এসএসসি(ভোকেশনাল) - ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

প্রস্তুতি : এই পর্যায়ে ওয়েল্ডারকে কাজের উপযুক্ত পোশাক পড়তে হবে। কিন্তু আর্ক ওয়েন্ডিংয়ের জন্য হেলমেট পরতে হবে বা হ্যান্ডশিল্ড সংগ্রহ করতে হবে যা কাজের সমর হাতে ধরে চোখকে রক্ষা করা যায়। কার্য বহু প্রস্তুত করার জন্য জবের উপর হতে গ্রিজ, বা তৈল জাতীয় পদার্থ এবং মরিচা বা ধুলাবালি পক্ষিার করতে হবে। মোটা জব হলে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে পুরুত্ব বিবেচনা করে, সিংগল 'ভি' বা ডাবল 'ভি' অনুরূপ সিংগল 'ইউ' বা ডাবল 'ইউ' ইত্যাদি আকৃতিতে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে।

ইলেকট্রোড/কিলার রঙ নির্বাচন : জবের পুরুত্বের উপর ভিত্তি করে আর্ক ওয়েন্ডিং এর জন্য ইলেকট্রোড এবং গ্যাস ওয়েন্ডিং এর জন্য ফিলার রঙ নির্বাচন করতে হবে। মোটা জবের জন্য মোটা ইলেকট্রোড বা ফিলার রড এবং কম পুরুত্বের জবের জন্য চিকন ফিলার রঙ বা ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হবে। চটি দেখে এটা করা যায়।

তাড়াতাড়ি কাজ করার সময় ধাতুর পুরুত্বের সাথে ৩ মিলিমিটার যোগ করে যোগফলকে দুই দিয়ে ভাগ করেও ইলেকট্রেডের ব্যাস মোটামুটি নির্ণয় করা যায়, তবে খুব মোটা জবের ক্ষেত্রে এ নিয়ম চলে না।

কারেন্ট/শিখা নিরূপণ : আর্ক ওয়েল্ডিং এর সময় কারেন্ট নির্বাচন এবং গ্যাস ওয়েন্ডিং এর সময় শিখা নির্বাচন করতে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।

  •  কেমন পুরুত্বের ভাব ওয়েন্ড করতে হবে।
  • কোন ধরনের জোড়া ওয়েল্ড করতে হবে (যেমন বাট ওয়েল্ড করতে যে কারেন্ট লাগে একই পুরুত্বের ফিলেট ওয়েল্ড করতে তার চেয়ে ১০% বেশি কারেন্ট লাগে) এবং হরাইজেন্টাল, ভার্টিকেল ও ওভারহে পজিশনে ফ্লাট পজিশনের চেয়ে কারেন্ট কম সেটিং করতে হয়।
  • কত ব্যাসের ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে কারেন্ট / শিখা নিরূপণ করতে হবে। কোন ধাতুকে ধরেন্ডিং করতে হবে তার উপর ভিত্তি করে শিখা নির্বাচন করতে হবে, যেমনঃ প্রয়োজন হয়। 

টেবিল নং-৭

ধাতুর নামশিখার নাম
মাইল্ড স্টিল, রট আয়রন, কাস্ট আয়রন, স্টেইনলেস, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, সীসা ইত্যাদিনিউট্রাল শিখা
ম্যাঙ্গানিজ স্টিল, পিতল, ব্রোঞ্জ, তামা ইত্যাদিঅক্সিডাইজিং শিখা
নিকেল, মোনেল মেটাল, অ্যালুমিনিয়াম, ইত্যাদিকার্বুরাইজং শিখা

ইলেকট্রোডের ব্যাস বেশি হলে ওয়েল্ডিং এর জন্য বেশি কারেন্ট প্রয়োজন হয়, যেমনঃ

টেবিল -৮

ইলেকট্রোড ডায়াকারেন্ট
১০ গেজি১২০ অ্যামপিয়ার
৮ গেজি১৫০ অ্যামপিয়ার
৬ গেজি২০০ অ্যামপিয়ার
৪ গেজি২৫০ অ্যামপিয়ার
৬ মিলিমিটার৩০০ অ্যামপিয়ার
৮ মিলিমিটার৪০০ অ্যামপিয়ার
৯.৫ মিলিমিটার৫০০ অ্যামপিয়ার

ট্যাক ওয়েল্ড করাঃ

একে ট্যাক দেওয়া বা ট্যাকিং করাও বলা হয়। জব নড়ে গিয়ে বা ওয়েল্ডিং এর প্রচণ্ড তাপে জোড়া বেঁকে না যায় তার জন্য জবের দুই বা তিন স্থানে ছোট ছোট ওয়েল্ড করে নিতে হয়। এ ছোট ওয়েন্ডগুলোর নাম ট্যাক ওয়েল্ড। এগুলো লম্বায় ৩ মিলিমিটার হতে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। 

ওয়েল্ডিং করা

  • সঠিক কোণে ইলেকট্রোড ধরতে হবে।
  •  সুষম গতিতে ইলেকট্রোড টানতে হবে।
  •  আর্কের দৈর্ঘ্য ৩ মিলিমিটারের কাছাকাছি রাখতে হবে।
  •  একটি রান টানার পর আর একটি রান টানতে হলে প্রথম রানটির উপর হতে স্লাগ (Slug) এর আবরণ পরিষ্কার করার পর নতুন রান টানতে হবে এভাবে ওয়েল্ড এর কাজ শেষ করতে হবে।

প্রস্তুতিঃ

কোন কাজের ভালো ফলাফলের প্রথম শর্ত হলো ভালো প্রস্তুতি। সুতরাং ভালো ওয়েন্ডিং এর জন্য ভালো প্রস্তুতির অতি প্রয়োজন।

ইলেকট্রোড / কিলার রঙ নির্বাচনঃ

উপযুক্ত ইলেকট্রোড এবং ফিলার রড নির্বাচন না হলে ওয়েল্ডিং ভালো হবে না, কারণ সঠিক ব্যাসের ইলেকট্রোড বা ফিলার রড দিয়ে সুন্দর ওয়েন্ডিং তৈরি করা যায় ।

কারেন্ট নিরূপণ/শিখা নির্বাচনঃ

নির্দিষ্ট পুরুত্বের ওয়ার্কপিস অথবা নির্দিষ্ট ব্যাসের ইলেকট্রোড বা ফিলার রঙ গলাতে নির্দিষ্ট পরিমাণের কারেন্ট/ শিখা নির্বাচন করতে হবে, অন্যথায় ওয়েল্ডিং ভালো হবে না।

ট্যাক ওরেড করাঃ

ট্যাক ওরেন্ড ঠিকমত না করলে সম্পূর্ণ কাজ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ যথপোযুক্ত পোশাক পরা হোক আর সুন্দরভাবে জোড়া প্রস্তুত করা হোক, ট্যাক ওয়েল্ড করা না হলে ওয়েল্ডিং এর প্রচণ্ড তাপে বা জোড়া নড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ ওয়েন্ড কার্যটি একেবারে পঞ্চ হয়ে যাবে।

ওয়েল্ডিং করা পূর্বের সকল প্রস্তুতিগুলো হলো ভালো ওয়েন্ডিং করার জন্য সুতরাং ওয়েন্ডিং করা ধাপটি শেষ এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রোড অ্যামপিয়ার এবং মূল ধাতুর পুরুত্ব।  মূল ধাতুর পুরুত্ব বলতে যে ওয়ার্কপিসকে ওয়েন্ডিং করতে হবে তার পুরুত্বকে বুঝায় । 

মূল ধাতুর পুরুত্ব যত বেশি হবে ইলেকট্রোডের ব্যাস তত বেশি লাগবে এবং বেশি ব্যাসের ইলেকট্রোডকে গলাতে বেশি অ্যামপিয়ার কারেন্ট লাগবে। এ বিষয়টি এ বইয়ের ব্যবহারিক অংশে দেখান হয়েছে।  

Content added By