এসএসসি(ভোকেশনাল) - আর্কিটেকচার ড্রাফট উইথ ক্যাড-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

ট্রেঞ্চ প্ল্যান (Trench Plan): মাটির নিচে ফুটিং স্থাপন করার জন্য প্রয়োজনীয় মাটি কাটার মাপসহ যে ড্রয়িং বা প্ল্যান করা হয় তাকে ট্রেঞ্চ প্ল্যান (Trench Plan) বলে ।

কলাম (Column): ফ্রেম স্ট্রাকচার ইমারতে বা কাঠামোতে খাঁচা তৈরি করার জন্য যে লম্ব বা খাড়া মেম্বার আরসিসি দিয়ে তৈরি করা হয় তাকে কলাম (Column) বলে। কাঠামোর মাটির উপরের সকল লোড কলামের মাধ্যমে মাটির নিচে স্থানান্তরিত হয়। বস্তুত এর উপরেই ভর দিয়েই কাঠামোটি দাঁড়িয়ে থাকে । 

বিম (Beam): ফ্রেম স্ট্রাকচার ইমারতে বা কাঠামোতে খাঁচা তৈরি করার জন্য যে অনুভূমিক মেম্বার আরসিসি দিয়ে তৈরি করা হয় তাকে বিম (Beam) বলে। কাঠামোর মাটির উপরের সকল লোড বিমের মাধ্যমে সমন্বিত হয়ে অর্থাৎ ছাদের, ছাদের উপর অবস্থিত সকল চলন্ত বা স্থির, স্থায়ী বা অস্থায়ী লোড, বিমের নিজস্ব লোড ইত্যাদি বিমে বহন করে কলাম দিয়ে মাটির নিচে স্থানান্তরিত করে। বস্তুত বিম কলামসমূহকে নিজ অবস্থানে সুদৃঢ়ভাবে আটকে রাখে কাঠামোটি দাঁড়িয়ে থাকে । 

গ্রেড বিম (Grade Beam): এক প্রকার বিম যা প্লিন্থ লেভেলের নিচে তৈরি করা হয়। নিচ তলার উপরের বিম থেকে নিচের ফুটিং পর্যন্ত দূরত্বের পরিমাণ বেশি হলে কলামের ফুটিংসমূহ যেন উপরের চাপে সরে না যায় এজন্য শক্তভাবে ফ্রেমটিকে ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। 

স্ল্যাব (Slab): যে অনুভূমিক পুরু তল এর সাহায্যে ইমারতে পর পর ফ্লোর এর মধ্যে ভাগ করা হয় তাকে স্ল্যাব (Slab) বলে । এর উপরে দেয়াল, কলাম, আসবাব ও মানুষ ইত্যাদি অবস্থান করে।

ফুটিং (Footing): ইমারতের মাটির নিচের অংশকে ফাউন্ডেশন বলে যার উপর ভর করে কাঠামাটি দাঁড়িয়ে থাকে । আর ফাউন্ডেশনের সবচেয়ে নিচের অংশ যার মাধ্যমে ইমারতের ওজন মাটিতে স্থানান্তর করা হয় তাকে ফুটিং (Footing) বলে। এটি ইটের বা কংক্রিটের তৈরি করা হতে পারে। 

পাইল (Pile): যখন ভূমিতলের নিচের মাটি নরম থকে এবং কাঠামোর লোড বহনের অনুপযুক্ত হয় তখন কাঠামোর ওজনকে মাটির অনেক গভীরের স্তরে পৌঁছানোর জন্য যে লম্ব কাঠামো (Vertical Member ব্যবহার করা হয় তাকে পাইল (Pile) বলে । 

ক্রাংক বার (Crank Bar): বিম বা ছাদের মাঝামাঝি অংশে উপর থেকে চাপ বেশি পড়ে। কিন্তু প্রান্তে সাপোর্ট থাকায় প্রান্তসমূহ উপর দিকে এবং মাঝের অংশ নিচ দিকে বেঁকে যেতে চায়। ফলে প্রান্তের সাপোর্টে থেকে ভিতর দিকে এবং মাঝ থেকে প্রান্তের দিকে একটি অংশে কোণাকুণি টান বলের বা ডায়াগানোল টেনশন সৃষ্টি হয়। যে কারণে বিম বা ছাদের এই অংশে ফাটল দেখা দেয়। টেনশন বা টান বল এড়ানারে জন্য সাপোর্ট এর দিকে উপরে এবং মাঝের অংশে নিচের দিকে রড বেশি করে দেয়া হয়। আর ডায়াগানোল টেনশন বল প্রতিহত করার জন্য উপরের রডকে ডায়াগোনাল টেনশন বলের সাথে লম্ব করে কোণাকুণিভাবে নিচের দিকে নামিয়ে আনা হয় । অর্থাৎ বিমে বা ছাদে সৃষ্ট ডায়াগানোল বা কোণাকুণি বলকে প্রতিহত করার জন্য যে সকল রড মাঝের অংশে নিচের থেকে উভয় পাশে সাপোর্ট থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ৪৫ কোনে বাঁকা করে উপরে উঠানো হয় তাকে ক্র্যাংক বার (Crank Bar) বলে । 

আরসিসি (RCC): আরসিসি এর পূর্ণনাম রিইনফোর্সমেন্ট সিমেন্ট কংক্রিট (Reinforcement Cement Concrete)। কংক্রিট এক ধরনের নির্মাণ উপকরণ বা কৃত্রিম পাথর বিশেষ যা সিমেন্ট, বালু এবং পানি সহযোগে তৈরি করা হয় এবং এটিকে আরো শক্তিশালী করার জন্য এতে রড ব্যবহার করা হয়। কংক্রিট ও রড সহ তৈরি এই যৌগিক পদার্থটিকে সংক্ষেপে আরসিসি (RCC) বলে।

স্টিরাপ (Stirrup): বিমের রডসমূহকে যথাস্থানে ধরে রাখার জন্য এবং অতিরিক্ত আরোপিত বলকে প্রতিহত করার জন্য বিমের রডের চারপাশে চিকন রডকে চারকোনা চুরির ন্যায় তৈরি করে রডসমূহকে শক্ত করে বাধা হলে তাকে স্টিরাপ (Stirrup) বলে। সাধারণত সাপোর্টের (কলাম বা ওয়াল) দিকে ঘন ও মঝের দিকে ফাঁকা করে বসানো হয় । কলামে একই কারণে ব্যবহৃত চুড়ির ন্যায় রডকে টাই (Tie) বলে।

কভারিং (Covering): আরসিসি দিয়ে নির্মিত কাঠামোর রডে যেন মরিচা না পড়ে বা আবহাওয়ায় নষ্ট না হয় সেজন্য বাতাস, পানি বা জলীয় বাষ্প বা আর্দ্রতা ইত্যাদি মুক্ত রাখার জন্য রডের বাইরে কংক্রিটের একটি আবরণ তৈরি করা হয়। আরসিসি কাঠামোর রডের বাইরে কংক্রিটের তৈরি এই আবরণকে কভারিং (Covering) বলে। বিম, ছাদ, কলাম, ফুটিং ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর পরিমাণ বিভিন্ন হয়ে থাকে ।

বিমের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ক্লিয়ার কভারিং ব্যবহার করা হয়—

  • সাইড কভারিং: 25 মি.মি. - 37 মি.মি. বা 1" -½ "
  • টপ কভারিং: 25 মি.মি. - 37 মি.মি. বা 1" -½ "
  • বটম কভারিং: 37 মি.মি. - 50 মি.মি. বা 1½" - 2"
  • প্রান্ত কভারিং: 37 মি.মি. - 50 মি.মি. বা 1½" -2"

গার্ডার (Girder): এক ধরনের বিম। যখন কোনো বিমের এক প্রান্তে কলাম দেয়ালের উপর ও অন্য প্রান্ত বিমের উপরে ঠেস দেয়া বা সাপোর্ট করা থাকে তখন থাকে গার্ডার (Girder) বলে।

টপ বার (Top Bar): বিমের উপরের দিকে (মাঝের অক্ষ থেকে) যে রড ব্যবহার করা হয় তাকে টপ বার ( Top Bar) বলে।

বটম বার (Bottom Bar): বিমের নিচের দিকে (মাঝের অক্ষ থেকে) যে রড ব্যবহার করা হয় তাকে বটম বার (Bottom Bar) বলে ।

এক্সট্রী টপ (Extra Top) বা এক্সট্রা বটম (Extra Bottom): কখনও কখনও বিমে আরোপিত অতিরিক্ত লোডের জন্য সাধারণত সাপোর্ট এর কাছে টপ ও বটম বার ছাড়াও আরও অতিরিক্ত রড ব্যবহারের প্রয়োজন পরে। এসব অতিরিক্ত রডকে এক্সট্রা টপ (Extra Top) বা এক্সট্রা বটম (Extra Bottom) বলে। একই সারিতে বসানোর জায়গা না থাকলে নিচের সারির একটু উপরে এক্সট্রা বটম এবং উপরের সারির একটু নিচে এই এক্সট্রা টপ বার ব্যবহার করা হয়।

Content added By