এসএসসি(ভোকেশনাল) - ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

যখন ধাতব পাতের বা জবের পুরুত্ব বৃদ্ধি পায় তখন তার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে ভালো পেনিট্রেশন (Penitration) হয় না ১.৫ মিলিমিটার হতে ৬ মিলিমিটার পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলেও কাজ চলতে পারে, তবে ৬ মিলিমিটার পুরুত্বের বেশি সকল জবের পার্শ্বদেশ অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে। উপযুক্ত ভাবে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে জোড়ার শক্তি সন্তোষজনক হবে না এবং জোড়া বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ।

কোন জোড়ের পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে বিবেচনা করতে হবে সেটা কোন পদার্থের তৈরি, কী প্রকারের জোড়া হবে কোন পদ্ধতির ওয়েল্ডিং করা হবে ইত্যাদি।

Content added By

বিকৃতি বিহীন নিখুঁত জোড় পাওয়ার বিষয়টি পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির উপর অনেকখানি নির্ভরশীল যখন ধাতব বা জবের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় তখন তা পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে ভালো পেনিট্রেশন হয় না বা জোড় প্রস্তুতিও নিখুঁত হয় না। দুই খণ্ড ধাতুকে পাশাপাশি বা মুখোমুখি রেখে ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে বাট ওয়েল্ডিং বলে। খণ্ডদ্বয়ের জোড় হলে ওয়েল্ডিং এর পূর্বে পার্শ্বদেশ ঢালু করে নিতে হয় এবং ওয়েল্ডিং করার সময় পাতদ্বয়ের মাঝখানে নিয়ম মোতাবেক ফাঁক রাখতে হয়। তৃতীয় ধাতু (Filler Metal) ও খণ্ডদ্বয়ের প্রান্ত সামান্য গলে গিয়ে এ ঢালু এবং ফাঁক পূরণ করে নেয় এবং এভাবে ওয়েল্ডিং কাজ সম্পন্ন হয়। ১.৫ মিমি পুরু ধাতুর পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলেও কাজ চলতে পারে, তবে ও ৬ মিমি পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে জোড়ার পার্শ্বদেশ অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে।

উপযুক্তভাবে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে জোর শক্তি সন্তোষজনক হবে না এবং জোড়ার বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। জোড়ের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে উলেখ্য যে, পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির মুখ্য কাজ হলো গ্রুভ বা খাঁজ, লেভেল, সিঙ্গেল ভি, ডাবল ভি, পিছন দিকে সামান্য চেমফারিং করা ইত্যাদি। আর জোড় স্থান প্রস্তুতির মুখ্য উদ্দেশ্য হলো- উভয় প্লেটকে সমান অথবা জোড়া রেখা (Line) রেখে ফাঁক স্থানটি রক্ষা করা। এর প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস একটু এদিক সেদিক হলেই বিকৃতি অনিবার্য, সুতরাং প্রত্যেক পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখে ওয়েল্ডিং কাজ সমাধান করা উচিত।

Content added By

(ক) গ্রাইন্ডিং (Grinding )

(খ) ফাইলিং (Filing)

(গ) চিপিং (Chiping)

(ঘ) আর্ক কাটিং (Are Cutting )

(ঙ) গ্যাস কাটিং (Gas Cutting) 

(চ) শিয়ার মেশিনে কাটিং (Shearing) 

(ছ) প্লাজমা আর্ক কাটিং (Plasma Are Cutting)

(জ) গাউজিং (Gauging )

কখনও কখনও জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির কাজ একাধিক পদ্ধতির সমন্বয়ে সম্পন্ন করা হয়। যেমন গ্যাস কাটিং এর পর ফাইলিং গ্রাইন্ডিং অথবা চিপিং এর পর ফাইলিং গ্রাইন্ডিং করা হয়।

Content added By

(ক) গ্রাইন্ডিং করেঃ

ছোট আকৃতির জবগুলিকে হাতে ধরে গ্রাইন্ডিং মেশিনে গ্রাইন্ডিং করে নিলেই চলে। কিন্তু বড় জব অর্থাৎ যে জবকে নাড়ানো, চড়ানো অসুবিধাজনক সেখান প্রটেবল হ্যান্ড গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে কাজ করা যাবে।

(খ) ফাইলিং করেঃ

জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতিতে এটি অত্যন্ত উপযুক্ত পদ্ধতি। যে জবকে ভাইসে বাঁধা সম্ভব সেটিকে ভাইসে বেঁধে ফাইল দিয়ে ধাতুক্ষয় করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা হয়।
কিন্তু ভাইসে বাধা না গেলে জবকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে ফাইলিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা যায়।

(গ) চিপিং করেঃ

মোটা জব অর্থাৎ বেশ খানিকটা ধাতু যেখানে কেটে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে সেখানে চিপিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হয়। এ পদ্ধতিতে কোল্ড চিজেলের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ধাতু কর্তন করতে হয়। কর্তনের পূর্বে অবশ্যই যে স্থানের মেটাল কাটতে হবে সে স্থানে ভালোভাবে মার্কিং করে নিতে হবে। চিপিং করার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাইন্ডিং অথবা ফাইলিং করার প্রয়োজন হয়।

(ঘ) আর্ক কাটিং পদ্ধতিঃ

আর্ক ওয়েল্ডিং এ যেমন ধাতু জোড়া দেওয়া হয় তেমনি কাটাও যায়। এ পদ্ধতিতে কাটার সময় কারেন্টের পরিমাণ ওয়েল্ডিং করার সময়ের চেয়ে বেশি লাগে এবং কাটার কাজে ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয় তার ব্যাসও ৪ মিলিমিটার এর কম হওয়া উচিত নয়। ওয়েল্ডিং পদ্ধতির মত আর্ক কাটিং পদ্ধতিতেও মোটা ধাতু কাটতে বেশি ব্যাসের ইলেকটোড এবং চিকন বা অল্প গুরুত্বের ধাতু কাটতে কম কারেন্ট ও খানিকটা চিকন ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হয় ।

(২) অক্সি আর্ক কাটিং পদ্ধতিঃ যে সমস্ত জবের পার্শ্বদেশ সাধারণ মেটালিক আর্ক কাটিং অথবা গ্যাস কাটিং পদ্ধতিতে কাটা অসুবিধাজনক যেমন হাই ক্রোমিয়াম স্টিল, ক্রোমিয়াম নিকেল স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল, বোঞ্জ, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সে সকল ধাতুকে সুবিধাজনকভাবে এ পদ্ধতিতে কাটা যায়। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ইলেকট্রোডের মাঝে দিয়ে যে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় সে অক্সিজেনের চাপে ধাতু কাটার কাজ সম্পন্ন হয়।

(ঙ) গ্যাস কাটিং প্রক্রিয়াঃ 

অক্সিজেন এবং অ্যাসিটিলিন গ্যাসের শিখার সাহায্যে মেশিনে অথবা হাতে ধাতু কর্তন করে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা হয়। গ্যাস কাটিং এর পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিপিং এবং গ্রাইন্ডিং করার প্রয়োজন হয়।

(চ) শিয়ার মেশিনে কেটেঃ অল্প পুরুত্বের ধাতুকে বেঞ্চ শিয়ার মেশিনে কেটেও জোড়া স্থানের পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা যায়, তবে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির জন্য চিপিং ফাইলিং এবং গ্রাইন্ডিং পদ্ধতি খুব বেশি ব্যবহৃত করা হয়। বিভিন্ন রকমের জোড়ার জন্য পার্শ্বদেশ কেমন আকৃতির প্রস্তুত করতে হয় তার চিত্র নিচে দেখান হয়।

Content added By

ধাতুর পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে সঠিকভাবে লে আউট (Layout) করে নেওয়া প্রয়োজন।

  • চিপিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির সময় লক্ষ রাখা উচিত যেন চিজেল ছুটে গিয়ে অন্যের গায়ে না লাগে এবং চিপিং করা ধাতু কণা যাতে অন্য কাউকে আঘাত না করে। তাই তারের তৈরি শিল্ড ব্যবহার করা উচিত।
  • গ্রাইন্ডিং করার সময় সেফটি গগলস পড়া উচিত এবং জবকে শক্তভাবে ধরে গাইন্ডিং করা উচিত।
  • আর্ক কাটিং এর সময় হেলমেট বা হ্যান্ডশিল্ড অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
  •  গ্যাস কাটিং এর সময় ওয়েল্ডিং গগলস পরতে হবে।
Content added By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। ভালোভাবে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে কী হবে ? 

২। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ ।

৩। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করতে হয় ?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

৪। চিপিং করে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির বর্ননা দাও ।

৫। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পদ্ধতিগুলোর মধ্যে কোনগুলো ওয়ার্কশপে বেশি প্রচলিত ?

৬। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির সতর্কতাগুলো লেখ।

রচনামূলক প্রশ্ন

৭। গ্রুভ অ্যাঙ্গেল ও বিভেল অ্যাঙ্গেলের পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির চিত্র অংঙ্কন করে দেখাও।

৮। আর্ক, গ্যাস কাটিং ও চিপিংয়ের সময় নিরাপত্তাগুলো সরঞ্জামাদির ব্যবহারের কারণ উল্লেখ কর । 

Content added By