On This Page
এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK
Please, contribute to add content into ব্যবহারিক.
Content
Please, contribute to add content into বিভিন্ন জাতের সবজি শনাক্তকরণ.
Content

প্রাথমিক তথ্য 

বাংলাদেশে উৎপাদন মৌসুমভিত্তিক সকল সবজিসমূহকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা 

(ক) রবি মৌসুমভিত্তিক সবজি 

(খ) খারিফ মৌসুমভিত্তিক সবজি 

(গ) বারমাসি/সারা বছর জন্মানো সবজি। 

(ক) রবি সবজি বলতে শীতকালে জন্মে এরূপ সবজিগুলোকে বোঝায়। যেমন লাউ, পালংশাক, মূলা, লেটুস ইত্যাদি। - ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, 

(খ) খারিফ সবজি বলতে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকলে জন্মে এরূপ সবজিগুলোকে বোঝায়। যেমন-চালকুমড়া, চিচিংগা,। ঝিঙা, ধুন্দল, করলা, ডাটা, পুঁইশাক, বরবটি, কাঁকরোল ইত্যাদি। 

(গ) বারমাসী সবজি বলতে সারা বছর জন্মে এরূপ সবজিগুলোকে বোঝায়। যেমন-বেগুন, পেঁপে, কাঁচকলা, মিষ্টিকুমড়া, শশা ইত্যাদি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১. খাতায় মৌসুমভিত্তিক সবজির নামের ছক তালিকা। 

২. বিভিন্ন ধরণের সবজি, বাজারে পাওয়া যায় বা মাঠে চাষ হয়। 

৩. মৌসুমভিত্তিক সবজির তালিকা, যা এদেশে জন্মে। 

৪. মৌসুমভিত্তিক সবজি পৃথক পৃথকভাবে রাখার পাত্র 

৫. হ্যান্ড গোব। 

৬. কাগজ, কলম, পেন্সিল। 

কাজের ধাপ

১. মাঠ হতে বা বাজার হতে সবজি সংগ্রহ করে আনতে হবে। অথবা সবজির ক্ষেতের মাঝে যেতে হবে। 

২. প্রতিটি সবজিকে একটি একটি করে উঠায়ে ছকে নির্দেশিত ঘরে নাম তালিকাভুক্ত করে পৃথক করে রাখতে হবে। অথবা মাঠে হলে চিহ্নিত করতে হবে। 

৩. ছকে তালিকাভুক্ত করার সময় মৌসুমভিত্তিক সবজির তালিকার সাথে একটি একটি করে মিলিয়ে নিতে হবে । এবং ঠিক চিহ্ন দিতে হবে। 

৪. এভাবে সব সবজিকে মৌসুমভিত্তিক আলাদা করা যাবে। 

৫. সকল সবজিকে গড় করে কোন মৌসুমে কত সংখ্যক সবজি পাওয়া যায় তা শনাক্ত করা/নির্ণয় করা যাবে ।

সবজির শ্রেণি

রবি

খারিফ

বারমাসি

পাতাজাতীয়

   

ফলজাতীয়

   

কন্দজাতীয়

   

মূলজাতীয়

   

ফুলজাতীয়

   

অন্যান্য

   
Content added || updated By

প্রাথমিক তথ্য 

বাংলাদেশে সবজির প্রকৃতি অনুযায়ী বিরুৎ, লতানো, গুল্ম ও বৃক্ষজাতীয় এসব ভাগে শ্রেণিবিভক্ত করা হয়। 

(ক) বিরুৎজাতীয় সবজি-এরা লতানো হয় না, কোন কোন ক্ষেত্রে বৃদ্ধির সময় অবলম্বন নিয়ে থাকে। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি। 

(খ) লতানোজাতীয় সবজি-এরা লতানো হয়। যেমন- শশা, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, ঝিঙা, চিচিংগা, ধুন্দল, করলা ইত্যাদি। 

(গ) গুল্মজাতীয় সবজি-গাছ ছোট সামান্য শক্ত হয়। যেমন- বেগুন, পেঁড়শ, মরিচ ইত্যাদি। 

(ঘ) কাষ্টলজাতীয় সবজি-গাছ বড় এবং কাঠ হয়। যেমন- সাজিনা, বকফুল ইত্যাদি।

বাংলাদেশের সবজিসমূহের ধরন বা খাওয়ার উপযোগী হিসেবে কয়েক ভাগে বিভক্ত। যেমন- 

(ক) পাতাজাতীয় সবজি- পুঁইশাক, লালশাক, ধনেপাতা, পিঁয়াজ পাতা, লেটুস, কলমি শাক, পালং শাক, মূলা শাক ইত্যাদি । 

(খ) ফলজাতীয় সবজি- বেগুন, কুমড়া, পেঁপে, টমেটো, ঢেঁড়শ ইত্যাদি। 

(গ) কন্দালজাতীয় সবজি- আলু, কচু, মেটে আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি 

(ঘ) ফুলজাতীয় সবজি- ফুলকপি, বা কলি, বকফুল, শাপলা ইত্যাদি। 

(ঙ) কাগুজাতীয় সবজি- ডাঁটা, পানি কচু, মানকচু ইত্যাদি । 

(চ) বীজজাতীয় সবজি- শিম বীজ, কাঁঠাল বীজ ইত্যাদি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১. খাতায় প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী সবজির নামের ছক (পৃথক পৃথক)। 

২. ল্যাবরেটরীতে সবজিগুলো আনতে হবে অথবা বাজার প্রয়োজন । 

৩. সবজিগুলো বিছানোর টেবিল। 

৪. সবজির প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী তালিকা। 

৫. সবজিগুলো পৃথকীকরণের পর রাখার পাত্র। 

৬. হ্যান্ড গোব, খাতা, কলম, পেন্সিল ইত্যাদি।

কাজের ধাপ 

১. বাজার হতে সবজিগুলো ক্রয় করে আনতে হবে অথবা বাজারে যেতে হবে। 

২. সবজির তালিকা দেখে সবজি চিহ্নিত করে খাতায় ছকে লিখতে হবে। সে সময় সবজির বৈশিষ্ট্যও লিখতে হবে। 

৩. এভাবে সবজিগুলোকে প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী চিহ্নিত করে বাজারে সবজির প্রাপ্যতা শতকরা হারে বের করা যাবে।

Content added || updated By

প্রাথমিক তথ্য 

সবজি চাষে অনেক ধরনের সমস্যা বিদ্যমান। যার মধ্যে কিছু সমস্যা ব্যক্তিগত পর্যায়ে। কিছু সমস্যা অঞ্চল পর্যায়ে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এবং কিছু সমস্যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রয়েছে। যেমন- 

(ক) ব্যক্তিগত পর্যায়ের সমস্যা- অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার জন্য সময়মত বীজ, সার, বালাইবাশক, সেচ ইত্যাদি । সংগ্রহ করতে না পারা, জমির উন্নয়ন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা, বাজার চাহিদার তথ্য সংগ্রহ করা, কারিগরি বিষয়ে সজাগ হওয়া ইত্যাদি । 

(খ) অঞ্চল পর্যায়ের সমস্যা- সেচ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহায়তাদান, বাজার ব্যবস্থায় যোগসূত্র তৈরি, সবজিভিত্তিক এলাকা গড়ে তালো ইত্যাদি। 

(গ) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সমস্যা- তথ্য প্রযুক্তি সহজীকরণ ও সম্প্রসারণ, গবেষণা জোরদারকরণ, বাজার ব্যবস্থা যোগসূত্র স্থাপনে আইনী সহায়তাদান, সবজি বাণিজ্যিকীকরণে সহায়তাদান ইত্যাদি । 

(ঘ) আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সমস্যা- আবহাওয়ার পরিবর্তন, বীজসহ অন্যান্য উপকরণ একদেশ হতে অন্য দেশে সরবরাহে চাহিদাভিত্তিক সহায়তাদান, গবেষণা জ্ঞান সরবরাহ আমদানি/রপ্তানী শুল্ক ইত্যাদি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। কৃষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমস্যাবলির প্রশ্নপত্র। 

২। খাতা, কলম, ইরেজার ।

কাজের ধাপ 

১. প্রশ্নপত্র নিয়ে কৃষকের কাছে যেতে হবে। 

২. সবজি চাষে কৃষক কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় তা প্রশ্নপত্রে ঠিক দিতে হবে। সমস্যা নতুন হলে তা । লিপিবদ্ধ করতে হবে। 

৩. কৃষকের সমস্যাগুলো সংগ্রহ করে ক্যাটাগরি অনুযায়ী সাজাতে হবে। 

৪. সমস্যাগুলোর মধ্যে কোনগুলো কোন পর্যায়ের তা শ্রেণিভূক্ত করতে হবে। 

৫. সমস্যার সংখ্যার ভিত্তিতে গ্রেডিং করতে হবে। অর্থাৎ কৃষকরা যে সমস্যার কথা বেশি বলবে সেটি গ্রেড-১, যেটি তার চাইতে কম সেটি গ্রেড-২ এভাবে ক্রমাণুক করতে হবে।

ছক-১

কৃষকের নাম : 

পিতার নাম : 

গ্রাম : 

ডাকঘর : 

উপজেলা : 

জেলা :

Content added By

প্রাথমিক তথ্য 

সবজি চাষের সমস্যাগুলোর মধ্যে যেমন- ভাল জাতের ও উন্নতমানের বীজের অপ্রতুলতা, বীজ সময়মত পাওয়া যায়, বীজের মূল্য বেশি, সবজি চাষের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের অভাব, আবহাওয়ার সমস্যা, বাজারজাতকরণে সমস্যা, পরিবহণ সমস্যা, সার ও বালাইনাশকের মূল্য বেশি এবং ভেজাল, কোল্ড স্টোরেজের অভাব, পোকামাকড় ও রোগবালাই সম্পর্কে তথ্যগত সহায়তার অভাব ইত্যাদি ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। সবজি চাষের সমস্যাবলির তালিকা 

২। সবজি চাষের সমস্যাগুলোর জন্য টালি শিট। 

৩। কাগজ, কলম।

কাজের ধাপ 

১. সবজি চাষের সমস্যাসমূহ কৃষকদের (কমপক্ষে ১০ জন) সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সংগ্রহ করতে হবে। 

২. কৃষকদের সমস্যা চিহ্নিতকরণের জন্য সমস্যার তালিকা ব্যবহার করতে হবে। 

৩. কৃষকদের সমস্যাগুলো সংগ্রহ করার পর সমস্যাভিত্তিক টালি শিটে চিহ্নিত করতে হবে। 

৪. টালি শিটে যে সমস্যা বেশি সংখ্যক কৃষকদের নিকট হতে পাওয়া গেছে তারপর ক্রমান্বয়ে কম সংখ্যক সমস্যা। হিসেবে পাওয়া গেছে সেভাবে ক্রমানুসারে গুরুত্বভিত্তিতে হিসেবে সাজাতে হবে। 

৫. এভাবে সবজি চাষের সমস্যাগুলোর গুরুত্ব ক্রমানুসারে সাজানো যাবে। 

৬. গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা পরিকল্পনা প্রণয়নে এসব কর্মতালিকা ব্যবহৃত হতে পারে।

Content added || updated By

প্রাথমিক তথ্য 

আবহাওয়া সবিজ চাষে যথেষ্ট প্রভাব রাখে। শুধু ভাল বীজ, ভাল জাত, বীজ সময়মত সরবরাহ, বীজের মূল্য কম, সেচ সুবিধা, খানের সুবিধা দেওয়া হলেই সবজি চাষের সমস্ত সমাধান হবে না। তাই জাতের বৈশিষ্ট্য, পারিপার্শ্বিক চাহিদা, স্থানীয় আবহাওয়ায় সফলভাবে জন্মাবে কীনা তা নির্ধারণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১. বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য সবজির পছন্দনীয় তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, মাটির অবস্থা, দিবস দৈর্ঘ্যতা, বাতাসের। আর্দ্রতা ইত্যাদির তথ্য ও অঞ্চলভিত্তিক কোন ধরনের কোন সময় কি ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করে তার ম্যাপ ।

পাঠ-৫ 

১. সবজি চাষের এলাকা চিহ্নিতকরণ, উপকরণের প্রাপ্যতা, বাজার ব্যবস্থা ইত্যাদির তথ্য সম্বলিত তালিকা । 

২. গবেষণা হতে উদ্ভাবিত উপযোগী জাত সম্পর্কে চাষাবাদ কৌশল সংগ্রহ। 

৩. খাতা, কলম। 

কাজের ধাপ 

১. সবজি চাষের উপযাগেীতা আছে কিনা তা এই জেড/মৃত্তিকা পরীক্ষা করে জানতে হবে।

২. সবজির চাষের জন্য ১২ মাসের পঞ্জিকা তৈরি করতে হবে। 

৩. যে সবজি চাষ করা হবে তার বাজার ব্যবস্থা ও চাহিদা আছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে। 

৪. যে সবজি চাষ করা হবে তার উন্নতজাত ও ভাল বীজ প্রাপ্তির সুবিধা না থাকলে তা কীভাবে সংগ্রহ করা যাবে তার ব্যবস্থা পূর্ব হতে করতে হবে। 

৫. সবজি চাষের প্রয়োজনীয় সবগুলো উপকরণ সংগ্রহ বা প্রাপ্তির আগাম ব্যবস্থাকরণ (বীজ, সার, বালাইনাশক, ঘেরা-বেড়ার উপকরণ, সেচ যন্ত্রপাতি ইত্যাদি)। 

৬. বাজার ব্যবস্থার জন্য কোন কোন পথে কোন বাজারে পণ্য নেওয়া হবে তার পরিকল্পনা করতে হবে। 

৭. দূর্যোগ বা বিশেষ পরিবর্তিত অবস্থায় বিকল্প কাজ করার প্রস্তুতি রাখতে হবে। যেমন- হঠাৎ কপি বা বেগুনের চারা বীজতলায় বৃষ্টিজনিত কারণে নষ্ট হয়েছে। তাৎক্ষণিক ট্রেতে বীজ ফেলে বারান্দায় রাখা, পানি সরে যেতে দেরি হলে তখন বিনা চাষে আলু লাগাতে হবে বিলম্বের কারণে ইত্যাদি। 

৮. যাতায়াত ব্যবস্থায় সমস্যা থাকলে বিকল্প রাস্তা জানতে হবে বা সবজি উঠাতে ২/১ দিন দেরি করা যেতে। পারে। সংরক্ষণের সুবিধা থাকলে সে পথ অবলম্বন করতে হবে। 

৯. প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

Content added By
Please, contribute to add content into সবজি চাষের জমি প্রস্তুত করার দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- সবজি চাষের জন্য আলো বাতাস চলাচলের সুবিধাযুক্ত, সেচ নিকাশের ব্যবস্থাসহ উঁচু, জমি নির্বাচন করা উচিত। সবজির মধ্যে অধিকাংশই উর্বর বেলে দোঁআশ হতে দোঁআশ মাটি বেশি পছন্দ করে। জলাবদ্ধতা প্রায় সবজি সহ্য করতে পারে না। আবার একনাগাড়ে দীর্ঘ খরা হলেও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সবজি চাষের জমি যেন ছায়াযুক্ত না হয় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। শুধু মৌসুমি সবজি চাষ করতে হলে মাঝারি নিচু বা নিচু জমিও নির্বাচন করা যায়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১. উঁচু (বন্যায় বা বৃষ্টিতে পানি উঠে বা জমে না) জমি। 

২. মাটির বুনট সম্পর্কিত তথ্য বা মাঠভিত্তিক মৃত্তিকা ম্যাপ । 

৩. কী ধরনের সবজি চাষ করা হবে সে পরিকল্পনা।

কাজের ধাপ- সবজির ধরন অনুযায়ী জমি ও স্থান নির্বাচন করতে হবে। যেমন- আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, কুমড়া জাতীয় ইত্যাদির জন্য উঁচু বা মাঝারি উঁচু এবং বিনা চাষে আলু রোপণ ও পানি কচু ইত্যাদির জন্য নিচু জমি নির্বাচন করা যাবে।

১. বেলে দোঁআশ হতে দোঁআশ মাটির জমিতে আলু, মূলা ভালো হয়। এঁটেল দোঁআশ মাটিতে কপিজাতীয় সবজি ভালো হয়। তাই সেভাবে ফসল অনুযায়ী জমি নির্বাচন করতে হবে। 

২. বাড়ীর বা গাছের ছায়া পড়েনা এমন আলোবাতাসমুক্ত জমিতে প্রায় সব ধরনের সবজিরই ফলন ভালো হয়। 

৩. বৃষ্টির পানি যাতে না জমতে পারে বা সেচের পানি তাড়াতাড়ি সরে যেতে পারে এমন স্থান সবজির জন্য । উত্তম। তাই এ ধরনের সুবিধা দেখে সবজির জমি নির্বাচন করতে হবে। 

৪. সবজিভিত্তিক মাটি, জমির অবস্থান ও অন্যান্য সুবিধা বিবেচনা করে সবজির জমি ও স্থান নির্বাচনের জন্য খাতায় সকল উপাদানগুলো লিখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য-সবজি সাধারণত চারা তৈরি করে চাষ করা হয়। অনেক সবজির বীজ সরাসরি বপন বা রোপণ করা হয়। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মরিচ, টমেটোর চারা তৈরি করা হয়। গাজর, মূলা, ধনিয়া, সিলারির বীজ সরাসরি জমিতে বপন করা হয় (লাইনে/ ছিটিয়ে)। চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, চিচিংগা, শশা, কাঁকরোল, শিম মাদা করে বীজ রোপণ করা হয়। তবে চারা তৈরি করে, বীজ বপন/রোপণ করে, মাদায় বা লাইনে বীজ রোপণ করে সবজি চাষে সবক্ষেত্রেই বেড তৈরি করা হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১. এক খন্ড জমি যা কর্ষণ করে প্রস্তুত করা। 

২. বিভিন্ন সবজি রোপণের/বপনের জন্য বেডের মাপ সম্পর্কিত তালিকা/চার্ট 

৩. মাপার টেপ/ফিতা। 

৪. বাঁশের খুটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক। 

৫. কোদাল, রশি। 

৬. কাগজ, কলম ইত্যাদি।

কাজের ধাপ 

১. সবজি চাষের জন্য চাষ করা জমি নিতে হবে বা জমি চাষ করে প্রস্তুত করতে হবে। 

২. যে সবজি চাষ করা হবে সে সবজির জন্য নির্ধারিত মাপ দিয়ে জমি চিহ্নিত করে খুটি পুঁতে দিতে হবে। প্রয়োজনে সুতলি টেনে লাইন সমান করে নিতে হবে। 

৩. সবজি এক সারি, দুই সারি, তিন সারি বা চার সারি পদ্ধতিতে রোপণ/বপন করা হলে সেভাবে জমিতে নকশা করতে হবে। 

৪. নির্দিষ্ট দূরত্ব পরে পরে ২৫-৩০ সেমি, চওড়া ও ১৫২০ সেমি. গভীর করে নালা কেটে পাশে মাটি উঠায়ে 

৫. নালার মাটি উঠায়ে দিয়ে বেড তৈরি করে তা সমতল ও পরিপাটি করতে হবে, যাতে লাইন টেনে, মাদা তৈরি দিতে হবে। এতে বেড জমি সমতল হতে কিছুটা উঁচু হবে। নালা সেচ, নিকাশ ও চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হবে। বা গত তৈরি করে বীজ/চারা রোপণ/বপণ করা যায়।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য- ফসলের জমিতে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সেচ দেয়া হয়। যেমন নালা যা ভূপৃষ্ঠ ও ভূনিম্নস্থ হতে পারে। পানির উৎস্য হতে (ডিপ বা স্যালো পাম্পের সাহায্যে, এলএলপির সাহায্যে বা কোন উঁচু জলাধার হতে) বিভিন্ন ধরনের নালা তৈরি করে জমিতে সেচ দেয়া হয়। জমি হতে অপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়ার জন্য নালা ব্যবহার করা হয়। এ নালা ২ ধরনের হয়। যথা- প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম। আবার কার্যপদ্ধতি অনুসারে নিকাশ নালা ৩ ধরনের হয়। যথা ভূপৃষ্ঠ নিষ্কাশন নালা, ভূনিম্নস্থ নালা ও সম্বিলিত ভূপৃষ্ঠ ও ভূনিম্নস্থ নালা ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। মাপ ফিতা, ২ । কোদাল, ৩। রশি, ৪। কাঠি, ৫। খুটি, ৬। ঝুড়ি, ৭। শ্রমিক, ৮। কাগজ, কলম, পেন্সিল, ইরেজার, ১০। সেচ বা নিকাশের জন্য নালার ডিজাইন লে-আউট।

কাজের ধাপ 

১. সেচ নালা বা নিকাশ নালার ডিজাইন বুঝে নিয়ে মাঠে লেআউট দিতে (খুটি পুঁতে রশি টেনে) হবে। 

২. নালা কাটার আগেই মাটির ধরন, পানি প্রবাহের উৎস ও পরিমাণ এবং জমির অবস্থান বুঝে নিতে হবে। 

৩. সেচ পদ্ধতি নির্ধরণ করে নালা তৈরি করতে হবে। যেমন- মুক্ত পাবন পদ্ধতি, নিয়ন্ত্রিত পাবন পদ্ধতি, ফারো বা খাদ সেচ পদ্ধতি, বেসিন ও রিং বেসিন পদ্ধতি। 

৪. মুক্ত প্লাবন পদ্ধতিতে সেচের জন্য যে জমিতে সেচ দেয়া হবে সে জমির আইল শক্ত করতে হবে এবং নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত করে সম্পূর্ণ জমি একপ্রান্ত হতে প্লাবিত হতে হতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যাবে। 

৫. নিয়ন্ত্রিত প্লাবন পদ্ধতি সমতল জমিতে প্রয়োগ করা হয়। এতে জমির প্রত্যেকটি খন্ড আইল দ্বারা পৃথকীকরণ থাকে এবং প্রতি আইল পর মাঠ নালার সাথে যুক্ত থাকে। সেখান দিয়ে জমিতে পানি প্রবেশ করানো হয়। জমি খণ্ডগুলো ৩-১৫ মিটার এবং লম্বা ৬০-৩০০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে । 

৬. সারিতে বা আইল করে বীজ বা চারা রোপণ করা সবজির জমিতে অগভীর খাদ বা নালা তৈরি করা হয়। সকল নালার একদিক দিয়ে সরবরাহ লাইন নালা তৈরি করা হয়। সরবরাহ নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত করলে সকল খাদ বা অগভীর নালায় পানি প্রবেশ করে। 

৭. কাষ্ঠল সবজির বাগানে রিং পদ্ধতিতে সেচ দেয়া হয়। গাছের চারিদিকের মাটি বৃত্তাকার করে হালকা নিচু করা হয় এবং বাহির দিক উঁচু আইলের মত করে দেয়া হয়। প্রতি ২ সারি পর পর সরবরাহ নালা করা হয়। এ নালার সাথে গাছের বৃত্তাকারের সংযোগ করে দেয়া হয়। প্রধান নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত করা হলে প্রতি গাছের গোড়ার বৃত্তাকারে পানি চলে যায়। 

৮. সবজির বেডের ফাঁকে, আইলের ফাঁকে বা মাদার কাছে পানি বদ্ধতা হলে সবজি জাতীয় ফসল ২-৪ ঘন্টা সহ্য করতে পারে। সবজি ক্ষেতে পানি বন্ধ হলে পানি তলের গভীরতা নিচে নামানোর জন্য প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক নিকাশ ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। অর্থাৎ পানি বের হওয়ার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। সরবরাহ নালার পানি উপরে উঠে আসলে জমির আইল শক্ত করে কৃত্রিমভাবে নিকাশ করতে হবে। অর্থাৎ পাম্প ব্যবহার করতে হবে।

Content added || updated By

প্রাথমিক তথ্য 

মাটির প্রকার, ভৌত রাসায়নিক অবস্থা, আবহাওয়া, সারের প্রকার ও পরিমাণ, ফসলের প্রকার ও শেকড়ের প্রকৃতি, খাদ্য পরিশাষেণ ক্ষমতা ইত্যাদি ভেদে সার প্রয়োগ বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে। তবে সার প্রয়োগ যখন জমি তৈরির শেষ সময়ে করা হয় তাকে মৌল বা প্রাথমিক প্রয়োগ ধরা হয় এবং পরবর্তীতে যতবারই দেয়া হয় তাকে উপরি প্রয়োগ ধরা হয়। প্রাথমিক প্রয়োগ করা সারগুলোকে ফসলের শেকড়ের নাগালের মধ্যে দেয়া দরকার এবং ধীরে ধীরে দ্রবণের জন্য আগাম প্রয়োগ করে ফসলের প্রয়োজনের সময় পরিশাষেণ উপযোগী করা। এর ফলে সারের রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রভাবে বীজ/চারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে না।

প্রাথমিক সার প্রয়োগ বিভিন্ন পদ্ধতিতে হতে পারে। যেমনঃ 

(ক) ছিটিয়ে প্রয়োগ, 

খ) স্থানীয় প্রয়োগ 

১। চারার গর্তে 

২। মাদায় প্রয়োগ 

৩। লাঙ্গল স্তরে প্রয়োগ 

৪। বীজ বপন যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োগ ও 

৫। সিরিঞ্জের ন্যায় প্রবিষ্ঠকরণ পদ্ধতি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ-

১। সার, ২। আগার/নিড়ানী/খতা/কোদাল, ৩। সাবল, ৪। লাংগল, ৫। মই, ৬। বীজ বপন যন্ত্র, ৭। সার প্রবিষ্ঠকরণ যন্ত্র, ৮। সার, ৯। খাতা কলম ইত্যাদি।

কাজের ধাপ

১. জমি চাষের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ শেষ চাষের পূর্বে জমিতে মই দেওয়ার আগে ধীরে ধীরে পরিশাষেণ উপযোগী হয়। এ সমস্ত সারগুলোকে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হয়। যেমন ফসফরাস, এমওপি, জিপসাম, জৈব সার, চুন, ডিএপি, জিংক ইত্যাদি। এসমত সার প্রয়োগ করাকে মৌল/প্রাথমিক প্রয়োগ বলা হয় । 

২. প্রাথমিক/মৌল সার প্রয়োগের পর আড়াআড়িভাবে মই দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। স্বল্প মেয়াদি ও ঘন করে ছিটিয়ে যে সমস্ত শাক-সবজি বপন করা হয় সেক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশি প্রযাজ্যে। 

৩. অনুর্বর জমি হলে ফসলের শিকড়ের কাছাকাছি সার দেয়ার জন্য মৌল সারের ৫০% চারা বা বীজের কাছাকাছি। দিতে হবে। যেমন: ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোর চারা রোপণের গর্তে মিশিয়ে দিতে হবে। 

৪. লাউ, শশা, কুমড়া জাতীয় গাছের মাদায় বীজ রোপণের পূর্বে মাটির সাথে ৫০% মৌল সার মিশিয়ে দিতে হবে। 

৫. ধনে, মূলা, সিলারী, গিমা কলমির বীজ বপনের পূর্বে লাংগল দিয়ে অগভীর নালা করে সেখান দিয়ে সার ছিটিয়ে। হালকা মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এর উপর দিয়ে বীজ বুনে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। 

৬. বীজ বপন যন্ত্রে বীজের সাথে পাশাপাশি বাক্সে সার দিতে হয়। 

৭. বীজ বপন যন্ত্র টেনে নিলে বীজ বপনের পাশাপাশি সারও আতে আতে ফারায়োর বা নালার মধ্যে পড়বে। এর পিছনে মই টেনে বা পা দিয়ে মাটি টেনে দিলে বীজ ঢেকে যাবে। এতে বীজের কাছাকাছি সার থাকবে এবং বীজ গজানোর পর শেকড় ছাড়ার সাথে সাথে সার হতে পুষ্টি উপাদান পরিশাষেণ করতে পারবে।

৮. সিরিঞ্জ বা প্রবিষ্ঠকরণ যন্ত্রের ভিতর সার ভর্তি করা হয়। রোপিত অথচ কিছুটা বড় গাছ/চারার গোড়া হতে ৭/৮ সেমি. হতে ১০/১৫ সেমি. দূরে সিরিঞ্জের ফলা/মাথা মাটিতে প্রবেশ করানো হয়। এরপর উপরের হাতলে চাপ দিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার মাটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। সার প্রবেশ করানারে পর ছিদ্রের মুখ বন্ধ করে দিতে হয়।

Content added By
Please, contribute to add content into আধুনিক বীজতলা তৈরির দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য-শাক সবজির চারা উৎপাদনের জন্য যে স্থান বা পাত্র ব্যবহার করা হয় ঐ স্থান/পাত্র হচ্ছে। বীজতলা। বীজতলা করতে হলে জমির অবস্থান, মাটির প্রকৃতি, জমির উর্বরতা, আলো বাতাসের প্রাপ্যতা, সেচ ও বীজতলার স্থান নির্বাচনে পোকামাকড়, রোগবালাই, পশুপাখীর আক্রমণ ও নিরাপদ পরিবেশ বীজতলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। উপযুক্ত জমি, ২। সেচ/নিকাশ পাম্প, ৩। কাগজ-কলম, ৪। জমির অবস্থান ম্যাপ এবং আশে পাশে বাড়ি, গাছপালার তথ্য ৫। যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কাজের ধাপ 

১. বীজতলার জন্য উর্বর দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ মাটির জমি নিতে হবে।

২. বীজতলার জমি উঁচু ও বন্যা বা জলাবদ্ধমুক্ত হতে হবে। এ ব্যাপারে বিগত কয়েক বছরের তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। 

৩. বীজতলায় পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে কিনা এবং ঘর-বাড়ি বা গাছপালার ছায়া পড়ে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করে প্রচুর আলোবাতাসযুক্ত জমি হলে তা নির্বাচন করতে হবে। 

৪. বীজতলায় পুশু-পাখির আক্রমণ হওয়ার সুযোগ থাকলে বা বিষাক্ত গ্যাস, কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য প্রবেশের সম্ভাবনা থাকলে সে জমি বাদ দিতে হবে। 

৫. বীজতলার মাটিতে প্রচুর বাতাস প্রবেশের জন্য গোবর সার, কম্পাস্টে সার বা আবর্জনা পঁচা সার দেয়ার সুযোগ থাকলে সে স্থান বীজতলার জন্য উত্তম, যা বিবেচনা করতে হবে। 

৬. জীব জন্তু, পশুপাখি চলাচল করে যেখান দিয়ে সেরূপ স্থান বাদ দিতে হবে।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য- অনেক সবজির চারা উৎপাদন করে মূল জমিতে পরে রোপণ করা হয়। এ চারা প্রথমে উৎপাদন করা হয় বীজতলায় । বীজতলা যদি সঠিক আকৃতরি ও সঠিক মাপের না হয় তাহলে চারা উৎপাদনে সমস্যা হয়। সাধারণত কপি জাতীয়, বেগুন, টমেটো, পেঁপে ইত্যাদি সবজি রোপণের জন্য বীজতলায় চারা উৎপাদন করা হয়। বীজতলা প্রয়োজন ও অবস্থাভেদে অনেক সময় স্থায়ী, অস্থায়ী বা স্থানান্তরযোগ্য করা হয়।

বীজতলার আকার  ×  মিটার চওড়া, ৭-৮ সেমি (রবি মৌসুমে) বা ১০-১৫ সেমি. (বর্ষা মৌসুমে উঁচু ও একাধিক বীজতলা হলে দুই বীজতলার মাঝখানে ৩০ সেমি. চওড়া ফাঁকা জায়গা রাখতে হয়, যা সেচ-নিকাশ ও পরিচর্যার জন্য চলাফেরার কাজে প্রয়োজন হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। কোদাল, ২। আচড়া/বিদা, ৩। মাপার টেপ, ৪। লাঙ্গাল, ৫। মই, ৬। খুটি। ৭। খাতা কলম । 

কাজের ধাপ 

১. কোন ছায়া পড়ে না এরুপ উঁচু জমি বীজতলার জন্য নিতে হবে। 

২. জমি চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করে তৈরি করে সমতল করতে হবে। 

৩. চাষ-মই দেয়ার পর আগাছা, ঢেলা পরিষ্কার করতে হবে। 

৪. টেপ ধরে বীজতলার ও নালার জায়গা মেপে খুঁটি পুঁতে চিহ্নিত করতে হবে। প্রতিটি বীজতলার আকার হবে গ্রন্থ। বা চওড়া ১ মিটার × দৈর্ঘ্য বা লম্বা ৩ মিটার অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী আরও দৈর্ঘ্য (সাধারণত ৩ × ১ মিটার)। 

৫. সেচ-নিকাশ ও পরিচর্যা কাজে চলাচলের জন্য ২টি বীজতলার মাঝে ৩০ সেমি, ও বীজতলার চারপাশ দিয়ে ১৫-২০ সেমি. চওড়াভাবে স্থান রেখে দিতে হবে। - 

৬. দুটি বীজতলার মাঝখানের ও চারপাশের মাটি কোদালের সাহায্যে তুলে বীজতলার উপরে ছিটায়ে দিয়ে জমি সমতল হতে বীজ তলাকে ৭-১৫ সেমি. (সময়ভেদে) উঁচু করতে হবে। এতে মাঝ খানে নালা তৈরি হবে। 

৭ . বীজতলা শুকনা ধরনের হলে বৃষ্টিতে যাতে পাশে ভেঙ্গে না পড়তে পারে সেজন্য বাঁশের চটা দিয়ে ছোট খটি পুঁতে দিতে হবে। 

৮. বীজতলা কাদাময় হলে জমির উপর দিয়ে লাঠির সাহায্যে সমান করে দিতে হবে।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য বীজতলার তৈরির পর সাধারণত বীজতলায় বীজ গজানোর আগে সেচ দিতে হয় না। তবে চারা গজানোর পর সকাল বিকাল ঝাঁঝরি দিয়ে খুব নিচু হতে হালকা করে সেচ দিতে হয়। বীজতলার মাটিতে চটা বেঁধে গেলে চারার ক্ষতি হয়। তাই খুঁচিতে চটা ভেঙ্গে দিতে হয়। বৃষ্টি হয়ে চারার গোড়া বেঁকে গেলে সোজা করে ২-৩ সেমি পর্যন্ত পুরু করে গুড়ো মাটি দিতে হয়। সারি করে বীজ বুনলে সারির মাঝখান দিয়ে মাটি দিতে হয়। চারা কচি অবস্থায় রাদে হতে বাঁচানোর জন্য চালা করে দিতে হয়। রাতে কুয়াশা পাওয়ার জন্য চালা বিকেলেই সরিয়ে দিতে হয়। বীজতলার চারায় অনেক সময় পোকার আক্রমণ ও রোগ দেখা যায়। বীজতলায় কিছু কিছু আগাছাও জন্মে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ- ১। ঝাঁঝরি, ২। বাঁশের চটা, ৩। ছোট খুটি, ৪। কাঠি লাঠি, ৫। ঝুরঝুরে বা গুড়ো শুকনো মাটি, ৬। নিড়ানি, ৭। বাঁশের চাটাই/চালা, ৮। বালাইনাশক, ৯। স্প্রে মেশিন, ১০। বালতি, ১১। মাক্স হ্যান্ড গোব, এ্যাপ্রোন, ১২। খাতা কলম ।

কাজের ধাপ

১. বীজতলায় বীজ বপনের পর বীজ গজানোর আগে সেচ দেওয়া উচিত নয়। তবে বীজতলায় জো অবস্থা না থাকার সম্ভাবনা থাকলে বীজ বপনের আগেই সেচ দিয়ে নিতে হবে। 

২. চারা গজানোর পর বীজতলা শুকায়ে গেলে ঝাঝরি দিয়ে নিচু হতে হালকা সেচ দিতে হয় এবং বীজতলায় চটা। ধরলে কাঠি বা নিড়ানি দিয়ে চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। 

৩. বৃষ্টিজনিত কারণে বা বৈরী আবহাওয়ায় গজানো চারা অনেক সময় বেঁকে যেতে পারে। এরূপ অবস্থা হলে শুকনো ঝুরঝুরে মাটি নিয়ে কাঠি দিয়ে চারা সোজা করে পাশ দিয়ে গুড়ো মাটি ছাড়ায়ে দিতে হবে, তাতে চারা সোজা হয়ে থাকবে। 

৪. রোদে সদ্য গজানো চারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই দিনে রোদের সময় বীজতলার উপরে প্রায় ১.৫ ফিট উঁচু করে চালা দিয়ে দিতে হয়। চালাটা একদিকে একটু ঢালু করে দিতে হয়। চালার গ্রন্থ হবে বীজতলার প্রন্থের চাইতে ৫-৭ সেমি. বেশি । 

৫. বীজতলায় আগাছা দেখা দিলে তা উঠায়ে ফেলতে হবে। ৬. পোকামাকড় বা রোগবালাই বিশেষত চারার গোড়া পঁচা রোগ দেখা দিলে প্রতিরোধক হিসেবে মাটি শোধনকারী ও কপার মিশ্রিত বালাইনাশক স্প্রে করে মাটি ও চারা সম্পূর্ণ ভিজিয়ে দিতে হয়। পোকা-মাকড় ও রোগ দেখা মাত্র দমন করতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into সবজি চাষের জন্য মাদা তৈরির দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য - যে সব সবজির কাণ্ড ও শেকড় বেশি ছড়ায় এরূপ সবজির জন্য ফাঁক ফাঁক করে গর্ত বা মাদা তৈরি করে সবজি বীজ রোপণ করা হয়। বেড তৈরি করেও বেডের উপর মাদা তৈরি করা হয়। সবজি বীজ রোপণের জন্য সেচের সুবিধাযুক্ত, উঁচু ও বন্যামুক্ত জমি নির্বাচন করা হয়। এরপর বেডে বা জমিতে সবজিভেদে নির্দিষ্ট দূরত্বে মাদা তৈরি করা হয়। মাদায় যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস লাগে সে বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। এক খন্ড জমি বা বেড, ২। টেপ মাপার, ৩। নিড়ানি/শাবল/খন্তা, ৪। মাদা চিহ্নিতকরণ খুটি, ৫। কাগজ, কলম।

কাজের ধাপ

জমি তৈরির পর বেডে সবজি ভেদে এক বা একাধিক সারি করে নির্দিষ্ট দূরত্বে মাদারস্থান চিহ্নিত করতে হবে।

১. চিহ্নিত স্থানের মাটি ঝুরঝুরে করে উল্টো থালার ন্যায় অর্থাৎ জমি তল হতে একটু উঁচু করে পরিপাটি করতে হবে। এই স্থানটি মাদা হিসেবে ব্যবহৃত হবে। 

২. বৃষ্টিজনিত বা অন্যকোন কারণে মাদার স্থানটি জমির সাথে একাকার হতে পারে। তাই পরবর্তীতে মাদার স্থানটি বোঝার জন্য কাঠি পুঁতে রাখতে হবে।

৩. সবজিভেদে মাদার ব্যাস ৫০-৬০ সেমি. ও গভীরতা ৪০-৫০ সেমি. গর্ত করে তাতে পরিমাণমত সার মিশিয়ে গর্ত ভর্তি করতে হবে। 

৪. গর্তে সার দিয়ে ৫-৭ দিন রেখে দিতে হয়। এরপর বীজ বা চারা রোপণের সময় পুনরায় মাটি আগলা করে নিতে হবে। 

৫. বর্ষাকালে মাদার স্থানটি অবশ্যই জমিতল হতে উঁচু করতে হবে। 

৬. . পানি সেচ ও নিকাশের সুবিধার্থে মাদার চারদিক দিয়ে জুলি / নালা কেটে রাখতে হয়। 

৭. মাদায় চারা গজানোর আগে দেখতে হবে যেন মাদায় চটা অবস্থা না থাকে। যদি চটা ধরে তাহলে তা জো আসা মাত্র সাথে সাথে ভেঙ্গে দিতে হবে। 

৮. চারা গজানোর পর ২ পাতা হওয়া থেকে ৫-৭ সেমি. হওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার আগাছা গজাতে দেওয়া যাবে। 

৯. অন্য স্থানে গজানো চারা মাদায় রোপণ করতে হলে মাদার মাটিতে চারার শেকড়ের দৈর্ঘ্য পরিমাণ গভীর করে গর্ত করতে হয়। গর্তে চারা স্থাপনের পর চারার গোড়ার মাটি হালকা চেপে দিয়ে ঝাঁঝরি দিয়ে খুব কাছে থেকে সামান্য পানি দিতে হবে। 

১০. চারা সব সময় বিকেলে রোপণ করা উচিত। পর পর ২-৩ দিন চারায় ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 

১১. শূন্যস্থান পূরণের জন্য বেডের /মাদার পাশে কিছু চারা রোপণ করে রাখতে হবে।

Content added By
Please, contribute to add content into বীজের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য

ফসল উৎপাদনে ভালমানের বীজ ব্যবহার করা হলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। বীজ ভাল কিনা তা অঙ্করের হার হার দেখে বোঝা যায়। বীজ গজানোর হার পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি আছে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। মাটির পাত্র, ২। কলার খালে, ৩। ভিজা চট, ৪। নারকেলের মালা, ৫। পেট্রিডিস, ৬। কাঁচি, ৭। পানি, ৮। বাটারিং পেপার, ৯ । কাঁচি/চাকু ইত্যাদি, ১০। খাতা কলম ।

কাজের ধাপ 

(ক) মাটির পাত্র ও মাটির পাত্রে পরিমাণ মত ধূলা /মাটি দ্বারা ভর্তি করতে হবে। 

(খ) নারিকেলের মালাঃ নারিকেলের মালাতে পরিমাণমত ধূলা /মাটি দ্বারা ভর্তি করতে হবে। ক ও খ উভয়টিতে। পরিমাণমত পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিতে হবে। 

(গ) কলার খোলঃ কলার পাতার বোঁটার দিকটার মোটা অংশে ১ ফিট পরিমাণ টুকরো করে কেটে নিতে হবে। 

(ঘ) ভেজা চটঃ ৩০ বর্গ সেমি. পরিমাণ চট টুকরা করে কেটে নিতে হবে। 

(ঙ) পেট্রিডিস ও পেট্রিডিসের তলায় বটিং পেপার বিছিয়ে নিতে হবে ঘ ও ও উভয়টিতে অর্থাৎ চট ও বটিং পেপার অল্প অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে সম্পূর্ণ ভিজিয়ে নিতে হবে।

কাজের পদ্ধতি 

১. এরপর বীজ লট হতে নমুনা বীজ সংগ্রহ করে সেখান হতে কোনরূপ পক্ষপাতিত্ব না করে দৈবচয়নের মাধ্যমে ১০০ টি বীজ আলাদা করে নিতে হবে। 

২. নমুনা বীজ ১০০ টি মাটির পাত্রে বা নারিকেলের মালায় সারি করে বসাতে হবে। 

৩. তারপর মাটির পাত্র বা নারিকেলের মালা আলোবাতাসযুক্ত ছায়া স্থানে রাখতে হবে। 

৪. মাটির পাত্র বা নারিকেলের মালায় প্রয়োজনে মাঝে মাঝে অল্প পানি দিতে হবে। 

৫. কলার ডাঁটা বা কাণ্ড বা পাতার বোঁটায় মোটা অংশ যা ১ ফিট আকারে নেয়া হয়েছে, তার ১ দিক হতে বাঁশ ফালি করা বা ফাঁড়ার ন্যায় সমান্তরালভাবে দুই পাশ হতে ফাঁড়তে হবে। এতে মাঝখানের অংশ দন্ডের ন্যায় থেকে যাবে। 

৬. কলার ডাঁটার দুইদিক হতে প্রায় ২০ সেমি. ইঞ্চি পরিমাণ করে কাটা ফালি ২টি দুদিকে ভাঁজ করতে হবে, ঠিক যেভাবে কলা ছিলা হয়। 

৭. চটটি বিছিয়ে একপাশে সারি করে ১০০টি বীজ সাজাতে হবে এবং একটা কাঠি চটের মাথায় ধরে আস্তে আস্তে চটটি কাঠির সাথে রোল করে পেচিয়ে নিয়ে ঠান্ডা ও অন্ধাকার স্থানে রেখে দিতে হবে। চট্টটি শুকায়ে গেলে মাঝে মাঝে ভেজায়ে দিতে হবে। 

৮. কলার ডাঁটার ভিতরের দন্ডের খাঁজে খাঁজে ১০০টি বীজ সাজায়ে ফালি করা অংশ ২টি সোজা করে নিলে বীজ ঢেকে যাবে। এখন ডাঁটাটি সুতা/চিকন সুতলি দিয়ে পেঁচায়ে বেঁধে ঠান্ডা ও অন্ধকার স্থানে রেখে দিতে হবে। 

৯. পেট্রিডিসেও বীজ ১০০টি সাজায়ে ডিসের ঢাকনা দেওয়ার আগে পিপেটের সাহায্যে পানি দিয়ে বীজগুলো ভিজিয়ে নিয়ে জানালার কাছে। টেবিলে রেখে দিতে হবে।

(ক) সাধারণত বীজ বসানোর ৩য় দিন হতে অঙ্কুর গণনার কাজ শুরু এবং ৭ম দিনে শেষ করতে হয় । প্রতিদিন বীজ (অঙ্কুরিত) গণনার পর পাত্র হতে সেগুলো ফেলে দিতে হয় এবং তা ছকে লিখে রাখতে হয় ।

(খ) যে বীজের মূল ও কাণ্ড স্পষ্টভাবে গজাতে দেখা যায় সে বীজকেই গজানো বীজ হিসেবে গণ্য করা হয়। এভাবে কমপক্ষে ৩টি পাত্রের (একই জাতীয় অঙ্কুরিত বীজের হিসাব নিয়ে গড় করে শতকরা হারে প্রকাশ করা যায়। উদাহরণ- মাটির পাত্রে বসানো বীজের অঙ্কুর হার নির্ণয় ।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into বীজতলার মাটি শোধন.
Content

প্রাথমিক তথ্য 

বীজতলায় বা জমিতে অনেক সময় বীজ বপন করার পর কিছু বীজ গজায় না। অনেক সময় চারা রোপণ করার পর ঢলে পড়ে ও পরে মারা যায়। বীজতলা বা জমির মাটিতে অসংখ্য জীবাণু থাকে। এসব জীবাণুর মধ্যে কিছু আছে উপকারী, আবার কিছু আছে ক্ষতিকর। ক্ষতিকর জীবাণুর মধ্যে হলো- ফিউজিরিয়াম, রাইজোকটনিয়া, পিথিয়াম, সারকোসপোরা ইত্যাদি। মাটিতে নানা ধরনের কীট পতঙ্গ থাকে। যেমনঃ ইউপোকা, পিঁপড়া, কাটুই পোকা, মোল্ড ও ফিল্ড ক্রিকেট ইত্যাদি। এগুলো দমন না করা হলে এরা ফসলের ভীষণ ক্ষতি করে থাকে। এদের বসবাস মাটিতে। তাই মাটি শোধন করা হলে এগুলো অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। লোহার কড়াই, ২। হাতা ৩। চুলা ও লাকড়ি, ৪। খড়কুটা, ৫। দিয়াশলাই, ৬। ক্লোরিপিক্রিন, ফরমালডিহাইড, মিথাইল ব্রোমাইড ইত্যাদি, ৭। পলিথিন শিট, ৮। ইনজেক্টর ইত্যাদি।

কাজের ধাপ 

১. বড় লোহার কড়াই সংগ্রহ করতে হবে। 

২. কড়াইতে মাটি দিয়ে ওলটপালট করার হাতা নিতে হবে । 

৩. মাটি জ্বাল দেয়ার জন্য চুলা, লাকড়ি নিতে হবে। 

৪. জমির উপর দিয়ে বিছায়ে দেয়ার জন্য খড়কুটা বিচালি নিতে হবে। 

৫. রাসায়নিক পদার্থ ফরমালডিহাইড, ক্লোরািেপক্রিন, মিথাইল (ব্রোমাইড, ভ্যাপাম ইত্যাদি) কাঁচের পাত্রে করে নিতে হবে । 

৬. রাসায়নিক পদার্থ- মাটিতে দেয়ায় প্রবেশের জন্য ইনজেক্টর নিতে হবে। 

৭. রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগের পর মাটি ঢেকে রাখার জন্য পলিথিন শিট নিতে হবে।

৮. খড়কুটা/বিচালি জ্বালানারে জন্য দিয়াশলাই নিতে হবে।

এসব উপকরণ সংগ্রহ করে প্রত্যেকটির বৈশিষ্ট্য, রঙ, ভৌত অবস্থা ইত্যাদি খাতায় লিখতে হবে।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য- বীজতলা বা জমির মাটি তাপের সাহায্যে বিভিন্ন ভাবে জীবানুমুক্ত করা যায়। যেমন- মাটির মধ্যে গরম বাষ্প দিয়ে, কড়াইতে মাটি নিয়ে জ্বাল দিয়ে, পলিথিন শিট জমির উপর দিকে ঢেকে রেখে সুর্যের তাপে মাটি গরম করে, জমির উপর খড়কুটা/বিচালি বিছায়ে আগুন ধরায়ে, জমির নাড়া, . আবর্জনা পুড়ায়ে ইত্যাদি।

প্রয়াজনীয় উপকরণ 

১। ছিদ্রযুক্ত ধাতব পাইপ ২। লোহার কড়াই, ৩। পলিথিন শিট, ৪। খড়কুটা বিচালি, ৫। দিয়াশলাই, ৬। লম্বা লাঠি, ৭। খাতা-কলম ইত্যাদি।

কাজের ধাপ 

১. ছিদ্রযুক্ত ধাতব পাইপ (ছোট ছিদ্রযুক্ত) মাটির মধ্যে প্রবেশ করায়ে গরম জলীয় বাষ্প পাইপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করাতে হবে। 

২. লোহার বড় কড়াইতে জমির উপরিস্তরের (১০-১৫ সেমি. গভীর) মাটি কড়াইতে নিয়ে ১ ঘন্টাকালে তাপ দিতে হবে এবং নড়াচাড়া করতে হবে। 

৩. জমির উপর দিয়ে সাদা পলিথিন শিট বিছিয়ে পলিথিন শিটের চারদিক দিয়ে ভারা দিয়ে দিতে হবে প্রখর রোদের সময় এভাবে একাধারে ৫-৭ দিন জমি ঢেকে রাখলে তাপে অনেক জীবাণু মারা যাবে। 

৪. জমির উপর দিয়ে খড়কুটা/বিচালি সমভাবে বিছায়ে দিয়ে প্রখর সূর্যতাপের সময় আগুন ধরিয়ে পুড়ায়ে দিতে হবে। এতে জমির উপরিতরের রোগ-জীবাণু মারা যাবে। 

৫. জমি ফসল কাটার পর বিশেষত আমন ধান, গম, ভূট্টা, আখ ইত্যাদির নাড়া/পাতা যথেষ্ট সারা জমি বিছায়ে থাকে। শুকনা অবস্থায় এগুলোতে আগুন লাগায়ে দিয়ে তা পুড়ে দিলে মাটি শোধন হবে।

Content added By

প্রাথমিক তথ্য- 

বীজতলা বা জমির মাটি জীবাণুমুক্ত করণের (শোধন) জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে। যেমন- ফরমালডিহাইড, ক্লোরোপিক্রিন, মিথাইল ব্রোমাইড, ভ্যাপাম ইত্যাদি। এগুলো মাটিতে প্রয়োগ করে পলিথিন শিট দিয়ে বীজতলা / জমির মাটি ঢেকে রাখলে মাটির রোগ জীবাণু মারা যায়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। রাসায়নিক পদার্থ, (মাটি শোধনকারী), ২। ইনজেক্টর, ৩। পলিথিন শিট, ৪। হ্যান্ড গোব, ৫। মাক্স ৬ খাতা কলম।

কাজের ধাপ 

১. ১ লিটার ফরমালডিহাইডের সাথে ৫০ লিটার পানি মিশিয়ে নিতে হবে।

২. প্রতি বর্গমিটার জমিতে ১২ লিটার এই মিশ্রণ সমানভাবে ছিটিয়ে বা স্প্রে করে পলিথিন ত্রিপল শিট দিয়ে প্রায় সপ্তাহখানেক ঢেকে রাখতে হবে। 

৩. এরপর পলিথিন শিট/ত্রিপল সরায়ে ১০-১৫ দিন খোলা রাখতে হবে। 

৪. জমি ওলটপালট করে ফরমালিনের গন্ধ চলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে বীজ বপন/রোপণ করতে হবে। 

৫. ক্লোরোপিক্রিন ইনজেক্টরে করে নিয়ে ৪০ সেমি. পর পর মাটিতে ১৫ সেমি. গভীর প্রবেশ করায়ে সাথে সাথে । ত্রিপল মোটা পলিথিন শিট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। 

৬. ক্লোরোপিক্রিন দিয়ে ভেজানো মাটি প্রায় ১ সপ্তাহ থেকে রেখে পরে শিট সরায়ে মাটি ওলট পালট করে দিতে হবে। এতে মাটির বহু রোগজীবাণু মারা যাবে।

Content added By
Please, contribute to add content into দ্বিতীয় বীজতলা তৈরি ও চারার কষ্ট সহিষ্ণুতা বাড়ানো.
Content

প্রাথমিক তথ্য-

চারা তৈরি করে মূল জমিতে রোপণের পর অনেক চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই চারাকে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পাওয়ার জন্য ও পাতা, কাণ্ড, শেকড় সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে দেয়ার জন্য দ্বিতীয় বীজতলায় অল্প বয়সেই চারা স্থানান্তর করতে হয়। চারা বীজতলায় থাকা অবস্থায় প্রখর রৌদ্রের তাপ ও শীতের প্রভাব এবং পানির অভাব কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করে চারাকে টিকে থাকতে অভ্যন্ত করতে হয়। চারাকে কষ্ট সহ্য করে টিকে থাকার সংগ্রামই হচ্ছে কষ্ট সহিষ্ণুতা।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। বীজ গাজানো অবস্থার বীজতলা বা পাত্রে গজানো বীজতলা, ২। অগার/নিড়ানি, ৩। দ্বিতীয় বীজতলা তৈরি অবস্থায়, ৪। পানি, ৫। ঝাঁঝরি, ৬। চালা ৭। খাতা কলম ।

কাজের ধাপ 

১. ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকোলী, বেগুন, টমেটো, মরিচ, শশা ইত্যাদির চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তরের জন্য প্রথম বীজতলা তৈরির অব্যহিত পরেই তৈরি করতে হবে। 

২. প্রথম বীজতলার ন্যায় দ্বিতীয় বীজতলাও ৩ × ১ মিটার চওড়া এবং ৭-১৫ সেমি. উঁচু (শীতকালে ও গ্রীষ্মকালে) করে তৈরি করতে হবে। 

৩. বীজতলায় ২০ কেজি গোবর সার, ৬ গ্রাম ইউরিয়া, ৪ গ্রাম টিএসপি, ৬ গ্রাম এমওপি সার এবং তৎসঙ্গে ১ গ্রাম সেভিন মিশিয়ে নিতে হবে। 

৪. এ পদ্ধতিতে প্রথম বীজতলার চারা গজানোর ৫-৭ দিন পরে ৩-৪ পাতা বিশিষ্ট হলে প্রথম বীজতলা হতে বিকালের দিকে কাঠি দিয়ে চারা উঠায়ে দ্বিতীয় বীজতলায় ৬-৮ সেমি. দূরে দূরে সারিতে ৪-৫ সেমি. দূরে দূরে। চারা রোপণ করতে হবে। 

৫. বীজতলা হতে চারা উঠায়ে মূল জমিতে রোপণ করার পর অনেক সময় কষ্ট সহ্য করতে পারে না তাই বীজতলায় থাকা অবস্থায় চারার ছায়া থাকলে তা সরায়ে রৌদ্র পড়তে দিতে হবে, মাঝে মাঝে বীজতলা শুকাতে দিতে হবে। এতে চারার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে এবং কষ্ট কাটিয়ে উঠতে সহ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। 

৬. প্রথম যে দিন চারাকে কষ্ট দেয়া হবে, ক্রমান্বয়ে কষ্ট বাড়ায়ে দিতে হবে। তাতে কষ্ট সহিষ্ণতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তবে একনাগাড়ে চারাকে কষ্ট দিতে হয় না। মাঝে মাঝে সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। 

৭. এ প্রক্রিয়া চারায় শ্বেতসার বৃদ্ধি পাবে এবং মূল জমিতে রোপণের পর দ্রুত লেগে যেতে পারে এবং বেশি সংখ্যক নতুন শিকড় গজাতে পারে ।

Content added By
Please, contribute to add content into মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শশা, চিচিংগা, ঝিংগা ও পটল চাষাবাদে দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- সবজি চাষের জন্য বাড়ির আশেপাশে উঁচু বন্যামুক্ত স্থান বেছে নিতে হবে। জমি সমতল ও একদিকে কিছুটা ঢালু হলে ভালো। পানি সেচের ও নিকাশের সুবিধা থাকতে হবে। জমিতে আলোবাতাস ও রৌদ্রমুক্ত হওয়া দরকার। বেশি বৃষ্টির পানি দাড়াবে না এমন জমি হওয়া উচিত। দোঁআশ মাটি সর্বোত্তম, তবে উর্বর হতে হবে। বেলে দোঁআশ হতে এঁটেল দোঁআশ মাটিতেও সবজি ভালো হয়। তবে সবজি চাষে জৈব সার পর্যাপ্ত ব্যবহার করতে হয়। সবজি চাষের মাটির পিএইচ ৬-৭ বেশি উপযোগী। মাটি বেশি অম্ল বা বেশি ক্ষার হলে কিছু কিছু উপাদান গাছের গ্রহণযোগ্য অবস্থায় থাকে না ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। জমি, ২। বীজ/চারা, ৩। দেদাল, ৪। লাঙ্গল, ৫। মই, ৬। নিড়ানী, ৭। আঁচড়া, ৮। খুটি, ৯। রশি, ১০। সার, ১১, ঝুড়ি, ঝাঁঝরি, ১২। টেপ, ১৩। খাতা কলম ।

কাজের ধাপ 

১. রৌদ্র ও আলোবাতাসমুক্ত উর্বর দোঁআশ মাটি সবজি চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। 

২. জমিতে পর্যাপ্ত জৈব সার প্রয়োগ করে জমি চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। 

৩. তত্ত্বীয় অংশ হতে সবজিগুলো চাষে বীজ/চারা রোপণের দূরত্ব, বেড ও বেডে মাদা তৈরির দূরত্ব জেনে নিতে হবে। 

৪. প্রতিটি সবজির জনাই তৈরিকৃত জমিতে বেড় করে বেডে মাদা করতে হবে। তবে পটলের নির্দিষ্ট দূরত্ব দিয়ে ফোরা/নালা তৈরি করতে হবে। 

৫. মাদার মাটি কুপিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার মাদার মাটিতে মিশিয়ে মাদাগুলোকে জমি সমতল অপেক্ষা কিছুটা উঁচু করতে হবে। 

৬. সবজি চাষের তত্ত্বীয় অংশে সারের মাত্রা ও সার প্রয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে উল্লেখ আছে। সেভাবে সার জমিতে ও মাদায় প্রয়োগ করতে হবে। 

৭. সবজির চারা মাদায় বিকেলে রোপণ/বপন করতে হবে এবং ঝাঁঝরি দিয়ে নিচু করে হালকাভাবে সেচ দিতে হবে। 

৮. পটলের লতা নালা/ফারোতে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রোপণ করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

৯. চারার গোড়ায় যাতে বৃষ্টির পানি দাঁড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনুরূপ মাটি শুকায়ে গেলে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

১০. বৃষ্টি বা সেচজনিত কারণে মাটিতে চটা হলে সাথে সাথে ভেঙে দিতে হবে। মাদায় বা বেডে আগাছা জন্মানোর সাথে সাথে নিড়ানি দিয়ে উঠায়ে দিতে হবে। 

১১. মাদার চারায় যাতে পোকা মাকড় ও রোগ না হতে পারে সেজন্য ম্যালাথিয়ন/সাইপারমেথ্রিন/ ফেনিট্রোথিয়ন ১.২ মিলি. ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। 

১২. তত্ত্বীয় অংশে আলোচিত নিয়ম ও সময় অনুসারে সবজি সংগ্রহ করতে হবে এবং গুণগত মান বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত পরিবেশে সংরক্ষণ করতে হবে। 

১৩. প্রতিটি সবজির জন্য সমস্ত কার্যক্রম ব্যবহারিক খাতায় ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into টমেটো, আলু, বেগুন চাষাবাদে দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- বেগুন গোত্রের সবজি চাষের জন্য মাটি উর্বর ও সুনিষ্কাশিত হওয়া প্রয়োজন। সব ধরনের মাটিতে চাষ করা গেলেও দোআশ মাটিতে ফলন বেশি হয়। বেগুন গোত্রের সবজিগুলো কিছুটা অম্ল মাটিতে ভালো হয় । বেগুন কিছুটা উষ্ণ জলবায়ুর ফসল। কিন্তু টমেটো ও আলু ঠান্ডা জলবায়ুর ফসল। বেগুন গোত্রের সবজিতে পানিবদ্ধতা হলে বিশেষত বেগুন ও টমেটো খুব ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বেগুন ও টমেটোর বীজ বীজতলায় বপন করে চারা তৈরির পর মূল মাঠে চারা রোপণ করতে হয়। তবে চারা গজানোর পর ২-৩ পাতা বিশিষ্ট হলে দ্বিতীয় বীজতলায় রোপণ করে চারাকে কষ্ট সহিষ্ণ করে নিলে ভালো হয়। চারা অবশ্যই বিকালে লাগায়ে হালকা সেচ দিতে হয় এবং রোপণ পরবর্তী প্রায় ১ সপ্তাহ ছায়ার ব্যবস্থা করা হলে চারা দ্রুত লেগে যায়। ৩৫-৪০ দিন বয়সে চারার ৫/৬টি পাতা হলে মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। মাটির উর্বরতার ওপর নির্ভর করে রোপণ দূরত্ব কম বেশি করতে হয়। চারা রোপণ পরবর্তী দুই সারির মাঝখান হতে দফায় দফায় মাটি তুলে দিয়ে চারার সারি উঁচু করতে হবে এবং মাঝখান দিয়ে পানি সেচ ও নিকাশ করা যাবে। চারা লাগানোর পর হতে ২-৩ কিস্তিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। প্রতিবার সার প্রয়োগের সময় মাটি আগলা করে সার মাটিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় তুলে দিতে হয়। এতে আগাছা দমন হয়, গাছের শেকড়ে আলাবাতাস লাগে, সেচ নিকাশের নালা উপযুক্ত গভীর হয়। চারা রোপণের পর বেগুন প্রায় ৯০ দিনে, টমেটো ৮০ দিনে এবং আলু ১০০ দিনে সংগ্রহ করা যায়। বেগুন সংগ্রহে বিলম্ব হলে খাবার অনুপযোগী হয়ে যায় । অথচ টমেটো ও আলু পরিপুষ্ট হওয়ার পরও কিছুটা বিলম্বে সংগ্রহ করলে কোন ক্ষতি হয় না ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। জমি, ২। লাঙ্গল, ৩। কোঁদাল, ৪। আঁচড়া, ৫। মই, ৬। টেপ, ৭। সুতলি, ৮। সার, ৯। ঝুড়ি, ১০ নিড়ানি, ১১। কাঠি, ১২। সবজি রাখার পাত্র।

কাজের ধাপ 

১. উঁচু, রৌদ্রযুক্ত, উর্বর ও দোঁআশ মাটির জমি নির্বাচন করে চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করতে হবে। 

২. জমি একদিকে সামান্য ঢালু করে নিলে সেচ ও নিকাশের সুবিধা হবে। 

৩. বেগুন, টমেটো ও আলু রোপণের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে লাইন টেনে লাইন/সারিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা/আলু। রোপণ করতে হবে। তত্ত্বীয় অংশে রোপণ/বপন দূরত্ব উল্লেখ আছে। 

8. জমি তৈরির সময় বিভিন্ন প্রকার সারের মধ্যে মৌল (প্রাথমিক) সার সম্পূর্ণ জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। তত্ত্বীয় অংশে সারের মাত্রা ও প্রয়োগ পদ্ধতি উল্লেখ আছে। 

৫. উপরি প্রয়োগের সার ধাপে ধাপে চারার সারির পাশ দিয়ে ছিটিয়ে দিয়ে কোদাল বা নিড়ানির সাহায্যে মাটি নড়াচাড়া করে মিশিয়ে দিতে হবে। 

৬. মাটিতে সার মেশানোর পর কোদাল দিয়ে মাটি হালকাভাবে সারিতে তুলে দিতে হবে এবং এতে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নালা তৈরি হবে। 

৭. টমেটো গাছের জন্য ইংরেজি 'এ' অক্ষরের ন্যায় করে বাঁশ দিয়ে বাউনি করে দিতে হবে। 

৮. খারিফ মৌসুমে বেগুনের জমি হতে পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। 

৯. রবি মৌসুমে সবগুলো সবজির জমিতেই শুষ্ক অবস্থায় ১০ দিন পর পর প্রয়োজনে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 

১০. উপরি প্রয়োগের সার দেয়ার পর পরই হালকা সেচ দিলে সারের কার্যকারিতা দ্রুত শুরু হয় সেজন্য সেচ দিতে হবে। 

১১. বেগুন প্রায় ৮০-৯০ দিন হতে, টমেটো ৭০-৮০ দিন হতে এবং আলু আগাম ও স্বল্প মেয়াদি জাত ব্যতিত অন্যান্য জাতগুলো ১০০-১২০ দিন হতে ফল তোলার উপযোগী হয়। 

১২. সবজির স্থায়ীত্ব অনেকটা নির্ভর করে পরিপক্কতার ওপর। তাই টমেটোর রঙ হালকা হলুদাভ লালচে দেখার সাথে সাথেই তুলতে হবে। বেগুন কচি অবস্থায় গুণগত মান ভাল থাকে তাই কচি অবস্থায় তুলতে হবে। 

১৩. পরিপুষ্ট ফল রং ধরার আগে সংগ্রহ করে পরিষ্কার ও বাছাই করে টমেটো ঠান্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ৮-১০ দিন রাখা যায় । 

১৪. আলু ঘরে মাচায় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ৩-৪ মাস এবং হিমাগারে ৩.৩°-৩.৪° সে. তাপমাত্রা ও ৮০-৯০% স্বাভাবিক পরিবেশে ভালো থাকে । আদ্রতায় ৭-৮ মাস ভালো রাখা যাবে। আলুর জন্য প্রতি ৩ টনে ১ কেজি সেভিন পাউডার ছিটিয়ে দিলে আলু 

১৫. সমস্ত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি, শিম, মূলা, ঢেঁড়শ, পালংশাক ও লালশাক চাষাবাদে দক্ষতা অর্জন করতে পারা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- সবজি চাষে কী ধরনের জমি প্রয়োজন তার বৈশিষ্ট্য

ফসলের নামজমির ধরন
ফুলকপিদোঁআশ-এঁটেল দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।
বাঁধাকপিদোঁআশ--এঁটেল দোঁআশ উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।
বরবটিদোঁআশ-বেলে দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।
শিমদোঁআশ বেলে দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ।
মূলাদোঁআশ-বেলে বা এঁটেল দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু।
ঢেঁড়শদোঁআশ-বেলে বা এঁটেল দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।
পালংশাকদোঁআশ-বেলে বা এঁটেল দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।
লালশাকদোঁআশ-বেলে বা এঁটেল দোঁআশ, উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু।

এ ধরনের জমি নির্বাচন করে উত্তমরূপে চাষ ও মই দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে বেড় বা সারি করে নিতে হয়। সারের প্রাথমিক ও উপরি প্রয়োগ প্রতি হেক্টরে।

ফসলের নামপ্রাথমিক সার প্রয়োগউপরি প্রয়োগের সার ও প্রয়োগের সময়
গোবর টিএসপি এমওপি 
ফুলকপি১০ টন ৪০ কেজি ৪০ কেজিইউরিয়া ৮০ কেজি চারা গজানোর ১০-১২ দিন পর
বাঁধাকপি৭ টন ৯০ কেজি ৫৫ কেজি ইউরিয়া ১৩২ কেজি, এমওপি ৫৫ কেজি
শিম১০ কেজিসমান ৩ কিস্তিতে চারা রোপণের ১০ দিন ১২৫ দিন পর এবং ৩য় কিন্তুি মাথা বাঁধার সময় ও ৭৫ গ্রাম এমও পি দিতে হবে।
মূলা চারা গজানোর ২৩ সপ্তাহ পর পর ২ বার ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ইউরিয়া ৫০ কেজি ৪৫ পাতা এবং ৫০ কেজি ৮১০ পাতা হলে দিতে হবে। এমওপি ২৫ কেজি ৪৫ পাতা এবং ৭৫ কেজি ১০১২ পাতা হলে দিতে হবে।
ঢেঁড়শ ইউরিয়া ৬০ কেজি এমওপি ৬০ কেজি চারা লাগানোর ১৫ | দিন। পর হতে ২ সপ্তাহ পর পর ৩ বার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
পালংশাক ইউরিয়া ৮০ কেজি চারা গজানোর ১০ দিন পর হতে ২-৩ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে
লালশাক ইউরিয়া ৪৫ কেজি বীজ বপনের ১০ দিন পর পর ২-৩ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

সার প্রাথমিক ও উপরি প্রয়োগের পরিমাণ প্রতি হেক্টরে এবং উপরি প্রয়োগকৃত সার কত কিস্তিতে দেয়া হবে তা উল্লেখ করা হলো।

বীজ/চারা রোপণের কতদিন পর হতে ফসল সংগ্রহ করা যায় তা দেয়া হলো

প্রয়োজনীয় উপকরণ ১। জমি, ২। বীজ/চারা, ৩। লাঙ্গল, ৪। মই, ৫। আঁচড়া, ৬। কোদাল, ৭। নিড়ানি, ৮। রশি, ৯। টেপ, ১০। ঝুড়ি, ১১। সার, ১২। ঝাঁঝরি, ১৩। খুঁটি, ১৪। খাতা কলম।

কাজের ধাপ

১. উর্বর, সুনিষ্কাশিত, বেঁলে-দোঁআশ, দোঁআশ বা এঁটেল দোঁআশ মাটি উঁচু হতে মাঝারি উঁচু বা মাঝারি নিচু, আলোবাতাসযুক্ত জমি নির্বাচন করতে হবে। 

২. জমি উত্তমরূপে চাষ ও মই দিয়ে সমতল করে আঁচড়া দ্বারা আগাছা বেছে ফেলতে হবে। 

৩. প্রাথমিক সার জমির শেষ চাষের পূর্বে সম্পূর্ণ জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। 

৪. জমি তৈরির পর সবজিভেদে বেড/মাদা/সারি তৈরি করে চারা রোপণ বা বীজ বপন করতে হবে (তাত্ত্বিক অংশে উল্লেখ আছে)। 

৫. চারার গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য নিষ্কাশন নালার ব্যবস্থাসহ শুষ্ক অবস্থায় সেচের ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

৬. সার উপরি প্রয়োগকালে প্রতিবারই মাটির সাথে নিড়ানি/কোদাল দিয়ে সার মিশিয়ে দিতে হবে এবং সেই সাথে আগাছা উঠায়ে দিতে হবে। 

৭. সার দেওয়ার পর মাটিতে 'জো' এর ঘাটতি থাকলে হালকা সেচ দিতে হবে। 

৮. শাক সবজি উপযুক্ত অবস্থায় তুলতে হবে এবং তোলার সময় মাঠে জমিতে না রেখে পাত্রে নিয়ে ছায়ায় রাখতে হবে। 

৯. খুব ভোরে বা বিকেলে ছায়া সময়ে শাক সবজি সংগ্রহ করতে হবে। 

১০. শাক সবজি ঠান্ডা আর্দ্র অবস্থায় ১-২ দিন রাখা যাবে।

১১. সমস্ত কার্যক্রম ব্যবহারিক খাতায় ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into সবজি চাষাবাদে পানি সেচ ও নিকাশনের দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য-সবজির জন্য পানি সেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে খরার সময় সেচ অপরিহার্য। তবে খারিফ সিজনে বিনা সেচে চাষ করা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের পানি বের করে দিতে হয়।

সবজি চাষে চারা গজানো হতে ফুল ধরা পর্যন্ত সবজির পানির চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়। বৃষ্টি না হলে সবজিতে ফুল না আসা পর্যন্ত ১০ দিন পর পর সেচ দিতে হয়। বেলে দোঁআশ মাটিতে ঘন ঘন সেচ দিতে হয়। মাটি শুকাতে থাকলে মাটির রং হালকা হয়, অন্যথায় গাঢ় থাকে। পানির অভাব হলে গাছের পাতা নেতিয়ে পড়ে। তাই মাটি হালকা রং ধারণ করলে এবং পাতা নেতিয়ে পড়লে সেচ দিতে হয়। গভীর মলী সবজিতে মাটির পানি ধারণ সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতা হয়, এতে গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গাছের নিচের পাতা লাল হয়ে ঝরে পড়ে। তাই সেচের বা বৃষ্টির জন্য জমিতে জমা অতিরিক্ত পানি নালা কেটে বের করার ব্যবস্থা রাখতে হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। সেচযন্ত্র, ২। কোদাল, ৩। টেপ, ৪। সুতলি, ৫। কাঠি, ৬। মাটি রাখার পাত্র, ৭। ক্যালকুলেটর, ৮। খাতা কলম।

কাজের ধাপ

১. সবজির ২ সারি বা ২ বেডের মাঝখান দিয়ে নালা করতে হবে। যেখান দিয়ে সেচের পানি প্রবাহিত করা হবে।। নালা একদিকে সামান্য ঢালু হবে। 

২. পানি সরবরাহের প্রধান নালা জমি তল অপেক্ষা উচু হতে হবে। 

৩. জমি হতে অতিরিক্ত পানি (সেচির বা বৃষ্টির) বের করার নিষ্কাশন নালা তৈরি করতে হবে। যাতে সবজি ক্ষেতে পানি জমে পানিবদ্ধতা হতে না পারে। 

৪. সবজির জমির মাটি ভিজিয়ে নিয়ে নলাকার করে তা রিং বানানোর সময় যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে, বেলে দোঁআশ। আর যদি ফেটে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে দোঁআশ। আর যদি চল যাটা হয় বুঝতে হবে যে এঁটেল দোঁআশ । ভিজা দোঁআশ মাটির নলাকার তৈরি করলে কোনরুপ দাগ পড়বে না এবং এটেল মাটিতে কোন দাগ পড়ে না এবং চকচকে দেখায় । 

৫. বেলে দোঁআশ হতে দোঁআশ, দোঁআশ হতে এঁটেল দোঁআশ, এঁটেল দোঁআশ হতে এঁটেল মাটির ক্রমান্বয়ে পানি। ধারণ ক্ষমতা বেশি। 

৬. মাটির ধরন দেখে পানি ধারণ ক্ষমতা দেখে সেচ দিতে হবে। মাটি এঁটেল হতে ক্রমান্বয়ে যত বেলে দোঁআশের দিকে যাবে তত ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। 

৭. নিচের এ সূত্র দ্বারা জমিতে বিদ্যমান রসের পরিমাণ জেনে, যদি ৭০%-এর কম হয় তাহলে সেচ দিতে হবে। তবে ৫০% এর কম হলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। নোটঃ মাঠ হতে নেওয়া মাটির ওজন = ১০০০ গ্রাম (ফসলের শেকড় গভীরতা হতে ধরা যাক শুকানোর পর প্রাপ্ত ওজন = ৬০০ গ্রাম

সূত্রঃ মাটিতে পানির পরিমাণ

মাটিতে রসের পরিমাণ ৬৬.৬৬%। এমতাবস্থায় সেচ দিতে হবে। 

৮। মাটির রঙ হালকা বা সাদাটে দেখা গেলে সেচ দিতে হবে। 

৯। মাটিতে দৃশ্যত পানি বন্ধ হলে বা গাছের গোড়ায় পানি জমা দেখলে পানি বের করে দিতে হবে। 

১০ । সমস্ত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।

Content added By
Please, contribute to add content into কুমড়াজাতীয় সবজির রোগবালাই আক্রমণের লক্ষণ দেখে রোগ শনাক্ত করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- কুমড়াজাতীয় সবজি মোট সবজির একটি বিরাট অংশ দখল করে আছে। সব সবজিগুলোর রোগসমূহ প্রায় একই ধরনের। রোগগুলো হলো পাউডারি মিলডিউ, ডাউনি মিলডিউ, পাতার দাগ, এনথ্রাকনোজ, নেতিয়ে পড়া, মোজাইক, ফল পচা ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞের মতে সবজিতে বাংলাদেশে প্রায় ২০০ ধরনের রোগ দেখা যায় এবং শুধু রোগের কারনে ১২-১৫% সবজি ও ফল প্রতি বছর নষ্ট হয়।

পাউডারি মিলডিউ রোগে পাতায় উপরের দিকে সাদা পাউডারের ন্যায় আন্তর পড়ে। শেষে পাতা শুকিয়ে যায় । ডাউনি মিলডিউ রোগে পাতার নিচ দিকে ধূসর, বেগুনী গোলাপী দাগ পড়ে। আক্রান্ত পাতা ও গাছ দূর্বল হয়ে মারা যায়, ফল পাকে না। পোড়াভাব হয়। নেতিয়ে পড়া রোগে পাতা আংশিক নরম হয় এবং পুরো গাছ হঠাৎ নেতিয়ে পড়ে এনথ্রাকনোজ রোগে আক্রান্ত গাছের পাতায় বাদামি বা কাল দাগ পড়ে, শাখা-প্রশাখায় সরু গাঢ় কাল দাগ পড়ে, যা কান্ডের চারিদিকে ঘিরে ফেলে। এর ফলে আক্রমণের স্থান হতে উপরের দিকের অংশ মারা যায়। মোজাইক রোগ পাতায় হালকা ও গাঢ় সবুজের সংমিশ্রণে মোজাইক সৃষ্টি হয়। পাতা নিচের দিকে গুটিয়ে কুঁকড়িয়ে যায়। ফল কুঁচকায়ে যায় ৷

এ সমস্ত লক্ষণ দেখার জন্য কুমড়ার জাংলায় বা মাঠে কুমড়ার গাছে লক্ষণ মিলিয়ে রোগাক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করতে হবে। সংগৃহীত রোগাক্রান্ত পাতা নেতিয়ে নিয়ে টানটান/সোজা করে ডুইং শিট বা মোটা অথচ শক্ত কাগজের পাতা দিয়ে সমতল টেবিলের উপর চাপ দিয়ে ২-৩ দিন রেখে দিতে হবে। পাতা শুকায়ে গেলে ব্যবহারিক খাতায় শুকানো সোজা করা পাতাটি আটকে নির্দেশনা লিখতে হবে। এটাকে হার্বোরিয়াম শীট বলে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১। রোগাক্রান্ত কুমড়া গাছের পাতা, ২। চাকু/কাঁচি, ৩। চিমটা বা ফরসেপ, ৪। স্বচ্ছ গাম টেপ, ৫। কাঠ পেন্সিল, ৬। ড্রইং শিটযুক্ত ব্যবহারিক খাতা, ৭। ডাল/ট্রে, ৮। ট্যাগ, ৯। হার্কোরিয়াম শীট, ১০। কাগজ কলম।

কাজের ধাপ

পাউডারি মিলডিউপাতার উপরের দিকে সাদা সাদা পাউডারের ন্যায় ছোট ছাপে দেখা যাবে। বেশি আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যাবে।
ডাউনি মিলডিউপাতার নিচ দিকে ধূসর, বেগুনী বা গোলাপী দাগ দেখা যাবে। আক্রান্ত পাতা ও গাছ দুর্বল হবে এবং মারা যাবে। আক্রান্ত গাছের ফল শক্ত হয়ে থাকে ফল বাড়ে না এবং পাকে না।
এনথ্রাকনোজআক্রান্ত গাছের পাতায় বাদামি বা কাল দাগ পড়ে দাগ দেখতে চোখের ন্যায়, দাগের কিনারা উঁচু এবং মাঝে বসা হয়।
মোজাইকপাতায় হলুদ ও সবুজ এর সংমিশ্রিত ছিট ছিট দাগ পড়ে।
নেতিয়ে পড়াপাতা হলুদ হয়ে কিনারা দিয়ে পোড়াভাব হয়। পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং পুরো গাছ মারা যায়।

২। রোগের লক্ষণের সাথে মিলিয়ে পাতার বোঁটাসহ চাকু বা কাঁচি দিয়ে কেটে ডালা/ট্রেতে করে টান টান অবস্থায় ছায়ায় রাখতে হবে। তবে রোগের লক্ষণ অনুসারে পাতার বোটায় ট্যাগ লাগাতে হবে। 

৩। ছায়ায় পাতাটি ১৫-২০ মিনিট রাখলে নেতিয়ে নরম হবে। রোগের লক্ষণ দেখে খাতায় লিখতে হবে। 

৪। নরম পাতাটি ২টি ড্রইং শিট বা শক্ত কাগজের মাঝখানে ফেলে সমতল টেবিলের উপর ভারা দিয়ে ২/৩ দিন রাখলে শুকায়ে টান টান হয়ে থাকবে। পাতাটি অবশই ছায়ায় রাখতে হবে। প্লাইউড, পাতলা কাঁচ ভারা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ভারা/ওজন বেশি হলে পাতা/নমুনা থেতলে যেতে পারে। 

৫। এরপর শুকনো, সবুজ রঙের পাতাটি ব্যবহারিক খাতায় ড্রইংশিটে রেখে স্বচ্ছ টেপ দিয়ে আটকাতে হবে বা । হার্বোরিয়াম শীটে স্বচ্ছ টেপ দিয়ে আটকাতে হবে। 

৬। পাতা আটকানোর পর নিচে রোগের নামসহ ফসলের নাম সংগ্রহ স্থান, তারিখ ও ঠিকানা লিখতে হবে।

৭। পাতা সংগ্রহ ও দুই কাগজের শিটের মাঝখানে রেকে প্লাইউডের ন্যায় করার সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে, যাতে পাতাটি ছিড়ে না যায় এবং রোগের নামসহ ট্যাগটি লাগানো হয়। 

৮। মাঠে নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে কোন রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি তা জানা যাবে। 

৯। সমস্ত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into বেগুণ, টমেটো, গোলআলুর রোগবালাই আক্রমণের লক্ষণ দেখে রোগ শনাক্ত করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- বেগুনের গোড়া পঁচা একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগে বেগুনের পাতা ফ্যাকাশে থেকে হলুদাভ এবং পরবর্তীতে শুকিয়ে বাদামি রঙ ধারণ করে। গাছের গাড়া বিবর্ণ হয় ও পঁচে যায়। টমেটোর নেতিয়ে পড়া রোগের লক্ষণ কুমড়া জাতীয় সবজিতে যা উল্লেখ করা হয়েছে তারই মত। আলুর মড়ক হলে গাছের পাতার কিনারা বা আগা হতে নিচের দিকে পোড়াভাব ধারণ করে এবং পাতা মারা যায়। এমনকি কাণ্ড, শাখা প্রশাখাসহ সম্পূর্ণ গাছ কালো হতে থাকে এবং পোড়াভাব ধারণ করে। পরবর্তীতে সম্পূর্ণ ক্ষেত ধ্বংস হয়ে যায়। শুকনো পঁচা রোগে আলুর ত্বক ভাঁজ ভাঁজ বলয় তৈরি করে কুঁচকে যায় এবং আস্তে আস্তে শুকায়ে যায়। আক্রান্ত ত্বকে শাঁসে আক্রমণ করে সেখানে নরম করে সেখানে ফেলে। আলুর শাঁস পঁচা শুরু হলে চাপ দিলে পুঁজের ন্যায় বের হয় ও দুর্গন্ধ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। বেগুন, টমেটো ও আলু গাছের আক্রান্ত পাতা, ২। কাঁচি/চাকু ৩। ট্রে/ডালা ৪। ফরসেফ ৫। খাতাকলম  কাজের ধাপ। 

২। বেগুন, টমেটো ও আলুর জমিতে ফসলের বৃদ্ধির বিভিন্ন বয়সে/পর্যায়ে যেতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখে পাতার সাথে মিলিয়ে শনাক্ত করে কাঁচি/চাকু দিয়ে পাতা ভাঁটা কাটতে হবে

রোগের নামরোগের লক্ষণ
বেগুনের গোড়া পঁচাপাতা ফ্যাকাসে হলুদাভ হয়ে শুকিয়ে যায়, গোড়া বিবর্ণ হয়ে পচে যায়।
টমেটোর নেতিয়ে পড়াপাতা হলুদ হয়, কিনারা দিয়ে পোড়াভাব হয়, পাতা আংশিক নরম হয় ও পুরো গাছ হঠাৎ মারা পড়ে।
আলুর মড়কপাতার কিনারা ও আগা হতে মরে ও পাতা পোড়াভাব হয়। পরবর্তীতে কাণ্ড, শাখা-প্রশাখা কালো হয় ও পোড়াভাব ধারন করে।
আলুর শুকনো পচা আলুর ত্বকে ভাঁজ ও বলয় হয়ে কুঁচকে শুকিয়ে যায়। ত্বক আলুর শাঁস থেকে আলাদা হয়ে যায়।
আলুর নরম পচাআলুর ত্বক পঁচে যায় ও আক্রান্ত স্থানের নিচে আলুর শাঁস নরম হয়ে যায়। চাপ দিরে পুজের ন্যায় বের হয় এবং পচা দুর্গন্ধ বের হয়।

৩। রোগের লক্ষণের সাথে মিলিয়ে প্রতিটি আলাদা করে নিয়ে খাতায় লিখতে হবে। এবাবে রোগাক্রান্ত পাতাগুলো শনাক্ত করবে। 

৪। এসব ফসলি জমিতে সম্পূর্ণ উৎপাদন সময়কাল পরিদর্শন করে কোন কোন সময় কোন কোন রোগ আক্রমণ করে এবং কোন সময় তীব্রতা বেশি হয় তা নির্ণয় করা যাবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি, শিম, মূলা, ঢেঁড়শ, পালংশাকে রোগবালাই আক্রমণের লক্ষণ শনাক্ত করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলায় অলটারনারিয়া ব্রাইট রোগ পাতায় কাল ও ধূসর দাগ তৈরি করে। কাল দাগ ছোট ও গোলাকার হয়। ধূসর দাগ আয়তনে বড় ও হালকা বর্ণের হয়। উভয় দাগই বলয় তৈরি করে। তীব্র আক্রমণে পাতা, ডাল, ফল ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়। পাতা ঝরে যায়। কপি, বরবটি, শিম, ঢেঁড়শে শেকড় পঁচা রোগে শেকড় এবং কাণ্ড কাল হয়ে পঁচে যায়, পাতার উপর ধূসর বাদামী দাগ পড়ে। আস্তে আস্তে পুরো পাতা আক্রান্ত হয়। পালংশাকে পাতার দাগ রোগে পাতায় ছোট ছোট বাদামী দাগ পড়ে, যা ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে এবং পাতা হলুদ হতে থাকে। ডাউনি মিলডিউ রোগ শিম, পালংশাক, কপি, কুমড়া জাতীয় সবজিতে আক্রমণ করে (কুমড়াজাতীয় সবজিতে রোগের লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে।)

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১. বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি, শিম, মূলা ও ঢেঁড়শ ফসলের আক্রান্ত পাতা, ২। চাকু/কাঁচি, ৩। চিমটা বা । ফরসেফ ৪। ট্যাগ ৫। স্বচ্ছ টেপ, ৬। হার্বোবিয়াম শিট, ৭। ডালা / ট্রে, ৮। খাতা-পেন্সিল।

কাজের ধাপ 

১। বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি, শিম, মূলা ও ঢেঁড়শ ফসলের জমিতে নিয়ে আক্রান্ত পাতা, কাণ্ড বা গাছের সাথে রোগের লক্ষণ মেলাতে হবে।

রোগের নামরোগের লক্ষণ
বাঁধাকপি, ফুলকপি ও মূলার অলটারনারিয়া বাইট

পাতায় কাল ও ধূসর দাগ তৈরি করে। কাল দাগ গোলাকার ও ছোট এবং ধূসর দাগ বড় ও হালকা বর্ণের হয়। 

দাগগুলো বলয় তৈরি করে, ফলে পাতা শুকায় ও ঝরে পড়ে।

কপি, বরবটি, শিম ও ঢেঁড়শে শেকড় পঁচা রোগগাছের কাণ্ড ও শেকড় কাল হয়ে পচে যায়, পাতায় ধূসর বাদামী দাগ পড়ে ও পাতা সম্পূর্ণ আক্রান্ত হয়।
পালংশাকে পাতার দাগ রোগপাতায় ছোট ছোট বাদামী দাগ পড়ে, দাগ বড় হয়ে পাতা হলদে করে।

২। রোগের লক্ষণ দেখে আক্রান্ত কাণ্ড গাছ বা পাতার বোঁটা কেটে ট্যাগে লিখে তাতে বাঁধতে হবে। 

৩। আক্রান্ত সংগৃহীত নমুনা ডালায়/ট্রেতে করে ছায়ায় ১৫-২০ মিনিট রাখতে হবে। 

৪। আক্রান্ত নমুনা নেতিয়ে গেলে টান টান করে দুটি শিট কাগজের ভেতরে বা ভাঁজে স্যান্ডউইচের ন্যায় করে সমতল কাঠের উপর রেখে হালকা চাপা দিয়ে ছায়ায় ২-৩ দিন রাখতে হবে। 

৫। চাপ দেওয়া নমুনাটি ২/৩দিনে শুকিয়ে গেলে হার্বোরিয়াম শীটে স্বচ্ছ টেপ দিয়ে আটকাতে হবে। 

৬। প্রতিটি নমুনার নিচে রোগের নাম লিখতে হবে। সেইসাথে তারিখ, স্থান ও ঠিকানা লিখতে হবে। 

৭। হার্বোরিয়াম শিটটি সম্পূর্ণভাবে সেলোফিন কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দিলে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে।

Content added By
Please, contribute to add content into সবজির রোগ দমনে দক্ষতা অর্জন করা.
Content

প্রাথমিক তথ্য- শাকসবজির রোগসমূহ সাধারণত ৩ ভাগে বিভক্ত যথা- ছত্রাকজনিত, ব্যাকটেরিয়াজনিত ও ভাইরাসজনিত। এছাড়াও কৃমিজনিত, শরীরতাত্ত্বিক ও মাইকোপ্লাজমাজনিত রোগ আছে।

ছত্রাকজনিত রোগ- বীজ, পানি, যন্ত্রপাতি, মানুষের কাজকর্ম ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায় ও গাছের আক্রান্ত অংশ দিয়ে গাছে আক্রমণ করে।

ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ-মাটিতে পঁচনরত জৈব পদার্থে ও খাদ্য বস্তুর মধ্যে থাকে। গাছের কোন ছিদ্র বা আঘাতপ্রাপ্ত স্থান দিয়ে প্রবেশ করে।

ভাইরাসজনিত রোগ-জাবপোকা, লিফ হপার, হোয়াইট ফ্লাই ইত্যাদি রস শোষক পোকার মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।

ছত্রাকনাশক দ্বারা ছত্রাকজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দমনে আক্রান্ত গাছ নিধন ব্যাকটেরিয়া বিস্তারে সহায়তাকারী গুবরে পোকা, কাটুই পাকা, ক্রিকেট, উই পোকা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অনুরুপ ভাইরাসজনিত রোগ দমনে ভাইরাস বিস্তার করে এমন পোকা যেমন- জাব পোকা, হপার, ফ্লাই ইত্যাদি দমন করতে হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। স্প্রে মেশিন ২। দস্তানা ৩। এপ্রোন, ৪। চশমা, ৫। ক্যাপ, ৬। গামবুট, ৭। বাতাস নির্দেশনা পতাকা, ৮। মাস্ক, ৯। বালতি/চাড়ি, ১০। বালাইনাশক ১১। কাঠি ১২। বালাইনাশক মাপার বিকার

কাজের ধাপ 

১. স্প্রে মেশিনটি পরীক্ষা করে নিতে হবে, যাতে স্প্রে করায় সমস্যা না হয়। যেমন- পাম্প ঠিকমত হয় কিনা, নজল। দিয়ে স্প্রে সঠিকভাবে বের হয় কিনা, ঘাড়ে নেয়ার ফিতা ঠিক আছে কিনা । 

২. স্প্রে করতে হলে মেশিনের চারভাগের ১ ভাগ পরিষ্কার পানি দিয়ে ভরতে হবে। 

৩. বালাইনাশক যতটুকু প্রয়োজন তা মেপে ৪ ভাগের ১ ভাগ মেশিনে ঢেলে কাঠি দিয়ে নড়াচাড়া 

৪. এপর চারভাগের ১ ভাগ পরিষ্কার পানি মেশিনে দিয়ে নড়াচাড়া করতে হবে। করতে হবে। 

৫. এবার মেশিনের নির্ধারিত দাগ পর্যন্ত পরিষ্কার পানি দিয়ে বাকী বালাইনাশক ঢেলে ভালভাবে মেশাতে হবে। 

৬. বালাইনাশকের পাত্রের মুখ ভালভাবে বন্ধ করতে হবে। 

৭. স্পে মেশিনে ঠিকমত পাম্প করে নিতে হবে। 

৮. এবার স্প্রে মেশিনটি কাঁধে নিয়ে যে জমিতে স্প্রে করতে হয় তার আইলে দাঁড়ায়ে পতাকার কাঠি পুঁতে, ধুয়া দিয়ে বাতাসের দিক জেনে বাতাসের অনুকূলে স্প্রে করতে হবে।

৯. জমির একপ্রান্ত পর্যন্ত স্প্রে করে নজেল বন্ধ করে যে স্থানটুকু জুড়ে স্প্রে করা হয়েছে তা বাদ দিয়ে আবার বাতাসের অনুকূলে এসে স্প্রে শুরু করতে হবে।

১০. ব্যবহারিক খাতায় স্প্রে মেশিন ব্যবহার করার ধাপসমূহ এবং কখন কোন জমিতে কোন বালাইনাশক কি হারে ব্যবহার করা হলে তা লিখে রাখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into সবজিতে পোকার আক্রমণের লক্ষণ দেখে পোকা শনাক্তকরণ.
Content

প্রাথমিক তথ্য- সবজিতে বিভিন্ন ধরনের পোকা আক্রমণ করে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আক্রমণের লক্ষণ/ ধরন বিবেচনা করে পোকামাকড়গুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-

(ক) মাজরা পোকা মাছি ও প্রজাপতির শুককীট গাছের কচি ডগা, কাণ্ড, ফল ফুটো করে ভিতরে ঢুকে ভিতরের অংশ খায়। এতে ডগা, কাণ্ড, ফল নষ্ট হয়ে যায়। এ জাতীয় আক্রমণকে মাজরা ও ফলের মাছি পোকা বলা হয় । 

(খ) শোষক পোকা-গাছের কচি ডগা, পাতা, ফলের রস চুষে খাওয়ার ফলে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, পাতা বিবর্ণ হয়, কুঁকুড়িয়ে যায়, ফুল শুকিয়ে যায়। এ জাতীয় আক্রমণ হয় জাব পোকা, গান্ধি পোকা, থ্রিপস, লাল মাকড়, পাতা ফড়িং, ঘোড়া পোকা দ্বারা ।

(গ) চিবানো পোকা- গাছের পাতা, ডগা, কাণ্ড, ফল কামড়ায়ে বা চিবিয়ে খায় ও নষ্ট করে। গাছের বৃদ্ধি কমে যায়, ফলন কমে। এজাতীয় আক্রমণ হয় বিছা/ লেদা পোকা, গুবরে পোকা দ্বারা । 

(ঘ) মাটিতে বসবাসকারী পোকা-সবজির চারা বা অল্প বয়ক/কচি গাছ মাটি সমতলে কেটে বিনষ্ট করে। এ জাতীয় আক্রমণ হয় উই, কাটুই পাকা, ক্রিকেট পোকা দ্বারা ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১। পোকা ধরার জাল, ২। আক্রান্ত গাছের চারার / কাণ্ডের / ডগার নমুনা ৩। ইনসেক্ট কিলিং জার ৪। ফরসেপ ৫। ড্রইং পেপার, ৬। পেন্সিল, ৭। রাবার, ৮। স্কেল, ৯। অগার/নিড়ানি, ১০। পোকা রাখার পলিথিন ব্যাগ, গাস/পাস্টিক পাত্র, ১১ । খাতা কলম ।

কাজের ধাপ

১. পোকা ধরার জাল, কিলিং জার, পলিথিন প্যাকেট, প্লাস্টিক বৈয়াস মাটি খুড়ার জন্য অগার / নিড়ানি নিয়ে সবজি ক্ষেতে যেতে হবে। 

২. আক্রমণ দেখে জাল ব্যবহার করে পোকা ধরতে হবে। গাছের গোড়া কাটা থাকলে মাটি খুড়ে পোকা ধরতে হবে। 

৩. পোকা ধরে সাবধানে ইনসেক্ট কিলিং জারে রেখে ঢাকনা বন্ধ রাখলে ২/৩ মিনিটের মধ্যে পোকা মারা যাবে। জার থেকে পোকা বের করে আক্রমণের লক্ষণ দেখে পোকাকে শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। 

৪. পাকাগুলোর আরও পর্যবেক্ষণের দরকার হলে স্বচ্ছ কাঁচের/পাষ্টিকের পাত্রে রাখা যেতে পারে। পাকাগুলো শনাক্ত করে ড্রইং শিটে চিত্র আঁকতে হবে। 

৫. প্রয়োজনে পোকার ছবি সংগ্রহ করেও পোকার সাথে মিলিয়ে শনাক্ত করা যাবে। 

৬. কাজের প্রতিটি ধাপ ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।

Content added || updated By
Please, contribute to add content into সবজিতে পোকা দমনের ব্যবস্থাকরণ.
Content

প্রাথমিক তথ্য- ঘ্রান সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পদার্থ স্ত্রী পোকারা মিলনের জন্য বাতাসে ছাড়ে যা শুঁকে পুরুষ পোকারা টের পায় এবং চলে আসে, তাই হলো সেক্স ফেরোমানে। কৃত্রিম উপায়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি ব্যবহার করে ধোকা দিয়ে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী এবং কুমড়াজাতীয় সবজির ফলের মাছি পোকাকে আটকানো হয় এবং তারা মারা পড়ে। লাউ, কুমড়া, চালকুমড়া, করলা, কাঁকরোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, পটল ইত্যাদিতে ফলের মাছি পোকা কচি ফলের গায়ে ছালের নিচে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কিড়া ভেতরে সুরঙ্গ করে শাঁস খায় এবং ফল নষ্ট করে দেয়। এক্ষেত্রে ছোট মাটির সানকি বা সারা বা ঢাকনিতে ১০০ গ্রাম পাকা মিষ্টি কুমড়া কুচি কুচি করে কেটে থেঁতলে বা পিষে কাই করে তার সাথে ১-২ ফোটা ডিডিভিপি বা ডিপটেরেক্স মিশিয়ে ৫০-১০০ মিলি. পানি দিতে হবে। এই পাত্রটি সবজি ক্ষেতে উঁচু স্থানে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১। সবজি ক্ষেত, ২। সেক্স ফেরোমানে ৩। স্বচ্ছ প্লাষ্টিক বয়েম, ৪। একটি রাবার টিউব, ৫। এক টুকরো গুনা (তার) ৬। ৩-৪ ফুট লম্বা দু'টুকরো বাঁশ ৭। চাকু ৮। সাবান গোলা পানি, ৯। মাটির সানকি/সারা ১০। ৩-৪ ফুট লম্বা ৩/৪টি গিটওয়ালা কাঁচা বাঁশ ১১। সূতলি ১২। পাকা মিষ্টি কুমড়া ১৩। পানি ১৪। বালাইনাশক।

কাজের ধাপ

ফেরোমোন ফাঁদ 

১. একটি স্বচ্ছ বড় পাষ্টিকের বোয়েম নিয়ে তার দুই পাশে সামনা সামনি ত্রিকোনাকার করে কেটে ফাঁকা জানালার । ন্যায় করতে হবে। 

২. বোয়েমের নিচে ৩-৪ ইঞ্চি পরিমাণ সাবান পানি দিতে হবে। 

৩. ফেরোমোনটি তুলা ও সুতা দিয়ে পেঁচিয়ে গুটি বানিয়ে রাবার নলের মধ্যে দিয়ে বোয়েমের মুখে ছিদ্র করে গুনা বা তার দিয়ে আটকিয়ে তা ঝুলায়ে দিতে হবে। 

৪. বোয়েমের ভিতরে এমনভাবে ঝুলবে যাতে জানালা বরাবর ফেরোমোনটি থাকে। 

৫. এই বোয়েমটির যে দুই পাশে কাটা নেই সে দিকে বাঁশের খুঁটির সাথে ধরে গাছের উচ্চতা পর্যায়ে খুটির সাথে বেঁধে দিতে হবে। 

৬. পুরুষ পোকা গন্ধ পেয়ে আকৃষ্ট হয়ে এর ভিতরে ঢুকে পানিতে পড়ে মারা যাবে।

বিষ টোপ / বিষ ফাঁদ

১. একটি ছোট মাটির সানকি বা সারা নিতে হবে এবং এর উপরে ঢাকনার ন্যায় কাজ করবে এমন আরও ১টি ঢাকনা নিতে হবে। 

২. ৩-৪ ফুট লম্বা ও ৩-৪টি গিটযুক্ত একটি টুকরো কাঁটা বাঁশ নিয়ে উপরের দিকে ২টি গিট পর্যন্ত ৩ ভাগ করে ফাড়তে হবে যাতে ফাঁক করে মাটির সারাটি বসানো যায়। বাঁশের ফাড়া অংশটি সারা / সানকিকে শক্ত করে আটকে রাখবে। এছাড়াও ফাড়া অংশের মাথায় ৩টি ভাগকে সুতা/রশি/গুনা দিয়ে বাঁধতে হবে। 

৩. এখন ১০০ গ্রাম পাকা মিষ্টি কুমড়া নিয়ে কুচি কুচি করে কেটে থেঁতলে বা পিষে নিয়ে তার সাথে ১-২ ফোটা ডিডিডিপ বা সামান্য ডিপটেরেক্স মিশিয়ে দিতে হবে। 

৪. বিষ মিশানো মিষ্টি কুমড়াকে জমিতে পুঁতে দেওয়া বাঁশের ফাড়া অংশের মধ্যে সানকিতে বসিয়ে তাতে দিতে হবে এবং এর ১৫-২০ সেমি. উপরে ঢাকনা হিসেবে বড় সারাটি দিতে হবে, যাতে বৃষ্টিতে ধুয়ে বা রোদে শুকিয়ে যেতে না পারে। 

৫. ছিকা বানিয়েও ৬-১০ মিটার পর পর সবজি ক্ষেতে বিষ ফাঁদ দিয়ে ঝুলিয়ে দিতে হবে। 

৬. গরমের দিনে ২ দনি এবং শীতের দিনে ৪ দিন পর পাত্রের বিষ পাল্টায়ে দিতে হয়। 

৭. প্রতিদিন সকালে দিয়ে পাত্রে পোকার পরিমাণ দেখে প্রয়োজনে পোকা সংগ্রহ করে ফেলে দিতে হবে। তবে কুঁড়ি ও ফুল আসা শুরু হলেই ক্ষেতে বিষফাঁদ ব্যবহার করা শুরু করতে হয় । 

৮. কাজের প্রতিটি ধাপ ব্যবহারিক খাতায় লিখতে হবে।

Content added By

Promotion