কিছু কিছু দুর্ঘটনা ব্যক্তিগত সাবধানতার অভাবে ঘটে থাকে। এরূপ দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে হলে প্রতিটি কারিগর, শিক্ষার্থী বা ওয়ার্কশপ কর্মীকে ওয়ার্কশপে কাজের সময় যেসব ব্যক্তিগত সাবধানতা মেনে চলতে হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো : 
১. সাধারণত ওয়ার্কশপের দেওয়ালে নিরাপত্তার তালিকা ঝুলানো থাকে । তালিকা অনুযায়ী সেসব নিয়ম-কানুন পালন করতে হবে।

২. নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করা:

ফার্ম মেশিনারি শপে কাজ করার সময় নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করতে হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যন রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রকার নিরাপত্তা পোশাক রয়েছে। যেমন-

জ্যাপ্রোন:
শক্ত মোটা কাপড় অথবা চামড়ার ওভারকোটের মতো গায়ে দেওয়ার পোশাক। ঢিলে-ঢালা পোশাক বা কাপড় পরিধান করে ওয়ার্কশপে কাজ করা যাবে না। ফুল হাতা শার্ট হলে শার্টের আভিন গুটিয়ে কনুই এর উপর রাখতে হবে।

সেফটি গগলস : 
কোনো কিছুর আঘাত থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য সেফটি পালস ব্যবহার করা হয়।

হেলমেট: 
কোনো ভারি বস্তুর আঘাত থেকে মাথা ও মুখমণ্ডল রক্ষা করার জন্য হেলমেট ব্যবহার করা হয় ।

হ্যান্ড গ্লোভস : 
কোনো ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তুর আঘাত বা ধর্ষণ থেকে হাতকে রক্ষার জন্য হ্যাত গ্লোভস ব্যবহার করা হয়।

সেফটি বুট বা সেফটি সু-
সু ভীষ্ম ধারালো বস্তু বা ভারি বস্তুর আঘাত থেকে পা-কে রক্ষার জন্য সেফটি বুট বা সু ব্যবহার করা হয়।

ইয়ার প্রোটেক্টর - 
কানকে শব্দ থেকে নিরাপদ রাখার জন্য উভ কানে ইয়ার প্রোটেক্টর ব্যবহার করা হয়।

গ্যাস মুখোশ 
স্প্রে পেইন্টিং কাজের সময় ফুসফুসের নিরাপত্তার জন্য গ্যাস মুখোশ ব্যবহার করা হয়।

ফাস্ট এইড বক্স :
হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে যাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায় তার জন্য কাজের পাশে সুবিধা স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স বা ফার্স্ট-এইড বক্স রাখতে হবে।

৩. ফার্ম মেশিনারি শপে কাজের সময়, কাজের উপযোগী সঠিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। অর্থাৎ যে কাজের জন্য যে যন্ত্র উপযুক্ত সেই নির্দিষ্ট যন্ত্র নির্বাচন করে ব্যবহার করতে হয়। তা না হলে সঠিকভাবে কাজ করা যায় না এবং তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। 
৪. যে যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা হবে তা যেন অবশ্যই ত্রুটিযুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কাজের অনুপোযোগী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলে নানা প্রকার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে । 
৫. প্রতিটি কাজ করার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি আছে। ওয়ার্কশপে কাজের সময় সঠিক নিয়ম জেনে সেই পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। নিয়মের বাইরে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। 
৬. যে কোনো কাজের সময় সেই কাজের প্রতি গভীরভাবে মনোনিবেশ করা অত্যন্ত জরুরি। অন্যমনস্ক হয়ে কাজ করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 
৭. ফামর্শপে ধূমপান করা যাবে না। কারণ, ধূমপানের পর ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের টুকরা হতে অনেক সময় আগুনের সূচনা হয় । 
৮. যে কোনো চলমান বস্ত্র থেকে নিরাপদ দূরুত্বে অবস্থান করে কাজ করতে হবে। 
৯. ফার্মশপে তাড়াহুড়া করে বা বে-খেয়ালে হাঁটা যাবে না । 
১০. ওয়েল্ডিং কাজের সময় ফেস-শিল্ড ব্যবহার করতে হবে। 
১১. কোনো মেশিনে কাজ করার আগে সেই মেশিনে সম্বন্ধে ভালো ধারণা নিতে হবে। এই মেশিনে কি ধরনের ঝুঁকি আছে তা আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। 
১২. চালু অবস্থায় কোনো মেশিন মেরামত করা বা মেশিনে পিচ্ছিল করার পদার্থ বা জ্বালানি দেওয়া উচিত নয় । 
১৩.ফার্ম মেশিনারি শপের মেঝেতে তেল, ইঞ্জিন অয়েল বা গ্রিজ অথবা এধরনের কোনো পিচ্ছিল পদার্থ যাতে না থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 
১৪. পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি দাহ্য পদার্থে আগুন লাগলে তাতে পানি দেওয়া যাবে না। অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভাবার চেষ্টা করতে হবে। 
১৫. যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে তা সুপারভাইজারকে বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে ।
১৬. ফার্ম মেশিনারি শপে কাজের স্থানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হয়। কম আলো-বাতাস বা অন্ধকারে কাজ করলে কাজ ভালো হবে না এবং যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে প্রতিটি ফার্মাণে অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্র প্রস্তুত রাখতে হয়। এ জন্য এক বালতি পানি, এক বালতি বালি এবং একটা ফারার এক্সটিংগুইশার ৰা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা অপরিহার্য্য ।

অগ্নি নির্বাপক দ্রব্যাদির ব্যবহার (The use of fire extinguisher producta) আগুন লেগে দুর্গটনা ঘটলে তা নিবারণ করার জন্য নানা প্রকার অগ্নি নির্বাপক দ্রব্য বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। আগুন নেভানোর দ্রব্য, যন্ত্রপাতি ও কলা কৌশল সম্পর্কে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভালো জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিম্নোক্ষভাবে অগ্নি নির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যেতে পারে:

১) আগুন নেভানোর জন্য প্রোসি ব্যবহার করা যায় - 
(ক) পানি 
(খ) ৰালি 
(গ) কার্বন-ডাই-অক্সাইড 
(ঘ) সোফা এসিড 
(ঙ) কোষ বা কেনাল 
(চ) প্যাসপ্রেসার

২) কাঠ, কাগজ, কাপড় ইত্যাদিতে আগুন লাগলে তা নিভানোর জন্য পানি ব্যবহার করতে হয়। 
৩) তেল, প্লিজ বা রং এর আগুন নিভানোর জন্য বালি ব্যবহার করতে হয়। 
৪) তরল দাহ্য পদার্থ বা বৈদ্যুতিক আঞ্চন দিতানোর জন্য শুকনা পাউডার বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করতে 
৫) ফারার এক্সটিংগুইশার এর সাহায্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফোম ব্যবহার করতে হয়। চিরে একটা ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার দেখানো হলো। 
৬) প্রতিটি কার্যশপে অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্র প্রত রাখতে হয়। এ জন্য এক বালতি পানি, এক বালতি বাল এবং একটা কারার এক্সটিকেইশার বা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা অপরিহার্য ।

Content added || updated By