শনাক্তকরণ করা হয়। 
১) স্টোইন টেস্ট 
২) সলভেন্ট টেস্ট 

গ) অণুবীক্ষণিক পরীক্ষা : 
অণুবীক্ষণের নিচে জুট আঁশ ধরে নিম্নলিখিত অবস্থা দৃষ্টিগোচর হয়। 

ফলাফল : 

মন্তব্য :

Content added || updated By

সিল্ক ফাইবারের পরিচিতি
সিল্ক প্রানিজ ফাইবার এবং একমাত্র প্রাকৃতিক ফিলামেন্ট ফাইবার। সিল্ক ফাইবার তার আকর্ষণীয় সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের জন্য কুইন অব ফাইবার বলে পরিচিত। সিল্ক ফাইবারের স্থিতিস্থাপকতা গুণ অনেক বেশি। ইহা বেশ নমনীয়, আর্দ্রতা ধারণ ক্ষমতাও বেশ ভালো। ইহা শতকরা ১১ ভাগ আর্দ্রতা ধারণ করতে পারে। সিল্ক ফাইবারের তৈরি বস্ত্র খুব আরামদায়ক। গ্রীষ্মকালীন পোশাক হিসেবে সিল্কের বস্ত্র ব্যবহৃত হয়।

ফাইবার শনাক্তকরণের উপকরণ

ক) অণুবীক্ষণ যন্ত্র। 
খ) মোমবাতি ও ম্যাচ
গ) সালফিউরিক অ্যাসিড 
ঘ) হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
ঙ) ফেনল 
চ) সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড
ছ) টেস্ট টিউব
জ) পিপেট ইত্যাদি

শনাক্তকরণের ধাপ 
ক) ভৌত পরীক্ষা 
খ) রাসায়নিক পরীক্ষা 
গ) আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা।

ক) ভৌত পরীক্ষা :
১) স্পর্শ পরীক্ষা : গরম, মসৃণ ও স্থিতিস্থাপক সিঙ্ক ফাইবার 
২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা: ধীরে ধীরে পুড়ে, আগুন থেকে সরালে জ্বলে না। পালক বা চুল পোড়ার হালকা গছ । কালো গুটি বা দানা আকারের ছাই হয়। সিল্ক ফাইবার 
১) স্পর্শ পরীক্ষা : স্পর্শ পরীক্ষা সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। 
২) আগুনে পুড়ে পরীক্ষা: বিভিন্ন টেক্সটাইল ফাইবারের পঠনগত উপাদানের কারণে আগুনে পোড়ার পর ফাইবারের আচরণও ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। ফলে উক্ত আচরণ শনাক্ত করে ফাইবারকে চেনা যায়। 

খ) রাসায়নিক পরীক্ষা : 
সলভেন্ট টেস্ট: 
• গাছ ও উষ্ণ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের (HCI) সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না। 
• ঠাণ্ডা ও ঘন H2SO4 এর সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না। 
• ফেনল এর সাথে বিক্রিয়া করলে কোনো পরিবর্তন হয় না উল বা সিল্ক হতে পারে। 
• ৫০% NaOH এর দ্রবণে উত্তপ্ত করলে দ্রবীভূত হয় সিল্ক ফাইবার হতে পারে। 
• ঘন ঠান্ডা NaOH অ্যাসিডে বিক্রিয়া করলে সিল্ক ফাইবার দ্রবীভূত হয়। 

ফলাফল: সিল্ক ফাইবার নিশ্চিত।

মন্তব্য।

Content added By

সংজ্ঞা
ক)কাউন্ট: কাউন্ট হচ্ছে এমন একটি সংখ্যা যা একক দৈর্ঘ্যের স্তর অথবা একক স্তরের দৈর্ঘ্যকে বোঝায় । 

প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct system) : 
প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে সুতার একক দৈর্ঘ্যের ভরকে কাউন্ট বলে। এ পদ্ধতিতে ফুট, উল, সিল্ক ইত্যাদি সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায়। নিম্নের সূত্রের সাহায্যে প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায় ।

মন্তব্য:

Content added By

সুতার কাউন্ট নির্ণয়ের জন্য ব্যালেন্স :
সুতার কাউন্ট নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যালেন্স হয়েছে। তবে সরাসরি নির্ণয়ের জন্য খুব অল্প সংখ্যক ব্যালেন্স রয়েছে। যেমন- মোরেলস ব্যালেন্স, কোয়াডেন্ট ব্যালেন্স, বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স ইত্যাদি।

এ ধরনের ব্যালেন্সে একটি বিম ব্যালেন্স থাকে যার পিছনে এমন একটি আলাদা রড থাকে যার আকৃতি এ ধরনের যে এতে ৫টি দিক রয়েছে। এতে বিভিন্ন কাউন্ট রেঞ্জের জন্য কাউন্ট ফেল খোদাই করে দাগাঙ্কিত থাকে। এ ক্ষেলের দুটি প্যান থাকে যার বাম দিকের প্যানে চিহ্নিত ওজন দেওয়া হয় ও বিয়ে নির্দিষ্ট রাইডার রাখা হয় এবং ডান দিকের প্যানে সুতার লি রাখা হয় ।

ধরা যাক, একটি কটন সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে এবং উক্ত সুতার কাউন্ট আনুমানিক ৩২ বিবেচনা করা হয়। তাহলে ছেলের চিহ্নিত দিক সামনে ঘুরিয়ে আনতে হবে এবং নাম প্যানে নির্দিষ্ঠ ওজন স্থাপন করে বিমে রাইডার রাখতে হবে। এ অবস্থায় বিষকে ব্যালেন্সড করার জন্য রাইডারকে বিমের উপর সামনে-পিছনে সরিয়ে অ্যাডজাস্ট করা হয়। এ অবস্থায় সরাসরি স্কেল হতে সুতার কাউন্টের পাঠ দেওয়া হয়। এ ধরনের কয়েকটি পাঠ নিয়ে সুতার গড় কাউন্ট বের করা হয় ।

কোয়াডেন্ট ব্যালেন্স: 
কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স এক-চতুর্থাংশ। এ যন্ত্রটিতে যে ব্যালেন্স ব্যবহৃত হয় তা বৃত্তের এক-চতুর্থাংশের ন্যায় বলে এর নাম কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স। একটি ধাতুর বা কাঠের নির্মিত পায়া এর উপর আটকানো দণ্ড-এর উপর স্কেল বসানো থাকে। তাতে সুতা ঝুলানোর জন্য একটি হুক এবং কাউন্ট নির্দেশের জন্য একটি পয়েন্টার স্কেলের সাথে বিন্দুতে এমনভাবে আটকানো থাকে যে, হুকের উপর সুতা ঝুলালে তা হুকের সাথে সাথে স্কেলের দিকে সরে যায়।

যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে তার নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের সুতা হুকে স্থাপন করলেই নির্দেশকটি স্কেলের মধ্যে একটি বিন্দু নির্দেশ করবে যা সরাসরি উক্ত সুতার কাউন্ট নির্দেশ করে। এভাবে কয়েকটি পাঠ নিয়ে গড় করলেই সুতার কাউন্ট পাওয়া যায়।

এ যন্ত্রটিতে সাধারণত তিনটি স্কেল থাকে যার সাহায্যে ৪ গজ স্লাইভার নমুনা ঝুলিয়ে এর হ্যাংক বের করা যায় যা সাধারণত ০.১ থেকে ১০ হ্যাং পর্যন্ত পাঠ দান করে। দ্বিতীয়টি ২০ গজ রেডিং নমুনা ঝুলিয়ে এর হ্যাংক বের করা যায় যা ০.১ থেকে ৬.০ পর্যন্ত পাঠ দেয়। তৃতীয় স্কেলটি সুতার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে ৮৪০ গজ সুতা ঝুলিয়ে এর কাউন্ট নির্ণয় করা যায়। এ স্কেলে সাধারণত ৪' কাউন্ট থেকে ৮০' কাউন্ট পর্যন্ত সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা যায়।

বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স
 সুতার ছোট ছোট টুকরা বা কাপড় হতে সংগৃহীত সুতার কাউন্ট বের করার জন্য এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়।।

পরীক্ষার শুরুতে নির্দেশকটি স্কেলের গায়ে ডেটাম লাইনের সাথে লেভেল করা হয়। এরপর যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে সে ধরনের সুতার একটি আদর্শ ওজন বিমের খাঁজে খাঁজে বসিয়ে দেওয়া হয়। এতে নির্দেশকটি ডেটাম লাইনের নিচে পড়ে যায়।

যে ধরনের সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে তা টেমপ্লেটের চিহ্নিত দিক হতে কয়েক টুকরো মেপে কেটে হুকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে যন্ত্রটির নির্দেশককে ডেটাম লাইনে আনতে যতগুলো সুতার প্রয়োজন পড়ে পরীক্ষিত সুতার কাউন্ট তত।

  • সতর্কতা 
    সুতার দৈর্ঘ্য ও ওজন নিতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। 
  • ব্যালেন্স সঠিকভাবে স্থাপন করতে হবে। 
  • মনোযোগের সঙ্গে পরীক্ষা করতে হবে।
Content added By

সংজ্ঞা
ক) টুইস্ট : সুতা তৈরির উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কতগুলো ফাইবারকে একসাথে তাদের অগ্রভাগে যে মোচড় দেওয়া হয় তাকেই পাঁক পা টুইস্ট বলে।
ফাইবারগুলো সুতার অক্ষের চারপাশে ঘুরে ঘুরে অবস্থান নেয় বলে সুতা পাক বা টুইস্ট হয়। সুতার পাঁক ডান দিকে অথবা বাম দিকে হতে পারে। ডানদিকের পাক অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘোরে সে দিকের টুইস্টকে জেড টুইস্ট ও বামদিকে পাক অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে টুইস্টকে এস টুইস্ট বলে ।

টুইস্ট পরিমাপের যন্ত্র 
ক) অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার
সুতার পাক নির্ণয় করার জন্য অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। এই যন্ত্রের সাহায্যে সিঙ্গেল ও প্লাই সুতার পাক নির্ণয় করা যায়।

পরীক্ষণীয় দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্রথমে চলনশীল বাঁটকে নির্ধারিত স্থানে আটকাতে হবে। তারপর পরীক্ষণীয় সুতাকে ক্লাম্পে আটকানো হয়। সুতার পাক যে দিকে ঘুরবে ক্লাম্পের হাতল ও হুইলের সাহায্যে তার উল্টা দিকে ঘুরানো হয়। এই পদ্ধতি প্লাই সুতার ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি এবং সিঙ্গেল সুতার ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ১ ইঞ্চি হয়। সুতার সম্পূর্ণ পাক খুলেছে কি না তা দেখার জন্য পরীক্ষণীয় সুতার মধ্য দিয়ে একটি নিডেল টেনে দিতে হয় পাক খোলার জন্য। ক্লাম্প কতবার ঘুরবে তা ডায়ালের উপর পয়েন্টারের অবস্থান থেকে জানা যায় এবং সুতার পরীক্ষণীয় দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে ইঞ্চি প্রতি পাক সংখ্যা পাওয়া যায়। এভাবে ১০ থেকে ২০টি নমুনা পরীক্ষা করে পাক বের করা সম্ভব।

খ) টেনশন টুইস্ট টেস্টার 
এ পদ্ধতিতে সুতার পাক খোলা এবং পুনরায় পাক দেওয়া পদ্ধতিও বলা হয়। এ ধরনের টেনশন টাইপ টুইস্ট টেস্টার পাক সংকোচন নীতিতে কাজ করে। এ জাতীয় যন্ত্র কটন বা ফিলামেন্ট সুতার পাক নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যখন কোনো ফাইবার গুচ্ছকে পাক প্রদান করা হয় তখন তা দৈর্ঘ্যে সংকুচিত হয়ে পড়ে। ডান পাকের সুতাকে বাম দিকে ঘুরালে পাক খুলে যাবে এবং দৈর্ঘ্যে প্রসারিত হবে, যা পাক প্রদানের জন্য যতটুকু সংকুচিত হয়েছিল তার সমান। এখন যদি সুতাটিকে বাম দিকে ঘুরানো অব্যাহত রাখা হয় তবে সুতাটি পূর্বের তুলনায় বিপরীত দিকে পাক নিবে এবং পুনরার সংকুচিত হয়ে পড়বে। যতটি পাক খোলার পরে এটি প্রসারিত হয়েছিল ঠিক ততটি পাক প্রদান করলে পূর্বের মূল দৈর্ঘ্য পাওয়া যাবে। শুরু হতে শেষ পর্যন্ত যতবার ঘুরানোর ফলে সুতার মূল দৈর্ঘ্য পাওয়া যাবে সে সংখ্যাকে পরীক্ষিত দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি) এবং ২ দ্বারা ভাগ করলে প্রতি ইঞ্চি পাক সংখ্যা পাওয়া যাবে।

সতর্কতা: 
• সুতার প্রাপ্ত মেশিনে ভালোভাবে আটকাতে হবে। 
• সুতার পাক নিউট্রাল হয়ে থাকে আবার উল্টো দিকে থাকে যাতে পাক না হয়ে যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে। 

মন্তব্য :

 

Content added || updated By

ভূমিকা
হ্যান্ডলুম অধ্যুষিত অঞ্চলে সাধারণত কাঠ, পেরেক ও স্পিডেলের জন্য লোহার রড দ্বারা কাঠমিস্ত্রিরা চরকা ও চরকি প্রস্তুত করে থাকেন। হাতের তৈরি চরকা ও চরকি বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উপকরণ 
ক) কাঠ 
খ) লোহার রড 
গ) পেরেক 
ঘ) সাইকেল/রিকশার অব্যবহৃত চাকা 
ঙ) কাঠমিস্ত্রির টুলস এবং সরঞ্জামসমূহ 
চ) বাঁশ

প্রস্তুত প্রণালী
চিত্রানুযায়ী চরকা ও চরকির যাবতীয় অংশ কাঠ দ্বারা প্রস্তুত করে জোড়া লাগানো হয়। শিক্ষার্থীরা বারবার অনুশীলন করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে চরকা-চরকি প্রস্তুত করতে পারে ।

সতর্কতা 
সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে কাঠের জোড়া লাগানো সঠিক হয়।

মন্তব্য/উপসংহার

Content added || updated By

ভূমিকা 
আম্বর চরকা সাধারণ চরকার অনুরূপ তবে আম্বর চরকা তুলনামূলক বড়। চরকার এক প্রান্তে ঝুলন মশ স্পিন্ডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দড়ি পাকানো হয়।

পদ্ধতি 
সাধারণত কয়ের (Coir) ফাইবার দড়ি (কাতা) পাকানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কয়ের ফাইবার অর্থাৎ নারিকেলের ছোবড়া দ্বারা স্পিন্ডেলের সাথে ঝুলিয়ে, স্পিন্ডেলকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছোবড়ার দড়ি (কাতা) পাকানো হয় ।

ব্যবহার 
কয়ের ফাইবার (নারিকেলের ছোবড়া) দ্বারা দড়ি (কাতা) পাকানো হয়, যা গ্রামাঞ্চলে প্রচুর কাজে ব্যবহৃত হয়। পাকানো দড়ি দ্বারা পাপোস তৈরি করা হয়।

Content added || updated By

সংজ্ঞা
ক) রিলিং : 
নির্দিষ্ট পরিধির অর্থাৎ জানা পরিধির ঘূর্ণায়মান সুইফট -এর চারদিকে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সুতা জড়ানোর প্রক্রিয়াকে রিলিং বলে।

রিলিং -এর পদ্ধতি : 
সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে রিলিং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। 
ক) সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং (Seven Lea or straight reeling) 
খ) ক্রস রিলিং (Cross reeling)। 
গ) ডায়মন্ড অথবা স্কেইন রিলিং (Diamond or skin reeling)

ক) সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং (Seven Lea or straight reeling)
এ পদ্ধতিতে প্রতিটি ১২০ গজের ৭টি সেট দ্বারা এক সঙ্গে লি করা হয় বলে এ ধরনের রিলিং মেশিনকে সেভেন লি অথবা স্ট্রেইট রিলিং বলা হয়। এখানে প্রতিটি লি সুইফট -এর ওপর সমদূরত্বে জড়াতে হয়, যার জন্য গাইড ওয়ার প্রতিটি লি থেকে একটু একটু দূরত্ব রেখে মুভ করে থাকে। প্রতি ৮০ বার ঘূর্ণনের পর গাইড ওয়ার -এর মুভমেন্ট স্বয়ংক্রিয় বন্ধ হয়ে যায়। এ লি গুলোকে আলাদা আলাদা রাখার জন্য একটির পর অন্যটি রঙিন সুতা দ্বারা বাঁধা হয় যাতে সহজেই শনাক্ত, বিক্রি ও রপ্তানি করা যায়।

খ) ক্রস রিলিং (Cross Reeling)। 
এ পদ্ধতিতে র্যাক আলাদা রাখা হয়। টি রোলার শ্যাফট এর উপর একটি রিভার থাকে যা বেভেল - এর মাধ্যমে রিলিং মেশিনকে চালনা করে থাকে। যখন সুইফট ঘুরতে থাকে তখন ২” হতে ৩" এর মধ্যে একটি দ্রুত তির্যক গতি পেয়ে থাকে, যা প্রয়োজনীয় পূর্ণ প্রস্থ জুড়ে স্তর গঠন করতে থাকে। এই প্রকার রিলিং মেশিনে যে কোনো দৈর্ঘ্যর সুতা জড়ানো হয়। 

গ) ডায়মন্ড অথবা স্কেইন রিলিং (Diamond or skin reeling)। 
এটি ক্রস রিলিং -এর অনুরূপ, তবে পার্থক্য এই যে, সুতা যাতে আড়াআড়ি না হয় তার জন্য বিশেষভাবে ক্রসিং করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হলো এই প্রকার বান্ডেলকে বাইরে অথবা ভেতরে বাঁধা হয়। ওয়েট প্রসেসিং -এর জন্য এই পদ্ধতির বান্ডেল খুবই সুবিধাজনক। এটি সাধারণত মূল্যবান সুতার জন্য ব্যবহৃত হয়।

রিলিং প্রসেসের বর্ণনা 
সুতাকে রিলিং করার পর হ্যাংক সুতাকে ভাঁজ করা এবং বহন করা সহজ হয়। স্পিনিং মিলসমূহে শেষ ব্যবহারের উপর নির্ভর করে রিং ববিন থেকে কোন অথবা রিলিং মেশিনে হ্যাংক উৎপাদন করা হয় । রিলিং মেশিনের সুইফট মেশিনের উভয় পার্শ্বে বা এক পার্শ্বে থাকে। রিল করার সময় সুতার কোন বা ববিনকে মেশিনের উপর অবস্থিত স্পিন্ডেলের উপর বসানো হয়। ববিনের থেকে সুতার প্রান্ত বের করে ইয়ার্ন গাইডের মধ্য দিয়ে সুইফট বা রিলের উপর জড়ানো হয়। এভাবে পাশাপাশি যতগুলো ইয়ার্ন গাইড রয়েছে প্রতিটি ইয়ার্ন গাইডের মধ্য দিয়ে সুতা এনে সুইফটে লাগানো হয় । নির্দিষ্ট পরিমাণে সুতা রিলের পৃষ্ঠে জড়ানোর 1 পর রিলিং মেশিন চালু করা হয়। রিলিং মেশিনে প্রতি গোছায় ২ হ্যাংক পরিমাণ অর্থাৎ (৮৪০ x ২) = ১৬৮০ গঞ্জ সুতা জড়ানোর পর মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ ধরনের নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের সুতাকে লি বা লাছা বা কাট বলে। প্রতিটি কাট বা লাছাকে মোটা সুতা দ্বারা আলাদা আলাদাভাবে বেঁধে রাখা হয় যাতে রিলের সুতাগুলো এলামেলো হয়ে না যায়। কটন স্পিনিং মিলসমূহে প্রতিটি রিলিং মেশিনে ৪০টি করে কোন অথবা রিং ববিন স্পিন্ডেলে বসানো থাকে। প্রতিটি কোন থেকে ১৬৮০ গজ এর লাছা তৈরি করা হয়। জুট স্পিনিং মিলসমূহে প্রতিটি রিলিং মেশিনে ২৪টি কোন অথবা স্পিনিং ববিন রিলিং মেশিনের স্পিন্ডেলে বসানো হয়। প্রতিটি ববিন থেকে ৩০০ গজ -এর এক একটি কাট তৈরি করা হয়। উপরোক্ত মোড়াসমূহ পরবর্তীতে একত্র করে বান্ডেলিং প্রেস মেশিনের সাহায্যে বান্ডেলে পরিণত করা হয়।

সতর্কতা : 
> লক্ষ রাখতে হবে সুতার নট ঠিকভাবে দেওয়া ও নট ছোট হওয়া। 
> সুতার নট না দিয়ে বান্ডেল বা নলী এর সুতা পেঁচিয়ে দেওয়া উচিত নয়। 
> রিং ববিনের অল্প সুতা কেটে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। 

মন্তব্য :

Content added By

সংজ্ঞা : 
(ক) নদী (Pirn) 
কাপড় তৈরির জন্য টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহৃত হয়। পড়েন সুতা প্যাকেজ আকারে জড়িয়ে মাকুতে স্থাপন করে শেডের মধ্যে চালনা করা হয়। মাকুতে স্থাপন করার জন্য চরকা বা পার্ন ওয়াইন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে পড়েন সুতার যে প্যাকেজ তৈরি করা হয় তাই নলী বা পার্ন। 

(খ) কপ (Cop) 
জুট ইন্ডাস্ট্রিতে সাটেল এর মধ্যে যে প্যাকেজ স্থাপন করা হয় তাকে কপ বলে । তবে কটন নলীর মতো জুটের নলীতে কোনো কাঠের খালি নলী অর্থাৎ খালি পার্নের ব্যবহার প্রয়োজন নেই। কপ এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে কোনো কাঠের দণ্ডের প্রয়োজন হয় না।

সতর্কতা 
০ নলীতে যাতে সুতা ধারাবাহিকভাবে পেঁচানো হয় তার দিকে লক্ষ রাখতে হয়। 
• যে কাঠিতে পার্ন তৈরি করা হবে তা যেন ত্রুটিমুক্ত হয়। 

মন্তব্য :

Content added || updated By

সংজ্ঞা : 
হ্যাংক রিলিং মেশিনের সুইফট এর পরিধির সমান অর্থাৎ ১.৫ গজ দৈর্ঘ্যের পরিধির ৫৬০ বার ঘূর্ণনের ফলে ৮৪০ গজ দৈর্ঘ্যের এক একটি হ্যাংক তৈরি হয়ে থাকে। হ্যাংক থেকে চরকা-চরকির মাধ্যমে হাতের সাহায্যে নলী বা পার্ন তৈরি করা হয়। 

হ্যাংক থেকে নদী প্রস্তুত 
সাধারণত হ্যান্ডলুম ইন্ডাস্ট্রিতে চরকার সাহায্যে হ্যাংক থেকে নলী প্রস্তুত করা হয়। চরকার বড় পরিধির খাঁচায় হ্যাংক লাগানো হয় এবং স্পিন্ডেলে খালি নলী লাগানো হয়। অতঃপর হ্যাংক থেকে সুতা বের করে নলীতে হালকাভাবে এক অথবা দুই প্যাঁচ প্যাঁচিয়ে হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে আস্তে আস্তে নলীর এক প্রান্ত থেকে অনা প্রান্ত পর্যন্ত জড়ানো হয় । 

সতর্কতা 
০ চরকিতে যাতে সুতা প্যাচ না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে 
০ প্যাচানোর গতি সমান রাখতে হবে। 
০ নলীতে যাতে ধারাবাহিকভাবে সুতা প্যাচানো হয় তার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। 

মন্তব্য-

Content added By

সংজ্ঞা : 
টেক্সটাইল ডিজাইন টেক্সটাইল সংক্রান্ত বুনন যা কাগজে অথবা কাপড়ে প্রতিফলিত করণকেই টেক্সটাইল ডিজাইন বলা হয়। 

সুতার হিসাব নির্ণয় - 
মনে করা যাক ২২" বহরের ১০০ গজ টানা প্রস্তুত করতে হবে। যদি ইঞ্চি প্রতি টানা সুতার সংখ্যা ৪০ ধরা হয়। তবে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে মোট কত হ্যাংক সুতার প্রয়োজন হবে তা বের করা সম্ভব। রিড কাউন্ট/ শানা নম্বর ৪০

Content added || updated By

সংজ্ঞা : 
(ক) তাঁত 
যে যন্ত্রে দুই বা ততোধিক সারির কতগুলো সুতা লম্বালম্বি ও আড়াআড়িভাবে স্থাপন করে বুনন কার্য সম্পন্ন করা হয় তাকে তাঁত বা লুম বলে। 

(খ) বিম 
কাপড় তৈরি করার প্রয়োজনে কাপড়ের বহর অনুযায়ী লম্বালম্বিভাবে টানা সুতা সাজানোর প্রয়োজনে যে বস্তু ব্যবহার করা হয় সেটাই বিম।

তাঁতে বিম তোলার পদ্ধতি 
উইভার্স বিষকে ড্রইং ইন ও ডেন্টিং -এর পর লুম -এর পিছনে নির্দিষ্ট ব্রাকেটের উপর বসানো হয়। বিম তাতে তোলার জন্য ক্যারিয়ার অথবা লিফটার ব্যবহার করা হয়। তবে হ্যান্ড লুমে বিম তোলার জন্য দুইজন শ্রমিক হাত দ্বারা তুলে তাঁতের পিছনে ব্রাকেটের উপরে বসিয়ে দেয়। হ্যান্ড লুমের জন্য যে বিম তৈরি করা হয়। তা ওজনে হালকা করে তাঁতে টানা সুতার দৈর্ঘ্য কম থাকে। 

মন্তব্য

Content added By

সংজ্ঞা : 
(ক) ক্রিল ওয়ার্সিং-
এ বিমে সুতা জড়ানোর জন্য একসঙ্গে অনেক সুতার প্রয়োজন হয়। এই সুতা ড্রামে সাজানোর পূর্বে খাঁচার মতো করে তৈরি করে ফ্রেমে শলা বা কাঠির সাহায্যে অনেকগুলো সুতাপূর্ণ ফ্রাঞ্জ ববিন একসঙ্গে সাজানো থাকে। এই ফ্রেমটিকে ক্রিল বলে। 

(খ) ক্রিল 
ববিনগুলো আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি স্তরে স্তরে ফ্রেমে সাজানো হয়। ক্রিলে সুতা বা ববিন সাজানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি মেনে চলা হয় । এই পদ্ধতিকেই ক্রিল বলে । 

(গ) ফ্রাঞ্জ ববিন 
পাথলি ড্রামে টানা সাজানোর পূর্বে টানা সুতাকে ক্রিলে সাজানোর সুবিধার্থে কাঠের তৈরি যে দণ্ডে সুভা জড়ানো হয় উক্ত দণ্ডটিকে ববিন বলে। 

পদ্ধতি
 উইভার্স বিম তৈরির জন্য টানা সুতার হিসাব অনুযায়ী টানা সুতার দৈর্ঘ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফ্লাঞ্জ ববিনে সুতা জড়ানো হয়। ক্রিলে ববিন সাজানোর পূর্বে টানা সংখ্যা হিসাব করে সে অনুযায়ী অর্থাৎ টানায় মোট সুতা ৩০০টি হলে ১৫টি ববিন ৬ বার বাঁধন ঠিক করে ড্রামে সুতা স্থানান্তর করতে হবে। কাজেই ক্রিলে সুতা পূর্ণ ববিন ফ্রেমের খাঁচায় শলা বা কাঠিতে উপর নিচ পাশাপাশি সাজাতে হবে।

Content added || updated By

 

ড্রামে সুতা নেওয়া
ড্রামের পিছনে একটি ক্রিলের মধ্যে সুতাপূর্ণ ববিনগুলো সাজানো থাকে। শানার ইঞ্চি প্রতি কতটুকু সুতার প্রয়োজন ততটি ববিন নিয়ে কাজ করতে হবে। ববিন থেকে প্রতিটি সুতা প্রান্ত সেলেটের কাঠির চোখে ১টি ও ২টি কাঠির ফাঁকে ১টি এই নিয়মে টেনে একত্রে গিঁট দিয়ে পেরেকের সাথে আটকিয়ে ড্রামটি ঘূর্ণন শুনে গুনে ঘোরাতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যেন প্রতি ২টি পেরেকের মধ্যস্থলে ইঞ্চি প্রতি টানার দৈর্ঘ্যের সমতা ঠিক থাকে। পরিমিত পরিমাণ টানা নেওয়ার পর সেলেটের সাহায্যে সুতায় জো তুলতে হবে।

সর্তকতা 
০ লক্ষ রাখতে হবে যাতে প্রতি সেকশনে সুতার সংখ্যা সঠিক। 
০ ড্রামে ঘুরানোর সময় ঘূর্ণনের সংখ্যা সঠিক রাখতে হবে। নতুবা অপচয়ের হার বেড়ে যাবে।

Content added By

ভূমিকা
ওয়ার্সিং মেশিনে উইভার্স বিম তৈরি হওয়ার পর সতর্কতার সঙ্গে বিম ক্যারিয়ার অথবা দুইজন শ্রমিক দুই পার্শ্ব থেকে হাত দ্বারা তুলে বিষ নামিয়ে আনেন। তবে উচ্চ গতিসম্পন্ন ওয়ার্নিং মেশিনের বিম প্রস্তুত হওয়ার পর বিমের দুই পার্শ্বের সাপোর্ট ব্রাকেট খুলে বিম ক্যারিয়ার অথবা লিফটার ওপরে সুতাপূর্ণ উঠানো হয় এবং বিম ক্যারিয়ারের মাধ্যমে উইভার্স বিমকে বিমের নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখা হয়। কখনও কখনও ওভারহেড ক্রেনের সাহায্যে ভারী উইভার্স বিম স্থানান্তর করা হয়।

ওয়ার্সিং মেশিন হতে বিম নামানোর পদ্ধতি
উচ্চগতি সম্পন্ন সাইজিং মেশিনে বিম তৈরি হওয়ার পর উক্ত সুতাপূর্ণ উইভার্স বিমের গঠন ও ওজন অনুসারে ১৭২ কেজি থেকে ১ টন বা তদাপেক্ষা বেশি ওজনের হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৪টি সুইচের মাধ্যমে বিম নামানো ও খালি বিম ওঠানোর কার্য সমাধা করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে মাত্র ২ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়।

সতর্কতা 
• বিম তৈরির সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে বিমের ব্যাস ফ্রাঞ্জের ব্যাসের তুলনায় বেশি না হয় । 
০ বিম তৈরির সময় ফ্রাঞ্জের দূরত্ব সঠিক রাখতে হবে। 
০ বিম নামানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে নতুবা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।

Content added By

সংজ্ঞা 
যে পদ্ধতিতে টানা সুতাকে বিভিন্ন প্রকার মাড়ের উপকরণ যুক্ত করে সুতার উপর বিদ্যমান বাড়তি আঁশগুলোকে সুতার পৃষ্ঠে মিশিয়ে দিয়ে সুতাকে চকচকে, ওজন বৃদ্ধি, মসৃণ ও শক্তিশালী করা হয় সে পদ্ধতিকে সাইজিং বলে।

বিভিন্ন প্রকার সাইজিং ম্যাটারিয়ালস

শ্বেতসারযুক্ত উপাদান (Adhesive substance)
একে মাড়/সাইজের মূল উপাদানও বলা হয়। এ উপাদানের জন্য মাড় আঠালো হয়। এ শ্বেতসারযুক্ত উপাদানের সাথে পানি মিশ্রিত করে তাপ প্রয়োগ করলে আঠালো পদার্থের পেস্ট (Paste) এ পরিণত হয় । উদাহরণ- মেইজ স্টার্ট (Maise starch), তেঁতুলের বিচির পাউডার (Tamarind seed powder), টপিওকা স্টার্চ (Topioca starch), ময়দা (Flour ), সাঞ্চ স্টার্চ (Sagoo starch), আলুর প্যালো (Potato starch), রাইচ স্টার্চ (Rice starch) ইত্যাদি প্রাকৃতিক স্টার্চ। আবার সিএমসি (Carboxy Methyl Cellulose), পিডিএ (Polyvenyle Alcohol), পলিঅ্যাক্রাইলিক অ্যাসিড ইত্যাদি কৃত্রিম স্টার্চ বা অ্যাডহেসিভ।

সফেনিং এজেন্টস (Softening Agents) 
সফেনিং এজেন্টকে কোমল রাখার উপাদানও বলা হয়। টানা সুতা কখনও কখনও শক্ত, অমসৃণ ও ভঙ্গুর হয় । এছাড়া ও সুতার খসখসে ভাব ও নমনীয়তা দূর করার জন্য সফেনিং এজেন্ট ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ- মাটন ট্যালো (Mutton tallow), টেলটেক্স (Teltex), নারিকেল তেল (Coconut oil), ক্যাস্টর অয়েল, তিলের তেল, তালের তেল, তুলার বীজের তেল, জলপাই এর তেল, রেডির তেল, প্যারাফিন ওয়াক্স (Parafin wax), চায়না মোম (China wax), সুগার ক্যান ওয়াক্স (Sugarcane wax), ওয়াক্স (Wax), সফট সোপ (Soft soap) ইত্যাদি।

হাইগ্রোসকোপিক এজেন্টস (Hygroscopic Agents) 
সুতাকে আর্দ্র রাখার জন্য হাইগ্রোসকোপিক এজেন্ট ব্যবহার করা হয়। আর্দ্র রাখার উপাদানসমূহ বাতাস হতে জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে থাকে। এ এজেন্টস ব্যবহার করার ফলে টানা সুতা অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণ আর্দ্রতা শোষণ করে সুতাকে নমনীয় রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণ- ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2), ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2), গ্লিসারিন, জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), ডাই ইথিলিন গ্লাইকল, সরবিটল ইত্যাদি।

অ্যান্টিসেপটিক এজেন্টস (Anticeptics ) 
একে বাংলায় প্রতিষেধক উপাদান বলা হয়। মিলডিউ অর্থাৎ ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিষেধক উপাদান ব্যবহার করা হয়। সাধারণত সমস্ত স্টার্চই ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্ক্ষা থাকে। কাজেই কার্বন সুতা সাইজিং করার প্রয়োজনে স্টার্চ -এর পাশাপাশি অ্যান্টিসেপটিকস প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়। উদাহরণ- জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), কপার সালফেট (CuSO4), সেলিসাইটিক অ্যাসিড (CaHa(OH)COOH), সোডিয়াম সিলকো ক্লোরাইড, বিটা নেপথলস, কার্বোলিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

নিউট্রালাইজিং এজেন্টস (Neutralizing Agents) 
মাড় দ্রবণ প্রস্তুত করার সময় দ্রবণের (PH) মাত্রা পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাজেই দ্রবণকে নিউট্রাল করার জন্য নিউট্রালাইজিং এজেন্টস যোগ করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত দ্রবনের (PH) মাত্রা ৬.৮ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত অল্প অল্প করে এ এজেন্টস ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ- সোডা অ্যাশ।

অ্যান্টিফোমিং এজেন্টস (Antifoaming Agents) 
মাড় দ্রবণ অথবা মাড় পেস্ট প্রস্তুত করার সময় দ্রবণে ফেনা হবার সম্ভাবনা দেখা যায়। যার ফলে উক্ত দ্রবণ টানা সুতায় প্রয়োগ করতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এ জন্য মাড় দ্রবণে অ্যান্টিফোমিং এজেন্টস ব্যবহার করা হয় । যা মাড়, পেস্ট বা দ্রবণে ফেনা উৎপন্ন হতে বাধা প্রদান করে । উদাহরণ-অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH), কেরোসিন, টার্পেন্টাইন, পাইন অয়েল, অ্যামাইল, অ্যালকোহল, সিলিকন ডিফোমার ইত্যাদি ।

টিনটিং বা রঞ্জক উপাদান (Tinting of Colouring Agents ) 
টানা সুতা ও উৎপাদিত কাপড়ের প্রাকৃতিক রংকে নিউট্রালাইজড করার জন্য এ এজেন্ট ব্যবহৃত হয়। সাধারণত যে সমস্ত কাপড় যে অবস্থায় বিক্রি হবে উক্ত কাপড় প্রস্তুত করতে টানা সুতায় মাড় দেওয়ার সময় এ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। উদাহরণ- টিনাপল (Tinapol) আলট্রা মেরিন ব্লু, অ্যাসিড ডাই ও অপটিক্যাল ব্রাইটেনিং এজেন্ট ইত্যাদি।

ওয়েটিং এজেন্টস (Weighting Agents) 
সুতা ও উৎপাদিত কাপড়ের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য যে পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলোই ওয়েটিং এজেন্ট। শুধু গ্রে অবস্থায় বিক্রি করার জন্যই এ ধরনের এজেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উদাহরণ- চায়না ক্লে (China clay), চক বা খড়িমাটি (CaCO3), ফ্রেঞ্চ চক (French Chalk), ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ( MgSO4), সোডিয়াম সালফেট (Na2SO4), ম্যানেশিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) ইত্যাদি।

সতর্কতা 
• সাইজিং -এর প্রতিটি উপাদানের গুণাগুণ ভালোভাবে জানতে হবে। 
• কোনো উপাদান কী কাজ করে সে বিষয়ে জ্ঞান থাকা ভালো। 
০। পরবর্তী সাইজ নির্বাচনের সময় সতর্ক থাকতে হবে। 

মন্তব্য

Content added || updated By

সংজ্ঞা : 

রেসিপি

সাইজিং করার জন্য সাইজের কোন উপাদান নেওয়া হবে এবং উপাদানের কোনটি কতটুকু পরিমাণ নেওয়া হবে এটাই সাইজিং -এর রেসিপি। সাইজিং -এর রেসিপি নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ ঃ 

• যে সুতাকে সাইজিং করা হবে তার ধরন 

• উপকরণের মূল্য 

• ভিসকোসিটি অর্থাৎ আঠালোভাবে স্থায়িত্ব 

০ আঠালো জাতীয় পদার্থ 

০ ডিসাইজিং -এর সময় সহজেই অপসারণের যোগ্যতা

উপরোক্ত মাড় দ্রবণ বা পেস্ট সাধারণত ১০০ ভাগ কটন সুতার জন্য প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। 

সতর্কতা 
০ সাইজের নির্বাচনে সঠিক উপাদান বাছাই করা। 
০ আঠালো উপাদান ও প্রতিষেধক উপাদান যেন সঠিক হয়। 

উপসংহার /মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা

হ্যান্ডলুম ফ্যাক্টরি বা কুটির শিল্পের তাঁতিদের মধ্যে হ্যান্ড সাইজিং প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে মাড়ের শ্বেতসার হিসেবে খৈ, চালের গুঁড়া এবং ময়দাই সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে খুব অল্প সুতার ক্ষেত্রে ভাতের মাড়ও ব্যবহার করা হয়।

উপাদান 
মিহি সুতার জন্য থৈ -এর মাড়ই উৎকৃষ্ট। মোটা বা মাঝারি সুতার জন্য চালের মাড় উৎকৃষ্ট। সিদ্ধ চালের চেয়ে আতপ চাল হলে ভালো হয়। কখনও কখনও তাঁতিরা মাড়ের সাথে একটু চুন, এক/আধ ফোঁটা কার্বলিক অ্যাসিড, ফরমালডিহাইড অথবা জিংক ফ্লোরাইড ব্যবহার করে।

উপরোক্ত সাইজিং উপাদানের কাজ

থৈ বা চালের গুঁড়া আঠালো পদার্থের জন্য চুন ব্যবহার করার ফলে মাড় আরও একটু আঠালো হয় এবং ফাঁকে নষ্ট করে না। তুঁতে ব্যবহার করার কারণে টানা সুতা পোকায় কাটে না। কার্বনিক অ্যাসিড ও জিংক ক্লোরাইড ব্যবহার করায় ইঁদুরে কাটে না ও টানায় মিলডিউ ধরে না।

প্রস্তুতপ্রণালি 
পরিমিত পরিমাণ থৈ একটি পাত্রে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখবে। পরে ঐ পাত্র থেকে থৈ উঠিয়ে অন্য পাত্রে ভালো করে চটকাতে হবে। চটকানো শেষ হলে কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিয়ে মণ্ড বের করবে। মণ্ডের সাথে অন্য কেমিক্যাল মিশিয়ে যখন বেশ আঠালো বোধ হবে তখন টানা সুতায় প্রয়োগ করতে হবে।

সতর্কতা

• মাড় প্রস্তুত করার সতর্ক থাকতে হবে 
• মাড় যাতে ঘন আঠালো হয় তার প্রতি যত্নবান হতে হবে। 
• কৃষ্ণ মাতৃ বেশিদিন ফেলে রাখা যাবে না।

Content added By

Promotion