এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

চিংড়ির পুকুরে অতি সতর্কতার সাথে খাদ্য প্রয়াগ করা হয়। খাদ্য প্রয়োগের মাত্রা বেশি হলে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেশি হয় অন্যদিকে পানি দূষণেরও সম্ভাবনা থাকে। একটি পুকুরে কী পরিমাণ খাদ্য প্রয়াগ করা হবে তা নিম্নোক্ত সূত্রের সাহায্যে নির্ধারণ করা যায়।

প্রতিদিন প্রদেয় খাবারের পরিমাণ= (মোট মজুদকৃত চিংড়ি) × { বেঁচে থাকার হার (%) × প্রতিটি চিংড়ির গড় ওজন × খামারে প্রয়োগের মাত্রা (%) } উদাহরণস্বরূপ, একটি পুকুরে

মোট মজুদকৃত চিংড়ির পরিমাণ = ১,০০,০০০টি বেঁচে থাকার হার = ৭০%; প্রতিটি চিংড়ির গড় ওজন = ২০ গ্রাম, খাবার প্রয়োগের মাত্রা = ৬% (মোট চিংড়ির ওজনের)

এক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রদেয় খাবারের পরিমাণ = ১,০০,০০০ × ৭০ গ্রাম × ২ × ৬/১০০  = ৮৪,০০০ গ্রাম = ৮৪ কেজি

গলদা চিংড়ি নিশাচর। এরা অন্ধকারে চলাচল ও খাদ্য গ্রহণ করতে পছন্দ করে। সেজন্যে কার্প-চিংড়ি মিশ্রচাষের পুকরে প্রতি দিনের প্রয়োজনীয় খাবার দুইভাগে ভাগ করে এক ভাগ সকাল ৬ টার আগে এবং আরেকবার সন্ধ্যা ৬ টার পরে প্রয়াগে করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যেকবার প্রয়োগের পূর্বে খাবারকে আবার দুইভাগ করে অর্ধেক ফিডিং ট্রে এবং বাকী অর্ধেক পুকুরের কয়েকটি জায়গা পাট কাঠি দ্বারা চিহ্নিত করে সেখানে দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, চিংড়ির জন্য খাদ্য দেয়ার সময় পুকুরের তলদেশ থেকে এক ফুট উপরে ফিডিং ট্রে স্থাপন করতে হবে।

ফিডিং ট্রে পর্যবেক্ষণের পর চিংড়ির খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমে গেলে খাদ্য সরবরাহের পরিমাণ কমাতে হবে এবং কী কারণে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমে গেল তা জেনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অবস্থার উন্নতি হলে খাবার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন কারণে চিংড়ির খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমে যেতে পারে। কারণগুলো নিম্নরূপঃ

  •  পুকুরে হঠাৎ ফাইটোপ্লাংকটন অধিক মাত্রায় মারা গেলে,
  • দীর্ঘদিন পুকুরের পানির পরিবর্তন করা না হলে,
  • পুকুরের পানির পিএইচ মাত্রা কমে গেলে,
  • পুকুরের তলদেশের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেলে,
  • চিংড়ি রোগাক্রান্ত হলে,
  • চিংড়ি খোলস পাল্টালে,
  • দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ২.৫ পিপিএম এর নিচে নেমে গেলে, এবং
  • পানির তাপমাত্রা ৩০° সে. এর উর্ধ্বে বা ২০° সে. এর নিচে নেমে গেলে।

খাদ্য প্রয়োগে সতর্কতা

  • প্রতিদিন একই সময়ে একই জায়গায় খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে;
  • মাঝে মাঝে ফিডিং ট্রে উঠিয়ে খাবার গ্রহণের পরিমাণ যাচাইপূর্বক প্রয়োগ মাত্রা পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে' এবং 
  • পানি অতিরিক্ত সবুজ হলে খাদ্য প্রয়োগ মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে বা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে।
Content added By