প্রাথমিক তথ্য- ভালো কম্পোষ্ট তৈরির জন্য কার্বন, নাইট্রোজেন ও অনুজীবের উৎসগুলো একত্রীকরণ করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কম্পোষ্ট এক ধরনের জৈব সার। গাছপালা তাজা বা শুকনো, লতাপাতা, খড়কুটা, তরিতরকারির অবশিষ্টাংশ, কচুরিপানা, সবুজ ঘাস, পশুপাখির মলমূত্র, কশাইখানার বর্জ্য ইত্যাদি কম্পোষ্ট তৈরিতে প্রয়োগ করা যায়। কম্পোষ্ট তৈরিতে বিষাক্ত দ্রব্য (বিষকাঁটালি, তামাক), অপচনশীল রাসায়নিক দ্রব্যাদি (প্লাষ্টিক ও প্লাস্টিকজাতীয় পদার্থ), কার্বন বেশি আছে এমন গাছ (বাঁশপাতা, ইউক্যালিপটাস, কলা ও হলুদের পাতা) এবং রোগাক্রান্ত গাছপালা ব্যবহার করা মোটেই উচিত নয়।

গাদা পদ্ধতিতে কম্পোষ্ট তৈরির জন্য নির্দিষ্ট মাপ (৩ মিটার x ১.২৫ মিটার ×১.৫ ২.০০ মিটার) দিয়ে সেখানে আবর্জনা, ও অন্যান্য উপকরণ স্তরে স্তরে সাজাতে হবে। স্তুপের উপরে মাটি ও কাঁচা গোবরের পুরুক্তর করে লেপে দিতে হবে। পচনক্রিয়ার জন্য মাঝে মাঝে উপর দিয়ে ছিদ্র করে পানি দিতে হবে। স্তুপের উপরে চালা দিতে হয়। ৩-৪ মাসে কম্পোষ্ট তৈরি করে ব্যবহার করা যায়। পঁচনক্রিয়া ঠিকমত হলে ১.৫-২ মাসেও কম্পোষ্ট তৈরি হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ- 

১। খড়কুটা, আবর্জনা, লতাপাতা ইত্যাদি জৈব উপকরণ, ২। পশুপাখির মলমূত্র ও অন্যান্য বর্জ্য ৩। কাঁচা গোবর। ৪। ভিটা মাটি ৫। বাঁশ ৬। চাটাই ৭। কোদাল ৮। চালা ৯। টেপ (মাপার ফিতা) ১০। রকী, ১১। খাতা কলম।

কাজের ধাপ- 

১. কম্পোষ্ট গাদা তৈরির জন্য উঁচু স্থানে ৩ × ২ মিটার দৈঘ্য x প্রস্থ) মেপে চিহ্ন করতে হবে। 

২. চারকোনায় ৪টি বাঁশে খুঁটি পুঁতে রশি দিয়ে চাটাই দিয়ে আয়তাকার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। 

৩. এই ক্ষেত্রের ভিতর ঘাস, লতাপাতা, প্রাণিজ আবর্জনা, গরু ছাগলের ঘরের ঝাড়ুর ময়লা জাতীয় সব পঁচনশীল দ্রব্য ফেলে প্রথমে ৩০ সেমি. স্তর বানাতে হবে। 

৪. এ স্তরের উপরে ১ কেজি গুড়া খৈল, কাঁচা গোবর, পচা মাটি ইত্যাদি দিয়ে ৫ সেমি. পুরু স্তর বানাতে হবে । 

৫. এরপর পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। 

৬. এভাবে উপকরণ প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে ৩ থেকে ৬টি স্তর পর পর একই নিয়ম অনুসরণ করে সাজাতে হবে। 

৭. সর্বশেষ স্তরের উপর পলিথিন/খড় দ্বারা চালা তৈরি করে দিতে হবে। 

৮. গাদা যদি শুকিয়ে যায় তাহলে মাঝে মাঝে উপর দিয়ে ছিদ্র করে পানি দিতে হবে, যাতে ঠিকমত পচন ক্রিয়া চলতে পারে। 

৯. গাতা তৈরির ১ মাস পর গুরগুলো ওলটপালট করে দিলে পচন ক্রিয়া সমভাবে হবে এবং ১.৫-২ মাসে সম্পূর্ণ পঁচে কম্পোষ্ট ব্যবহার উপযোগী হবে।

ব্যবহারঃ কম্পোষ্ট তৈরি হলে গাদা ভেঙ্গে শুকিয়ে গুড়া করে প্যাকেটজাত / বস্তায় ভরে রাখা যাবে। তবে খুব বেশি শুকানো উচিত নয়। পচনের ফলে কালচে রং ধারণ করে এবং ঝুরঝুরে হয়। কোন দুগন্ধ থাকে না এবং হাতে নিয়ে মুঠি করে চাপ দিলে স্পঞ্জের মত মনে হয়। এতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশসহ অন্যান্য উপাদান থাকে। এটি সবজির জন্য অত্যন্ত উন্নতমানের জৈব সার।

Content added || updated By

আরও দেখুন...