এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল মেকানিক্স- ২ - দ্বিতীয় পত্র | NCTB BOOK

আমরা দৈনন্দিন নানাবিধ প্রয়োজনে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী বা কার্যবস্তুকে প্রয়োজনীয় আকার ও আকৃতি প্রদানের জন্য নানাবিধ যন্ত্রপাতি /সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকি। জাসরা বাসা-বাড়িতে মাছ, সাংস, স ইত্যাদি প্রক্রিয়া করতে ছুরি, চাকু, ধসুয়া, দা ইত্যাদি ব্যবহার করি। আসবাবপত্র তৈরি ও মেরামত করতে করাত, বাটালী, মাটাস, পলিশ ইত্যাদি ব্যবহার করি আবার দালান-কোঠা ও রাস্তাঘাট নির্মাণে- কোনাল, ৰেলচা, চিচ্ছেল, গ্রাইন্ডার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়াও বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা ও ওয়ার্কশপে- কোন কার্যবস্তুকে হোল বা গর্ত করতে এবং কোন কিছুকে ক্ষয় করে আকৃতি প্রদানের জন্য ড্রিলিং, গ্রাইন্ডিং হইল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা ও ওয়ার্কশপে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্ৰী বা কার্যবস্তুকে হোল/ধর্ষণের মাধ্যমে ক্ষর করে প্রয়োজনীয় আকার ও আকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ড্রিলিং, গ্রাইন্ডিং এর ব্যবহার ও বিভিন্ন বন্ধু ক্ষয় ও মসৃন করার কৌশল সম্পর্কে শিখতে পারব।

Content added By

কোন কিছুকে ক্ষয় করার একটি প্রক্রিয়ার নাম প্রাইন্ডিং; ক্ষয়কারী টুল হিসাবে গ্রাইন্ডিং হুইল ব্যবহার করা হয়। হইল ক্ষয়কারী ও নিজে ক্ষয়রোধী বৈশিষ্ট্য পদার্থ দিয়ে তৈরী হয়। ইহ সাধারনত শক্ত পাথর কণা, কার্বন, কার্বাইড, সংকর ধাতু ইত্যাদি পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। গ্রাইন্ডিং হইলের ধরন অনুযায়ী কোন বন্ধু হতে ধর্ষনের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় পাদার্থ দ্রুত অপসারন করা বার, ঠিক তেমনি কোন অমসৃন তলকে বিভিন্ন মানে মসৃনও করা যায় ।

৩.১.১ গ্রাইন্ডিং হুইল (Grinding Wheel)

গ্রাইন্ডিং হুইল সাধারনত কার্যবস্তুর উপাদানের মসৃনতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সংকর পদার্থের মিশ্রনে তৈরী হয়ে থাকে। গ্রাইন্ডিং হুইলের পরিমাপের ক্ষেত্রে বাহিরের ব্যাস, হুইলের পুরত্ব ও ছিদ্রের ব্যাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যেমন-১৫০ মিমি x ২৫ মিমি x ৩০ মিমি হুইল বলতে বোঝায়- বাহিরের ব্যাস ১৫০ মিমি, পুরুত্ব ২৫ মিমি ও ছিদ্রের ব্যাস ৩০ মিমি ।

৩.১.২ গ্রাইন্ডিং মেশিনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম 

গ্রাইন্ডিং কাজে ব্যবহৃত গ্রাইন্ডিং মেশিন ও হুইলের নিরাপদ অবস্থান দরকার। যে গ্রাইন্ডিং করবে তাকে যেমন ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে, ঠিক তেমনি গ্রাইন্ডিং মেশিনেরও নিরাপত্তা সরঞ্জাম থাকা দরকার। সচরাচর গ্রাইন্ডিং মেশিনের সাথে নিম্নে বর্ণিত সেফটি সামগ্রী সংযুক্ত করা থাকে।

• আই শীল্ড (Eye Shield) ৰা ফেস গাৰ্ড (Face Guard)

• হুই পা (Wheel Guard)

• টুল রেস্ট (Tool Rest )

আই শীল্ড (Eye Shield )

আই শীল্ড অপারেটরের চক্ষুকে হুইলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অ্যারোসিড (Abrasive) কণা এবং ধাতুচূর্ণ হতে রক্ষা করে। আই শীল্ড স্বচ্ছ ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। কার্যবস্তুকে উত্তমরূপে দেখার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আই শীল্ডের নিচের দিকে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। আই শীল্ডের অবস্থান সবসময় কার্যবস্তু এবং অপারেটরের চক্ষুর মধ্যবর্তী স্থানে নিশ্চিত রাখতে হয়।

হইল গার্ড (Wheel Guard)

হইল পার্ড কোন বস্তুকে ঘুরন্ত প্রাইন্ডিং হুইলের সংস্পর্শে আসতে বাধা দেয় এবং হুইলকে বাহ্যিক আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া কোন দুর্ঘটনার কারণে ঘুরন্ত হুইল ভেঙ্গে গেলে উহার ভগ্নাংশ যাতে চারদিকে ছিটে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে হুইল গার্ড সাহায্য করে।

টুল রেস্ট (Tool Rest)

কার্যবস্তুকে টুল রেন্টের উপর রেখে নিরাপদে গ্রাইন্ডিং করা হয়। ইহা কাটিং টুল বা কার্যবস্তুকে নিরাপত্তার সাথে কাজ করতে সাহায্য করে। টুল রেন্ট এবং হুইলের মধ্যে সম্ভাব্য সবচেয়ে কম ফাঁক থাকে; ফলে গ্রাইন্ডিং হুইল টুল রেস্টকে প্রায় স্পর্শ করে ঘুরে কিন্তু কোন রিস্ক থাকেনা।

১.১.৩ গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরির উপাদানসমূহ গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরিতে বন্ডিং পদার্থের সাথে ক্ষয়কারী পদার্থের (Abrasive Material) কণা (Grain) ব্যবহার করা হয়। যেমন-

• অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Aluminum Oxide)

সিলিকন কার্বাইড (Silicon Carbide)

ডায়মন্ড (Diamond) ইত্যাদি।

গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরিতে ব্যবহৃত বন্ডিং পদার্থ যেমন-

• ভিটরিফাইড (Vitrified)

• রেজিনয়েড (Resinoid) 

• সিলিকেট (Silicate)

• লোক (Shellac)

• রাবার (Rubber) ইত্যাদি।

অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Aluminum Oxide)

অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড একটি মজবুত ধারালো বিশিষ্ট অ্যারোসিভ পদার্থ। ইহা দিয়ে তৈরি গ্রাইন্ডিং হুইল উচ্চ টেনসাইল স্ট্রেংথ (Tensile Strength) বিশিষ্ট ধাতুকে ক্ষয় করতে ব্যবহৃত হয়। যেমন-কার্বন কি, অ্যালয় স্টিল, শক্ত ও নরম স্টিল, রট আয়রন, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি। অ্যাব্রোসিভ এর আকার বড় হলে ধাতুকে যত কাটিং বা ক্ষয় করা যায় এবং ছোট হলে ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। ফলে কার্যবস্তুর পৃষ্ঠতল অপেক্ষাকৃত বেশি মসৃন ও সুন্দর করা যায়।

সিলিকন কার্বাইড (Silicon Carbide)

সিলিকন কার্বাইড অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড থেকে অনেক শক্ত এবং ভঙ্গুর হয়। এর সাহায্যে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডকেও কাটা যায়। ইহা কম টানা বল (লো টেনসাইল স্ট্রেংথ) বিশিষ্ট খাত; যেমন-ঢালাই লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রাবার, টাংস্টেন কার্যাইড, মার্বেল, সিরামিক, ম্যাগনেসিয়াম, প্লাস্টিক, ফাইবার ইত্যাদি গ্রাইন্ডিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

ডায়মন্ড (Diamond)

তারমন্ত সাধারণত দুই প্রকারের হয়-

• কৃত্রিম ডায়মন্ড (Artificial Diamond)

• প্রাকৃতিক ডায়মন্ড (Natural Diamond) প্রাকৃতিক ডায়মন্ড খনি থেকে পাওয়া যায় এবং ইহার মূল্য খুব বেশি হয়। এর সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার মুল্যবান এবং আকর্ষণীয় অলংকার সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। কৃত্রিম ডায়মন্ড শিল্প কারখানায় তৈরি করা হয় ফলে এর মূল্য কম। এর গুণগত মান প্রায়ই একই রূপ বিধায় গ্রাইন্ডিং হইল উৎপাদন শিল্পে প্রাকৃতিক ডায়মন্ডের তুলনায় কৃত্রিম ডায়মন্ডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে এবং বেশি সমাদৃত হচ্ছে। ডায়মন্ড সবচেয়ে শক্ত পদার্থ । মিতব্যয়িতার জন্য ডায়মস্ত হুইল সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম ডায়মন্ড কণা ও বন্ডিং মেটেরিয়্যালের সাহায্যে তৈরি করা হয়।

Content added By
Please, contribute to add content into গ্রাইন্ডিং প্রক্রিয়া.
Content